একটি অবহেলিত নেকীর ভান্ডার
লিখেছেন লিখেছেন আবদুস সবুর ০২ জুলাই, ২০১৪, ১২:১৬:১৫ দুপুর
একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল যে ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষই উদাসীন এবং এর আমলকারী কম যা হাদীস দ্বারাই প্রমাণিত। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, দুটি অভ্যাস এমন আছে, যে ব্যক্তি এর পাবন্দী করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তা অত্যন্ত সহজ, কিন্তু তার আমলকারী নিতান্তই কম। এক. প্রত্যেক নামাজের পর দশবার সুবহানাল্লাহ, দশবার আলহামদুলিল্লাহ, দশবার আল্লাহু আকবার পড়া। হযরত আবদুল্লাহ রা. বলেন, আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি নিজ আঙ্গুলীর উপর তিনি তা গুনছিলেন। এইভাবে তিনটি কালেমা প্রত্যেক নামাজের পর দশবার করে পড়ার দ্বারা একশ পঞ্চাশবার হবে, কিন্তু আমল ওজন করার পাল্লায় (দশগুন বৃদ্ধির কারণে) পনেরশ হয়ে যাবে।
দুই. যখন শোয়ার জন্য বিছানায় যাবে তখন সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ তেত্রিশবার পড়বে এবং আল্লাহু আকবার চৌত্রিশবার পড়বে। সব মিলে একশ কালেমা পড়া হলেও সওয়াবের হিসাবে (দশ গুণ বৃদ্ধির কারণে) এক হাজার নেকী হল। এখন এটা ও সারা দিনের নামাযের পরের সংখ্যা মিলিয়ে মোট দুই হাজার পাঁচশ নেকী হয়ে গেল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, সারাদিন দুই হাজার পাঁচশ গুনাহ কে করে? অর্থাৎ এই পরিমাণ গুনাহ হয় না অথচ এই আমল করার দ্বারা দুই হাজার পাঁচশ নেকী হয়ে যায়।
হযরত আবদুল্লাহ রা. জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই অভ্যাসগুলোর উপর আমলকারী কম হওয়ার কারণ কী? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, (কারণ এই যে) শয়তান নামাযের মধ্যে এসে বলে, অমুক প্রয়োজন বা অমুক কথা স্মরণ কর। অবশেষে তাকে বিভিন্ন খেয়ালে মশগুল করে দেয়, যেন এই কালেমাগুলো পড়ার কথা খেয়াল না থাকে। আর বিছানায় এসে তাকে ঘুম পাড়াতে থাকে। এইভাবে সে কালেমাগুলো না পড়েই ঘুমিয়ে পড়ে। (সহীহ ইবনে হিববান, হা. ২০১২; সুনানে আবু দাউদ, হা. ৫০৬৭; জামে তিরমিযী, হা. ৩৪১০)
আল্লাহ আমলের তাওফীক দিন।
সংগ্রহ - নেকীর ভান্ডার
বিষয়: বিবিধ
১৩৫৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হযরত আবু হুরায়রা (রা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন: রসুলুল্লাহ (স বলেছেন: এমন দুটি বাক্য আছে যা উচ্চারণে হালকা কিন্তু ওযনে ভারী এবং আল্লাহর কাছে প্রিয়। এ বাক্য দুটি হচ্ছে ” সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহি, সুবহা-নাল্লা-হিল আযীম” অর্থাৎ আমরা আল্লাহর প্রশংসাসহ তার পবিত্রতা বর্ননা করছি মহান আল্লাহ অতি পবিত্র। (বুখারী-৭০৫৩ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও মুসলিম-৬৬৫৪ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার)
হযরত আবু হুরায়রা (রা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন: রসুলুল্লাহ (স বলেছেন: আমার কাছে ”সুবহানাল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবার” বলা দুনিয়ার সব জিনিসের চাইতে বেশী প্রিয়।(মুসলিম-৬৬৫৫ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার)
হযরত আবু হুরায়রা (রা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন: রসুলুল্লাহ (স বলেছেন:যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ বার বলবে ” লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকালাহু লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির- অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহা নেই। তিনি এক। তার কোন শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব তার। সমস্ত প্রশংসা তার। তিনি সমস্ত বস্তুর উপর প্রভাবশালী”। সে দশটি গোলাম আযাদ করার সমান সওয়াব পাবে আর তার নামে লেখা হবে ১০০ টি নেকী এবং তার নাম থেকে ১০০ টি গুনাহ মুছে ফেলা হবে। আর সেদিন সন্ধ্যা হওয়া পর্যন্ত শয়তানের প্রলোভন থেকে সংরক্ষিত থাকবে এবং কিয়ামতের দিন কেউ তার চাইতে ভালো আমল আনতে পারবে না একমাত্র সেই ব্যক্তি ছাড়া যে তার চাইতে বেশী আমল করেছে। তিনি বলেছেন যে ব্যক্তি প্রতিদিন ১০০ বার বলবে ” সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহি” তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে, যদিও তা হয় সমুদ্রের ফেনারাশির সমান। (বুখারী-৫৯৬১ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও মুসলিম-৬৬৫০ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার)
হযরত আবু হুরায়রা (রা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন: রসুলুল্লাহ (স বলেছেন: যে ব্যক্তি প্রত্যেক নামাযের পর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ (আল্লাহ পবিত্র), ৩৩ বার আল হামদুলিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর) , ৩৩ বার আল্লাহু আকবার (আল্লাহ মহান)পড়ে এবং ১০০ বার পূর্ন করার জন্য ১ বার ” লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা- শারীকালাহু লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন কাদির” পড়ে তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় যদিও তা হয় সমুদ্রের ফেনারাশির সমান। (মুসলিম-১২৪০ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার)
হযরত সাদ বিন ওবায়দা (রা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন: রসুলুল্লাহ (স বলেছেন: যখন তুমি শয্যাগ্রহণ কর তখন নামাযের ওযুর ন্যায় ওযু করে নাও অতপর ডান পাশে কাত হয়ে শয়ন কর। তারপর বল,”আল্লাহুম্মা ইন্নী আসলামতু ওয়জহিয়া ইলাইকা, ওয়াফাওয়াদতু আমরী ইলাইকা, ওয়াল জা-তু যাহরী ইলাইকা, রাগবাতান ওয়া বাহবাতাম ইলাইকা, লা-মালজাআ ওয়ালা মানজাআ, মিনকা ইল্লা ইলাইকা, আমানতু বি কিতাবিল্লাযি আনঝালতা ওয়াবি নাবিয়্যিকাল্লাযি আরসালতা” অর্থাৎ ”হে আল্লাহ আমি তোমার নিকট আত্মসমার্পণ করলাম, আমি আমার পৃষ্ঠকে তোমারই দিকে ফিরালাম আশা ও ভয় নিয়ে। তোমার নিকট ছাড়া কোন আশ্রয় নেই কোন রক্ষা নেই। আমি তোমার নাযিলকৃত আসমানী কিতাবের উপর বিশ্বাস স্থাপন করলাম এবং তোমার প্রেরিত রসুলের উপর বিশ্বাস স্থাপন করলাম” রসুলুল্লাহ (স বলেন, একথাগুলো (নিদ্রার আগে) তোমার শেষ কথা হিসেবে গ্রহণ করো। এরপর যদি তুমি ঐ রাত্রে মৃত্যুবরণ করো তবে তোমার মৃত্যু স্বভাবধর্ম ইসলামের উপর হবে। (মুসলিম-৬৬৮৮ বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার)
মন্তব্য করতে লগইন করুন