স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার।
লিখেছেন লিখেছেন মনিরা ২৭ জুন, ২০১৩, ০১:৪৭:১০ দুপুর
স্বামীর উপর স্ত্রীর বিশেষ অধিকার রয়েছে। এ সমস্ত অধিকার স্ত্রীর স্বামীর কিছু অধিকার পালন করার জন্য ওয়াজিব হয়। আর তা হলো, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা না হলে, স্বামীর আনুগত্য করা, তার খাবার তৈরী করা, বিছানা পরিপাটি রাখা, তার সন্তানদের দুধ পান করানো, তাদের লালন-পালন করা, তার অর্থ-সম্পদ ও মান-মর্যাদা রক্ষা করা, নিজের সম্ভ্রম ও সতীত্ব রক্ষা করা, তার জন্য বৈধতার আওতায় রূপচর্চা করা ও নিজেকে সৌন্দর্যময় রাখা। নিম্নোক্ত জিনিসগুলো স্বামীর উপর স্ত্রীর অত্যাবশ্যকীয় অধিকার, যা আল্লাহ্র বাণী প্রমাণ করেঃ
وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ - سورة البقرة: 228
অর্থাৎ, ((নারীদের জন্য সঠিকভাবে সেরূপ অধিকার নির্দিষ্ট রয়েছে, যেমন তাদের উপর পুরুষদের অধিকার রয়েছে।)) [সূরা আল-বাকারাহঃ ২২৮]
আমরা সে অধিকারগুলো তুলে ধরছি, যেন মুমিন নারী তা জেনে নেয় এবং লজ্জা, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও ভয়ভীতি ছাড়াই তা দাবী করে। আর স্বামীর দায়িত্ব হলো, সেগুলো পুংখানুপুংখরূপে আদায় করা। হাঁ, স্ত্রী তার অধিকারের কোন কিছু স্বামীকে ক্ষমা করতে পারে।
১)) স্বামী স্বীয় আর্থিক সচ্ছলতা বা সংকটজনক অবস্থা অনুসারে স্ত্রীর সমস্ত ব্যয়ভার গ্রহণ করবে। স্ত্রীর পোশাক, পানহারা, চিকিৎসা ও বাসস্থান এ ব্যয়ভারের আওতায় পড়ে।
২)) স্বামী স্ত্রীর অভিভাবক হেতু তার মান-সম্ভ্রম, দেহ, অর্থ-সম্পদ ও দ্বীন রক্ষা স্বামীর দায়িত্ব। কেননা, কোন কিছুর অভিভাবক হওয়ার মানেই হলো তার দেখা-শুনা, পরিচর্যা ও হেফাযত করা।
৩)) দ্বীন সম্পর্কে জ্ঞান না থাকলে দ্বীনের জরুরী বিষয় শিক্ষা দেয়া। তবে স্বামী তাতে সক্ষম না হলে অন্ততপক্ষে মহিলাদের জন্য আয়োজিত ইলমের সমাবেশগুলোতে যোগদান করার অনুমতি দেবে। তা মসজিদ, মাদ্রাসায় হোক বা অন্য কোথাও। তবে শর্ত এই যে সেখানে ফেত্না বা স্বামী-স্ত্রীর ক্ষতি সাধিত না হাওয়ার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত থাকতে হবে।
৪)) স্ত্রীর সঙ্গে সদ্ভাবে জীবন-যাপন করা তার অন্যতম অধিকার। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ
وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ - سورة النساء: 19
অর্থাৎ, ((তাদের (স্ত্রীলোকদের) সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর।)) [সূরা আন্-নিসাঃ ১৯]
স্ত্রীর যৌন কামনা পূরণের অধিকার হরন না করা, গালি ও মন্দ ব্যবহার না করা। ফিৎনার ভয় না থাকলে আত্বীয়-স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ করতে বাধা না দেয়া, শক্তি ও সামর্থেøর ঊর্ধ্বে কাজের চাপ না দেয়া এবং কথা ও আচরনে সুন্দর ব্যবহার করা সদ্ভাবে জীবন যাপন করার আওতাভুক্ত। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
خيركم خيركم لأهله، وأنا خيركم لأهلي - سنن الترمذي: 3985
অর্থাৎ, ((তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সে, যে নিজ স্ত্রীর কাছে সর্বোত্তম। আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চেয়ে উত্তম।)) [তিরমিজীঃ ৩৯৮৫] তিনি আরো বলেনঃ
ما أكرم النساء ألا كريم, وما أهانهن إلا لئيم
((আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিরাই নারীদের মর্যাদা দান করে। আর অভদ্র-অসভ্যরাই তাদের তুচ্ছ ভাবে।))
পর্দা
পরিবারকে ধ্বংস ও অবনতির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ইসলাম সুষ্ঠ ব্যবস্থা দিয়েছে এবং তাকে চরিত্র ও শিষ্টচারের শক্ত জালের মাধ্যমে সুরক্ষিত করেছে। যাতে পরিবার ও সমাজ এমন সুষ্ঠ ও সুন্দর হয়, যেখানে থাকবে না প্রবৃত্তির উপদ্রব এবং স্বেচ্ছাচারের দৌরাত্ম্য। ফিৎনা সৃষ্টিকারী সকল উত্তেজনামূলক পথকে অবরোধ করতে নারী-পুরুষকে দৃষ্টি অবনত রাখার নির্দেশ দেয়। আল্লাহ্ তা‘আলা নারীর সম্মানার্থে, তার মান সম্ভ্রমকে লাঞ্ছনা ও অবমাননার হাত থেকে রক্ষার্থে, কুপ্রবত্তি ও অসৎ লোকের কুদৃষ্টি থেকে দূরে রাখতে, যাদের নিকট মান-মর্যাদার কোন মূল্য নেই, তাদের থেকে তাকে হেফাযত করতে, বিষাক্ত দৃষ্টির সৃষ্ট ফিৎনার দরজা বন্ধ করতে এবং তার সম্ভ্রম ও নৈতিক পবিত্রতাকে সম্মান ও শ্রদ্ধার জালে সুরক্ষিত রাখতে পর্দার বিধান দান করেন।
আলেমদের ঐকমত্যানুযায়ী হাত ও মুখমণ্ডল ব্যতীত সর্বাঙ্গ আবৃত রাখা ওয়াজিব। নারীর কর্তব্য হলো, অপরিচিত পর পুরুষের সামনে সৌন্দর্যের প্রকাশ না করা। আর হাত ও মুখমণ্ডলকে আবৃত রাখার ব্যাপারে আলেমরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন। প্রত্যেক দলের নিকট তাদের মতের সমর্থনে প্রমাণাদিও রয়েছে। আর পর্দা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে দলীলাদির সংখ্যাও অনেক। প্রত্যেক দল পর্দা সম্পর্কে বর্ণিত প্রমাণাদির কিছু অংশকে স্বীয় মতের সমর্থনে দলীল হিসাবে গ্রহণ করেছে এবং তার পরিপন্থী দলীলসমূহকে বিভিন্ন উক্তির দ্বারা খণ্ডন করেছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعاً فَاسْأَلُوهُنَّ مِن وَرَاء حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ - سورة الأحزاب: 53
অর্থাৎ, ((নবীর স্ত্রীদের নিকট থেকে তোমাদের কিছু চেয়ে নিতে হলে পর্দার বাইরে থেকে চেয়ে পাঠাও। তোমাদের ও তাদের অন্তরের পবিত্রতা রক্ষার জন্য এটা উত্তম পন্থা)) [সূরা আল-আহযাবঃ ৫৩] তিনি আরো বলেনঃ
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاء الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُوراً رَّحِيماً - سورة الأحزاب: 59
অর্থাৎ, ((হে নবী! তোমার স্ত্রীগণ, কন্যাগণ ও ঈমানদার লোকদের মহিলাগণকে বলে দাও, তারা যেন নিজেদের উপর নিজেদের চাদরের আঁচল ঝুলিয়ে দেয়। এটা অধিক উত্তম নিয়ম ও রীতি। যেন তাদেরকে চিনতে পারা যায় ও তাদেরকে উত্যক্ত করা না হয়। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।)) [সূরা আল-আহযাবঃ ৫৯] তিনি আরো বলেনঃ
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ - سورة النور: 31
অর্থাৎ, ((আর হে নবী, মুমিন স্ত্রীলোকদের বল, তারা যেন নিজেদের চোখকে বাঁচিয়ে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাযত করে ও নিজেদের সাজ-সজ্জা না দেখায়, কেবল সেই সব জিনিস ছাড়া যা আপনা আপনিই প্রকাশ হয়ে পড়ে। এবং নিজেদের বক্ষদেশের উপর ওড়নার আঁচল ফেলে রাখে। আর নিজেদের সাজ-সজ্জা প্রকাশ করবে না, কিন্তু কেবল এই লোকদের সামনে, তাদের স্বামী, পিতা, স্বামীদের পিতা, নিজেদের পুত্র, বোনদের পুত্র, নিজেদের মেলা-মেশার স্ত্রীলোক, নিজের দাসী, সেইসব অধীনস্থ পুরুষ যাদের অন্য কোন রকম গরয নাই, আর সেইসব বালক যারা স্ত্রীলোকদের গোপন বিষায়াদি সম্পর্কে এখনো ওয়াকফিহাল হয় নাই। আর তারা নিজেদের পা যমীনের উপর সজোরে ফেলে চলা-ফেরা করবে না এইভাবে যে, নিজেদের যে সৌন্দর্যø তারা গোপন করে রেখেছে লোকেরা তা জানতে পারে।)) [সূরা আন্-নূরঃ ৩১] হাদীসে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রী আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
كان النساء يصلين مع رسول الله صلى الله عليه وسلم الفجر فكان إذا سلم انصرفن متلفعات بمروطهن فلا يعرفن من الغلس - سنن النسائي
অর্থাৎ, ((নারীরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ফজরের সালাতে যোগদান করতেন। অতঃপর সালাত শেষে চাদরে নিজেদেরকে আবৃত করে আপন আপন গৃহে প্রত্যাবর্তন করাকালীন অনন্ধকারের জন্য তাদেরকে কেউ চিনতে পারতো না।)) [নাসায়ী] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
كان الرُّكبانُ يمرُّون بنا ونحن مع رسول اللّه صلى اللّه عليه وسلم محرماتٌ، فإِذا حاذوا بنا سدلت إحدانا جلبابها من رأسها على وجهها فإِذا جاوزنا كشفنا - السنن أبو داود: 1833
অর্থাৎ, ((আমরা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ইহ্রাম অবস্থায় থাকাকালীন সওয়ারীরা যখন আমাদের নিকট হয়ে অতিক্রম করত, তখন আমাদের কেউ তার চাদর মাথা থেকে মুখমণ্ডল পর্যন্ত ঝুলিয়ে নিত। অতঃপর যখন তারা চলে যেত, আমরা মুখমণ্ডল খুলে নিতাম।)) [সুনানে আবু দাউদঃ ১৮৩৩] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে আরো বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
يرحم الله نساء المهاجرات الأول، لما أنزل الله: {وليضربن بخمرهن على جيوبهن}. شققن مروطهن فاختمرن بها - صحيح البخاري: 4480-4481
অর্থাৎ, ((সর্বপ্রথম হিজরতকারীদের স্ত্রীগণের উপর আল্লাহ্ রহম করুন। যখন আল্লাহর এই বাণী- “এবং নিজেদের বক্ষদেশের উপর ওড়নার আঁচল ফেলে রাখে” অবতীর্ণ হয়, তখন নিজেদের চাদরকে দু’ভাগ করে একাংশকে ওড়না বানিয়ে ব্যবহার করতে আরম্ভ করেন।)) [বুখারীঃ ৪৪৮০-৪৪৮১]
পর্দার ব্যাপারে বর্ণিত প্রমাণাদির সংখ্যা অনেক। এ ব্যাপারে মতভেদের উল্লেখ না করেও বলা যায় যে, প্রয়োজন বোধে নারী তার মুখমণ্ডল খুলতে পারে এ ব্যাপারে সকলেই একমত। যেমন ডাক্তারের সামনে চিকিৎসার জন্য খোলা ইত্যাদি। অনুরূপ সকলে মনে করেন যে, ফিৎনার আশংকা থাকলে মুখমণ্ডল খুলে রাখা বৈধ হবে না। যারা মুখমণ্ডলকে খুলে রাখা বৈধ মনে করেন, তারা ফিৎনার আশংকাকালীন তা আবৃত রাখা ওয়াজিব বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। আর বর্তমানে যখন ফিৎনা-ফ্যাসাদ ব্যাপক রূপ ধারন করেছে, অসৎ ও ফাসেক প্রকৃতির মানুষ এত আধিক্য লাভ করেছে যে, শহর-বাজার ও সর্বত্র তা ছেয়ে গেছে এবং সৎ ও আল্লাহ্ভীরু লোকের হার কমে গেছে, এর থেকে ভয়াবহ ফিৎনার আশংকা আর কি হতে পারে? চরিত্র, পরিবার ও মান সম্মানকে সুরক্ষিত রাখার জন্যই পরপুরুষের সাথে অবৈধ মেলা-মেশা নারীর উপর ইসলাম হারাম করে দিয়েছে। ইসলাম মানুষের হেফাযত ও ফেৎনা-ফ্যাসাদের সমস্ত পথকে বন্ধ করতে তৎপর। আর নারীর পর্দাহীনভাবে চলা-ফেরায় ও অপরিচিত লোকদের সাথে বাধাহীনভাবে মেলা-মেশায় প্রবৃত্তির তাড়না জেগে উঠে স্বাভাবিক ভাবেই, আর এতে অন্যায়ের পথ সুগম হয়ে যায় এবং অন্যায় ও অনৌচিত্য র্কমকাণ্ড অনায়াসে সংঘটিত হয়ে যায়। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনঃ
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى - سورة الأحزاب: 33
অর্থাৎ, ((নিজেদের ঘরে অবস্থান কর এবং পূর্বতন জাহেলী যুগের সাজগোজ দেখিয়ে বেড়িও না।)) [সূরা আল-আহযাবঃ ৩৩] তিনি আরো বলেনঃ
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعاً فَاسْأَلُوهُنَّ مِن وَرَاء حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ - سورة الأحزاب: 53
অর্থাৎ, ((নবীর স্ত্রীদের নিকট থেকে তোমাদের কিছু চেয়ে নিতে হলে পর্দার বাইরে থেকে চেয়ে পাঠাও। এটা তোমাদের ও তাদের অন্তরের পবিত্রতা রক্ষার জন্য উত্তম পন্থা।)) [সূরা আল-আহযাবঃ ৫৩]
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারী-পুরুষের অবৈধ মেলা-মেশাকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। এমনকি এ পথে উদ্বুদ্ধকারী সকল উপায় উপকরণকেও অবরোধ করে দিয়েছেন, যদিও তা ইবাদাতের ক্ষেত্রে ও ইবাদাতের স্থানেও হয়। কখনো কখনো নারী নিজ বাড়ী থেকে ঐ স্থানে যেতে বাধ্য হয়, যেখান পুরুষের সমাগম। যেমন, তার নিকট তার প্রয়োজন পূরণ করে দেয়ার মত কেউ না থাকাকালীন সময়ে প্রয়োজনাদি পূরণের জন্য যাওয়া অথবা তার নিজের জন্য বা তার অধীনস্তদের জন্য জীবিকার কেনা-বেচাসহ অন্যান্য প্রয়োজনাদি পূরণের জন্য যাওয়া; এমতাবস্থায় তার বাড়ী থেকে বের হওয়াতে কোন দোষ নেই। তবে শরীয়তের বিধি-বিধানকে খেয়াল রেখে চলা-ফেরা করতে হবে। যেমন, ইসলামী বেশভূষায় সর্বাঙ্গ ঢেকে, সৌন্দর্যের প্রকাশ না করে বের হওয়া এবং পরপুরুষদের থেকে সব সময় পৃথক থাকা ও তাদের সাথে মিশে না যাওয়া। পরিবার ও সমাজকে (অন্যায় ও অনাচার থেকে) রক্ষার জন্য ইসলাম যে সমস্ত বিধান প্রণয়ন করেছে, তন্মধ্যে অপরিচিত কোন ব্যক্তির সাথে নারীর নির্জনে অবস্থান করাকে হারাম বলে ঘোষণা দেয়া হলো অন্যতম একটি বিধান। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপরিচিত কোন ব্যক্তির সাথে নারীর নির্জনে থাকাকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন যদি তার সাথে তার স্বামী বা মাহ্রাম (যাদের সাথে তার বিয়ে হারাম) না থাকে। কেননা, শয়তান মানুষের আত্মা ও চরিত্রকে কলংকিত করার কাজে দারুণভাবে তৎপর।
বিষয়: বিবিধ
১০১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন