ঐ দেখ পথের বাঁকে চেয়ে চেয়ে দেখছে নির্বাক বাবা তার ছোট্ট ছেলের নতুন বাড়িটি!
লিখেছেন লিখেছেন মাহমুদ নাইস ০৫ জুলাই, ২০১৩, ০১:১৬:২৪ দুপুর
প্রাণ বহনকারী গাড়িটি কোথায় কখন কিভাবে চলে কারো জানা নেই। হাসি কান্নাভরা স্বপ্নীল চঞ্চলা প্রাণের খোঁজে ঘুরেফেরে গাড়ি। সদাই চলমান। কখনো থেমে থাকে না। কোন পথে কখন হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে কার প্রাণটি সংগ্রহ করে নিয়ে যায় জ্ঞানহীন অজানায়!
মায়ায় তেলে এই গাড়ি চলে না। বাবা-মার ভেতর দেখ কত মায়াই না ছিল এইটুকুন ছোট্ট ছেলেটার জন্য! খুব বেশি না! মাত্র তিন ভাই ওরা। সবার ছোট ছেলে আছগার। সন্তান যার, সেই বুঝে। আমি বুঝি না। তবে অনুভব করার মানসিকতা জেগেছিল মনে। নিজ হাতেই পরশু দিন রেখেছিল বাবা কাঁচা বাঁশের বেড়া দেওয়া ছোট্ট কুটিরে। শুধুই খেঁজুর পাতার কাঁটার নিরাপত্তা। আর নিজে না খাইয়ে কত নিরাপত্তা দিয়েছিল তা একজন বাবা আর মায়েরাই কেবল জানে! কত মায়ায় আগলে রেখেছিল এই স্নেহের সন্তানকে এতদিন! কই? বাবার বুকে আর কি কোন স্বপ্ন নাই? আর কি শত হাজার কষ্ট সইতে ইচ্ছে করে না? ছেলেকে কি আর নিজে না খাইয়ে খাওয়াতে ইচ্ছে করে না একবার? এততো মায়া, স্বপ্ন, সাধনা সবই কি বাবা আজ ভুলে গেল! আমি শুধু বাবাকে দেখছিলাম ছেলের জন্য জানাজা পড়তে গিয়ে।
ঐ দেখ পথের বাঁকে চেয়ে চেয়ে দেখছে নির্বাক বাবা তার ছোট্ট ছেলের নতুন বাড়িটি! আজ তার পাশে নিজের হাতেই রাখবে প্রথম ছেলে আবরার কে। কত করুনই না এমন দৃশ্য! দেখেন না বাবার চোখের সামনেই তৈরী করা হচ্ছে প্রথম সন্তানের ঠিকানা। এটাই তার আসল বাড়ি। মায়ার বাধন সব কিছু এতদিন যা ছিল হৃদয়ের সবটুকুই মাটি চাঁপা দিবে একসাথে। আমি শুধুই ভাবছিলাম। ভাবনাকে আমি কিছুতেই সরাতে পারছিলাম না মন থেকে। আমি এখনো ভাবছি! পিছনে ফিরে কি খালি হাতে আসবে বাবা? বাবা কি আসতে পারবে এখান থেকে?
আমি কিভাবে এলাম, তা আমিই জানি। আমার বড় কষ্ট হচ্ছে। আমার জন্য নয়; এক এক করে দু'টি সন্তান হারা বাবার জন্যে! আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে, এমন দুঃখিনি মা না জানি কেমন করছে! হে আল্লাহ তুমি মা দুঃখিনি বাবা আর মায়ের বুকে সান্ত্বনার সাহস হলেও দিও!
একজন শুধু একটি কথাই বাবার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আমি সন্তানের বাবাকে কিছুতেই সান্তনা দিতে পারব না। শুধু এতটুকুই বলি; ছেলের বাবা শুধুই দু'টি সন্তানকে হারায় নি; যেন দু'টি জান্নাত কামাই করে নিয়েছেন। এমন নিষ্পাপ সন্তানের উছিলায় আল্লাহ যেন বাবা-মায়ের সাথে আমাদের সবাইকেও জান্নাত নসীব করেন। আমি হৃদয় উজাড় করে দিয়ে উচ্চ শব্দে বলে ফেলেছিলাম, আমিন! এমন খালেছ আমিন বলা কবুল করেই আল্লাহ যেন আমাকে প্রাণ গাড়িতে উঠায়!
বিষয়: বিবিধ
১৭৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন