যৌতুক উচ্চশিক্ষিত শ্রেণী ও মুসলিম সমাজ
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০১:১১:৫৮ দুপুর
যৌতুক উচ্চশিক্ষিত শ্রেণী ও মুসলিম সমাজ
যৌতুক বর্তমান আধুনিক সমাজের একটি সুন্দরতম খারাপ ব্যাধি। এই ব্যাধি এই উপমহাদেশে সর্ব প্রথম চালু হয় হিন্দু সমাজে। আর প্রতিবেশী হিসেবে মুসলিম সমাজে তার অনুপ্রবেশ করে। হিন্দু ল মতে হিন্দু মেয়েরা বিয়ের পর বাবা-মার সম্পদের অধিকারী হয় না। এ জন্য বিয়ের সময় মেয়েকে বিদায় দেবার সময় বাবা-মা তাদের সামর্থ অনুসারে অর্থ, গৃহস্থলি, জিনিস ও ছেলেকে( জামায়) খুসি করতে বিভিন্ন উপকরণ( যেমন- সাইকেল, ঘড়ি, মটর সাইকেল <<<<<<<<<<<<<<<< যুগ অনুসারে) দিয়ে মেয়ে ও মেয়ের জামায়কে বিদেই করত। আর আকেই বলা হত পণ বা যৌতুক বা ডিমান্ড।
আমার আসল কথা এটি নয়। আমি বলতে চাই যৌতুক যে একটা খারাপ বিষয়, এটি নেওয়া যেমন দেশের আইন ও আমাদের ইসলাম ধর্মে একটা অপরাধ তা আমরা সকলেই জানি। আমরা যারা উচ্চ শিক্ষিত তারা এই বাক্য
“যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। যৌতুক দেওয়া এবং নেওয়া আইনত দণ্ডিত অপরাধ।”
এটি সেই ৩য় শ্রেণী হতে জেনে এবং পড়ে এসেছি।
পরে অনেকে এই সম্পর্কে প্রচারণা ও লিখা লিখি করেছি। কিন্তু এই শিক্ষিত সমাজেই এই যৌতুক বেশি প্রচলিত। শিক্ষিত এই যুবকরায় যৌতুক গ্রহণ করে বেশি। যদিও তা আমাদের শিক্ষিত সমাজে প্রচার পায় না।
শিক্ষিত সমাজে যৌতুক দেওয়া হয় এ ভাবে/ গ্রহণ করা হয় এ ভাবে.................. বিয়ের সময় ছেলে ডিমান্ড বা যৌতুক কিছু চায়নি, কিন্তু মেয়ের বাবা বিয়ের কয়েকদিন পর জামায়কে একটা পালচার( মটরসাইকেল) দিতে চায়। মেয়েকে বাবা বলেছে মা জামায়কে জিঙ্গেস করত কোন ব্রান্ডের মটর সাইকেল তার পছন্দ। জামায় আপ্লুত হয়ে যদিও প্রথম প্রথম একটু গাই গুই করে। না না আমি কোন কিছু নেব না............... ইত্যাদি ইত্যাদি মেয়েকে বলে---
কিন্তু কখন ও কি যোর দিয়ে বলে না নিব না।
বা এমন কিছু দিলে আমি নিব না। যদি কিছু দেন তবে আপনার মেয়েকে আপনার বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এমন কথা আমাদের শিক্ষিত পোলাদের মুখ হতে বের হয় কি?
হয় না। তাই না।
আরে ভাই কি সুন্দর আপনি ভাবছেন , আমি তো চাই নি। আমাকে সাধা হচ্ছে/ উপহার দিচ্ছে।
আরে ভাই , সমাজব্যবস্থার বাইরে গিয়ে কি মেয়ের বাবারা চিন্তা করতে শিখেগেছে। এতদিনের সামাজিক চলন কি এত দিন এক নিমিষে ভুলে তারা যাবে/ না ভুলে তারা থাকবে?
সরাসরি আপনি চাননি, এই জন্যই তো তারা মনে করে কিছু দেবার প্রয়োজন। আর তাই মেয়ের মাধ্যমে আপনাকে উপহার হিসেবে সাধে।
আর শিক্ষিত এই সব পাঠারা উপহারের নামে কি অবলীলায় যৌতুক কে সমাজে জারি রেখেছে।
এই তো গেল দেওয়া নেওয়া। আমরা যারা যৌতুক বিরোধী প্রচারণা করি/চালাই তারা কি এমন কোন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সমাজ কে কি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছি যে আমরা যেমন কথা বলি তেমন কাজ করি। না আমরা এক একটা বড় বড় মুনাফিক( যে কথা বলে এক আর কাজ করে আর এক)।
একটা ঘটনা বলিঃ “ একদা মহানবী (সঃ) আর নিকট এক মহিলা সাহাবী তার বাচ্চাকে নিয়ে হাজির। তিনি নবী (সঃ) কে উদ্দেশ্য করে বললেন হে আল্লাহর নবী আমি খুব গরিব। আমার এই বাচ্চাটা মিষ্টি খুব পছন্দ করে। আমার তাকে সব সময় মিষ্টি কিনে দিতে পারি না। আপনি যদি তাকে মিষ্টি কম খেতে বলেন তা হলে খুব ভাল হয়।
মহানবী (সঃ) তাকে পরেরদিন আসতে বললেন, তার পর পরেরদিন ......... এভাবে কয়েকদিন আসা যাওয়া করতে মহিলা বিরক্ত হলেন। মনে মনে ভাব্লেন সামান্য একটা অনুরোধ নিয়ে আসলাম আর এত দিন ঘুরছি।
পরে একদিন তিনি মহানবী (সঃ) এর কাছে গেলেন । তখন তিনি বাচ্চাকে বললেন তুমি বাছা মিষ্টি কম খাবে এবং দোয়া করে দিলেন।
মহিলা এবার মহানবী (সঃ) কে জিঙ্গেস করলেন হে আল্লাহর নবী... আমাকে এই কয়েকদিন কেন ঘুরালেন।
মহানবী (সঃ) বললেন...... হে......... আমিও খুব মিষ্টি পছন্দ করি, কিন্তু আমি যেটি বেশি খাই তা না কমিয়ে আমি কেমন করে ঐ বাচ্চাকে উপদেশ দিই। তাই আমি এই কয়েক দিন মিষ্টি কম খেয়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেছি । তারপর তোমার বাচ্চাকে উপদেশ দিয়েছি।
@@ মরালঃ নিজে আগে তা করিয়ে দেখান তার পর উপদেশ দিন।
তেমনি যারা যৌতুক নিয়ে কাজ করে বা সময় সময় লিখা লিখি করে উপদেশ ঝাড়ে তারা নিজে আগে প্রমান করে দেখাক তারা যৌতুক না নিয়ে বিয়ে করেছে। >> “একটা গরিব ঘরের মেয়েকে যৌতুকের বলি হতে রক্ষা করেছে তাকে বিয়ে করে।“
যেহেতু মধ্যবিত্ত বা উচ্চ বিত্ত পরিবারগুলিতে যৌতুক আদান প্রদান হয় জামায়কে উপহার প্রদান করে/ জামায় উপহার গ্রহণ করে। এটি সমাজে তেমন প্রভাব ফেলে না। যেমন গ্রামের একটি গরিব মেয়ের বিয়ের সময় যৌতুক দিতে গিয়ে মেয়ের বাবাকে বসত বাড়ি বা জমি বিক্রয় করতে হয়। এর ফলে ঐ পরিবারটি প্রায় ধ্বংস হতে চলে। কই এমন কোন উধারন তো চোখে পড়ে না আমরা গ্রামের একটা গরিব মেয়েকে বিয়ে করে তাকে যেমন যৌতুকের বলি হতে বাঁচিয়েছি তেমনি তাকে একটা সুন্দর জীবন দিয়েছি। কই এই ক্ষেত্রে আমরা ইসলামী শিক্ষা কাজে লাগাচ্ছি।
@@তা হলে কেন আমরা বড় বড় কথা বলি যৌতুক নিয়ে। তা হলে কি আমরা বড় মুনাফিক না।
@@ আর একটা ঘটনা বলিঃ সময় ১৮২০-৫৬ সাল, ভারতবর্ষে ক্ষমতায় ইংরেজরা। হিন্দু সমাজে সতী দাহ প্রথা নামে একটা ধর্মীয় আইন আছে। স্বামী মারাগেলে স্ত্রীকে তার সঙ্গে তার চিতায় আত্মাহুতি দিতে হবে। এর বিরুদ্ধে সমাজে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এক সমাজ সংস্কারক। তিনি হলেন রাজা রামমোহন রায় । তার প্রচেষ্টায় ১৮২৯ সালে আইন পাশ হয়ে বন্ধ হয় এই নিষ্ঠুর প্রথা। এর পর দেখা দিল আর এক সমস্যা। এই বিধবাদের আর কেও বিয়ে করছে না। এই সমস্যা প্রকট হয়ে উঠলে আর এক সমাজ সংস্কারক ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর সমাজে প্রচারণা চালানোর সঙ্গে সঙ্গে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে তিনি নিজ ছেলেকে এক বিধবার সঙ্গে বিয়ে দেন। এর পর ১৮৫৬ সালে হিন্দু বিধবা আইন বিয়ে পাশ হয়।
@@ মরালঃ একজন হিন্দু তিনি নিজে আগে কাজটি করিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখিয়ে দিলেন। শুধু কথা না কাজেও দেখাতে হবে। তা হলে মানুষ অনুসরণ করবে আপনাকে।
তিনি ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর ইসলামী একটা শিক্ষার প্রতিফলন করিয়ে দেখিয়েছেন। অথচ আমরা মুসলিমরা আমাদের ইতিহাস হতে শিক্ষা নিইনা। শিক্ষা গ্রহণ করি না ইসলামী আকিদা হতে। আমরা কথা বলি এক এর কাজ করি আর এক।
@@@ আর একটা বিষয় না তুলে পারছি না।
এটি হল দেন মোহর .। দেন মোহর একজন স্ত্রীর বৈধ অধিকার। ইসলাম একে নারীর জন্য প্রাপ্য করে দিয়েছে তার স্বামীর নিকট
>>> 'আর তোমরা নারীদের দেনমোহর খুশি মনে দিয়ে দাও। যদি তারা খুশি মনে তার কিছু ছেড়ে দেয় তোমরা তা স্বচ্ছন্দে ভোগ করো (সুরা-নিসা)।'
বেঙ্গলি, ভলিউম-১, ৯১ পৃষ্ঠায় এ মাহর, মহর, মোহর, মেহর, মহরানা, দায়ন মহর, দেনমোহর, ডাওয়ারের সংজ্ঞার বাংলা তর্জমা এরকম। দেনমোহর হলো_কিছু টাকা অথবা অন্য কোনো সম্পত্তি যা স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে বিয়ের মূল্যস্বরূপ পাওয়ার অধিকারী হয়।
আইনবেত্তারা ব্যাখ্যায় বলেন, মূল্য শব্দটি ঠিক চুক্তি আইনে ব্যবহৃত শব্দের অর্থে হয় না। মুসলিম আইনে দেনমোহর স্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন হিসেবে স্বামীর ওপর আরোপিত একটি দায়িত্বমাত্র।
পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, 'স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে মোহরানা পরিশোধ করা হয় প্রধানত দুটি কারণে।
@@একটি হচ্ছে, ধর্মীয় অধিকার লাভের জন্য এবং অপরটি হচ্ছে স্ত্রীর প্রতি একটি দায় বা কর্তব্য সম্পাদনের জন্য।' @@
এ জন্যই সাধারণের বোধগম্য ভাষায় এটাকে বলা হয়, 'হক-ই-মহর'। কোরআন শরিফে স্ত্রীকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার অর্ঘ্য হিসেবে দেনমোহর বা মোহরানা পরিশোধের জন্য বারবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি স্ত্রী যদি ক্রীতদাসীও হয়, তবুও মোহরানা তাঁর হক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসলামের ইতিহাস থেকে জানা যায়, হজরত আলী (রা.) যখন মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা ফাতিমা (র.)-কে বিয়ে করেন তখন মোহরানা দেওয়ার মতো আলীর কোনো নগদ অর্থসম্পদ ছিল না। বিয়ের সময় তাঁর মালিকানায় ছিল শুধু উট, তরবারি আর বর্ম। উট-তরবারি জীবনযাপনের জন্য অতি আবশ্যক ও জরুরি বলে নবীজি আলীকে উট-তরবারি বাদ দিয়ে বিয়েতে তাঁর বর্ম মোহরানা হিসেবে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। পরামর্শ যথারীতি পালন করেন আলী।
ইতিহাস ও মহাগ্রন্থ বলে, একজন উদার ও ন্যায়পরায়ণতা স্ত্রী স্বামীর আর্থিক ও বাস্তব প্রতিকূলতা বুঝে ইচ্ছে করলে মোহরানার দাবি ত্যাগও করতে পারেন। কিন্তু একবার যদি মোহরানা নির্ধারিত হয়ে যায়, বিশেষত লিখিত আকারে, তবে সে মোহরানা স্বামীকে অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। কোনো স্ত্রীকে তাঁর স্বামী বা অন্য কেউ মোহরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কোনো প্রভাব খাটাতে বা চাপ প্রয়োগ করতে পারবে না। একটি উল্লেখযোগ্য হাদিসের বিবরণে পাওয়া যায়, 'সে-ই সবচেয়ে ভালো পত্নী যাঁর মোহর পরিশোধ করা যায় সবচেয়ে সহজ উপায়ে' (আল-হাতামি, কিতাব আন-নিকাহ ৪:২৮১)।
মুসলিম বিবাহ চুক্তিতে মোহর আবশ্যিক একটি উপাদান। কোরআন শরিফে মোহর বা মোহরানাকে সাদাক, আজুর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যার অর্থ কনেকে এমন একটি উপহার দেওয়া যেখানে কোনো ক্ষতি নেই, বরং লাভ রয়েছে, যেটি বাধ্যতামূলকও বটে। কোরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহ এই উপহার স্বাধীন ও মুক্তভাবে দান করতে বলেছেন (৪:৪)।
অর্থ, সম্পত্তি বা কোনো কিছুর দখল মোহরানা হিসেবে স্বামী তাঁর স্ত্রীকে দান করবেন। স্ত্রী যার মালিক হবেন নিরঙ্কুশভাবে। বিয়ের আগে স্ত্রী যদি একদম কপর্দকশূন্যও থাকেন, মোহরানার অর্থ বা সম্পত্তির মাধ্যমে তিনি দ্রুত সেই অবস্থান ঘুচিয়ে ফেলতে পারবেন।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর প্রত্যেক স্ত্রীকে মোহর বা মোহরানা প্রদান করেন এবং তাঁদের দাসবৃত্তি থেকে স্বাধীন করে দেন। তিনি তাঁর অন্যতম স্ত্রী উম্মে হাবিবাকে চার হাজার দিরহাম মোহর দিয়েছিলেন। এ মোহর নাকি নির্ধারণ করেছিলেন তৎকালীন আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজাশি (আবু দাউদ, 'কিতাব এন নিকাহ' ২:২৩৫)।
মোহরের সর্বোচ্চ পরিমাণ কত হবে, তা কখনোই নির্ধারিত করা হয়নি। স্বামীর অর্থনৈতিক যোগ্যতা, অবস্থাভেদে এটি নির্ধারিত হতো। এ বিষয়ে একটি দৃষ্টান্তমূলক ঘটনার নজির রয়েছে। দ্বিতীয় খলিফা ওমর বিন খাতাব (উল্লেখ্য, খলিফা ওমরকে ইসলামের সব মাহজাবের অনুসারীরা এক রকমভাবে গ্রহণ করেন না) তাঁর ভক্ত সমাবেশে ঘোষণা দেন, নসিহত করেন যে, 'কেউ খুব ভারী ও বিপুল রকমের মোহর নির্ধারণ করবেন না। কারণ নবীজি মুহাম্মদ (সা.) ৪০০ দিরহামের বেশি পরিমাণ মোহর কাউকে দিতে নিষেধ করেছেন।' তখনই এ কথার প্রতিবাদ জানান, ওই সমাবেশে আসা এক নারী। তিনি কোরআনের ৪:২০ সুরা ও আয়াতের ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেন, 'তুমি যদি একজনের পরিবর্তে অন্য একজনকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করো এবং যদি প্রথম স্ত্রীকে মোহরানা হিসেবে কয়েক রাশি স্বর্ণমুদ্রাও দাও, তাহলে তার একতিল পরিমাণও তুমি সাবেক স্ত্রীর কাছ থেকে ফেরত নিতে পারবে না। খলিফা ওমর সঙ্গে সঙ্গে নিজের কথাটি প্রত্যাহার করে ওই নারীর বক্তব্যটিকে সঠিক বলে মন্তব্য করেন 'যিনি যে পরিমাণ মোহর দিতে চান তিনি সে পরিমাণই দিতে পারবেন' (ইবনে হাজর আল-আসকালানি, ফাত আল-বারী, ৯:১৬৭)।
>>> তাই আমাদের( পুরুষদের) অন্তত খুশী হওয়া উচিত এই ভেবে---
১৮-২৫ বছর লালন পালন করে কত বিপদের হাত হতে বেঁচে বর্তে রেখে একটি মেয়েকে একজন বাবা-মা অপরিচিত এক যুবকের হাতে তাদের এত আদরের কন্যাকে তুলে দিচ্ছে। এটি ভাবলেই আমার মেয়ের বাবা-মায়ের প্রতি কৃতঞতা এসে যায়। যেই বীরপুরুষ আমি হয় না কেন—একজন মা বাবা তার অতি প্রিয় এক মেয়েকে আমার হাতে তুলে দিচ্ছেন। মেয়েটি আমার বাড়িতে এসে থাকছে। কত বড় একটা বিষয়। এটি ভাবলে উল্টো আমার মনে হয় মেয়ের বাবা-মাকে যৌতুক দেওয়া প্রয়োজন। যদিও এটি কেমন কেনা বেচার মত মনে হয়।( জাস্ট আমার ফিলিংস ) ।
আমি অনেকের কাছে শুনেছি বাসর রাতে অনেকে নতুন বিয়ে করা বউ এর কাছে দেনমোহরের টাকা মাফ করে দেবার জন্য অনুরোধ করে। নতুন একটা মেয়ে এমনিতেই ভয়ে থাকে ঐ রাতে , অনিশ্চিত অপরিচিত একজনের সঙ্গে রাত কাটাবে ।আর ঐ রাতে প্রথম ব্লাক মেইলিং করে বসে স্বামী দেবতা। মেয়েটিও ভয়ে লজ্জায় মাফ করে দেয় দেন মোহরের টাকা। কত বড় ছোটলোক ও নিলজ্জ হলে এই অনুরোধ করতে পারে। দারুন একখানা চাল মাইরি।
আরে ভাই কি দরকার ৫-৭ লাখ টাকা কাবিন করার। আপনার যা দেবার মত সক্ষমতা নেই তা কেন করতে যাবেন। যে টুকু আপনি পারবেন সে টুকু দেবার চুক্তি করুন। এ ক্ষেত্রে মেয়ে পরিবারের কিছুটা দোষ যে নাই তা কিন্তু নয়। তারা বিয়ের আগেই মেয়ের তালাকের ভাবনা । আর এই ভয় থেকে আসে কাবিন বেশি টাকা দেনমোহর করার ভাবনা।
অথচ এই কাবিনের টাকা পরিশোধ করা একজন স্বামীর জন্য বাধ্যতা মূলক।
তাই আমি মেয়ে পক্ষের অবিভাবকদের নিকট আবেদন করব--- এমন কোন পরিমাণ মোহর আপনারা ঠিক করবেন না যা একজন পুরুষের দেবার ক্ষমতা নাই।
অনেকে বলে কিস্তিতে কিস্তিতে পরিশোধ করতে । আরে ভাই বিয়ের পর এটি কি ব্রাক ব্যাংকের কিস্তি যে মাসে মাসে পরিশোধ করবেন । এটি যেমন খারাপ দেখায় তেমনি কেমন দৃষ্টি কটু লাগে। তবে তা করতে হলে আবার লাভও আছে। লাভতা হল এই--- ১০০% ঐ টাকা আপনার সহধর্মিণী ওর বাবার বাড়ি পাঠাবে না। আপনাদের সংসারেই খরচ করবে।
মোহর নগদ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। তাই ছেলের সাধ্যের মধ্যে এমন একটা পরিমাণ ঠিক করা প্রয়োজন যা সে একবারে পরিশোধ করতে পারে। আর পুরুষ হিসেবে প্রথম রাতে(দেনমোহরের টাকা মাফ করে দেবার জন্য অনুরোধ) এমন একটা আত্মমর্যাদা হীন কাজ কেমনে আপনি করবেন।
>>> সৌদিতে এই আইনের এমনই কড়াকড়ি যে আগে বিয়ে করতে যাওয়া যুবককে তার দেন মোহরের অর্থ সংগ্রহ করতে হয় তার পর বিয়ের কথা। তাই মনে করি আমাদেরও এমন একটা ভাবনা ভেবে দেখা দরকার।
তাই আসুন বিয়ের উদ্দ্যের মাঝে নিচের বিষয়গুলির প্রতিফলন ঘটিয়ে নিজেদের প্রকৃত মুসলিম বানায়ঃ
১। ধর্মের একটা দিক পালনের সঙ্গে সঙ্গে একটি মেয়েকে সুন্দর একটি পরিবেশ দিই।
২। জীবন সঙ্গিনী হিসেবে একজন মেয়েকে নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে একটি মেয়েকে যৌতুকের করাল থাবা হতে রক্ষা করি।
৩। যৌতুককে না বলে বরং মেয়েদের দেনমহোর পরিশোধ করি।
এই হোক আমাদের জীবনের লক্ষ্য।
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন