ইসলাম ও তথ্য সন্ত্রাস

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ১৮ নভেম্বর, ২০১৩, ০৩:০৯:১৬ দুপুর

ইসলাম ও তথ্য সন্ত্রাস

কয়েকদিন আগে “ ইসলাম ও আধুনিক ইসলাম বিদ্বেষী” শিরনামে একটা লিখা আমি লিখেছিলাম। এবার আমার আলোচনার বিষয় ইসলাম সম্পর্কে এই “আধুনিক ইসলাম বিদ্বেষীরা” কে কি ভাবে তথ্য বিকৃত করে তথ্য সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে তা দেখব। তাঁর আগে আসুন নিচের কোরআন এবং হাদিসের বানী গুলি পড়ে নিই-----

ණঃ সূরা বাকারাহ;৪২নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন।

"তোমরা সত্যকে মিথ্যা দিয়ে আড়াল করো না এবং জেনেশুনে সত্য গোপন করো না।" (২:৪২)

ණঃ মিথ্যাবাদীদের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ বলেন,‘আল্লাহ অবশ্যই জেনে নেবেন যারা সত্যবাদী এবং নিশ্চয়ই জেনে নিবেন মিথ্যুকদেরকে। যারা মন্দ কাজ করে, তারা কি মনে করে যে, তারা আমার হাত থেকে বেঁচে যাবে? তাদের ফায়ছালা খুবই মন্দ’ {আনকাবূত ৩-৪}।

ණঃ ”আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বিবেক দিয়েছেন; কু প্রবৃত্তি দেন নি। পশুদেরকে কু প্রবৃত্তি দিয়েছেন; বিবেক দেন নি।আর মানুষকে কু প্রবৃত্তি ও বিবেক উভয়টি দিয়েছেন।

সুতরাং মানুষের বিবেক যখন কু প্রবৃত্তির উপর প্রাধান্য পায় তখন সে ফেরেশতাদের সমপর্যায়ে পৌঁছে যায়। আর যখন তার কু প্রবৃত্তি বিবেকের উপর প্রাধান্য পায় তখন সে পশুর স্তরে নেমে যায়।”

- আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাHappy

ණঃ হাদীস শরীফে আছে, রাসূল (সঃ) বলেছেন, ''তোমরা সর্বদা সত্য আঁকড়ে ধরবে। কারণ সত্য (মানুষকে) পুণ্যের দিকে ধাবিত করে আর পুণ্য (মানুষকে) জান্নাতে নিয়ে যায়। একজন মানুষ যখন সর্বদা সত্য বলতে থাকে এবং সত্য বলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে, তখন সে একপর্যায়ে মহান আল্লাহ্ তায়ালার কাছে 'সিদ্দিক' বা মহা সত্যবাদী বলে লিখিত হয়ে যায়।

আর তোমরা মিথ্যা সর্বোতভাবে বর্জন করবে। কারণ মিথ্যা (মানুষকে) পাপের পথে পরিচালিত করে এবং পাপ (মানুষকে) জাহান্নামে নিয়ে যায়। একজন মানুষ যখন মিথ্যা বলে এবং মিথ্যা বলার সুযোগ খোঁজে বেড়ায়, তখন সে এক পর্যায়ে মহান আল্লাহ্ তায়ালার কাছে 'কাজ্জাব' বা মহা মিথ্যাবাদী বলে লিখিত হয়ে যায়।'' (সহীহ বুখারী, হাদীস নং- ৫/২২৬১; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ৪/২০১২-২০১৩; সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং- ৪/৩৪৭)

প্রমানিত হল মানুষ তাঁর কু প্রবৃত্তি দ্বারা পরিচালিত হয়ে সত্য কে মিথ্য মিথ্যকে সত্য বানিয়ে প্রচার প্রচারনা করবে এবং জাহান্নামের দিকে ধাবিত হবে।

তাহলে আধুনিক এই সব “ইসলাম বিদ্বেষীরা” নিঃসন্দেহে খতিগ্রস্থ এবং জাহান্নামী।

@@তথ্য সন্ত্রাসঃ এবার আমরা দেখি এরা কি ভাবে অতি সরল কথার মাধ্যমে তথ্য সন্ত্রাস করছে। এই সব আধুনিক ইসলাম বিদ্বেষীরা মানবতার ধারক বাহক সেজে তাদের লিখার ও বক্তব্যের মাধ্যমে এত সুন্দর কৌশলে ইসলাম ও ইসলামি আকিদার বিভিন্ন বিষয়ে এত সুখ্য ভাবে ব্যবহার করবে যে একটু সচেতন ভাবে না পড়লে আপনার মনে হবে না কথাটি বা তথ্যটি দ্বারা ইসলামের বিরুদ্ধাচারন করা হয়েছে। এদের কৌশল হল মানবতার কথা বলে তাদের লিখায় কোন না কোন ভাবে ইসলামকে জড়িয়ে ফেলা। পড়লে মনে করবেন আহা ঠিক তো, ভাল কথা তো। কিন্তু একটু গভির ভাবে ভাবলে দেখবেন এরা উপরে যাহা বলতে চাচ্ছে তাহা ইহাদের মূল বক্তব্য নহে। ইসলামি বিভিন্ন কথা যেমন বেহেস্ত, দোজখ, নামাজ রোজা ইত্যাদি বিষয়ে এমন সুন্দর ভাবে অবতারণা করবে মনে হবে এই তো বা তাই তো ঠিক।

@@প্রথম চরিত্রঃ আর বাংলা ভাষায় এই মহান কাজটি সবচেয়ে ভাল করেছেন জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক হুমায়ন আহম্মেদ। এনার লিখা পড়ে আমিও খুব আনন্দ পাই এটি সত্যি। তাঁর বিভিন্ন উপন্যাসে একটু খেয়াল করে পড়লে দেখবেন হুর, বেহেস্ত ....................................... নবী মুহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে বিভিন্ন কথা তিনি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছে। এবার তাঁর উপন্যাস গুলি যে সব যায়গায় এই সব তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে সে সব জায়গা এবার একবার পড়ে দেখুন। কি সুন্দর ভাবে কি সুখ্য ভাবে ইসলামকে হেয় করা হয়েছে।

@@দ্বিতীয় চরিত্রঃ তসলিমা নাসরিন কি ভুলে গেছেন? এই নারীবাদী লেখিকা তো একে বারে খোলা খুলি ভাবে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে (খ) কুরআন এবং হাদিসের অপবেখ্যা করে বিতর্ক তৈরি করেছে( খ“ইসলাম ও আধুনিক ইসলাম বিদ্বেষী” তে দেখুন)।

@@ তৃতীয় চরিত্রঃ বাংলা বিভিন্ন সিনেমাতে আপনারা ইসলাম সম্পর্কে বিভ্রান্ত তথ্য পরিবেশন করতে দেখবেন। কি সুন্দর ভাবে মাজার পুজার প্রচারনা করছে এই বাংলা সিনেমা গুলি। আর এগুলি দেখে ইসলামি মূল স্রোত হতে মাজার পুজাকেই সাধারণ মানুষ ইসলাম বলে মনে করছে।

@@ ইংরেজি ও ভারতীয় সিনেমাঃ বর্তমান আধুনিক যুগে ইহুদী নিয়ন্ত্রিত বিশ্ব মিডিয়া বাংলাদেশও এর বাহিরে নয়। হলিওডের বিভিন্ন সিনামায় একটু খেয়াল করলে দেখবেন আমরা মুসলিমরা সন্ত্রাসী এবং আমাদের বিভিন্ন ইসলামি আকিদাকে এরা বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করছে। বলিউডের একটা সিনেমার কথা মনে পড়ছে, মাই নেম ইজ খান। এই সিনেমা দেখে আমরা কত ভাবে খান কে ধন্যবাদ দিয়েছি। ও বাবা একটু খেয়াল করে দেখলে দেখবেন ইসলামি আকিদা কে কি নগ্ন ভাবে হেয় করা হয়েছে। স্বামী মুসলিম আর স্ত্রী হিন্দু কি সুন্দর ভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে।

তা যাই হোক একটু খেয়াল করি এবং একটু গভির ভাবে ভেবে দেখি এই সব বিষয়ে।

আজ এই লিখা যে জন্য মাথায় আসল তা স্ব-ঘোষিত নাস্তিক আসিফ মহিউদ্দিন এর একটা লিখা পড়ে। লিখাটা পড়ে খুব ভাল লাগল ফেসবুকে দিলাম শেয়ার করে। সত্যি বলছি। আমি ফেসবুকে ভাল যে কোন লিখা দেখলে শেয়ার করে দিই, এটি কে লিখল তা দেখি না। সে কোন দলের তা ভাবি না। ভাবি ভাল একটা লিখা সবার পড়া উচিত।

তো সুন্দর মানবীয় লিখার মাঝে আসিফ কি সুন্দর ভাবে ইসলামের নামে বিষ বৃক্ষ ঢুকিয়ে দিয়েছেন। লিখাটা গোটা পড়ে এসে দেখুন

আসিফ

কি চমৎকার ভাবে ইসলামের নামে তথ্য সন্ত্রাস করেছে আসিফ।( ছেলেটার বয়স খুব বেশি হলে এগারো বারো বছর হবে। জিজ্ঞেস করতেই বললো কেরানীগঞ্জের কোন এক মাদ্রাসায় পড়ে। বাবা মা মাদ্রাসায় দিয়ে চলে গেছে, আর বিশেষ খোঁজ খবর নেয় না। সে মাঝে মাঝেই চুরি করে, তাদের একটা চুরি করার দলও আছে। সেই দলের বন্ধুবান্ধব মিলে চুরি করার পরে সেই টাকা দিয়ে সিনেমা দেখে, সন্ধ্যার সময় ভালমন্দ খাওয়া দাওয়া করে এবং টাকার একটা বড় অংশ তাদের পরিবারকেও পাঠায়।)

@@@মাদ্রাসাতে কি চুরি করা শিক্ষা দেওয়া হয়?

দেখুন মাদ্রাসার আড়ালে কি সুন্দর ভাবে কি সুখ্য ভাবে ইসলাম কে হেয় করা হয়েছে। কি সুন্দর ভাবে প্রথম ছেলেটার ক্ষেত্রে মাদ্রাসাকে জড়িয়ে মিথ্যা একটা তথ্য পরিবেশন করেছে।

তো এই ভাবেই এরা তথ্য সন্ত্রাস করতে থাকবে এবং আমরা এর প্রতিবাদ করতে থাকব। আল্লাহ আমাদের এদের ফিতনা হতে আমাদের রক্ষা করুণ। ( লিখাটা একটু এলো মেলো হয়ে গেছে বলে মাফ চাচ্ছি, )

বিষয়: বিবিধ

১০৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File