“কাজের মেয়ে”
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ০৭ অক্টোবর, ২০১৩, ০২:২২:৫২ দুপুর
“কাজের মেয়ে”
কাজের মেয়ে বলতেই চোখে ভেসে উঠে গ্রামের দরিদ্র পীড়িত পাতলা খেতে না পাওয়া হাড়জিরজিরে একটি মেয়ে। গ্রামের দরিদ্র মা-বাবারা অনেক অনিচ্ছুক হয়ে বা একটু আর্থিক প্রলোভনে পড়ে বা মেয়েকে একটু ভাল রাখার জন্য নিজেদের আদরের ধন মেয়েকে ধনী শহুরে কোন পরিবারে কাজ করতে পাঠান।৫-১৩ বছরের এই মেয়েগুলি ধনী ঐ শহুরে পরিবারে গিয়ে নিজেদের পরিশ্রম দিয়ে গৃহ কর্ত্রীর মন যুগিয়ে চলার নিরন্তন চেষ্টা করে চলে। সেই সকাল ৬টা হতে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এদের নিরন্তন পরিশ্রম। পান হতে চুন খসলে গালি ও মারধর যেন একটি কমন সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে আজ আমাদের শিক্ষিত মহিলা সমাজে। এই সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত আমাদের কম বেশি মা-বোনরা। শাশুড়ি-বৌ এর চিরন্তন ঝগড়ার আর একটা চিরন্তন কমেডি যেন এই গৃহ কর্ত্রী কর্তৃক কাজের মেয়েকে নির্যাতন। এই কমেডি যেন ঘরে ঘরে প্রতিনিয়ত নতুন মাত্রায় নির্মিত হচ্ছে।
এই যারা কাজের মেয়ে আনেন বা নেন এই সব মহিলারা কি একটু চিন্তা করে না একটুকুন একটা মেয়ে বাবা-মা ছেড়ে বিনা ওজরে ওকে সাহায্য করতে ওদের সাথে শহরে এসে বসবাস করছে, এটি ভাবলেই তো ঐ টুকুন একটা বাচ্চা মেয়ের উপর কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত।
আমার এই এত বয়স তাও মা-বাবা আর বাড়ির জন্য মন আইডাই করে। আর ঐ বাচ্চা মেয়ের মানসিক অবস্থা চিন্তা করুন। বাবা-মা ওর প্রিয় গ্রাম ছেড়ে একটু ভাল থাকার আশায় সব ছেড়ে আপনার সঙ্গে শহরে এসেছে অনিচ্ছায়, যে কিছুদিন আগেও গ্রামের মাঠ ঘাটে হৈ-হুল্লু করে খেলত বা বন্ধুদের সঙ্গে প্রাইমারি স্কুলে যেত। সে কি না আজ বন্দি জেলখানার মত শহরে (ঢাকা সহ অন্য শহরে) এসেছে তোমাকে সাহায্য করতে।
>> লেখাপড়া বা শিক্ষা বাদ দিয়ে ও আসছে তোমাকে সাহায্য করতে। তারমানে লেখাপড়া বা শিক্ষা তার একটি মৌলিক চাহিদা। যা আমাদের মহান সংবিধানে ৪ টি মৌলিক চাহিদার মধ্যে একটি। যা সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে অনুচ্ছেদ-১৫ তে মৌলিক চাহিদা এবং অনুচ্ছেদ- ১৭ তে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার সম্পূর্ণ বিপরীত।
>>সকাল ৬ টা হতে রাত ১০ টা পর্যন্ত ঐ পিচ্চি মেয়েটাকে খাটাও। যেখানে আন্তর্জাতিক লেবার-ল বলেছে একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবেনা। আবার দেশের আইনে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ। আর তুমি এভাবে প্রতিনিয়ত আইন ভাঙছ।
নিজে দুপুরে খেয়ে ভারতের জি......... স্টার ...... টিভির পচা সিরিয়াল দেখতা দেখতে ভাত ঘুম দাও। আর কাজের মেয়েকে লাগিয়ে দাও পা হাত টিপতে। আরামে যাও ঘুমিয়ে। টিপনিতে একটু বিরতি হলেই ঠিক টের পাও। লাগাও দু একটা চড় থাপ্পড় বা ছোঁটাও গালের ফুয়ারি। কি একটু খারাপ লাগেনা না? একটু কি চক্ষু লজ্জা নেই তোমাদের ঐ টুকুন বাচ্চাকে খাটাও সারাদিন।
ওমা এটি ভাবলেই তো তোমার কৃতজ্ঞ হবার বদলে তুমি শালি( আমার হবু বউ এর বোনরা, মুখ বেশ খারাপ করতে পারলাম না, যদিও চাচ্ছিল) তার সঙ্গে কর খারাপ ব্যবহার।
তোমাদের কি একটু মনে থকেনে দেশের আইনের কথা, একটু কি ভয় কাজ করে না ধর্মীয় আইনের কথা। তোমরা কেমন করে পার ঐ টুকুন একটা বাচ্চা মেয়েকে মারতে বা বকতে।
ওকে একটা গ্লাস ভেঙ্গেছে, ঐটা যদি তোমার ঐ রকম বয়সের মেয়ে বা ছেলে ভাঙত তাকে তুমি ঐরকম ভাবে বকতে বা মারতে?
১০০% না । ভেঙ্গেছে, কয়-টাকা দাম ঐটির। একটু ভাব ভাব.........।
@@একটা ঘটনা না বললেই নয়: আমি তখন রাজশাহীতে(২-৩ বছর আগে) থাকি তখন পাশের ফ্লাটের আন্টির কাজের মেয়েকে সবসময় বকা ঝকা করত মাঝে মাঝে মারও চলত। সবচেয়ে বড় যে বিষয়টা চোখে লাগত সেটি হল: কোথাও যাবার সময় দেখতাম আন্টি ও তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে বসেছে রিক্সায় আর কাজের মেয়েকে বসিয়েছে পায়ের কাছে( রিক্সায় যেখানে আমরা পা রাখি) । পিচ্চি মেয়েটা হাসিমুখে ওখানে বসে রিকশাওয়ালার ছিটের পিছনের রড ধরে বসে। অথচ খুব সহজে ওকে বসানো যেত ছিটের ওপরে( আমরা ৩-৪ জন যেমন ওপর নিচ হয়ে বসি।) এই ঘটনা রাজশাহীতে বেশ দেখতাম।
এদের কি শিক্ষিত বলবেন, না মানুষ বলবেন? অনেকবার প্রতিবাদ করতে ছেয়েছি কিন্তু সাহস হয়নি। ঐ ঘটনা মনে হলে এখনো মন খারাপ হয়।
@@ আরেকটা ঘটনা না বললেই নয়: এক অফিসের বড় বাবু তার পিয়নের সঙ্গে খুব বাজে ব্যবহার করে। তো এই নিয়ে পিওন বেচারা খুব নাখোশ। তো সে তো আর বড় বাবুকে কিছু বলতে পারে না। তাই সে প্রতিশোধ নিত অন্য ভাবে। বেচারা করত কি জানেন। বড় বাবুর চা বানিয়ে তাতে দিত নিজের থুতু। (ওয়াক থু) আর পরিষ্কার পানিতে মিশিয়ে দিত কলের পানি।
তো নিজে তো কিছু কর না। চাটাও করতে বল কাজের মেয়েকে।ওর যদি তোমার প্রতি রাগ থাকে, আল্লাহ মালুম এমন কত কিছু তুমি খাবে। (ওয়াক থু)
## এবার আসুন দেখি ইসলাম কি বলে:
কাজের লোকদের প্রতি সদাচরণ রসূলের সুন্নত ।গৃহপরিচারক ও গৃহপরিচারিকা অর্থাৎ যাদের সাধারণ ভাষায় আমরা গৃহের কাজের লোক বলি তাদের প্রতি সদাচরণ করা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত। যারা এ সুন্নতের বরখেলাপ করেন তারা গোনাহের পথই বেছে নেন। খাদেমদের সঙ্গে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে যেমন সদাচরণ করতেন তেমনি তার অনুসারীদেরও একই শিক্ষা দিয়েছেন।
@@তিনি খাদেম বা কাজের লোকদের সম্পর্কে বলেছেন, এরা তো তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ-পাক এদের তোমাদের অধীন করেছেন। তোমরা যে খাবার খাও, তাদেরও তেমন খাদ্য দিও। আর তোমাদের কাপড় চোপড়ের মতো ওদেরও পোশাক পরতে দিও। তাদের সাধ্যের বাইরে কোনও কাজ দিওনা। যদি দিয়ে ফেল, তবে তোমরাও তাদের সাহায্য করো।’ (মুসলিম)
আমাদের মধ্যে অনেকে নিজেদের মুমিন বলে পরিচয় দেন কিন্তু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের প্রতি ততটা মনোযোগী নন। কাজের লোকের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো অনেকের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ আল্লাহর হাবিব, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাজের লোকদের সঙ্গে ক্ষমাশীল হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
@@ তিরমিজি শরিফে বলা হয়েছে— এক লোক এসে রসূলকে (সা.) জিজ্ঞাসা করছিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার গোলাম বা খাদেমকে কয়বার মাফ করবো? রসূল (সা.) চুপ থাকলেন।লোকটি তৃতীয় বার একই প্রশ্ন করলে উত্তরে রসূল (সা.) বললেন, প্রতিদিন সত্তরবার। (তিরমিযী),
@@একদিন রাসূল (সা.) দেখলেন, তারই এক সাহাবি আবু মাসউদ এক চাকরকে মারধর করছেন। তখন তিনি তাকে ডেকে বললেন, শোন হে আবু মাসউদ! মনে রেখ, তুমি এ গোলামটির সঙ্গে যে অধিকার দেখাচ্ছ, মহান আল্লাহ এর চেয়েও বেশি তোমার ব্যাপারে শক্তিশালী ও অধিকারী। এমন কথা শুনে অনুতপ্ত সাহাবি তখনই তাকে মুক্ত করে দিলেন। রাসূল (সা.) তাকে বললেন, এটি যদি তুমি না করতে তবে অবশ্যই তোমাকে আগুনে জ্বলতে হতো। (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী)
>>আল্লাহ আমাদের গৃহ-পরিচারক ও পরিচারিকাদের সঙ্গে মানবিক আচরণের তৌফিক দান করুন।
### আমার কিছু প্রস্তাবনা: আমি কাজের মেয়ের সাথে জড়িত ৩ টি পক্ষকে নিয়ে কিছু প্রস্তাব করেছি। এগুলি মানলে আমার মনে হয় কাজের মেয়েদের প্রতি অন্যায় আচরণ কমবে।
## প্রথম পক্ষ মেয়ের অভিভাবক: আপনারা মেয়েকে পাঠিয়ে কি নিঃচিন্তে থাকেন তা খুব ভাল লক্ষণ নয়। তাই আপনাদের বলি:
১। যে বাড়িতে কাজে পাঠাচ্ছেন তাদের সম্পর্কে ভালভাবে খোঁজ নিন।
২। আগেই বেতন সহ অন্যান্য বিষয়ে চুক্তি করে নিন।( তা ছাড়া ঠকার সম্ভাবনা আছে)
২। ওদের পরিবারের কর্ত্রীর ফোন নম্বর নিন। দরকার হলে ওদের ২-৩ টা নম্বর নিন।
৩। মাঝে মাঝে আপনার আদরের সন্তানের সঙ্গে ফোনে কথা বলুন।
৪। প্রতি ৪-৬ মাস অন্তর মেয়ের সাথে দেখা করতে যান( এটি অন্তত করুন। আর এমন ভাবে যান যেন রাতে ঐ বাসায় আপনাকে থাকতে না হয়।)
@@ স্বামী বেচারা: আপনি বাড়ির কর্তা। আর আপনার বউ এর আরাম আয়েশ করার ব্যাপারে আপনিই দেখবেন। আপনার স্ত্রী কাজে কষ্ট হলে আপনি কাজের লোক জোগাড় করবেন।
হাদিসে আছে: স্ত্রীর কষ্ট হলে তার জন্য বাঁদির ব্যবস্থা কর। যত সম্ভব এরকম( সূত্র সহ কেও শেয়ার করলে বাধিত থাকব)
তার আগে স্ত্রীর সঙ্গে নিচের বিষয়গুলি সম্পর্কে কথা বলে নিন।
১। আগেই স্ত্রীকে সতর্ক করুন কাজের মেয়েটির সঙ্গে কোন রকম খারাপ ব্যাবহার করা যাবেনা।
২। কোন রকম শারীরিক আঘাত করা যাবে না।
৩। ভাল ভাবে খাবার খেতে দিবে।
৪। মাঝে মাঝে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলুন। তার পোশাক, চুরি ফিতের কোন আবদার আছে কি না।
৫। ৫-৬ মাস পর একসেট কমদামী হলেও উপহার দিন। এর দিন তা স্ত্রীর হাত দিয়ে।
অনেকে কাজের মেয়েকে এমন সব পোশাক( ছেড়া, ময়লা, পুরাতন) পরান তা দেখলে ওদের বখীলাপনার প্রমাণ মেলে ।
@@ মহিলাদের প্রতি: আপনি মা , আপনি মেয়ে। একজন মা বা মেয়ে হয়ে কেমন করে পারেন ঐ টুকুন বাচ্চার প্রতি খারাপ আচরণ করতে। আপনার তো বাচ্চা আছে আছে না। তো আপনাদের প্রতি আমার একান্ত অণুরোধ একটু সহনশীল আচরণ করুন। এর নিচের বিষয়গুলির প্রতি একটু নজর দিন। কারণ আপনার হোমমিনিষ্টি একান্ত আপনার। এখানে কেও নাক গলায় না। এই মিনিষ্টির রাণী পরিবারের সকলে এর প্রজা । তাই রাণী হিসেবে আপনি একটু ভদ্র ও বিবেচক না হলে তো রাজ্য চলবেনা। রাজ্যে তো কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা দেবে।
১। একটু বিবেকবান হন।
২। গরিব বলেই তো আপনার বাড়ি কাজ করতে এসেছে। ওরও বাবা-মা ,ভাই-বোন আছে, আছে পরিবার। ও এখন তো আপনার পরিবারের সদস্য। ওর সঙ্গে একটু ভাল আচরণ করুন।
৩। আপনি যা খান ওদের তা খেতে দিন।
৪। গরিব বলেই তো পেটের দায়ে কাজ করতে এসেছে। এদের খাবার প্রতি একটু লোভ থাকে। আপনাদের বাড়ির নতুন নতুন খাবার ও জীবনে দেখেনি। মাঝে মাঝে চুরি করে তাই খেয়ে ফেলে। এতে না বকে বরং বুজিয়ে বলুন এবং ওকেও আপনাদের সঙ্গে খেতে দিন দেখবেন ও আর চুরি করে খাবে না।
৫। ও আপনার প্রতিটি কাজের হুকুম পালন করে। তাই আপনার স্বার্থে ওকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। ওকে পরিষ্কার জামা কাপড় পরান। মাঝে মাঝে মার্কেটে সঙ্গে গেলে চুরি , ফিতে, ক্লিপ, নেল পালিশ, মেহেদি, চুরি কিনে দিন। এগুলির প্রতি একটু লোভ হয় ওদের। ছোট মানুষ তো! ওর চোখের দিকে একটু খেয়াল করলেই আপনি ধরতে পারবেন ও কি চায়। দেখুন কেমন জুল জুল করে তাকাচ্ছে কোন জিনিসের প্রতি। এই ছোট ছোট কাজ ও ব্যবহারে ও আপনার কেনা গোলাম হয়ে যাবে।
@@ একটা গল্প না বললেই নয়: সাধারণ মানুষদের সন্তুষ্ট করা বা তাদের দিল জিতে নিতে বেশি কিছু করা লাগে না। একটু মিষ্টি কথা ও একটু ভাল ব্যবহার করলে ওরা আপনার ভক্ত হয়ে উঠবে। এটি আমি আমার জীবনের প্রতি পদে পদে শিখছি।
আমি তখন রাজশাহী থাকি। রাজশাহী হতে বাড়ি যাবার একমাত্র বাহন BRTC বাস। এই বাসের হেলপার বাবু। ওকে একবার রাজশাহীতে সাহেব-বাজারে এক হোটেলের সামনে দেখা হতেই যোর করে মিষ্টি- নিমকি খাইয়েছিলাম। আর একবার ঈদের আগের দিন রাজশাহী হতে বাড়ি যাবার সময় গল্পের ছলে জিজ্ঞেস করলাম ঈদে বাড়ি যাবে না। ও বলল- বলতে পারছিনা ভাই। যেতে যেতে সন্ধ্যা। তার পর দেখি যদি বাস পাই তাহলে বাড়ি যাব। ওর বাড়ি আমাদের সাপাহার হতে ৫০ কিমি দুরে জয়পুর হাট জেলায়। তো আমি প্রস্তাব দিলাম বাবু তুমি তো যেতে পারবেনা। চল আমার ওখানে ঈদ কর। ও এতই খুশি হয়েছিল ওর চোখ মুখ দেখে আমি তা বুজেছিলাম।
ও হেঁসে বলেছিল থাক ভাই বলেছেন এতেই আমি খুশি। একটা না একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
এর পর হতে বাড়ি হতে কোন কিছু পাঠালে ও আমার রাজশাহীর বাড়িতে দিয়ে যেত। এখন ঢাকা হতে ফোন দিয়ে যদি বলি বাবু অমুক দিন রাজশাহীতে নামছি একটা টিকেট রেখ। ও রেখে দাও।
মানুষের কাছে আমরা কি খুব বেশি কিছু চাই? চাই একটু ভাল ব্যবহার, একটু বিপদে সাহায্য। তো এর জন্য কাছের মানুষগুলির সাথে ভাল ব্যবহার তো করতে হবে।
৬। দুপুরে আপনার সাথে সাথে একটু ভাত ঘুম দিতে দিন। এতে ওর কাজে মন বসবে। সব কাজ ভাল করে করবে।
৭। গ্রামের মেয়ে তো, টিভির প্রতি একটু বেশি আসক্তি থাকে এদের। আপনার সঙ্গে সঙ্গে একটু টিভি দেখতে দিন। এতে ওর মন প্রফুল্ল থাকবে।
৮। টাকা পয়সা দিয়ে টুক টাক কিনতে দিচ্ছেন, তখন ওকে বলুন ওর জন্য একটা চকলেট/ চকবার/ চিপস/............... কিনতে। দেখুন ও আর আপনার এক দু টাকা চুরি করে চকলেট কিনবে না। আর কত খুশি হয়।
৯। ফ্রিজে রাখা খাবার গুলি , যেমন কমলা,আপেল, আঙ্গুর .............................. ওকে মাঝে মাঝে খেতে দিন। এগুলি ও গ্রামে থাকতে জীবনে দেখেনি। তাই এগুলির প্রতি একটা লোভ ওর ছোট মনে কাজ করে। তাই লুকিয়ে চুরি করে খাই।
১০। প্লেট , গ্লাস আলাদা করেছে এটি কেমন আচরণ। এ যেন সেদিন খবরে পড়লাম রাজশাহীর তানরে প্রত্যেক হোটেলে উপজাতিদের জন্য আলাদা প্লেট গ্লাস এর ব্যবস্থা। এদের নম্বর এবার ২। কি নিদারুণ ঘৃণা আমাদের।
ওর হাট দিয়ে সব বানানো খাবার খান আবার প্লেট ও গ্লাসের ব্যাপারে আলাদা। এ কেমন নীতি আপনাদের, এ কেমন শিক্ষা। এটিই কি আধুনিক শিক্ষা আমাদের?
১১। আর সবচেয়ে অবিবেচক হল কাজের মেয়েদের থাকার স্থান। ও বাবা তোমাদের একটা ঘর খালি পড়ে আছে , ওকে ওখানে ঐ খাটে কি শোয়াতে পাড়তেন না ? আচ্ছা ওর জন্য আলাদা বেডশীট এর ব্যবস্থা করুন। সকালে ও এগুলি তুলে আবার ভাল একটা বিছিয়ে দিবে।
কিন্তু কি করেন কি শীত কি গরম ওকে শুতে দেন হয় রান্না ঘরে অথবা বারান্দায়।
শীতের দিনে যত গদিই বিছান না কেন প্লাসটার করা ইটের মেঝে হতে কি রকম ঠাণ্ডা উঠে একবার ট্রাই করে দেখতে বলছি।
>>আপার বাসায় গেলে আমারই লোভ সামাল হয় না। ফ্রিজের মিষ্টি,কমলা,আপেল, আঙ্গুর দেখে। ও তো পিচ্চি মানুষ।
এই আমার এই ক্ষুদ্র মাথায় এসেছিল, তা লিখে ফেললাম। দয়া করে একটু দয়াবান অন্তত হোন।
@@ আমাদের সরকারের কিছু পদক্ষেপ:
বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে এখনই পুরোপুরিভাবে শিশু গৃহশ্রম নিরসন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মজিবুর রহমান। জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলেই আমরা বুঝতে পারব, গৃহশ্রমিক নিষিদ্ধ অনেক কঠিন কাজ। এখনই সেটা সম্ভবও নয়। তবে তাদের নিরাপদ গৃহশ্রম নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।” এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “সরকার গৃহশ্রমিকদের একটি কাঠামোতে আনার জন্য গৃহশ্রমিক নীতিমালা তৈরি করতে বদ্ধ পরিকর। নীতিমালাটি এখন খসড়া সংশোধন পর্যায়ে রয়েছে। চূড়ান্ত সংশোধনের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।” ২০১৬ সালের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনের ব্যাপারে সরকার পুরোপুরি অঙ্গীকারবদ্ধ বলে জানান শ্রম যুগ্ম সচিব। তিনি জানান, শিশুশ্রম নিরসন নীতি ২০১০, শ্রম আইন ২০০৬, জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (এনপিএ) ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য নীতি ও আইন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, “বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে পুরোপুরিভাবে শিশুশ্রম নিরসন করা খুব কঠিন হলেও সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে কাজ করছে। ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শ্রম নিরসন প্রথম পর্যায় ও দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ শিশুকে কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন তৃতীয় পর্যায়ে কাজ চলছে। এতে ৫০ হাজার শিশুকে প্রশিক্ষণের মাধমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।” সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শিশু শ্রম বিষয়ক জাতীয় সমীক্ষা করা হয়েছিল ২০০২-২০০৩ সালে। এখন পর্যন্ত শিশুশ্রম বিষয়ক এই উপাত্ত ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে আইএলও এর সহায়তায় আরেকটি জাতীয় শিশুশ্রম সমীক্ষা পরিচালনা করছে, যার ফলাফল ২০১৪ সালের প্রথমার্ধে পাওয়া যাবে।
‘গৃহকর্মে শিশু শ্রমকে না বলুন’
প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালিত হবে। বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালনের অংশ হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), সেভ দ্য চিল্ড্রেন ইন্টারন্যাশনাল, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংগঠন। ১২ জুন বিশ্ব শিশু শ্রম দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হযেছে বলেও জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আইএলও’র কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীনিবাস বি রেড্ডি, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনর এক্সিকউটিভ ডিরেক্টর শাহীন আনাম, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের চেয়ারপার্সন এনামুল হক চৌধুরী ও সেভ দ্য চিল্ড্রেন ইন্টারন্যাশনালের (ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রোগাম অপারেশনস) ইকবাল নায়ার।
@@@ গৃহ কর্ত্রী কর্তৃক নির্যাতিত কিছু গৃহ কর্মীঃ
একটু দেখে আসুন। মানুষ কেমনে অমানুষ হয়। বাংলার দামাল সন্তান ভাই এর ব্লগঃ http://www.bdtomorrow.net/blog/blogdetail/detail/4901/Banglardamalsontan/27837
মানুষ নেমে যায় নীচ থেকে নীচে - সুরা ত্বীন।
অর্থাত মানুষ দুনিয়ার সকল প্রাণী থেকেও নিকৃষ্টতর হয়ে যায়। আবার মানুষই হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
নাদুস নুদুস গৃহকত্রী যখন ''আদুরী'' নামক কাজের মেয়েগুলিকে চরম অনাদরে রেখে নির্যাতন করে, ব্লেড দিয়ে খুচিয়ে, গরম ছ্যাকা দিয়ে প্রায় মেরেই ফেলেছিল বা ফেলছে । এই ছবি গুলি দেখে আসলে সুরা ত্বীন উপলব্ধি করতে পারবেন! মানুষ যে কত নীচ হতে পারে, কত ভয়ংকর হতে পারে, কত অমানবিক হতে পারে, ।
বিষয়: বিবিধ
২৭৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন