১লা বৈশাখে আমাদের সংস্কৃতি কি আগ্রাসনের শিকার || কবি আবদুল হাই শিকদার

লিখেছেন লিখেছেন আবদুস সবুর ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ০৫:০১:২২ বিকাল

১লা বৈশাখে আমাদের সংস্কৃতি কি আগ্রাসনের শিকার

আলোচক: কবি আবদুল হাই শিকদার



১লা বৈশাখ উদযাপনের ইতিহাস ও উৎপত্তি বিষয়ে এখানে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরা হল ...

১. বাদশাহ আকবর হিজরি সনের গণনা রীতি পরিবর্তন করে পারসিয়ান রীতি অনুসরণ করে চন্দ্র আবর্তন থেকে সৌর আবর্তনের হিসাবে নিয়ে আসেন।

২. হিন্দুদের দেবতা কার্তিকের বাহন ময়ুর , লক্ষ্মীর বাহন পেচক বা প্যাঁচা, দুর্গার বাহন মহাসিংহ, সরস্বতীর বাহন হাস। মঙ্গল শোভাযাত্রায় যাদের প্রতিকৃতি আমরা বহন করতে দেখি।

৩. আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় 1917 সালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্তন ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়।

৪. ইতিহাস বলে 1967 সালে রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখ সূচনা করেছিলো স্বঘোষিত নাস্তিক ওয়াহিদুল হক ও সানজিদা খাতুন।

৫. হিন্দুদের দেবতা গনেশের সবচেয়ে বড় উৎসব পয়লা বৈশাখ তারিখে বাংলা নববর্ষের দিন পালিত হয়।

৬. চড়ক পূজা চৈত্রসংক্রান্তিতে অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিবসে পালিত হয়।এই সব পূজার মূলে রয়েছে ভূতপ্রেত ও পুনর্জন্মবাদের ওপর বিশ্বাস।

৭. ১লা বৈশাখ সোনারগাওয়ে ব্যতিক্রমী এক মেলা বসে যার নাম বউমেলা । প্রাচীন একটি বটবৃক্ষের নিচে বউমেলা হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সিদ্ধেশ্বরী দেবীর পুজোর জন্য এখানে সমবেত হয়। বিশেষ করে কুমারী, নববধূ, এমনকি জননীরা পর্যন্ত তাঁদের মনস্কামনা পূরণের আশায় এই মেলায় এসে পূজা-অর্চনা করেন। সন্দেশ-মিষ্টি-ধান দূর্বার সঙ্গে মৌসুমি ফলমূল নিবেদন করে ভক্তরা। পাঁঠাবলির রেওয়াজও পুরনো।

৮. পয়লা বৈশাখের দিন উল্লেখযোগ্য ভিড় চোখে পড়ে কলকাতার বিখ্যাত কালিঘাট মন্দিরে। সেখানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ভোর থেকে প্রতীক্ষা করে থাকেন দেবীকে পূজা নিবেদন করে হালখাতা আরম্ভ করার জন্য। ব্যবসায়ী ছাড়াও বহু গৃহস্থও পরিবারের মঙ্গল কামনা করে দেবীর আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে কালীঘাটে গিয়ে থাকেন।

৯. পহেলা বৈশাখের দিন যে সকল পূজা অনুষ্ঠিত হয় সেগুলো হল হিন্দুদের ঘটপূজা, গণেশ পূজা, সিদ্ধেশ্বরী পূজা, হিন্দুদের ঘোড়ামেলা, হিন্দুদের চৈত্রসংক্রান্তি পূজা-অর্চনা, হিন্দুদের চড়ক বা নীল পূজা বা শিবের উপাসনা ও সংশ্লিষ্ট মেলা, গম্ভীরা পূজা, কুমীরের পূজা, অগ্নিনৃত্য, ত্রিপুরাদের বৈশুখ মারমাদের সাংগ্রাই ও পানি উৎসব, চাকমাদের বিজু উৎসব (ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমাদের পূজা উৎসবগুলোর সম্মিলিত নাম বৈসাবি), হিন্দু ও বৌদ্ধদের উল্কিপূজা, মজুসি তথা অগ্নি পূজকদের নওরোজ, হিন্দুদের বউমেলা, অশুধ শক্তি তারাতে মঙ্গলযাত্রা, সূর্য দেবতার পূজা ইত্যাদি।

১০. মঙ্গল শোভাযাত্রা মূলত হিন্দু ধর্মালম্বীদের পূজা। তাদের বিশ্বাস অশুভকে বিতাড়নে প্রতীকী সরীসৃপ, হাতি-ঘোড়া-বাঘ ইত্যাদি সব চলেছে অশুভ শক্তি বিনাশে।

বিষয়: বিবিধ

১৫২২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

382622
১২ এপ্রিল ২০১৭ রাত ০৮:৩৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ১লা বৈশাখ একটি সাধারন সামাজিক উৎসব ছিল। মঙ্গল শোভাযাত্রার সাথে বৈশাখের কোন সম্পর্ক নেই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File