“বাংলা মদ”
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ২৩ জুলাই, ২০১৩, ১১:৩৫:৪১ রাত
অনেক দিন হতে একটি বিষয়ে লিখব লিখব করেও লিখা হয় না। ব্যাটে বলে হয় না। আজ হয়ে গেল। ছক্কা মারলাম তাই। যদিও ব্যাপারটা একটু ব্যতিক্রম ধরনের কেও কেও ছি ছি করতেও পারেন। তো কি আর করুন। তবে একটা কথা আছে না জানার কোন শেষ নেয়, মার খাবারও কোন বয়স নেই।
“বাংলা মদ”
একে অনেকে তাড়ি/ তারি/অনেকে পচানি বলে। এই তারি বা বাংলা মদ বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য। ভদকা যেমন রাশিয়ার, শ্যাম্পেন যেমন ইতালির......... ইত্যাদি। তেমনি এই বাংলা বাংলার একটি ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্য হাজার বছরের বাংলার সংস্কৃতির একটি উপাদান। রাজা বাদশারা যদিও এটি খেতেন খুব উচ্চ মরগিয় উপাদান দিয়ে তৈরি করা। একে আদর করে বলা হত শুরা। আমি সে দিকে না গিয়ে বর্তমানে প্রচলিত খাটি বাংলার কথায় আসি। এটি সেই প্রাচীন আমল হতেই বাংলার প্রাচীন আদিবাসীরা এর প্রাচীন তৈরি পদ্ধতি এখনো ধরে রেখেছে। আমি এবার সে দিকে বরং যায়।
[বাংলাদেশের আদিবাসী:কোন এলাকার সবচেয়ে প্রাচীন জনবসতি ও তাদের সংস্কৃতিকে বোঝাতে আদিবাসী পদটি ব্যবহৃত হয়। আধুনিক জনগোষ্ঠীর জৈব ও সামাজিক প্রভাবজাত নয় এমন জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী বলা হয়। বাংলাদেশে রয়েছে বেশ কয়েকটি আদিবাসী। তারা হল: ১।গারো ২।চাকমা ৩।সাঁওতাল ৪।হাজং ]
উৎপাদন পদ্ধতি: বাংলা তৈরির প্রাচীন কালের সেই পদ্ধতি এখনো এর উৎপাদকরা মেনে চলে। এই জন্য প্রয়োজন তাল গাছ। তবে সে তাল গাছ মর্দা হলে ভাল হয়। এই গাছের রস ভাল পাওয়া যায়। মাদি গাছ অর্থাৎ তাল ধরা গাছেও রস পাওয়া যায় তবে তা কম। এই মর্দা গাছের এক প্রকার জটা বের হয়। দেখতে লম্বা ও চিকন ঠিক পানির পাইপের মত দেখতে। এই জটাকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় কেটে এবং মৎথন করে এই জটার নিচে মাটির ঠিলে পাতা হয়। এই রস দুই তিন দিন পর সংগ্রহ করা হয়। তবে প্রতিদিন সংগ্রহ করা রস খূব সুস্বাদু ও মিষ্টি। এই রস শরীরের জন্য খুব উপকারী। আমি অনেক বার খেয়েছি।
[আমাদের একটা মর্দা তাল গাছ ছিল এবং এখনো আছে। এই তাল গাছে রস লাগাত আমার এক সাঁওতাল বন্ধু জতিন। ওকে বললে আর নতুন ভাল ঠিলে দিলে ও লাগিয়ে দিত http://www.bdtomorrow.net/blog/blogdetail/detail/6613/gmakas/22440#.Ue6-eW_ZInI ]
দুই তিন দিন পর রস সংগ্রহ করার ফলে রস যেমন বেশি পাওয়া যায় তেমনি রোদের তাপে রস গুলি বেশ জাগ হয় [ জাগ- হল অনেক দিন রেখে পচানো]। এই রস সংগ্রহ করে আনার পর তা বড় একটা পাতিলে সংরক্ষণ করা হয়। ঐ দিকে চাল সিদ্ধ করে মাড় সহ ভাত বা পান্তা কয়েক দিন ধরে জাগ দেওয়া হয়। এর ফলে ঐ দুই এ পর্যাপ্ত এলকোহল [ ইথাইল এলকোহল- C2H5OH ,মিথাইল এলকোহল-CH3OH এ দুই এর যে কোন একটা, আমি সঠিক জানি না। পান্তা খেলে কেমন ঘুম ঘুম আসে না, এটি এলকোহল এর কল্যাণে] তৈরি হয়। পান্তার জাগকে পচানি বলে। এই পচানির পানি কে ছেকে ভাত গুলি আলাদা করা হয়।[ এই ভাত গুলি আবার গৃহপালিত গরু মহিষের উত্তম খাবার এবং মাছেরও ভাল খাদ্য] পানি গুলি তখন ঐ রসের মধ্যে ঢেলে দেওয়া হয়। এর পর ভাল ভাবে মিশ্রিত তরলকে উত্তম রূপে আগুনে তাপ দেওয়া হয়। এর পর ঠাণ্ডা করে পানের জন্য পরিবেশনা করা হয়। এর রং কিছুটা ঘোলা বা ভাতের মাড়ের মত হয়। আর গন্ধ হয় প্রচুর।
তো এই হল পচানি/ তারি/ তাড়ি তৈরির যাবতীয় ইতিহাস।
https://www.facebook.com/golammaula.akas/posts/553836858017577
অনেক দিন হতে একটি বিষয়ে লিখব লিখব করেও লিখা হয় না। ব্যাটে বলে হয় না। আজ হয়ে গেল। ছক্কা মারলাম তাই। যদিও ব্যাপারটা একটু ব্যতিক্রম ধরনের কেও কেও ছি ছি করতেও পারেন। তো কি আর করুন। তবে একটা কথা আছে না জানার কোন শেষ নেয়, মার খাবারও কোন বয়স নেই।
“বাংলা মদ”
একে অনেকে তাড়ি/ তারি/অনেকে পচানি বলে। এই তারি বা বাংলা মদ বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য। ভদকা যেমন রাশিয়ার, শ্যাম্পেন যেমন ইতালির......... ইত্যাদি। তেমনি এই বাংলা বাংলার একটি ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্য হাজার বছরের বাংলার সংস্কৃতির একটি উপাদান। রাজা বাদশারা যদিও এটি খেতেন খুব উচ্চ মরগিয় উপাদান দিয়ে তৈরি করা। একে আদর করে বলা হত শুরা। আমি সে দিকে না গিয়ে বর্তমানে প্রচলিত খাটি বাংলার কথায় আসি। এটি সেই প্রাচীন আমল হতেই বাংলার প্রাচীন আদিবাসীরা এর প্রাচীন তৈরি পদ্ধতি এখনো ধরে রেখেছে। আমি এবার সে দিকে বরং যায়।
[বাংলাদেশের আদিবাসী:কোন এলাকার সবচেয়ে প্রাচীন জনবসতি ও তাদের সংস্কৃতিকে বোঝাতে আদিবাসী পদটি ব্যবহৃত হয়। আধুনিক জনগোষ্ঠীর জৈব ও সামাজিক প্রভাবজাত নয় এমন জনগোষ্ঠীকে আদিবাসী বলা হয়। বাংলাদেশে রয়েছে বেশ কয়েকটি আদিবাসী। তারা হল: ১।গারো ২।চাকমা ৩।সাঁওতাল ৪।হাজং ]
উৎপাদন পদ্ধতি: বাংলা তৈরির প্রাচীন কালের সেই পদ্ধতি এখনো এর উৎপাদকরা মেনে চলে। এই জন্য প্রয়োজন তাল গাছ। তবে সে তাল গাছ মর্দা হলে ভাল হয়। এই গাছের রস ভাল পাওয়া যায়। মাদি গাছ অর্থাৎ তাল ধরা গাছেও রস পাওয়া যায় তবে তা কম। এই মর্দা গাছের এক প্রকার জটা বের হয়। দেখতে লম্বা ও চিকন ঠিক পানির পাইপের মত দেখতে। এই জটাকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় কেটে এবং মৎথন করে এই জটার নিচে মাটির ঠিলে পাতা হয়। এই রস দুই তিন দিন পর সংগ্রহ করা হয়। তবে প্রতিদিন সংগ্রহ করা রস খূব সুস্বাদু ও মিষ্টি। এই রস শরীরের জন্য খুব উপকারী। আমি অনেক বার খেয়েছি।
[আমাদের একটা মর্দা তাল গাছ ছিল এবং এখনো আছে। এই তাল গাছে রস লাগাত আমার এক সাঁওতাল বন্ধু জতিন। ওকে বললে আর নতুন ভাল ঠিলে দিলে ও লাগিয়ে দিত http://www.bdtomorrow.net/blog/blogdetail/detail/6613/gmakas/22440#.Ue6-eW_ZInI ]
দুই তিন দিন পর রস সংগ্রহ করার ফলে রস যেমন বেশি পাওয়া যায় তেমনি রোদের তাপে রস গুলি বেশ জাগ হয় [ জাগ- হল অনেক দিন রেখে পচানো]। এই রস সংগ্রহ করে আনার পর তা বড় একটা পাতিলে সংরক্ষণ করা হয়। ঐ দিকে চাল সিদ্ধ করে মাড় সহ ভাত বা পান্তা কয়েক দিন ধরে জাগ দেওয়া হয়। এর ফলে ঐ দুই এ পর্যাপ্ত এলকোহল [ ইথাইল এলকোহল- C2H5OH ,মিথাইল এলকোহল-CH3OH এ দুই এর যে কোন একটা, আমি সঠিক জানি না। পান্তা খেলে কেমন ঘুম ঘুম আসে না, এটি এলকোহল এর কল্যাণে] তৈরি হয়। পান্তার জাগকে পচানি বলে। এই পচানির পানি কে ছেকে ভাত গুলি আলাদা করা হয়।[ এই ভাত গুলি আবার গৃহপালিত গরু মহিষের উত্তম খাবার এবং মাছেরও ভাল খাদ্য] পানি গুলি তখন ঐ রসের মধ্যে ঢেলে দেওয়া হয়। এর পর ভাল ভাবে মিশ্রিত তরলকে উত্তম রূপে আগুনে তাপ দেওয়া হয়। এর পর ঠাণ্ডা করে পানের জন্য পরিবেশনা করা হয়। এর রং কিছুটা ঘোলা বা ভাতের মাড়ের মত হয়। আর গন্ধ হয় প্রচুর।
তো এই হল পচানি/ তারি/ তাড়ি তৈরির যাবতীয় ইতিহাস।
https://www.facebook.com/golammaula.akas/posts/553836858017577
বিষয়: বিবিধ
১৭৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন