মেয়েরা একটা পণ্য
লিখেছেন লিখেছেন গোলাপ ০৮ জুলাই, ২০১৩, ০৩:১৩:৫২ দুপুর
মেয়েরা মায়ের জাতি। তাদেরকে সম্মান করতে হয়, ভালোবাসতে হয় এবং তাদেরকে ফুলের মত করে ফুলদানির সাজিয়ে রাখতে হয়। অথচ এই মেয়েরাই ২টা কারনে বেশি জাহান্নামে যাবে ১) মেয়েরা বেশি লানত করে- গীবত, পরচর্চা, কুৎসা ইত্যাদি বেশি করে এবং ২) স্বামীর আনুগত্য না করা বা স্বামীর উপর অখুশি থাকা। আর এই কারণে আমি তাদেরকে ফুলের মত করে ফুলদানির সাজিয়ে রাখার কথা বলছি। কারণ মেয়েদের রূপ- সৌন্দর্য, সাজ-গোজ সব কিছু হবে কেবল মাত্র তাঁর স্বামীর জন্য। আল কুরআনের আল্লাহ তাআলা বলেন- স্ত্রীরা হল তোমাদের জন্য পোশাক স্বরূপ আর তোমরা হচ্ছো তাদের জন্য পোশাক স্বরূপ( সূরা বাকারাহ ১৮৭)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নারীগণ নামাজ-রোজা, সতীত্ব রক্ষা ও স্বামীর আনুগত্য এই সংক্ষিপ্ত আমল দ্বারা আল্লাহ তাআলার কাছে এত বড় মর্যাদা লাভ করবে যে, বেহেশতের যে কোনো শ্রেণীতে সে প্রবেশ করার অধিকার লাভ করবে (মিশকাত শরীফ ২৮১)।
মুফতী মুহাম্মদ শফী রাহঃ একটা গল্পে লিখেছিলেন-“এক মেয়ের বিয়ে হচ্ছিল। তাকে বউ সাজানো হচ্ছিল। খুব নিঁখুত ভাবেই তাকে সাজানো হল। বড় চমত্কার লাগছিল। যেই দেখছিল প্রশংসা করছিল তোমাকে তো বড় সুন্দর লাগছে। বলছিল দেখেছিস তোর অলংকার গুলো কত সুন্দর লাগছে। কিন্তু নববধূর চেহারায় কোন খুশীর আভাস ছিলনা। কেউ জিজ্ঞেস করল কি ব্যাপার তোমার বান্ধবীরা তোমার প্রশংসা করছে তুমি সাড়া দিচ্ছনা কেন? তা তোমার কি আনন্দ লাগছেনা? নববধূ বললঃ তাদের প্রশংসায় আমি কি খুশী হবো! এসব তো হাওয়ায় উড়ে যাবে। যার জন্য আমাকে সাজানো হচ্ছে তার প্রশংসায় আসল। তার চোখ যদি ভাল লাগে আর বলে দেন, হ্যাঁ তোমাকে সুন্দর লাগছে, তবেই না এ সাজের সার্থকতা। তখন আমার জীবন সত্যিকার অর্থে সেজে উঠবে। এরাতো প্রশংসা করে চলে যাবে, যার জন্য সাজানো হল তার পছন্দ হলনা, তবে এ প্রশংসা আর এই সাজের কি সার্থকতা?”
এখন নারী স্বাধীনতা ও নারী অধিকারের দাবি নিয়ে শোনা যায় অসংখ্য শ্লোগান তবুও নারী আজ পদে পদে লাঞ্ছিত অথচ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন প্রেরিত হলেন তখন পৃথিবীতে এরকম অবস্থাই বিরাজ করছিল। সে সময় নিজ ইচ্ছায় কোনো নারীর বেঁচে থাকারও অধিকার ছিল না। এমন পরিস্থিতিতেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদেরকে তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিয়েছেন এবং তাদের শিক্ষা-দীক্ষা প্রদানের গুরুত্ব ও ফজীলত বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তিনজন মেয়ে-সন্তানকে লালন-পালন করে, উত্তম শিক্ষা ও তারবিয়াত প্রদান করে এবং (বিবাহের উপযুক্ত হলে) বিবাহ দিয়ে দেয়; সর্বোপরি তাদের সাথে উত্তম আচরণ করে তার জন্য রয়েছে জান্নাত (জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৯১২)।
এখন নারী স্বাধীনতা, নারী অধিকার এবং নারীর নিজ ইচ্ছায় বেঁচে থাকার কথা বলে তাদের কে ঘর থেকে বের করে অর্ধ উলংঘ করে সবার সামনে প্রদর্শন করা হচ্ছে। আর এটা নাকি তাঁর অধিকার।এটা নাকি তাঁর স্বাধীনতা যে অফিসের বস(Boss) কল করলে তাকে সুন্দর করে সেজে,Make-up করে তাঁর রুমে জেতে হয় নিরিবিরি। এটা নাকি তাঁর নিজ ইচ্ছায় বেঁচে থাকা যে যখন ইচ্ছা বন্ধুদের সাথে বের হচ্ছে, পার্টি তে যাচ্ছে স্বামীর অনুমতি ছাড়া। আমার ইস্কুলের এক শিক্ষক বলতো কলা ছুলে রাখলে মাছি বসবে, বাসি হয়ে যাবে একটা সময় পচে যায়। তখন কেউ তাঁর দিকে তাকায় না কেনে না। অথচ কলাটা খোসা অবস্তায় কত সুন্দর না দেখা যায়।
আজকাল পর্দা বিধানের কথা বললেই একশ্রেণীর নামধারী সুশীল সমাজের আতে ঘা লাগে। ওটা নাকি নারীকে আঁটসাঁট করে বেঁধে রাখার মত। তারা তাদের জ্ঞাতিগোষ্ঠির হাতে ১৭ মাসের শিশু অথবা ৫ বছরের কোন বালিকা বা ১৮ বছরের তরুণী ধর্ষিতাদের উদাহরণ দিয়ে বলে পর্দা প্রথা সত্ত্বেও এরা কোন ধর্ষিতা হল।গ্রামের কিছু গরু আছে যারা গু(মলমূত) এবং অন্যের ফসল খায়। তাদেরকে ঠুসি( যা গরুর মুখে দেওয়া হয় যাতে সে খাতে না পারে) দিয়েও ঠেকান যায় না। ঠুসির রশি ছিড়ে সে খাবেই। পর্দা করে একজন মেয়ে। সেতো আর ধর্ষণ করতে যায় না। যায় আপনার ছেলে। তাকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করুন, নামাযের কথা বলেন, ধর্মীয় আদর্শের কথা বলেন। আপনি কেমন বাবা/মা যে আপনি আপনার ছেলেকে নামাযের কথা বলেন না? এমনকি আমি দেখেছি অনেক বাবা-মা ছেলের শরীর বা লেখা পড়া হবে না বলে রোযা রাখতে দেয় না। হ্যাঁ পর্দা বিধানের অনুসরণ সত্ত্বেও সে কিছু হিংস পশুদের শিকারে পরিণত হয়েছে এটা সত্যিই দুঃখজনক। তাই বলে তথাকথিত যেসব সুশীল এটাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় বিধান পর্দার ক্ষেত্রে একটি প্রশ্নবোধক অংকনের মাধ্যমে নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিথার্ত করতে চান তাদের দিকেও একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসে যায়।
সুতরাং কোন ধর্ষিতার উদাহরণ দিয়ে যারা পর্দার সুরক্ষার প্রতি প্রশ্ন তুলে, তারা নিতান্তই মূর্খ নয়তো সুযোগ সন্ধানী। তারা পর্দা প্রথা রহিত করার দ্বারা তাদের অসৎ লাম্পট্যের চরিতার্থ করতে চায়। তাদের ভাবখানা হচ্ছে, যেমন নাকি দুর্ঘটনার কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্হা তুলে নেয়া অথবা মাথাব্যাথার কারণে মাথাই কেটে ফেলার শামিল।
গোপাল ভাড়ের একটা কৈতুক মনে পড়ল- একবার গোপাল ভাঁড় বাজার থেকে খুব বড় একটা মাছ কিনে বাড়ি ফিরছিলো। পথে যে দেখে সেই জিজ্ঞাস করে-ও! কত বড় মাছ কত দাম নিলো গোপাল? গোপাল দাম বলতে বলতে অতিষ্ঠ হয়ে গেল। তাই সে তখন একটা বুদ্ধি আটল আমি যদি লুজ্ঞিটা খুলে মাথায় বাঁধি আর মাছ টা মাথার উপর নিয়ে হেঁটে যায় তাহলে কেউ আর দাম জিজ্ঞাস করবে না। কারণ তখন সে উলঙ্গ লজ্জায় তাঁর দিকে কেউ তাকাবেই না দাম জিজ্ঞাস তো দূরের কথা।
উদাহরণ টা এজন্য দিলাম আজকের আধুনিক বিশ্ব এর যে কোন মঞ্চে একজন ছেলে উলঙ্গ করে বা অর্ধ উলঙ্গ করে দাঁড় করান। সবাই ছি ছি বলবে, কেউ তাকাবে না বরং দুহাত দিয়ে চোখ ঠেকে রাখবে। অথচ আজ সমগ্র বিশ্ব জুড়ে রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে শুরু করে পারিবারিক পর্যন্ত মেয়েদের কে উলঙ্গ আর অর্ধ উলঙ্গ করে জাহির করা হচ্ছে। আর সবাই হাত তালি দিয়ে তাকে উৎসাহিত করে বাহ বাহ দিয়ে বলছে Smart Girl, Miss world or Miss এটা ওটা। এমন কি পর্ণ মুভি নাকি এখন একটা শিল্প, একটা Art (নাউযুবিল্লাহ)। এখন বলেন মেয়েরা কেন ধর্ষিত হবে না? অথচ পর্দার কথা বললেই সুশীল সমাজের চুল্কানি শুরু হয়ে যায়।
আমি misogynist বা নারী বিদ্বেষী নয় কিন্তু নারীদের ২ টা কাজকে খুব ঘৃণা করি। ১) বেহায়াপনা, নির্লিপ্ততা আর পুরুষের মত সাজগোজ করে বেড়ান এবং ২) নারীর ক্ষমতা এবং তাদের কে ক্ষমতার মসনদে বসানে। ইসলামে নারীকে যে ভাবে মর্যাদা আর সম্মান দেওয়া হয়েছে তা অন্য কোন ধর্মে বা সমাজে কেউও দেই নি। একটা গাড়ি বিজ্ঞাপনে দেখা যায় সুন্দরী একটা মেয়েকে অর্ধ উলঙ্গ করে তাঁর সামনে দাঁড় করে রাখা হয়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয় ওটা একটা পুতুল বা mannequin। আজ বড় বড় সব কোম্পানির বিজ্ঞাপনে নারী কে এমন ভাবে জাহির আর প্রদর্শন করা হচ্ছে যে মাঝে মাঝে বোঝার উপায় থাকে না আসলে কোন টা পণ্য।
তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সে, যে নিজ স্ত্রীর কাছে সর্বোত্তম। আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চেয়ে উত্তম।(তিরমিজীঃ ৩৯৮৫) তিনি আরো বলেনঃ আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরাই নারীদের মর্যাদা দান করে। আর অভদ্র-অসভ্যরাই তাদের তুচ্ছ ভাবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন-“ নিজেদের ঘরে অবস্থান কর এবং পূর্বতন জাহেলী যুগের সাজগোজ দেখিয়ে বেড়িও না।( সূরা আল-আহযাবঃ ৩৩)।
ইউনানদের নিকট মেয়েরা ছিল বেচা-কেনার সামগ্রী। আজও সেটা হচ্ছে রাতের আঁধারে একহাত ঘুরে অন্য হাতে যাচ্ছে টাকার বিনিময়ে।খেলার মাঠে নারীদের বানানো হচ্ছে চিয়ারলিডারস(Cheerleaders)।আসলেই তারা আজ ও পণ্য হিসেবে পরিগনিত শুদু মাত্র আমাদের পথ ভৃষ্ঠতার কারনে।
হে নবী! তোমার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ ও ঈমানদার লোকদের মহিলাগণকে বলে দাও, তারা যেন নিজেদের উপর নিজেদের চাদরের আঁচল ঝুলিয়ে দেয়। এটা অধিক উত্তম নিয়ম ও রীতি। যেন তাদেরকে চিনতে পারা যায় ও তাদেরকে উত্যক্ত করা না হয়। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।(সূরা আল-আহযাবঃ ৫৯)।
আল্লাহ আমাদের সকলে কে নারীর অধিকার, তাদের কে সম্মান করার এবং তাদের কে তাঁর মর্যাদা দিতে পারি সেই তৌফিক দান করুন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
২৩৭১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন