ইসলামে নারীর প্রকৃত মর্যাদা
লিখেছেন লিখেছেন মনিরা ২৯ জুন, ২০১৩, ১২:৩২:০০ দুপুর
সৃষ্টির সহজাত ধারায় নারী-পুরুষের মধ্যে মর্যাদাগত কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু তারপরও যুগে যুগে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠী নারীদের বঞ্চিত করেছে তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে। তাদের ওপর চালিয়েছে অত্যাচারের খড়্গ। শুধু সামাজিকভাবেই নিগৃহীত হয়নি নারীরা, বিভিন্ন ধর্মেও নারীদের অবজ্ঞা ও অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। নারীরা সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছনার শিকার হয়েছে ইসলামপূর্ব জাহেলি সমাজে। নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার কোনো স্তর বাকি থাকেনি যা সে সময়ে নারীদের সঙ্গে করা হয়নি। এসব আচরণ নীরবে সহ্য করা ছাড়া নারীদের আর কোনো উপায় ছিল না।
ইসলামের আবির্ভাবের পর নারীদের ভাগ্যাকাশে দেখা দেয় প্রোজ্জ্বল জ্যোতি। প্রকৃতি ও মানবতার ধর্ম ইসলাম আগমন করে নারীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। ইসলাম দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করল—নারীরাও মানুষ, তাদেরও সদাচরণ পাওয়ার অধিকার আছে। তাদের প্রতি কোনো ধরনের অবজ্ঞা, অবহেলা ও অপমান সহ্য করা হবে না। কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে—‘তারা (নারীরা) তোমাদের পোশাক ও তোমরা তাদের পোশাক।’ যুগে যুগে অধিকারহারা নারীদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার দৃপ্ত ঘোষণার মধ্য দিয়ে যাত্রা করে ইসলাম। কোরআনুল কারিমের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসে নারীদের অধিকার, মর্যাদা ও তাদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। যেমন কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে—‘কিয়ামতের সেই দিনে কন্যাসন্তানদের জিজ্ঞাসা করা হবে কেন তাকে হত্যা করা হয়েছিল।’ কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সদাচরণ কর।’ অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘নারীদের ওপর যেমনি অধিকার রয়েছে পুরুষের, তেমনি রয়েছে পুরুষের ওপর নারীর।’ হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই ব্যক্তি যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।’ ইসলাম নারীদের সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদা দিয়েছে মা হিসেবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মায়ের পায়ের তলে সন্তানের বেহেশত।’ এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, “একবার এক লোক হজরত রাসুলে কারিমের (সা.) দরাবারে এসে জিজ্ঞাসা করল, ‘আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার বেশি অধিকারী কে?’ নবীজী (সা.) বললেন, ‘তোমার মা’। ওই লোক জিজ্ঞেস করল, ‘তারপর কে’? তিনি উত্তর দিলেন, ‘তোমার মা’। ওই লোক আবারও জিজ্ঞেস করল, ‘তারপর কে’? এবার তিনি উত্তর দিলেন, ‘তারপরও তোমার মা’। ওই লোক আবারও জিজ্ঞাসা করল ‘তারপর কে’? এবার তিনি উত্তর দিলেন—‘তারপর তোমার বাবা’।” (বুখারি শরীফ) এ হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়, ইসলামে সন্তানের ওপর বাবার অধিকারের চেয়ে মায়ের অধিকার তিন গুণ বেশি। এভাবে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই নারী অধিকার আদায়ে ইসলাম সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
ইসলামের দৃষ্টিকোণে নারী-পুরুষ পরস্পর প্রতিযোগী নয়, বরং সহযোগী। ইসলামের বিজয়গাথা ও সাফল্যের পেছনে তাদের যৌথ প্রয়াস সমানভাবে কার্যকরী।
বিষয়: বিবিধ
১২০৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন