“আমার ভাগনা ও রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ হস্টেল”

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ২৩ আগস্ট, ২০১৩, ০৭:৪৩:১৭ সন্ধ্যা



( মাস ৪-৫ আগে লিখা , আপনাদের জন্য শেয়ার দিলাম)

আমার বোনের ছেলে আগের বার(১২তে) আমাদের থানা শহর( সাপাহার, নওগাঁ) হতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তো আমার দুলাভাই তাকে ঢাকতে ভর্তি করতে আগ্রহী হলে আমরা মামারা পরামর্শ দিলাম ওর জন্য সবচেয়ে ভাল হবে “রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ”। কারণ একটাই যে: কলেজের আর্মি স্টাইলে পরিচালিত হোস্টেলে ও হারামিকে রেখে একটু টাইট ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা।

পূণচঃ ও এতটাই হারামি ও বদের হাড্ডি যে ওর বাবাও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারতোনা ওকে।

তো খুব ধুম ধাম এর মাধ্যমে ভর্তি হয়ে ওকে উঠিয়ে দেওয়া হল, সেদিন ওর মা( আমার বোন)ওর ছোট ভাই ওর বাবা ও আমরা তিন মামা ওকে দিয়ে আসলাম হোস্টেলে। ওর হাউস নাম “কাজী নজরুল ইসলাম”। তো বাবা বেশ কাটল ১০ মাস। এবার বাড়ি গিয়ে ও বলল ও আর হোস্টেলে থাকবেনা। কারণ হোস্টেলে থাকলে ও জিপিএ-৫ পাবে কিন্তু পরবর্তীতে ভর্তি পরীক্ষায় ভাল জায়গায় চান্স পাবে না, কারণ ওখানে ও ভাল ভাবে পড়তে পারেনা।

আমরা শুনে কি হাঁসি, বুঝেন কি হাড় হারামই।

আমরা তো মহা বিপদে পড়লাম, ওকে বাইরে রাখলে হয় বাড়ি ভাড়া করতে হবে আর না হলে মেসে রাখতে হবে। আর ওর বাবা মেসে রাখার ঘোর বিরোধী, আর ওর চাচা ও আমরা মামারা ওকে ওখান হতে বের করার ঘোর বিরোধী। তো কাল ওর বাবা এসেছে , ওর কাছ হতে দেখা করে গেলাম বাড়ি খুঁজতে, বেশ কটা বাড়ীও দেখলাম। ভাড়া ও অন্যান্য খরচ হিসেব করে দেখলাম প্রতি মাসে খরচ ৩০ হাজার টাকা। তো আমি দুলাভাইকে বললাম এত টাকা খরচ করবেন সামনে ১৮ মাসে। আপনি থাকবেন না , আপা থাকবে। ও কখন কি করবে তা তো আর দেখতে পাবেন না। আর আপাও ওকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারবেনা। তাহলে তো ওকে মেসে রাখাও ঐ একই ব্যাপার। তো সব কিছু বিবেচনা করে শেষে সিদ্ধান্ত হল যা হবার হবে ওকে হোস্টেলেই থাকতে হবে। আজ অনেক গাই গুই করে অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে ওকে আবার রাজি করিয়ে হোস্টেলে উঠিয়ে দিয়ে আসলাম। বড় স্বস্তির একটা নিঃশ্বাস ফেলে দুলাভাইকে কল্যাণপুরে হানিফি উঠিয়ে দিয়ে, এই আমি এই মাত্র বাড়ি ফিরলাম।

>>হোস্টেল পরিচালনা ও নিয়ম নীতি: রেসিডেন্সিয়াল এর হোস্টেল গুলি পরিচালিত হয় ঠিক সেনাবাহিনীর ব্যারাকের মত। প্রতিদিন সকাল ৫ টাই উঠে নামাজ পড়ে পিটি, পড়াশুনা, নাশতা করে কলেজ। দুপুর একটাই ছুটি, নামাজ,ল্যান্স দুইটার মধ্যে শেষ। বিশ্রাম ৪.৩০ পর্যন্ত, এর পর নাশতা। ৪.৩০ হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত নমাজ , খেলা, নামাজ। কিন্তু কেউ ক্যাম্পাসের বাইরে জেতে পারবেনা। সন্ধ্যা হতে ১১ টা পর্যন্ত পড়া।এর পর কেও পড়তে চাইলে পড়তে পারবে। এর মাঝে ডিনার। আর সব সময় নির্দিষ্ট ড্রেস কোড মেনে চলতে হয়। ক্লাস ও ৪.৩০ পর ছাড়া আর কেও অন্য সময়ে হোস্টেলের বাইরে যেতে পারবেনা। আর বিশেষ একটা নিয়ম কেও মোবাইল ফোন ইউজ করতে পারবেনা।

>>ভাগনার না থাকতে চাওয়ার কারণ: ও বাড়িতে এই পর্যন্ত থেকেছে মুক্ত বিহঙ্গের মত। আর এখানে এসে পড়ে গেছে জেলখানার কয়েদীর মত বন্দিত্বের শৃঙ্খলে। তাই ওর এই সাময়িক বিদ্রোহ। তবে ও আবার ওর শৃঙ্খল মেনে নিয়েছে।

>> ঘটনা: এই পর্যন্ত ৩ টা মোবাইল সহ ধরা খাইছে ও ওর হাউস মাস্টারের কাছে। ৪র্থ নং টা তাই রাখে কোথায় জানেন। বই এর মাঝে মোবাইল এর সমপরিমাণ কেটে তার ভিতরে। হাহা., হাহা।

বিষয়: বিবিধ

১৬০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File