রোজার শিক্ষা ও তাকওয়া
লিখেছেন লিখেছেন সত্যভাষন ০৮ জুলাই, ২০১৩, ০৫:৫৭:০২ বিকাল
ইসলাম শুধু অনুষ্ঠান সর্বস্ব ধর্ম নয়। ইসলাম একটি বাস্তব সম্মত আদর্শের নাম। মানুষের স্বভাব-প্রকৃতির সাথে এর শতভাগ সংগতি রয়েছে।
রোজা ইসলামের মৌলিক ইবাদতগুলির মধ্যে অন্যতম। রোজা নিয়মতান্ত্রিকতা শিক্ষা দেয়। এর মতো কার্যকর প্রোগ্রাম সুচী দুনিয়ার কোন ট্রেনিং সেন্টারে কেহ তৈরী করতে পারে নি। রোজা কিছু সময় ক্ষুধা-পিপাসা উপভোগ করার ব্যবস্থা নয়; এ জন্য রোজা ফরজ করা হয় নি। রোজা ফরজ করা হয়েছে- আল্লাহকে না দেখে তাঁর কাছে জীবনের সকল কাজের হিসাব দেয়ার অনুভূতি সৃষ্টি করার জন্য। এর নামই হচ্ছে তাকওয়া।
তাকওয়া অর্থ নিছক খোদা ভীতিই নয়। স্রষ্টা হিসাবে আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি নিয়ে যারাই দায়িত্ব পালন করে তারাই মুত্তাকী।
আমাদের সমাজে মুত্তাকী বলতে বিশেষ পোষাকের মানুষকে মনে করা হয়। তাকওয়াকে বিচ্ছিন্ন কিছু মনে করা হয়। তাকওয়া গুটি কয়েক আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মুত্তাকী হতে হলে কুরআনের হেদায়েত পুরোপুরি অনুসরণ করতে হবে।
সূরা আল বাকারার ৮৩নং আয়াতে বলা হয়েছে- "হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরয করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী নবীদের অনুসারীদের ওপর ফরয করা হয়েছিল। এ থেকে আশা করা যায়, তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুণাবলী সৃষ্টি হবে"।
সুতরাং তাকওয়ার গুণ অর্জন করার জন্যই রোজা ফরয করা হয়েছে। এর সাথে মানুষের ব্যবহারিক জীবন ওতপ্রত ভাবে জড়িত। তবে মূল টার্গেট হলো, আল্লাহর কিতাব আল কুরআনের হেদায়াতের স্বার্থক অনুসারী হওয়া।
সূরা বাকারার ৮৫নং আয়াতে বলা হয়েছে-"রমযানের মাস, এ মাসেই কুরআন নাযিল করা হয়েছে, যা মানব জাতির জন্য পুরোপুরি হিদায়াত এবং এমন দ্ব্যর্থহীন শিক্ষা সম্বলিত, যা সত্য-সঠিক পথ দেখায় এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য সুস্পষ্ট করেদেয়। কাজেই এখন থেকে যে ব্যক্তি এ মাসের সাক্ষাত পাবে তার জন্য এই সম্পূর্ণ মাসটিতে রোজা রাখা অপরিহার্য"।
রোজাকে স্বার্থক করতে হলে কুরআনকে বুঝতে হবে। কুরআনের জন্যই রোজা, কুরআনের জন্যই সবে ক্কদর। রোজা হচ্ছে কুরআন নাযিলের মাস ব্যাপী ওয়ার্কসপ ও উৎসব।
কুরআন শুধুমাত্র ধর্মগ্রন্থ নয় বা শুধু তাবিজ-তুমারের জন্য নয়। মানুষের জীবনের সকল দিক ও বিভাগের নির্দেশনা রয়েছে এ কুরআনে। কুরআন মরা মানুষের উদ্দেশ্যে ফাতেহা পাঠ করার জন্য নয় বরং জীবন্ত মানুষের পথ প্রদর্শনের জন্য নাযিল হয়েছে। কুরআন এসেছে মানুষের ব্যবহারিক জীবনকে সুন্দর করার জন্য। সমাজ থেকে অনাচার, পাপাচার ও দুরাচার দূর করার জন্য। তাকে নিয়ে শুধু খতম পড়া ও ঝাড় ফুক করা কুরআনকে অমর্যাদা করারই সামিল।
বিষয়: বিবিধ
২২৫২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন