কিছু কারামত
লিখেছেন লিখেছেন আবদুস সবুর ২৫ মার্চ, ২০১৪, ০৩:২৯:০৪ দুপুর
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল(রহ) এর মতে কারামত সত্য এবং তা প্রকাশ করা হয় সমসাময়িক কালের মানুষের ঈমান বৃদ্ধির জন্য,যাতে তারা অলৌকিক ঘটনা দেখে আল্লাহর অসীম ক্ষমতার উপর বিশ্বাস পোক্ত হয়। ( মাকামে সাহাবা কামারাতে সাহাবা- ১০৩)
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ) তার ফতোয়ার কিতাব ১১ খণ্ডের ২০৪ পাতায় কি লিখেছেন-
" হযরত উমর (রা) ব্লতেন, তোমরা নেক লোকদের সামনে যখন যাবে,তারা যা কিছু বলেন তা মেনে নিবে। কারণ তাঁদের কাছে সত্য প্রকাশ পায়। হযরত উমর(রা) যে সমস্ত সত্য বিষয়ের কথা বললেন , তা হল ঐ সমস্ত জিনিস যা আল্লাহ পাক তাঁদের কাছে খুলে দেন। কারণ এটা প্রমাণিত যে, ওলীয়াল্লাহগণের কাশফ হয় এবং গায়েবীভাবে তাঁদেরকে সম্বোধন করা হয়।"
তিনি রাসূলুল্লাহ (সা) এর মোজেজা আলোচনা করতে গিয়ে বলেন- " এমনকি উম্মতের নেককার লোকদের কারামতসমূহও তাঁর নবুওয়াতের মু'জিযা বলে গণ্য হবে।" (আল জাওয়াব, খঃ ৪,পৃঃ ৮৬-৯৫)
বিখ্যাত হাদিস বিসারদ ইবনুল কায়্যিম এর কিতাব থেকে . . .
১)আবুত তাইয়াহ(রহ) বর্ণনা করেন,মুতাররাফ (রহ) প্রতিদিন প্রত্যুষে কবর যিয়ারাত করতেন। কিন্তু শুক্রবার রজনীর একাংশ অতিবাহিত হওয়ার পর অন্ধকারে কবর যিয়ারাত করতেন। বলা হয় যে, তাঁর চাবুকটি রাতের আঁধারে জ্বল-জ্বল করত। একরাতে তিনি ঘোড়ায় আরোহণ করে গোরস্তানে পৌঁছে দেখতে পেলেন,প্রত্যেক কবরবাসী স্ব স্ব কবরে উপবিষ্ট। তাঁকে দেখে সবাই সমস্বরে বলে উঠল,ইনি মুতররাফ যিনি প্রতি শুক্রবার আমাদের কাছে আসেন। আমি (বর্ণনাকারী) জিজ্ঞেস করলাম,তোমরাও কি শুক্রবার সম্পর্কে জানতে পার? তারা বলল,হ্যাঁ, ঐ দিন পাখিরা যাকিছু বলে,তাও শুনতে পাই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, পাখিরা কি বলে? তারা বলল, পাখিরা বলেঃ সালাম,সালাম। (কিতাবুর রূহ, পৃঃ ৩)
২)শাবীব ইবনে শাইবা বলেন, মৃত্যুর সময় আমার মাতা অসিয়ত করে গিয়েছিলেন যে, দাফন করার পর আমার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে বল্বেঃ হে উম্মে শাবীব! লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়। তিনি বলেন,অতএব দাফন করার পর আমি তাঁর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে তার অন্তিম ওসিয়ত পূর্ণ করলাম। রাতে তাঁকে স্বপ্নে দেখলাম- তিনি বলছেন, বতস! লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ যদি আমাকে রক্ষা না করত, তাহলে আমি ধ্বংস হয়ে যেতাম। শাবাশ বেটা! তুমি অসিয়ত স্মরণ রেখছ। (কিতাবুর রূহ, পৃঃ ১৫)
৩)রাজা ইবনে হায়াতের মৃত্যুর পর এক পুণ্যবতী মহিলা তাকে স্বপ্নে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার প্রত্যাবর্তন কিসের দিকে হয়েছে? তিনি জবাব দিলেন,মঙ্গলের দিকে। কিন্তু মরণের পর আমি হতভম্ভ হয়ে গিয়েছিলাম এবং ধারণা করেছিলাম যে, কিয়ামত এসে গেছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন কেন? রাজা জবাব দিলেন,জাররাহ এবং তার সাথী সমস্ত সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করেছিলেন। ফলে জান্নাতের দরজায় ভীড় হয়ে গিয়েছিল। ((কিতাবুর রূহ, পৃঃ ২৯)
৪)আলী ইবনে আবি তালিব কাইরুয়ানী বলেনঃ ওমায়েরের স্বপ্নের ঘটনা ততটুকু বিস্ময়কর নয়,যতটুকু বিস্ময়কর আবু মুহাম্মদ আবদুল্লাহর ঘটনা। যা আমরা শহরে স্বচক্ষে দেখেছি। আবদুল্লাহ একজন সৎ লোক ছিলেন। তিনি স্বপনের মাধ্যমে মৃতব্যাক্তির গোপনীয় কথা জেনে ফেওলতেন এবং আত্মীয়স্বজনদের বলে দিতেন। এ ব্যাপারে তিনি কামালিয়াত বা পারদর্শিতা লাভ করেছিলেন,ফলে অল্প দিনেই তিনি প্রসিদ্ধি লাভ করলেন।((কিতাবুর রূহ, পৃঃ ৪৯)
বিষয়: বিবিধ
১৮৩৫ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ
গায়েবের খবর আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেননা। স্বয়ং রাসূলুল্লাহ(স)ও নন।
কেরামত/অস্বাভাবিক ঘটনা এসব শুধু নেককার বান্দাদের ঘিরে ঘটে তা নয়। আল্লাহর চরম নাফরমান বান্দাদেরও অনেক সময় আল্লাহ বিশেষ কিছু ক্ষমতা প্রদান করেন। এটাও আল্লাহপাকের একটা পরীক্ষা। এসব দেখে মানুষের ঈমান ঠিক থাকে কিনা তার পরীক্ষা।
কোনো নেককার বান্দা আল্লাহ কর্তৃক বিশেষ(অবশ্যই নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত) ক্ষমতা প্রাপ্ত হলে তাঁর উচিত আল্লাহর শোকর আদায় করা। এটা না করে যদি তিনি এটা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন এবং জনে জনে সেটা বলে বেড়ান তখন তিনি আর আল্লাহর প্রিয় বান্দা বা নেককার বান্দা থাকেননা। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
@আবদুস সবুর ভাই, 'কিতাবুর রূহ' জাতিয় বইকে শিক্ষনিয় হিসাবে পড়তে পারি কিন্তু দলীল হিসাবে মানতে পারি না । একমাত্র দলীল হচ্ছে কোরআন ও ছহী হাদিস
ধন্যবাদ
গায়েবের খবর আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেননা। স্বয়ং রাসূলুল্লাহ(স)ও নন।
কেরামত/অস্বাভাবিক ঘটনা এসব শুধু নেককার বান্দাদের ঘিরে ঘটে তা নয়। আল্লাহর চরম নাফরমান বান্দাদেরও অনেক সময় আল্লাহ বিশেষ কিছু ক্ষমতা প্রদান করেন। এটাও আল্লাহপাকের একটা পরীক্ষা। এসব দেখে মানুষের ঈমান ঠিক থাকে কিনা তার পরীক্ষা।
কোনো নেককার বান্দা আল্লাহ কর্তৃক বিশেষ(অবশ্যই নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত) ক্ষমতা প্রাপ্ত হলে তাঁর উচিত আল্লাহর শোকর আদায় করা। এটা না করে যদি তিনি এটা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন এবং জনে জনে সেটা বলে বেড়ান তখন তিনি আর আল্লাহর প্রিয় বান্দা বা নেককার বান্দা থাকেননা। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
কিচ্ছা কাহিনী বাদ দিয়ে কুরআন হাদীস চর্চা করুন। সত্যিকার অর্থেই অনেক ফায়দা হবে।
আমরা আমাদের নবীর কথা অনুসরন করি। কোন শায়খের না . . .
হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন যে, “আমার পক্ষ থেকে একটি বাণী হলেও পৌঁছে দাও। আর বনী ইসরাঈলের বিষয় বর্ণনা কর, কোন সমস্যা নাই”। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৩২৭৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬২৫৬, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৬৬৪, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৫৮৪৮}
১জনেরও নাম বলতে পারবেন কি ?
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীকে বলেছেনঃ
-তুমি মরে যাওয়া লোকদের কোনো কথা শোনাতে পারবেনা।
মাওলানা রশীদ আহমদ গংগুহী(রহ) এক প্রশ্নের জওয়াবে লিখেছেনঃ শায়খ আবদুল কাদের জিলানী(রহ) গায়েব জানেন এবং স্বতন্ত্র ও স্বশক্তিতে দুনিয়ার ওপর তাশাররূফ(ক্ষমতা প্রয়োগ)করতে পারেন বলে বিশ্বাস করলে সুস্পষ্ট শিরক হবে। এ পর্যায়ে তিনি প্রথমত উল্লেখ করেছেন কুরআনের আয়াত।
-গায়েব জগতের চাবিসমূহ আল্লাহরই হাতে নিবদ্ধ, তা তিনি ছাড়া আর কেউ জানেননা।
পরে বাজ্জাজীয়া প্রভৃতি ফতোয়ার কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেনঃ
মাশায়িখ-তথা পীর বুযুর্গদের রূহ হাযির হয় এবং তারা সব কিছু জানে বলে যে বিশ্বাস করবে সে কাফির হয়ে যাবে।
উক্ত কিতাবে এ কথাও লিখিত হয়েছে-যে ব্যক্তি মনে করে মৃত ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া নিজেই যাবতীয় বিষয়ে ও ব্যাপারে কর্তৃত্ব চালায়, আর এরূপ আকীদা ও বিশ্বাস যার হবে, সে কাফির হয়ে যাবে। (বাহরুর রায়েখ গ্রন্থেও এমন উল্লেখ রয়েছে, মিয়াত মাসায়েল গ্রন্থ)।
তার আগে একটা প্রশ্ন ক্লিয়ার হয়ে নেই। তারপর আপনার কথার জবাব দিচ্ছি ...
আপনি কি হাদীস অস্বীকারকারী আহলে কুরআন দলের সদস্য ???
কুরআনকে যে অস্বীকার করবে ও এ নিয়ে হাসি ঠাট্টা করবে সে সুনিশ্চিতভাবে কাফের।
আপনি কি হাদীস অস্বীকারকারী আহলে কুরআন দলের সদস্য ???
জাযাকাল্লাহ খাইরান
লাশ কবর থেকে উঠে কথা বলে এরকম ঘটনাও দেখেছি।
এখন এগুলোর ব্যাখ্যার জন্য আমাকে খুউক তাড়াতাড়ি একজন আলেম এর সাথে সাক্ষাৎ করতে হবে।
আরো কিছু প্রশ্ন আছে সেগুলোরও ব্যাখ্যা নিতে হবে।
আল্লাহ আমাকে সঠিক পথ দেখান।
"ইয়া মুকাল্বিবাল ক্বুলুব সাব্বিত ক্বলবি আলা দ্বিনিক"।
আর কারামতে আউলিয়া হক্ব নিঃসন্দেহে।
অনেক শুকরিয়া।
আল্লাহ আমাদের সঠিক পথ দেখান, আমিন।
তুমি সূর্যকে দেখবে, যখন উদিত হয়, তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডান দিকে চলে যায় এবং যখন অস্ত যায়, তাদের থেকে পাশ কেটে বামদিকে চলে যায়, অথচ তারা গুহার প্রশস্ত চত্বরে অবস্থিত। এটা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্যতম। আল্লাহ যাকে সৎপথে চালান, সেই সৎপথ প্রাপ্ত এবং তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন, আপনি কখনও তার জন্যে পথপ্রদর্শনকারী ও সাহায্যকারী পাবেন না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন