Modernism ২
লিখেছেন লিখেছেন গোলাপ ৩০ জুলাই, ২০১৩, ০৯:২৯:৫৯ রাত
বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ,কেড়ে নিয়েছে আবেগ। তেমনি ভাবে বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে সজ্জা কিন্তু কেড়ে নিয়েছে লজ্জা। কারণ এতো বেশি বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে যে তার গতিতে শরীরের পোশাকটা উড়ে গেছে।
আমি বিজ্ঞান কে দোষারোপ করছি না কারণ বিজ্ঞানের আবিষ্কারের বদৌলত আজ আমরা কঠিন কে করছি সহজ আর দূর করে করেছি নিকট। মানুষের Standard of Living and Communication বাড়িয়ে দিয়েছে বিজ্ঞান। জীবনের প্রতিটি কনায় কনায়, প্রতিটি মুহূর্তে বিজ্ঞানের অবদান কে আমরা কেউও অস্বীকার করতে পারবো না। আর এই বিজ্ঞানের সাথে সংস্কৃতি বিকাশের একটা বড় সম্পর্ক আছে। আর যেটাকে বলা হয় Cultural diversity।
What is Cultural Diversity?
Cultural diversity is used to mean the variety of human societies or cultures in a specific region or in the world as a whole. Or ethnic, gender, racial, and socioeconomic variety in a situation, institution, or group, is called Cultural diversity.
এই Cultural diversity এর জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে থাকে মিডিয়া। আধুনিক বিশ্ব এ মিডিয়াই হল Boss of the Boss এবং সবচেয়ে ক্ষমতাশালী। আর সমস্যাটাই সেখানে কারণ বিশ্বের সব মিডিয়া গুলোই অমুসলিমদের দখলে। আর যে কিছু মিডিয়া আছে মুসলিমের সেগুলোর প্রচারণা এত কম যে তাতে কেউ উপকৃত হয় না। মিডিয়াগুলোর বিনিময়ে আজ একটা জাতির, একটা আঞ্চলের, একটা দেশের সংস্কৃতি ছড়িয়ে পরছে বিশ্বের অন্য প্রান্তে।
পোশাক হল একটা সংস্কৃতির উপাদান। আমরা মুসলমান তাই আমাদের সংস্কৃতিতে ও এই পোশাক পরার নিয়ম, নীতি এবং বিধান আছে। বিশেষ করে মহিলাদের পোশাকের ব্যাপারে এতো সুন্দর বিধান বলা হয়েছে ইসলামের যা অন্যায়, ধর্ষণ,যেনা, ব্যাভিচার থেকে রক্ষা করে।
ইসলামে পোশাকের কিছু মূলনীতি রয়েছে। যেগুলো হল......
১) পোশাক-পরিচ্ছদ টাইট বা আঁটসাঁট হওয়া চলবে না। অর্থাৎ পোশাক হতে হবে ঢিলে ঢালা। এমন পোশাক পরিধান করা যাবে না, যে পোশাক পরিধান করার পরও লজ্জাস্থানের অবয়ব বোঝা যায়। রাসূলুল্লাহ সা: ওই সব লোকদের অভিসম্পাত করেছেন যারা পোশাক পরার পরও উলঙ্গ থাকে।
২) এমন পাতলা বা ফিনফিনে কাপড় পড়া যাবে না যে কাপড় পরার পরও লজ্জাস্থান দেখা যায়।
৩) নারী-পুরুষের এবং পুরুষ-নারীর পোশাক পরিধান করা যাবে না। এখন অনেক ছেলেদের দেখা যায় যারা হাতে বিভিন্ন রকমের বালা পরিধান করে,কানে দুল দেয়,গলায় মালা বা চেইন পরে, পাঞ্জাবির সাথে ওড়না পরে ইত্যাদি। অন্য দিকে মেয়েরা তাদের নিজস্ব পোশাক পরিধানের পরিবর্তে জিন্সের প্যান্ট, টিশার্ট, স্কিন টাইট গেঞ্জি, পাঞ্জাবি ইত্যাদি পরিধান করছে। রাসূলুল্লাহ সা: ওই সব পুরুষকে লা’নত করেছেন যারা নারীর বেশ ধারণ করে এবং ওই সব নারীকে লা’নত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে।
৪. পুরুষের স্বর্ণের অলঙ্কার পরা যাবে না। স্বর্ণ পুরুষের জন্য হারাম। অনেক ছেলেদের দেখা যায় গলায় স্বর্ণের চেইন ব্যবহার করে। হাতে স্বর্ণের আংটি পরে। বিশেষ করে বিয়েতে মেয়ে পক্ষ ছেলেকে স্বর্ণের আংটি ও গলার চেইন দেয়। “হজরত আবু হুরাইয়া রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সা: পুরুষকে স্বর্ণের আংটি পরতে নিষেধ করেছেন। শুধু আংটি নয়, পুরুষের জন্য স্বর্ণের যেকোনো অলঙ্কার হারাম।“
৫. পুরুষের রেশমি কাপড় পরিধান করা যাবে না। এটা পুরুষের জন্য হারাম। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রেশমি কাপড় পরিধান করবে আখেরাতে তার জন্য কোনো অংশ নেই। অন্য একটি হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রেশমি কাপড় দুনিয়াতে কাফেরদের জন্য আর মুমিনদেরজন্য পরকালে।
৬. বিজাতীয় পোশাক পরিধান করা যাবে না। অন্য ধর্মাবলম্বীদের নির্ধারিত ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহার করে এমন পোশাক পরিধান করা জায়েজ নেই। যেমন খ্রিষ্টানদের ক্রুশ অঙ্কিত পোশাক, হিন্দুদের মতো উল্কি আঁকা, সিঁদুর পরা ইত্যাদি।
রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি অন্য কোনো জাতির অনুসরণ করবে সে সেই জাতির উম্মত হিসেবে গণ্য হবে। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, লা’নত বর্ষিত হোক সেই সব নারীর ওপর যারা উল্কি এঁকে নেয় এবং যারা উল্কি আঁকায়, যারা চুল উঠিয়ে ফেলে, ভ্র প্লাক করে, সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য দাঁত কেটে চিকন করে, দাঁতের মধ্যে ফাঁক সৃষ্টি করে যা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন এনে দেয়।
৭. বেশি চাকচিক্য পোশাক পরিধান করা যাবে না, যাতে বিপরীত লিঙ্গকে আকৃষ্ট করে। নারী-পুরুষ উভয়ই পর নারী বা পর পুরুষকে আকৃষ্ট করার জন্য বেশি চাকচিক্য পোশাক পরিধান করা যাবে না। বিশেষ করে নারীরা এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘তারা যেন (নারীরা) যা সাধারণত প্রকাশমান এমন সৌন্দর্য ছাড়া অতিরিক্ত সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে বেড়ায়।’
৮. পুরুষের টাকনুর নিচে পোশাক পরিধান করা যাবে না। আজকাল অধিকাংশ পুরুষকে দেখা যায় তারা তাদের প্যান্ট পায়ের পাতা পর্যন্ত ঝুল দেয়। এর মধ্যে যারা নামাজি তারা নামাজের সময় তাদের প্যান্ট টাকনু পর্যন্ত গুছিয়ে নেয়। আসলে টাকনু পর্যন্ত কাপড় পরা পুরুষদের সব সময়ের জন্য আবশ্যক, শুধু নামাজের সময় নয়।
রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘যেসব পুরুষ অহঙ্কারের (ফ্যাশনের) জন্য টাকনুর নিচে কাপড় পরে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না।’
একজন দ্বীনী বোনের ফেসবুক এ স্টেটাস ছিল এ রকম...
“সানি লিওন। একজন দেহ ব্যবসায়ী অভিনেত্রী। পত্রিকার ভাষায় পর্ণোস্টার। পোশাক হয়তো তার উদ্ভট, যা পরলে মানুষকে দেখা যায় উৎকট। বিকৃত রুচির যুবকদের কাছে তার বেশ কদর। বাংলাদেশে এবারের ঈদের বাজার নতুন সব ব্রান্ডের মাঝে একটি পোশাকের ব্রান্ডের নাম শুনে সবাই চমকে ওঠে,থমকে যায়।
এও সম্ভব! সেই কূরুচি সম্পন্ন পতিতার নামে ও তার পরা ডিজাইনের জামা মার্কেটে! এবং তার চেয়েও বেদনাদায়ক হলো সেটা জনপ্রিয় হয়েছে!
একজন প্রথম শ্রেণীর পতিতাকে মডেল মেনে তার ডিজাইনের পোশাক পরে মেয়েরা কি বোঝাতে চায়! তারাও কি তার মত বহুভোগ্যা মানসিক বিকৃত এক পতিতার রূপে গর্ববোধ করে! এরা কি এদেশের মেয়ে! সমাজের অংশ! এদের অভিভাবকই বা কত কুরুচি সম্পন্ন যে এসব পোশাকের পেছনে হাজার হাজার টাকা খরচ করে।
আচ্ছা! এরপর এই মেয়েদের যদি খারাপ দৃষ্টির পুরুষেরা উত্যাক্ত করে তার কোনো দায় ই কি মেয়ের নেই! আহ! এরা ঈদ পালন করে কিন্তু রোজা রাখেনা। পর্ণোস্টারদের খোঁজ রাখে কিন্তু আয়শা (রাঃ) কিংবা ফাতেমা (রাঃ) কে চেনে না! নিজের ঐতিহ্য ঢিলেঢালা পোশাক ও হিযাবকে ঘৃণা করে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে এরা কালিমাও নির্ভুল পড়তে জানে না।
আমরা কথায় কথায় গর্ব করি মুসলিম দেশ, এই কি মুসলিম দেশের চিত্র! এদেশে হিযাবের ওপর আদালত পরোয়ানা জারি করে পতিতার পোশাকে নয়! আমাদের রুচিবোধে পঁচন ধরে গেছে, দ্রুত চিকিত্সা না হলে পতনের দেরি নেই, ঘন্টা শুনতে পাওয়া যায় . . . . . ।’
হযরত আলকামা ইবনে আবু আলকামা তার মা থেকে বর্ণনা করেন যে, একবার হাফসা বিনতে আবদুর রহমান তার ফুফু উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ)-এর নিকটে এল। তখন তার পরনে ছিল একটি পাতলা ওড়না। উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রাঃ) তা ছিঁড়ে ফেললেন এবং একটি মোটা ওড়না পরিয়ে দিলেন।(মুয়াত্তা মালেক ২/৯১৩, হাদীস : ৬)
মহান আল্লাহ সূরা আ’রাফের ২৬ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেছেন, ‘হে বনি-আদম! আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জা স্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেজগারির পোশাক, এটি সর্বোত্তম।‘ অন্য দিকে বেহায়াপনা, বেল্লাপনা ও উলঙ্গপনাকে হারাম করা হয়েছে। একই সূরার ৩৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘আপনি বলে দিন, আমার পালনকর্তা প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীল বিষয়গুলো হারাম করেছেন। এটি আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা ভাবনা করে।
হে আদাম সন্তানগণ, আমি তোমাদের পোশাক-পরিচ্ছদ দিয়েছি লজ্জাস্থান ঢাকার ও বেশভূষার জন্য। (সূরা আ’রাফ:২৬)
লজ্জাস্থান তথা সতর আবৃতকারী পোশাক হতে হবে। (মুমিনদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানসমূহ হেফাজত করে। (সূরা নূর :৩০)
মহিলাদের পোশাকে মাথা, বক্ষ এবং গ্রীবা আবৃতকারী কাপড় থাকতে হবে। মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযত করে এবং লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে, তারা যেন যা স্বভাবতই প্রকাশিত তা ব্যতীত সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন তারা মাথার কাপড় দিয়ে আবৃত করে। (সূরা নূর:৩১)
বিষয়: বিবিধ
১৮৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন