Thumbs Up। কার পুত্র, কার নাতি নয়; কর্মই বলে দেবে তোমার পরিচয়!

লিখেছেন লিখেছেন মাহমুদ নাইস ০৮ জুলাই, ২০১৩, ০৭:৩৫:৫৯ সন্ধ্যা

মুসলিম হতে হলে তুমি কার পুত্র? কার নাতি? কোন্‌ বংশের লোক? কি তোমার জাতীয়তা? তোমার বাবা মা কোন্‌ বিশ্বাসের লোক? তোমার আত্মীয় স্বজন কি ধরনের জীবন যাপন করে? তোমার বাবা মা, আত্মীয় স্বজন কি ধরনের জীবন যাপন করে? তোমার বাবা মা, আত্মীয় স্বজন কোন্‌ ধর্মের লোক? এসবের কিছুই জানার ও দেখার প্রয়োজন নেই। মুসলিম হবার জন্যে এগুলোর কিছুই প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন শুধু নিম্নে বর্ণিত দুইটি বৈশিষ্ট্য অর্জন করা। ঐ বৈশিষ্ট্য দুটি অর্জন করলেই তোমার পরিচয় হবে-তুমি মুসলিম। তুমি নির্মল সেনের পুত্র হও, জ্যোতিবসুর পুত্র হও, রামমোহনের পুত্র হও, সন্তু লারমার পুত্র হও, গর্ডন গ্রীনিজের পুত্র হও, জন ডেভিডের পুত্র হও, আবদুল্লাহর পুত্র হও, জিয়াউর রহমানের পুত্র হও, তুমি মুসলিম, কারণ তুমি এক অদ্বিতীয় আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখো এবং কেবলমাত্র এক আল্লাহর দাসত্ব ও আনুগত্য করো।

এটাই মুসলিমের পরিচয়। পক্ষন্তরে তুমি যদি আল্লাহকে না চেনো , আল্লাহকে এক ও অদ্বিতীয় বলে না মানো, আল্লাহর হুকুম পালন না করো, তাঁর আনুগত্য ও দাসত্ব না করো এবং তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করে দিয়ে তাঁর মর্জিমতো জীবন যাপন না করো, তবে তুমি মুসলিম হতে পারবে না। তোমার পরিচয় হবে ‘কাফির’ বা আল্লাদ্রোহী। এক্ষেত্রে তুমি উমরের পুত্র হও, সৈয়দ সালমানের পুত্র হও , আল্লামা আরিফুল হকের পুত্র হও, মাওলানা মারুফের পুত্র হও, মুহিউদ্দিনের পুত্র হও, মুজিবুর রহমানের কন্যা হও, শহীদুল্লাহর নাতি হও, বদরুদ্দোজার নতনী হও- তাতে কিছু যায় আসেনা, ঐ দুটি বৈশিষ্ট্য অর্জন না করলে তোমর পরিচয় হবে কাফির, মুসলিম নয়।

এমনকি ত্রক্ষেত্রে যদি তোমার রেজিস্ট্রেশন, সাটিফিকেট, আইডেন্টিটি কার্ড, পাসপোর্ট ইত্যাদিতেও তোমার ধর্ম ইসলাম বলে লেখা থাকে , তবু তুমি মুসলিম হতে পারোনা। কারণ ‘মুসলিম’হলো একজন ব্যক্তির বিশ্বাস ও কর্মের পরিচয়। কেবল বংশীয় সূত্রে কেউ মুসলিম হতে পারেনা।

আরেকটি কথা বলে দিচ্ছি। সেটা হলো , বাংলাদেশ , ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান-এসব দেশে মুসলিম শব্দের পরিবর্তে ‘মুসলমান’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। এটা ফার্সী শব্দ। মূল আরবি পরিভাষা হলো ‘মুসলিম’।

এসো আমরা মুসলিম হই!!!

মুসলিম -এর পরিচয় তুমি পেয়ে গেছো । তুমি জানতে পেরেছো, আল্লাহকে চেনা-জানা-মানা এবং কেবলমাত্র এক আল্লাহর দাসত্বের মাধ্যমেই মুসলিম হওয়া যায়। অন্য কোনো পরিচয়ে মুসলিম হওয়া যায়না। সরাসরি জানা, মানা ও কার্য সম্পাদনের মাধ্যমে মুসলিম হতে হয়। আমার পিতা মুসলিম, কেবলমাত্র একারণে আমি মুসলিম হতে পারিনা। আমার বিশ্বাস ও কর্ম দ্বারাই আমাকে মুসলিম হতে হবে। কাশিরামের পিতা কাফির , তাতে কিছু যায় আসেনা। কাশিরাম নিজে যদি আল্লাহকে এক বলে জানে, মানে এবং কেবল মাত্র এক আল্লাহর দাসত্ব করে, তবে সে একজন মুসলিম।

উমরের পিতা কাফির ছিলেন, কিন্তু উমর তাঁর বিশ্বাস ও কর্ম দ্বারা মুসলিম হয়ে যান । খাদীজার পিতা মুশরিক ছিলেন, কিন্তু খাদীজা তাঁর চিন্তা, বিশ্বাস ও কর্মের মাধ্যমে মুসলিম হয়ে যান। ইকরামার পিতা আবু জাহল কাফির ছিলেন, কিন্তু ইকরামা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে কেবলমাত্র তাঁরই দাসত্ব করার মাধ্যমে মুসলিম হয়ে যান। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম ছিলেন ইহুদী, কিন্তু তিনি আল্লাহর সঠিক পরিচয় জেনে ঈমান আনেন এবং এক আল্লাহর দাসত্বের মাধ্যমে মুসলিম হয়ে যান। তামীম দারী ছিলেন খৃষ্টান, কিন্তু তিনি আল্লাহর এককত্ব সম্পর্কে অবগত হয়ে ঈমান আনেন এবং মুসলিম হয়ে যান।

এসো,আমরাও তাঁদের মতো জেনে বুঝে কর্মের মাধ্যমে মুসলিম হই।

ইমান-ইসলাম-মুসলিমঃ

ঈমান হলো বীজ। আর ইসলাম হলো বীজ থেকে উৎপন্ন গাছ। ইসলাম মানে-আনুগত্য, বাধ্যতা, হুকুম পালন ও আত্মসমর্পণ । আল্লাহ তা’আলার সঠিক পরিচয় জেনে নিয়ে , তাঁকে সর্বদিকে থেকে এক ও অদ্বিতীয় মেনে নিয়ে তাঁর নবীর মাধ্যমে প্রেরিত হুকুম ও বিধানের কাছে আত্মসমর্পণ করে দিয়ে তাঁর একান্ত বাধ্যগত ও অনুগত হয়ে জীবন যাপন করার নামই হলো ‘ইসলাম’। এমনটি যে করবে, সেই ‘মুসলিম’। মুসলিম মানে-আল্লাহর হুকুম পালনকারী, আল্লাহর অনুগত ও বাধ্যগত হয়ে জীবন যাপনকারী এবং আল্লাহর কাছে বিনীত আত্মসমর্পণকারী ।

ঈমান হলো আল্লাহর সঠিক পরিচয় জানা এবং তাঁকে এক ও অদ্বিতীয় বলে স্বীকার করা ও মেনে নেয়া । আর ইসলাম হলো তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করে দিয়ে তাঁর অনুগত ও বাধ্যগত হয়ে তাঁর হুকুম পালন করা এবং তাঁর মর্জিমতো জীবন যাপন করা।

সুতরাং ইসলাম হলো, আল্লাহ প্রদত্ত জীবন যাপনের বিধান। এ বিধানের মূল কথা হলো, নির্ভেজাল ঈমান এবং এক আল্লাহর দাসত্ব ভিত্তিক জীবন যাপন। এ বিধানে আল্লাহর দাসত্ব করার এবং তাঁর মর্জিমতো জীবন যাপন করার মডেল হলেন মুহাম্মাদ রসূলুল্লাহ সা.। তিনি যেভাবে ঈমান এনেছেন এবং ঈমান আনতে বলেছেন, তোমাকেও ঠিক সেভাবেই ঈমান আনতে হবে। তিনি যেভাবে আল্লাহর আনুগত্য ও দাসত্ব করেছেন, তোমাকেও ঠিক সেভাবেই আল্লাহর আনুগত্য ও দাসত্ব করতে হবে। তিনি যেভাবে আল্লাহর হুকুম পালন করেছেন এবং তাঁর মর্জিমতো চলেছেন, তোমাকে ঠিক সেভাবেই করতে হবে। তবেই হবে তুমি প্রকৃত মুসলিম।

বিষয়: সাহিত্য

১৮৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File