রাজনীতি, আমজনতা ও রুপসী বাংলা
লিখেছেন লিখেছেন আহমেদ সাজন শেখ ১৫ জুন, ২০১৩, ০১:০২:৩৯ দুপুর
আমাদের এই দেশের নামখানি অতি চমৎকরা, কোন কবি সাহিত্যিক একে বলেছেন রুপসী বাংলা, কেউবা বলেছেন রুপসী রাজকন্যা, আবার কোন কবি খুব জোরেসোরেই বলেছেন রুপের সাগর রুপের দেশ আমার সোনার বাংলাদেশ। সবুজ শ্যামলে ভরপুর সত্যি এক অভূতপূর্ব ও অনিন্দ সুন্দর ছায়া মাখা দেশ হলো আমাদের প্রিয় স্বদেশ বাংলাদেশ। বাংলার রুপের মতো এখানকার মানুষগুলো ও খুবই সহজ সরল প্রকৃতির। এখনও এদেশে বসন্তে গাছের ডগায় বসে একলা মনে সুকণ্ঠি কুকিল ডাকে। বৈশাখ -জৈষ্ঠ্য মাসে আম কাঁঠালের সময় কাঠল ভাটিয়ালী সুরে এদিক ওদিক ওড়াওড়ি করে আর সুরেলা কণ্ঠে গান গাইতে থাকে।
এখনও বৈশাখি ঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড করে দেয় এদেশের হাজার কিংবা লাখো কৃষকের ঘর বাড়ী। হাজার হাজার দিন মজুর কিংবা খেটে খাওয়া মানুষ নদী গর্ভে হারায় তাদের বাপ-দাদার রেখে যাওয়া সম্ভল ভিটেমাটি।এদেশে অনেকের ভাগ্য বদল হলেও ,ভাগ্যের কোন হেরফের হয়না কেবল আমজনতার। বরং ঐসব খেটে খাওয়া আমজনতা দিনের পর দিন নিংস্ব হতে থাকেন। একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর অন্যদিকে লোভী নেতা, মন্ত্রী ও আমলাদের খপ্পরে পড়ে।
যদিও আমাদের দেশখানি অর্থাৎ এই রুপসী বাংলা খানি দেখতে ঠিক ছবির মতোই সুন্দর। এখানকার রাঙামাটি জেলা ঠিক যেন ইউরোপের স্কটল্যান্ডের মতন দেখিতে, আবার এখানকার পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম জেলা মিলে ঠিক একখানি গ্রেট বৃটেনের মতোই মনে হয়। সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা একত্রে মিলে যেন একটি সুইজারল্যান্ড মনে হয়। আবার কুমিল্লা, ফেনী , লক্ষীপুর ও নোয়াখালী জেলা মিলে যেন একখানি জাপান কিংবা মালোএশিয়ার মতোন মনে হবে আপনার। কবি সাহিতত্যিকরা এর রুপে ও বৈচিত্রে মুগ্ধ হয়েই এতাসব কবিতা , গান কিংবা ছোট গল্প লিখে গেছেন। আমরা গর্বিত যে, এতো সুন্দর , মনোরম ও অপরুপা একখানি দেশে আমাদের জন্ম। আরও ভালো লাগেযে, এখা্নকার সাধারন মানুষ গুলোও খুবই চমৎকার মননের , নেই তাদের মধ্যে কোন রাগ, হিংসা কিংবা প্রতিহিংসা, বরং উনারা আবেগের তাড়নায় তাড়িত হয়ে খুবই সহজ সরলভাবে তাদের জীবণ অতিবাহিত করে দেন। ঐসব আমজনতার মধ্যে নেই কোন রেসারেসি, নেই কোন অহংকার, তাহাদের জীবন যাপন সম্পূর্ণ লোভ লালসার উর্দ্ধে , তাহার পাশের মানুষের সাথে কখনই কোন বৈরী আচরণ করেন না। গোঠা দেশের সকল মানুষকেই উনারা নিজের আপন ভাই এর মতোই দেখেন।
পক্ষান্তরে আমাদের দেশের বড় বড় রাজনীতিবিদরা সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রমী ভাবে পরিচালিত হন। উনারা কখনই লোভ লালসা-কে পাশ কাটিয়ে জীবণ পরিচালনা করতে পারেন না। তাহাদের পাওয়ারও শেষ নেই , আবার চাওয়ারও শেষ নেই। যত পাই তত চাই , এযেন উনাদের চিরাচরিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। কখনই দেশের আমজনাতার ভাগ্য বদলের কথা মনোযোগ সহকারে না ভেবে বরং আত্ন উন্নয়নের প্রতি্ই ঢের মনোযোগী হতে দেখা যায়। এযেন সুযোগ হাতছাড়া না করার এক অদম্য চেষ্টা বা প্রচেষ্টা। এখানকার বড় বড় রাজনৈতিক দলের নেতারা একে অন্যকে বিরাট শত্রু ভেবে থাকেন, বন্ধুসূলভ আচরণ ও করতে তেমন একটা দেখা যায়না।
একদলের নেতারা অন্যদলের নেতার প্রতি চরম বৈশম্যমূলক ও আক্রমনাত্নক আচরণ ক, অবশ্য এসকল নেতাদের শতকরা দুএকজন একটু ব্যাতীক্রমী স্রেবভাবের থাকেন। এক রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা অন্য রাজনৈতিক সংগঠনের নেতার সহিত এমন মারাত্নক ঝগড়া ঝাটি কিংবা হিংসাত্নক ও ধ্বংসাতন্ক কার্যে লিপ্ত হন যেন, দুটি দেশের মধ্যে যেরকম করে যুদ্ধ শুরু হয়, ঠিক সেরকমই চলে তাদের দ্বন্ধ। একদল অন্যদলকে কোন ভাবেই সহ্য করিতে পারেন না। এখানে বলা বাহুল্য যে, এক পার্টির নেতারা অন্য পার্টিকে কখনই সহজভাবে নিতে চান না। তাদের ভাবসাব দেখে মনে হয় যেন এই দেশে একটি পার্টি বা দল থাকাই যুক্তিযূক্ত, আর কোন দল বা মতের উপস্থিতির প্রয়োজন একেবারেই ক্ষীন। অথচ একটি গণতান্ত্রিক দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বা মত থাকাটাই স্বাভাবিক। এতে দ্বিমতের কোন কারণ বা হেতু থাকার কথাও না। প্রতি ৫ বছর পর পর দেশে নির্বাচন আসবে , একটি দল যৌথ বা এককভাবে নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করবে। আর বিরোধী দল বা মতের লোকেরা সরকারের সমালোচনা করবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্ত্র আমাদের রুপসী বাংলাদেশে এসব চলে সম্পূর্ণ ধ্বংসাত্নক ও হিংসাত্নক ভাবে।
রুপসী বাংলার সমূহ রাজনৈতিক দলের পাল্টা পাল্টি আক্রমণ মূলক কাজ কর্মের ধরুন এই অনিন্দ সুন্দর দেশখানি পিছিয়ে পড়ছে দিনের দিন। উন্নয়নের বৈপরীত্যে দিন দিন আমরা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছি। এযেন মরার ওপর খাড়ার গা। আমরা সাধারণ মানুষ মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে, রুপসী বাংলার রাজনীতিকদের আরও অনেক বেশি সচেষ্ট হওয়া দরকার , আরও অনেক বেশি সহনশীল হওয়া অতীব জরুরী। এদেশের সুন্দর ও সঠিক উন্নয়ন এবং আমজনতার সম উন্নয়নের জন্য অর্থাৎ আমাদের এই চমৎকার বাংলাদেশের যথাযথ উন্নয়নের জন্য আমাদের রাজনীতিকদের আরও বেশি বেশী দেশের প্রতি মমত্তবোধ বাড়াতে হবে ও এর মানুষের প্রতি উদার হওয়া বাঞ্চনীয় বলে মনে করি। তাদেরকে সমস্ত হিংসা বিদ্বেষ রেসারেসি ভুলে গিয়ে সকলকে একযোগে কাজ করা উচিৎ। কারণ কেউই চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে না। নির্দিষ্ট মেয়াদ পর জনগণ যাদেরকে সাপোর্ট করবে তাহারাই সরকার গঠন করেব। ইহাই চিরাচরিত নিয়ম। আমরা নিয়মের হেরফের করতে পারি না। আমাদের উচিৎ জনগণের রায় মেনে নেওয়া এবং সকল হিংসা বিদ্ধেষ ও ধংসাত্নক কার্য কলাপ বাদ দিয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্ননিয়োগ করা, যাহাতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম একটি সুন্দর ও সত্যিকারের রুপসী বাংলার দেখা পায়।
প্রতিটি রাজনৈতিক দলের উচিৎ লোভ লালসার উদ্ধে ওটে একসাথে কাজ করা। শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে এরকম একপক্ষ আরেক পক্ষের সহিত বৈরী আচরণ পরিহার করে বরং রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্টিত হওয়ার পর ক্ষমতার অপব্যবহার না করে এবং প্রজেক্টের নামে শত শত কোটি টাকা নিজেদের পকেটে না ঢুকিয়ে বরং দেশের জনগণের কথা চিন্তা করে ও রুপসী বাংলার সামগ্রিক কল্যাণে নিংস্বার্থভাবে কাজ করা উচিৎ বলে মনে করি। তাহাতেই আমাদের রুপসী বাংলা খানি একদিন হয়ে উঠবে সত্যিকারের রুপসী বাংলাদেশ। আমাদরে রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও অনেক বেশি বেশি সহনশীল ও দেশপ্রেমী হতে হবে, তবেই না বা যাবে রুপসী এই বাংলাদেশ রুপের যে, তার নেইকো শেষ!!!!!
বিষয়: বিবিধ
২২৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন