এক জলোমান এবং আজকের মুসলিমদের অবস্থা
লিখেছেন লিখেছেন মুহামমাদ সামি ০২ মার্চ, ২০১৪, ০৫:৩৯:৫০ সকাল
অনেক অনেক বছর আগের কথা। মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজিস্থানে দনেবাই নামের এক মুসলিম পাহলোয়ান বসবাস করতেন। একদিন
অমুসলিমরা(জওয়ান-জওয়ান নামের একজাতি) তাঁকে মেরে তার একমাত্র ছেলে জলোমানকে বন্ধী করে নিয়ে যায়। জলোমানের মা নায়মান ছেলেকে অনেক ভালবাসতেন। ছেলের খুঁজে দিশেহারা অবস্থায় ঘুরতে ঘুরতে একদিন ঠিকি ছেলের সন্ধান পেয়ে গেলেন। কিন্তু ছেলে মা’কে চিনতে পারেনি। কারণ, তথকালীন যুগে মুসলিম ছেলেদের বন্ধী করার পর উটের চামড়া গরম করে মাথায় লাগিয়ে দেয়া হত, যার ফলে তারা অতীতের সব ভুলে যেত। জলোমানের বেলায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। সে তার মাকে চিনতে পারেনি। এখানে আরেকটা কথা বলে রাখি, যাদেরকে উটের চামড়া গরম করে মাথায় লাগিয়ে দিয়ে অতীতকে ভুলিয়ে দেয়া হত তাদেরকে ‘মাংকুরত’ বলা হত। আমাদের জলোমান তথা মাংকুরত’এর মা ছেলেকে পাওয়ার পর তাঁকে অনেকভাবে বুঝানোর চেস্টা করলেন যে উনি তার মা। মা বলেন তুমিই আমাদের জলোমান, তোমার বাবার নাম দনেবাই। কিন্তু জলোমান বলল আমার নাম জলোমান না , জলোমান নামের কোন ব্যক্তির সাথে আমার জীবনে দেখাও হয়নি, আমার নাম মাংকুরত। মা তখন বেশ চিন্তিত হয়ে গেলেন; কিভাবে ছেলের মাথা থকে চামড়াটা তুলে ফেলে অতীতে ফিরিয়ে আনা যায় সেই চিন্তা করছিলেন। কারণ চামড়া দিয়ে মাথা জড়িয়ে দেয়ার কারণে যেসব চুল গুলো গজানোর চেষ্টা করছিল সেগুলো উপরে আসতে না পেরে মাথার ভেতরেই ডুকে যাচ্ছিল। যার ফলে মানুষ স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলে। মা এর পরদিনও আসলেন তার জন্য খাবার নিয়ে এসে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করলেন যে, সে মাংকুরত না সে হল জলোমান। জলোমান অনেক ভাল তিরান্ধাজ ছিল। মা তাঁকে সে কথাটাও স্মরণ করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু না জলোমান কোন মতেই মেনে নেয়নি। সে ঐদিন ক্যাম্পে গিয়ে লোকদেরকে বলল একটা মহিলা এসে নিজেকে আমার মা দাবী করছিল। তারা বলে ও তোমার মা নয় ও হল আমাদের শত্রু আবার দেখলে মেরে ফেল। এরপরদিন জলোমান সিদ্ধান্ত নিয়ে গেলো মহিলাটা আজকে আসলে মেরেই ফেলবে। পরদিন মা আবারও খাদ্যদ্রব্য নিয়ে ছেলের কাছে আসতেছিলেন। মায়ের মন বলে কথা কিন্তু ছেলে জলোমান তথা মাংকুরত তাঁকে দূর থেকে দেখেই তীর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলে।
আজকের আমাদের মুসলমানদের অবস্থাও সেই জলোমানের মত। আমরা জলোমানরা নিজের পরিচয় ভুলে গিয়ে মাংকুরত পরিচয় গ্রহণ করে আপনজন তথা আমাদেরই প্রিয় ভাইদেরই বুকে গুলী চালাচ্ছি।
আমাদেরকে বলা হচ্ছে তুমি বাঙ্গালী, সে পাকিস্তানি, সে তোমার শত্রু, তোমার সাথে তার কোন সম্পর্ক থাকতে পারেনা। তুমি শিয়া আর তুমি সুন্নী, সুন্নীর সাথে শিয়ারতো সম্পর্ক থাকার প্রশ্নই আসেনা। আমাদের মাথায় সেট করে দেয়া হয়েছে যে পাকিস্তানিরা আমাদের স্বাধীনতা –সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। আমরা আমাদের অতীত ভুলে গিয়ে মাংকুরত সেজে বসে আছি। ঠিক তেমনিভাবে শিয়া-সুন্নিদের ক্ষেত্রেও একেই কথা।
ছবিঃ ''তুমি আমার পরম আত্মীয়, তুমি আমার প্রাণ।
ভাইয়ের খুনের বদলায় দিব তোমায় পুষ্পমাল্য দান।।''
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৯ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
====================================
পরিচ্ছদঃ ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ করার গুরুত্ব
৫/১৯৩। উম্মুল মু’মেনীন উম্মে সালামাহ হিন্দ্ বিন্তে আবী উমাইয়া হুযাইফাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘অদূর ভবিষ্যতে তোমাদের উপর এমন শাসকবৃন্দ নিযুক্ত করা হবে, যাদের (কিছু কাজ) তোমরা ভালো দেখবে এবং (কিছু কাজ) গর্হিত। সুতরাং যে ব্যক্তি (তাদের গর্হিত কাজকে) ঘৃণা করবে, সে দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে এবং যে আপত্তি ও প্রতিবাদ জানাবে, সেও পরিত্রাণ পেয়ে যাবে। কিন্তু যে ব্যক্তি (তাতে) সম্মত হবে এবং তাদের অনুসরণ করবে (সে ধ্বংস হয়ে যাবে)।’’ সাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না?’ তিনি বললেন, ‘‘না; যে পর্যন্ত তারা তোমাদের মধ্যে নামায কায়েম করবে।’’[1]
[1] মুসলিম ১৮৫৪, তিরমিযী ২২৬৫, ৪৭৬০, আহমাদ ২৫৯৮৯, ২৬০৩৭, ২৬১৮৮
====================================
হাদিসের লিংক
মন্তব্য করতে লগইন করুন