রোজা ভঙ্গের কারণ
লিখেছেন লিখেছেন মনিরা ১৯ জুলাই, ২০১৩, ০১:০৩:৫৭ রাত
1. ইচ্ছা করে কোন কিছু খেলে এবং পান করলে:
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ
তোমরা আহার ও পান করতে থাক যে পর্যন্ত তোমাদের জন্য কালো রেখা হতে ঊষাকালের সাদা রেখা প্রকাশ না পায়। তৎপর রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। (সূরা বাকারাঃ১৮৭)
সুতরাং বোঝা গেল ফজর উদয় হওয়ার আগে পর্যন্ত মহান আল্লাহ রোযাদারের জন্য পানাহার বৈধ করেছেন। অত:পর রাত পর্যন্ত সিয়াম পালনের আদেশ দিয়েছেন।
2. ইচ্ছা করে বমি করলে:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনঃ “সিয়াম অবস্থায় যে ব্যক্তি বমিকে দমন করতে সক্ষম হয় না, তার জন্য কাজা নেই। পক্ষান্তরে যে ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, সে যেন ঐ সিয়াম কাযা করে।(মুসনাদে আহমাদ: ২/৪৯৮, আবু দাউদ: ২৩৮০, তিরমিযি:৭১৬, ইবনে মাজা: ১৬৭৬, সহীহ ইবনে খুযাইমা: ১৯৬০, দারাকুতনী, সহীহুল জামেইস সগীর: ৬২৪৩)
3. দিনের বেলা স্ত্রী সহবাস করলে:
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَى نِسَائِكُمْ
তোমাদের জন্য রমাযানের রাতে তোমাদের বিবিগণের নিকট গমন করা বৈধ করা হয়েছে। (সূরা বাকারাঃ১৮৭)
সুতরাং বোঝা গেল দিনের বেলায় স্ত্রীর নিকট গমন করলে সিয়াম নষ্ট হয়ে যাবে।
4. যে কোন ভাবে ইচ্ছা করে বীর্য বের করলে:
কারণ বীর্যপাতও এ শ্রেণীর যৌনাচার।
5. মহিলাদের মাসিক ঋতুস্রাব বা সন্তান প্রসবের রক্ত বের হলে:
(বিস্তারিত দেখুনঃ শায়খ ইবনে উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ প্রণীত; সুআ‘লান ফি সিয়াম: ১৫)
6. শরীরের মধ্যে রক্ত প্রবেশ করালে:
কারণ এটাও এক প্রকার পানাহারের শামিল।
7.নিয়ত বাতিল করা:
(বিস্তারিত দেখুনঃ সায়্যেদ সাবেক প্রণীত; ফিকহুস সুন্নাহ:১/৪১২, শায়খ ইবনে উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ প্রণীত; আশ্শারহুল মুমতে‘:৬/৩৭৬, শায়খ আব্দুর রাজ্জাক নাওফাল প্রণীত; সাওমু রামাযান:২৪ পৃষ্ঠা, ফাসি:জিরাইসী:৮ পৃষ্ঠা)
8. মুরতাদ হওয়া:
(বিস্তারিত দেখুনঃ শায়খ আবু সারী মুহাম্মাদ আব্দুল হাদী প্রণীত; আহকামুস সাওমি ওয়াল ই’তিক্বাফঃ ৮৩ পৃষ্ঠা)
9. বেহুশ হওয়া:
10. খাদ্যের চাহিদা পূরণ অথবা শক্তি বৃদ্ধির জন্য স্যালাইন বা ইনজেকশন নিলে:
কারণ এটাও এক প্রকার পানাহারের শামিল। নাকের মধ্যে ড্রপ দিলে যদি তা কন্ঠনালী পর্যন্ত পৌঁছে ।
কারণ নাকের সাথে খাদ্যনালীর সম্পর্ক রয়েছে। মুখ দিয়ে খেতে না পারলে সাধারণত: নাকের ভিতর দিয়ে নল দিয়ে পেটে খাদ্য সরবরাহ করা হয়।
11. শিঙা লাগালে:
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
أفطر الحاجم والمحجوم ) رواه ابن ماجة و أبو داود)
‘শিঙ্গা যে লাগাল ও যাকে লাগানো হলো উভয়ে সিয়াম ভঙ্গ করল।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজা)
12. মিথ্যা বলা বা মিথ্যাচারের সাথে জড়িত হলে:
কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি রোযা রেখে মিথ্যা কথা ও তার উপর আমল ত্যাগ করতে পারল না, সে ব্যক্তির পানাহার ত্যাগ করার মাঝে আল্লাহর কোনই প্রয়োজন নেই।( বুখারীঃ ৬০৫৭, ইবনে মাজাঃ ১৬৮৯, আহমাদঃ ২/ ৪৫২, ৫০৫)
13. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় না করলে আল্লাহ তায়ালা তাঁর রোযা কবুল করবেন না:
কারণ সকল আলেম একমত, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে না সে কাফের। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ নিশ্চয়ই মানুষ ও শিরক ও কুফরির মাঝে পৃথককারী বিষয় হচ্ছে নামায ছেড়ে দেয়া।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন