মুরসীর পদত্যাগই কি একমাত্র সমাধান ?

লিখেছেন লিখেছেন মুহামমাদ সামি ০৩ জুলাই, ২০১৩, ১২:৩৭:১০ রাত

মুরসী বিরোধীরা,ইখুওয়ানুল মুসলিমীন এবং তাদের রাজনৈতিক পার্টির প্রধান অফিস থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল অফিসে আগুন দিয়েছে ।সকল রাস্তা-ঘাট বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে,সরকারী কর্মকর্তাদের অফিসে যাওয়া থেকে বাঁধাগ্রস্ত করা হচ্ছে । সাধারণ জনগণ বাইরে বের হতে পারছেনা জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতির ভয়ে,কারণ আন্দোলনকারীরা খুব উগ্র ভূমিকা পালন করছে । এক কথায় মিশরের জীবন অচল হয়ে পড়েছে । মুরসীর পক্ষের লোকেরা কায়রোর রাবেতা আদবিয়া মসজিদকে কেন্দ্র করে জড়ো হয়েছেন ।এবং মুরসীকে পদত্যাগ করতে দিবেনা বলে শ্লোগান দিচ্ছে ।

এখন কথা হল মুরসী পদত্যাগ করলে কি হবে? উনার পদত্যাগই কি একমাত্র সমাধান?সুষ্ঠু গণতন্ত্রের দ্বার খোলার নামে কি দ্বিতীয় আরেকটি বিপ্লব এটি ?অথবা ৯০ মিলিয়ন মানুষের এ দেশটিতে অরজকতা কি চলমানই থাকবে?

মুরসীর বিরুধীদের মুরসীকে উৎখাত ব্যতীত আপাতত আর কোন বি প্ল্যান নাই বলে মনে হচ্ছে না।উৎখাতের পর বিরুধীদের একটি অংশ সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নিতে পারে এবং ঐ সেনাবাহিনীর আণ্ডারেই নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে । (তারকিস একটা পত্রিকার অনুবাদ ) ।

এটি মুসলিম বিশ্বের উপর ইয়াহুদিদের চলমান ষড়যন্ত্রের অন্য একটি উদাহরণ বলে মনে হচ্ছে ।যেখানে মুসলমানরা একটু মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় সেখানেই তারা মুসলমান মুসলমানদের মধ্যে ঝগড়া বাঁধিয়ে দূর থেকে মজা দেখতে খুবি অব্যস্ত । আর আমরা মুসলমানরা বেকুবের মত তাদের দাবার গুটির কাজ করে যাচ্ছি ।তারা যেভাবে চালাচ্ছে সেভাবেই চালিত হচ্ছি ।আফসোস খালিদ বিন ওয়ালিদ ,তারেক বিন জিয়াদ, গাজী সালাউদ্দীন আইয়ুবীর উত্তরসূরিদের। তারা সব কিছু বোঝার পরও স্বার্থ এবং ক্ষমতার লোভে তাদের ভাইয়ের বিরুদ্ধেই অস্ত্র ধরছে ।ভাই ভাইকে করছে রক্তাক্ত !!

এ থেকে পরিত্রাণ কোথায় ? আদৌ কি আছে কোন পরিত্রাণ বা সমাধান ?অবশ্যই আছে,যেখানে সমস্যা সেখানে সমাধান অবশ্যই আছে , এর সমাধান হলঃ-

প্রথমতঃ যেসব ভাইয়েরা গাদ্দার হয়ে গেছে আগে তাদেরকে ঠিক করা যদি ঠিক না হয় তবে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় করে দেয়া,দরকার নাই এমন ভাইয়ের ।কারণ,পৃথিবীতে যারা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে তাদেরকে আল্লাহ্‌ পছন্দ করেননা।সুতরাং যাদেরকে আল্লাহ্‌ পছন্দ করেননা তাদেরকে সত্যিকার মুসলমান হিসেবে আমাদেরও পছন্দ করার কোন মানে থাকতে পারেনা ।আর আমাদের কিছু ভাইকে এমনভাবে কাজে নেমে পড়তে হবে যেন এসব গাদ্দারদের বিষবাষ্প যেন আর দানা বাঁধতে না পারে ।

দ্বিতীয়তঃ এসব গাদ্দারদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দানকারী ইয়াহুদীবাদকে পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া।জানি ওরা অনেক শক্তিশালী এবং তারা অনেক বড় বড় ষড়যন্ত্র করে।কিন্তু আল্লাহর শক্তির কাছে এসব কিছুই না। আল্লাহ্‌ বলেনঃ-‘’ তারা আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কর,আল্লাহ্‌ও তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন (ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেন),নিশ্চয়ই ষড়যন্ত্রকারীদের(প্রতিহত) মধ্যে আল্লাহই সর্বোত্তম।‘’সুতরাং ভয়ের কিছু নাই আমারা যদি সত্যিকার অর্থে একমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্টির উদ্দ্যেশে কাজে নেমে পড়ি আল্লাহ্‌ অবশ্যই আমাদেরকে সাহায্য করবেন।

তৃতীয়তঃ সকল মুসলমানদের এক এবং ঐক্যবদ্ধ হওয়া ।এটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্তপূর্ণ বিষয়। মানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহাম্মাদ (সঃ) যেখানে মুসলমানদেরকে একটি অঙ্গের সাথে তুলনা করেছেন সেখানে আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে সারাক্ষন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত,লিপ্ত মারামারি হানাহানিতে।কিই বা জবাব দিব আমরা কাল কেয়ামাতের ময়দানে শাফায়াতের জন্য যদি রাসুলুল্লাহর (সঃ)এর কাছে যাই তখন ?তিনি কি তখন আমাদের দিকে চোখ তুলে তাকাবেন?সুতরাং সাবধান যা হওয়ার তা হয়ে গেছে পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নাই ।এখন থেকে এক এবং ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজে লেগে পড়তে হবে।যেখানে কোন মুসলমান কোন সমস্যায় পতিত সেখানেই গিয়ে দাঁড়াতে হবে শুধু মুসলমানের সমস্যায় না কারণ রাসুল (সঃ)আমাদেরকে সমগ্র মানবতার কল্যাণ সাধনের শিক্ষা দিয়েছেন।

মুলকথায় ফিরে যাই,মুলকথা ছিল আসলে মূরসীর পদত্যাগই কি প্রকৃত সমাধান?মুরসীর পদত্যাগ আসলে কোন সমাধান না,আর মুরসী এমন কোন কাজ করেনি যে তাঁর বিরুদ্ধে মানুষ এভাবে রাস্তায় নেমে পড়বে।এটা একটা পশ্চিমা তথা ইয়াহুদীদের ষড়যন্ত্র ।তারা একটি মুসলিম দেশ শান্তিপূর্ণ ভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে তা কিভাবে সহ্য করবে? তাদের মিত্র তথা ক্ষমতা লোভী গাদ্দার মুসলমানরা ইতিপূর্বে হাসান আল বান্নাকে শহীদ করেছে গুলী করে,সাইয়েদ কুতুবকে শহীদ করেছে ফাঁসির কাষ্ঠে চড়িয়ে আর এখন মুহাম্মাদ মুরসীকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।তাই পৃথিবীর প্রতি প্রান্ত থেকে মুসলমানদেরকে সোচ্চার হতে হবে।মুরসীর পাশে দাঁড়াতে হবে এবং শেষ পর্যন্ত তাঁকে সাপোর্ট দিয়ে যেতে হবে।ইনশাআল্লাহ্‌ বিজয় আমাদেরেই।।

বিষয়: বিবিধ

২২৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File