সমাপ্তি নাকি নয়া উদারবাদী পুঁজিতান্ত্রিক ইসলামপন্থীদের উদ্ভব : তারিক রমাদান
লিখেছেন লিখেছেন দার্শনিক ২৭ জুন, ২০১৩, ০৩:৫৪:০১ দুপুর
অনুবাদঃ শ্রদ্ধেয় শাহ্ মোহাম্মদ ফাহিম
শব্দবিজ্ঞানের সীমা-পরিসীমা অনুযায়ী ঠিক কোন জায়গায় ‘রাজনৈতিক ইসলাম’-এর পরিসমাপ্তি টানা যায় তা জানা খুব জরুরি। বলার মত সংগঠিত কাঠামোবিহীন, সুস্পষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্য ছাড়াই, সহিংস চরমপন্থীর ছোট কোন দল যদি দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে নিষ্পাপ মানুষ হত্যা করে বেড়ায় তবে কি তাকে ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ বলা চলে? আবার এর সম্পূর্ণ বিপরীত দিকে নাজিমউদ্দিন আরবাকান থেকে শুরু করে রজব তৈয়ব এরদোগান ও তার জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (সংক্ষেপে একেপি) চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া পর্যন্ত তুরস্কের যে মডেল ক্রমবিকাশমান তা কি নিজেকে ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে বলা যায়? একইভাবে বিশ শতক ও একুশ শতকের গোড়ার দিকে ইসলামী আন্দোলনসমূহ কোন কোন পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে পার হয়েছে তা জানাও জরুরি। তারা কি এখনো রাজনৈতিক ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করছে? কিছু কিছু রাজতন্ত্রের চাপিয়ে দেয়া মতাদর্শ অনুযায়ী গণতন্ত্র এবং নির্বাচনের মূলনীতিকে ইসলামের নামে প্রত্যাখান করতে হবে। একে ঠিক কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায়? এটাও কি এক ধরনের রাজনৈতিক মতাদর্শ নয় যা পরিবেশ-পরিস্থিতির আলোকে ইসলামের সুনির্দিষ্ট বোঝাপড়া হাজির করতে চায়? কখনো কখনো আপসে রাজি না হয়ে পশ্চিম বিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলনে অবস্থান নিতে অনেকেই ইসলামের সাহায্য নেয়। এটা তাদের্ গায়ে ‘ইসলামপন্থী’ পরিচয় জুড়ে দেয়ার জন্য প্রলুব্দকর নয় কি?
‘রাজনৈতিক ইসলামের’ পরিসমাপ্তি ঘোষণা করার আগে এর সুস্পষ্ট সংজ্ঞা নিরূপন করাটাই সর্বপ্রথম জরুরি কাজ। এই পরিভাষার মধ্যে আসলে কি কি বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত সে ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। বিদগ্ধজন ও বিশ্লেষকরা এ বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে বার কয়েকই ব্যর্থ হয়েছেন। তাদের মধ্যে যেমন আছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, তেমনি আছেন সমাজতাত্ত্বিকও। বিশ শতক ও একুশ শতকের গোড়ার দিকে সব ইসলামী সংগঠন বা আন্দোলনগুলো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে সময় পার করেছে। এ ব্যাপারে কি কারো সন্দেহ থাকতে পারে? উপনিবেশবাদ বিরোধিতায় নেতৃত্বদানকারী আল আফগানি ও আবদুহু এবং সমসাময়িক ইসলামপন্থীদের ব্যবহৃত যুক্তিতর্কের সহজ তুলনা করলেই দেখা যায়, সময়ের পরিক্রমায় তাদের কৌশল ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিধি বহুগুণে বিস্তৃতি লাভ করেছে। ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার আলোকেই এই বিস্তৃতি ঘটেছে এবং তা হয়েছে সফলতা-ব্যর্থতা দুই ক্ষেত্রেই। প্রায় এক শতাব্দীকাল ধরে গণতন্ত্র, নারী, রাজনৈতিক বহুত্ববাদ ও নাগরিক সমাজের ভূমিকা ইত্যাদি প্রশ্নে মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডের দাপ্তরিক নেতৃত্বের (অভিভাবক পরিষদ বা মাকতাব আল ইরশাদ) মধ্যে উল্লেখযোগ্যে উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। নেতৃত্ব বদলের সাথে সাথে বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে সংগঠনের আভ্যন্তরীণ পরিবেশ বারবার উত্তেজিত হয়েছে। এসব সংঘাতের মূলে ছিল পরস্পরবিরোধী দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশলগত সিদ্ধান্ত। মুসলিম ব্রাদারহুডের নতুন প্রজন্ম কি তাদের পূর্বসূরিদের পথ পরিত্যাগ করেছেন? তারা কি আর ‘ইসলামপন্থী’ নন? এ ধরনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়তো ঠিক হবে না। তবে এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, রাজনৈতিক ইসলামের আইনগত প্রতিমূর্তির রূপান্তর ঘটে গেছে। শুধুমাত্র এর ব্যবহৃত পরিভাষাতেই নয়। বরং এর মতাদর্শিক উপাদান ও রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির অন্তর্ভুক্ত অগ্রগণ্য বিষয়াদির ক্ষেত্রেও।
মরক্কো থেকে মিশর, তিউনিশিয়া থেকে আলজেরিয়া হয়ে লিবিয়া, সিরিয়া এবং আরো পূর্বে পাকিস্তান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া সবখানেই একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রায় এক শতাব্দীকাল সময় ব্যবধানে এর চাইতে ভিন্ন আর কি হতে পারত? যখন সময়টা ছিল বিপদসংকুল ও প্র
বিষয়: বিবিধ
১৮১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন