এগিয়ে আসতে হবে আমাদেরকেই
লিখেছেন লিখেছেন আরাফ করিম ০৮ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:১৭:৩১ রাত
আমাদের দেশে সমস্যার সংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই হারে সমাধান হচ্ছে না মোটেই। শ্রমিক অসন্তোষ, তত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প ইত্যাদি বড় বড় সমস্যাতো রয়েছেই সেই সাথে রয়েছে অনেক ছোট ছোট সমস্যা যেগুলোর সাথে আজকাল আমরা মানিয়ে নিতে শুরু করেছি, যেমন-ছিনতাই, ডাকাতি, ইভটিজিং, গলাকাঁট চিকিৎসা ব্যবস্থা, অফিস-আদালতের দুর্ণীতি, শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা ইত্যাদি আরো নানা ধরনের সমস্যা।
বড় ছোট সব ধরনের সমস্যার সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করাটা যেন আমাদের অভ্যাসে দাঁড়ীয়ে গেছে। এতে করে সমস্যার সমাধান যেমন সম্ভব নয় তেমনি সমস্যা থেকে মুক্তিও সম্ভব নয়। বরং তাতে সমস্যা আরো বেড়ে যায়। একটু খুলে বলা যাক- ধরা যাক ছিনতাই। যে ছিনতাই করে সে ছিনতাইকারী। সে তো জন্ম থেকেই ছিনতাইকারী ছিল না। সে যে পরিবেশে বড় হয়েছে সেই পরিবেশই তাকে এ পথে আসার সুযোগ দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে তার পরিবার, সমাজ আর রাষ্ট্র সমানভাবে দ্বায়ী। ঐ একই পরিবেশে বসবাসরত সবাই কিন্তু ছিনতাইকারী হয় না। যারা ছিনতাইকারী হয় না তাদেরকে দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে-(১)ছিনতাইকারীদের পৃষ্ঠপোষক-এরা ছিনতাইকারী তৈরি করে, নিয়ন্ত্রন করে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য। এক শ্রেনীর নেতারাই এটি করে থাকে।(২)চোখ থাকতে অন্ধ টাইপের আমজনতা- এদেশের সিংহভাগ মানুষই এই দলের অন্তর্ভুক্ত। এরা সমাজের অবক্ষয়গুলোকে চেয়ে চেয়ে দেখে কিন্তু নেতাদের আর তাদের সাঙ্গোপাঙ্গোদের ভয়ে চুপ করে থেকে অন্যায়ের সাথে আপোষ করে আরো একটা দিন ভালো থাকার আশায়।
এখন কথা হল কেন একজন মানুষ ছিনতাইকারী হয়। অনেক কারনেই হতে পারে-(১)শিক্ষার অভাব, (২)অল্প বয়স থেকেই অসৎ সঙ্গ, (৩)দারীদ্র, (৪)নেশায় অসক্তি। অরো অনেক কারন খুঁজে বের করা যেতে পারে। কিন্তু আমি সেদিকে না গিয়ে উপরে ৪টি কারন একসাথে ব্যাখ্যা করার চেষ্ট করছি- পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার স্বল্পতা আর নৈতিক শিক্ষার অভাব থেকেই শুরুটা হয়। দরীদ্র পরিবারের বেশিরভাগ ছেলেদের বেলায় এটি একটি সাধারন ব্যপার। তাই অল্প বয়সে তাদের অনেকেই অসৎ সঙ্গের দ্বারা নেশার জগতে প্রবেশ করে আর তাতে আসক্ত হয়ে পড়ে। তারপর নেশার টাকা যোগাড় করতেই শেষমেশ ছিনতাইয়ের পথ বেছে নেওয়া। আরো কিছু ব্যপার জড়িয়ে থাকে অনেক সময়- ক্ষমতাবান হওয়ার ইচ্ছা, অন্যের উপর জেদ, আকষ্যিক ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা ইত্যাদি।
এই সব ছিনতাইকারীদের অনেকেই পরবর্তিতে ছিন্তাইয়ের চেয়ে অনেক বড় বড় অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার হচ্ছে একশ্রেনীর নেতা আর প্রভাবশালী লোকদের দ্বারা।
সকল সমস্যা নিয়ে এভাবে আলোচনা করতে থাকলে শুধু সময়ি বয়ে যাবে। তাই আর অন্য সমস্যাগুলো ব্যখ্যার চেষ্টা না করে এটুকুই বলবো যে-এভাবে চলতে থাকলে দেশের অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাবে দিন দিন। সমাধানের জন্য এগিয়ে আসবে কে/কারা? এগিয়ে আসতে হবে আমাদেরকেই। কার অবস্থান থেকে কি পদক্ষেপ নিওয়া উচিৎ তা চিন্তা করলেই বুঝা সম্ভব। সে চিন্তা করার ক্ষমতাও আমাদের আছে। শুধু সদিচ্ছার অভাব। নিজেকে আর প্রিয়জনদের নিরাপদে রেখেও অনেক কিছু করা যায়। প্রশাসন বা সরকারকে দোষারোপ করে কাজের কাজ হবে না কিছুই, নিয়মিত অন্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে চাপের উপর রাখতে হবে এদের। কারন নিজে থেকে এরা এগিয়ে আসবে কোন সমস্যা সমাধান করতে এমনটা আশা করা বৃথা।
বিষয়: রাজনীতি
৯০২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন