কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসরণের নামে মনের পূজার শিক্ষা
লিখেছেন লিখেছেন আবদুস সবুর ২৪ মার্চ, ২০১৪, ১২:০৯:৪৮ দুপুর
আব্দুল আজীজ স্কুল এন্ড কলেজ মাঠ, মাদারটেক, খিলগাঁও মাঠে গত ২২ই মার্চ ২০১৪ ঈসাব্দ রোজ শনিবার বাদ আসর বয়ান শেষ করে মাত্র উঠলাম।
বয়ানে কথিত আহলে হাদীসদের ধোঁকাবাজীর বাক্স খুলার আগেই মাগরিবের আজান ধ্বনি ভেসে এল। সময় শেষ। নেমে এলাম ষ্টেজ থেকে।
নামতেই প্যান্ট শার্ট পরিহিত এক ভাই ছুটে এলেন। তাকিয়ে দেখলাম চেহারার রং কালো বর্ণ। গায়ের জামাটাও মনে হয় কালো। প্যান্টটা যে কালো সেটা মনে আছে পরিস্কার। চুলগুলো এলোমেলো।
এসেই বলতে লাগলেন-
শায়েখ!আপনার বয়ান শুনলাম। খুবই ভাল লাগল। তবে উক্ত বয়ানের উপর আমার কিছু প্রশ্ন আছে।
তখন মাগরিবের আজান হচ্ছে পাশের মসজিদে।
আমি বললাম নামাযের পর বলুন। আমিতো আছি।
নামাযের পর মসজিদের ভিতরেই এসে হাজির ভাইটি।বসলাম। সাথে সাথে আরো চারজন চলে এলেন। দুইজন এলেন মেহমানখানায় নেয়ার জন্য। আর দুইজন এলেন প্রশ্ন করার জন্য।
যাক ঐ কালো কাপড় পরিহিতা ভাইটি পরিচয় দিলেন তার নাম ফয়সাল।
ফয়সাল ভাই বললেন- শায়েখ![সম্বোধনটা আমার পছন্দের নয়, লোকটি বলেছিল তাই লিখছি। আমি কোন শায়েখ না] আমার প্রশ্নগুলো করবো?
আমি- অবশ্যই।
ফয়সাল- আপনি যে, বললেন আহলুল হাদীসরা গোমরাহ। অথচ মাসিক মদীনার সম্পাদক মুহিউদ্দীন খান সাহেবতো মাসিক মদীনায় আহলে হাদীসদের আহলে সুন্নাতের অনুসারী বলেছেন। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি?
আমি-আপনাদের মাঝে দল কয়টা?তিনি কোন দলটিকে আহলে সুন্নতের অনুসারী বলেছেন?
ফয়সাল- আমরাতো এক দলই। কুরআন ও সহীহ সুন্নাহের অনুসারী।
আমি- আচ্ছা, তাইলে বলুনতো, আহলে হাদীস আন্দোলন বাংলাদেশ সঠিক না জমিয়তে আহলে হাদীস সঠিক? উনারাতো একদল আরেক দলকে ভ্রান্ত কয়? এর মাঝে কোনটি আহলে সুন্নাতের অধিকারী?
ফয়সাল- আমি তাদের কাউকে মানি না। আমি সৌদীর আহলে হাদীস।
আমি- তাহলে এই দুই দলই গোমরাহ?
ফয়সাল-আমি জানি না। আচ্ছা, ইমাম আবূ হানীফা রহঃ যে বলেছেন, ফার্সিতে কিরাত পড়লে নামায হয়, এর হুকুম কি?
আমি- আপনি কিন্তু আমার প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন। উত্তর দিলেন না।আপনার সব প্রশ্নের জবাবই আমি দেব। আপনার অবস্থান আগে পরিস্কার করেন।
ফয়সাল-আমি চার ইমামকেই মানি। তবে চার ইমামের মাঝে যার মত সহীহ মনে হবে তারটা মানি।কাউকে অন্ধভাবে মানি না।
আমি- আচ্ছা, ধরুন, বাংলাদেশে চারজন বিজ্ঞ সরকার স্বীকৃত ডাক্তার আছেন। একটি বিষয়ে চারজন চারটি প্রেসক্রিপশন লিখল।সেই চারটির মাঝে কোনটি সঠিক সেটি কি যাচাই করবে মুর্খ মুচি?
ফয়সাল- না, না মুচি কেন?
আমি- ভাল কথা, মুচি কি করে প্রেশক্রিপশনের ভুল ধরবে তাই না? তাহলে চারজন বিজ্ঞ মুজতাহিদ। যাদের সারা পৃথিবীর বিজ্ঞ ব্যক্তিরা মুজতাহিদ বলে স্বীকৃতি দিলেন, তাদের চারটি মতের মাঝে আপনি একটিকে প্রাধান্য দিবেন, তো আপনি কি? আপনিতো আমাদের মত ঘোড়ার ডিম তাই না? মতগুলো মুজতাহিদের, যাচাই করবে মুর্খ?
ফয়সাল- আমি ঘোড়ার ডিম ঠিক আছে, কিন্তু বিন বাজও কি ঘোড়ার ডিম?
আমি- মজার কথা বললেন, তাহলে পৃথিবী বিখ্যাত ও স্বীকৃত মুজতাহিদের তাকলীদ রেখে আপনি ফেতনার যুগের বিন বাজের মুকাল্লিদ হতে চান?
ফয়সাল- না, না বিন বাজের মুকাল্লিদ হবো কেন? আমার বিবেক নেই। আমি বিবেক দিয়ে একটিকে প্রাধান্য দিব।
আমি- আপনি আগেই বলেছেন, বিজ্ঞ চার ডাক্তারের প্রেশক্রিপশনের ভুল-সঠিক যাচাইয়ের কোন অধিকার মুর্খ মুচির নেই, তাহলে বিজ্ঞ চার মুজতাহিদের সমাধানের ভুল-সঠিক ঘোড়ার ডিম মুর্খ কি করে করবে?
ফয়সাল- দেখুন, আল্লাহ আমাকে বিবেক দিয়েছে, তাই আমার বিবেক দিয়ে যেকোন একটিকে প্রাধান্য দিব।
আমার হাসি পেল। লোকটি নিজের বিবেকের অনুসরণ করবে। মানে মনের পূজা করবে। যখন যেটিকে ইচ্ছে সেটিকে মানবে, যেটিকে তার মন সায় দিবে না, সেটিকে ছেড়ে দিবে, এরকম মনের পূজার নাম দিচ্ছে আবার কুরআন ও সহীহ হাদীসের অনুসরণ।
আমি বললাম-তাহলেতো আপনি বিবেকের অনুসারী হলে কুরআন ও হাদীসের অনুসারী রইলেন না।
ফয়সাল- না, না আমি কুরআন ও সহীহ হাদীসের অনুসারীই থাকি। আচ্ছা, শায়েখ! আমরা কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুযায়ী আমল করলে সমস্যা কোথায়?
আমি- সমস্যাটা কোথায়? সেটা বয়ানে বলার সুযোগ পাইনি। সময় ছিল না। একেতো আপনার মত বিবেক পূজারী হয়ে যাবে সবাই। তখন একতা আর থাকবে না, শুধু ঝগড়া আর ঝগড়াই হবে মসজিদে। জামাতে নামায পড়া কারো পক্ষেই সম্ভব হবে না।
আচ্ছা, আমাকে বলুন, নামাযে রফয়ে ইয়াদাইন করার হুকুম সহীহ হাদীসে এসেছে না?
লোকটি- হ্যাঁ, এসেছে।
আমি- এটিতো রাসূল সাঃ এর আমল ছিল। আদেশতো ছিল না তাই না?
ফয়সাল-না, আদেশ ছিল না, আমল ছিল।
আমি-তাহলে বলুন রফয়ে ইয়াদাইন নামাযে করার হুকুম কি?
ফয়সাল-সুন্নত।
আমি- সুন্নত কাকে বলে?
ফয়সাল-যে কাজ রাসূল সাঃ নিজে করেছেন এবং আদেশ দিয়েছেন সেটির নাম ফরজ, আর যে কাজ রাসূল সাঃ নিজে করেছেন কিন্তু আদেশ দেননি সেটির নাম সুন্নত।
আমি- এই সংজ্ঞা কুরআনের কোন আয়াতে বা হাদীসে আছে?
ফয়সাল- এটি আমার নিজস্ব সংজ্ঞা।
আমি-তাহলে আপনি নিজেও শরয়ী বিধানের সংজ্ঞা বানাতে পারেন?
ফয়সাল-কেন আমার বিবেক নেই? আমার বিবেক বলছে এমন সংজ্ঞা হবে।
আমি-তাহলে আপনি আপনার বিবেকপুজারী। আপনার বিবেক যা বলবে আপনি তাই মানেন। কুরআন ও সহীহ হাদীসের অনুসারী কিন্তু থাকেননি, হয়ে গেছেন আপনার বিবেক অনুসারী।
আচ্ছা, আপনার এই সংজ্ঞা অনুপাতে জুতা পরিধান করে নামায পড়ার হুকুম কি? বুখারী ও মুসলিমের হাদীসে রাসূল সাঃ থেকে জুতা পরিধান করে নামায পড়ার কথা এসেছে। জুতা খুলে নামায পড়ার কথা কোথাও আসেনি। তাহলে এটি কি সুন্নত নয়?
ফয়সাল-দেখুন, জুতা খুলে নামায পড়ার কথাও কিন্তু এসেছে অন্য হাদীসে।
আমি- বুখারী মুসলিমে আছে? বুখারী মুসলিমে বর্ণিত রাসূল সাঃ এর আমল কি সুন্নত নয়? তাহলে রফয়ে ইয়াদাইনের কি হবে? এটিওতো রাসূল সাঃ এর আমল। আবার জুতা পরিধান করে নামায পড়ার অবস্থাও বুখারী মুসলিমে বর্ণিত রাসূল সাঃ এর আমল।
ফয়সাল- হু, জুতা পরিধান করে নামায পড়া সুন্নত।
আমি- জুতা পরিধান করে নামায পড়া সুন্নত, কারণ আপনার সংজ্ঞা অনুপাতে যে কাজ রাসূল সাঃ করেছেন, কিন্তু আদেশ দেননি, সেটি সুন্নত। সেই হিসেবে রফয়ে ইয়াদাইন করা তথা রুকুতে যেতে আসতে হাত উঠানোওতো একই মানের সুন্নত তাই না?
ফয়সাল- হু।
আমি- তাহলে একই মানের সুন্নত হওয়া সত্বেও আপনারা রফয়ে ইয়াদাইন নিয়ে এত আর্টিকেল লিখছেন, এত লেকচার দিচ্ছেন, এত বই লিখছেন, কিন্তু জুতা পরিধান করে নামায পড়া সুন্নত এর উপর আপনাদের ভিডিও নেই কেন? আর্টিকেল নেই কেন? বই নেই কেন? রফয়ে ইয়াদাইন নিয়ে মারামারি পর্যন্ত করতে প্রস্তুত। অথচ একই মানের সুন্নত হওয়া সত্বেও জুতা পরিধান করে নামায পড়ার সুন্নতের প্রতি এত উদাসিনতা কেন? আজকেওতো আপনি জুতা ছাড়াই নামায পড়েছেন সুন্নত তরক করে।
ফয়সাল- না, না ভিডিও আছে। আর আমিও জুতা পরিধান করে মাঝে মাঝে নামায পড়ি।
আমি- ভিডিও কোথায়? দেখানতো। আর মাঝে মাঝে পড়েন, মানে অধিকাংশ সময় এ সুন্নত ছেড়ে দেন, যেমন আজও ছেড়ে দিলেন, কিন্তু একই মানের সুন্নত রফয়ে ইয়াদাইন নিয়ে মারামারি করতে প্রস্তুত। কখনোই তা ছাড়তে রাজি নয়। অথচ জুতা পায়ে নামায পড়ার সুন্নত প্রতিদিনই ছেড়ে দিচ্ছেন। কোন প্রচারণাও করছেন না এর জন্য। এ বৈষম্য করেন কেন? এটাইতো দলীল সুন্নতের উপর আমল নয়, ফিতনা করাই উদ্দেশ্য।
বেশ ভড়কে গেল ফয়সাল ভাই। এবার প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে ফেললেন। তিনি অবশ্য কথার মাঝখান দিয়ে বারবারই প্রসঙ্গ পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছেন। যেমনটি নামধারী আহলে হাদীসদের মজ্জাগত স্বভাব। কিন্তু ওদের ধোঁকাবাজী সম্পর্কে জানা থাকায়, প্রসঙ্গ পরিবর্তন করতে পারেনি।
এবার যখন ধরা খেয়েই গেল। আমিও বুঝে গেলাম কিয়ামত আসলেও সুন্নতের সংজ্ঞা নিয়ে কুরআন ও হাদীস রেখে মনের পূজা করা এবং নিজের সংজ্ঞা অনুযায়ী একই মানের দুই সুন্নতের মাঝে এ বৈষম্যপূর্ণ আচরণের কোন সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারবে না। তখন তাকে প্রসঙ্গ পরিবর্তন করার সুযোগ দিলাম। যে সুযোগের অপেক্ষায় সে ছিল বেশক্ষণ ধরেই।
বলতে লাগল- শায়েখ! আপনি কিন্তু আমার প্রথম প্রশ্নের জবাব এখনো দেননি।
আমি- কোন প্রশ্ন?.
ফয়সাল- ঐ যে বললাম, আপনাদের ফিক্বহে হানাফীর কিতাবে লিখা আছে যে, ইমাম আবূ হানীফা রহঃ এর মতে ফার্সিতে কিরাত পড়লেও নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে। আর ইমাম আবূ হানীফা রহঃ এর অনেক বক্তব্যের বিরোধিতা তার দুই ছাত্র ইমাম আবূ ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ করেছেন। এর কি ব্যাখ্যা আছে?
আমি- ফিক্বহে হানাফী হল, মুলত ইমাম আবূ হানীফা রহঃ এর মূলনীতির আলোকে গবেষক দলের গবেষণার নাম। শুধুমাত্র ইমাম আবূ হানীফা রহঃ এর বক্তব্যের নাম ফিক্বহে হানাফী নয়। এটি একটি গবেষক দলের পূর্ণাঙ্গ গবেষণার নাম। যেখানে ইমাম আবূ হানীফা রহঃ এর নির্ধারণকৃত উসূলের আলোকে কুরআন সুন্নাহ গবেষণা করা হয়েছে। সেই উসূলের ভিত্তিতে একেক মাসআলায় ইমাম আবূ হানীফা রহঃ এর ছাত্রবৃন্দ অনেক সময় তার বক্তব্যের ক্ষেত্রে একমত হয়েছেন। অনেক সময় দ্বিমত পোষণ করেছেন। দ্বিমত করুন, আর একমত হোন সর্বাবস্থায়ই উক্ত বক্তব্যটি ফিক্বহে হানাফী। কারণ উসূল তথা মুলনীতি ইমাম আবূ হানীফা রহঃ এর থাকছে।
আচ্ছা, আমি আপনাকে প্রশ্ন করি- হাদীসের মাঝে কোন হাদীস আপনি মানেন? সহীহ হাদীস না জঈফ হাদীস?
ফয়সাল- সহীহ হাদীস।
আমি- কোথাও যদি সহীহ হাদীস ও জঈফ হাদীস এক মাসআলায় আসে, তাহলে সহীহ হাদীস রেখে জঈফ হাদীসের উপর আমল করা জায়েজ?
ফয়সাল- না, জায়েজ না।
আমি- আচ্ছা, এখন যদি কোন ব্যক্তি সহীহ হাদীসের বিপরীত জঈফ হাদীস উপস্থাপন করে বলে যে, রাসূল সাঃ এর কথার কোন ঠিক নেই নাউজুবিল্লাহ। তিনি একেক সময় একেক কথা বলেছেন, আর সাহাবায়ে কেরামও একেক কথা নিয়েছেন, তাই হাদীসের কোন ভিত্তি নেই। নাউজুবিল্লাহ, তাহলে এটি বলা ঠিক হবে না শয়তানী হবে?
ফয়সাল- অবশ্যই এটি খুবই জঘন্য কাজ হবে। জঈফ হাদীস সামনে এনে সহীহ হাদীস অস্বিকার করা বা হাদীস অস্বিকার করা কিছুতেই যৌক্তিক কথা হতে পারে না।
আমি- এবার তাহলে সহজে বুঝবেন। হাদীসের ক্ষেত্রে যেমন দুটি পরিভাষা আছে। তেমনি ফিক্বহের ক্ষেত্রে দু’টি পরিভাষা আছে। যথা-
১- রাজেহ, তথা প্রাধান্য পাওয়া বক্তব্য।
২- মারজূহ তথা অপ্রাধান্য পাওয়া বক্তব্য।
যেটাকে আমরা অন্য ভাষায় প্রথমটিকে মুফতাবিহী, আর দ্বিতীয়টিকে গায়রে মুফতাবিহী বলে থাকি।
রাজেহ থাকা অবস্থায় মারজূহ বক্তব্যের উপর আমল করা জায়েজ নেই, তথা মুফতাবিহী বক্তব্য থাকা অবস্থায় গায়রে মুফতাবিহী বক্তব্যের উপর আমল করা জায়েজ নয়। যেমন সহীহ হাদীস থাকা অবস্থায় জঈফ হাদীসের উপর আমল করা জায়েজ নয়।
জঈফ হাদীস দেখিয়ে পুরো হাদীসকেই অস্বিকার করার মানসিকতা যেমন শয়তানী মানসিকতা, তেমনি মারজূহ তথা গায়রে মুফতাবিহী বক্তব্য দেখিয়ে পুরো ফিক্বহকে অস্বিকার করার মানসিকতাও শয়তানী মানসিকতা। বুঝতে পেরেছেন?
ফয়সাল- হু, বুঝতে পেরেছি।
আমি- তাহলে জেনে নিন। নামাযে কিরাত পড়া বিষয়ে ইমাম আবূ হানীফা রহঃ এর উক্ত ব্যক্তব্যটি মারজূহ তথা গায়রে মুফতাবিহী বক্তব্য। মুফতাবিহী তথা রাজেহ বক্তব্য নয়। রাজেহ বক্তব্য হচ্ছে, নামাযে আরবীতেই কিরাত পড়তে হবে।
এখন এই মারজূহ বক্তব্য দেখিয়ে ফিক্বহে হানাফীকে অস্বিকার করা তেমনি শয়তানী, যেমন জঈফ হাদীস দেখিয়ে হাদীস অস্বিকার করার মানসিকতা শয়তানী।
আজকে আমার সময় নেই। পরে এক সময় আমাদের মাদরাসায় আসেন। বিস্তারিত কথা হবে ঠিক আছে?
ফয়সাল-শায়েখ! আপনার মাদরাসা কোথায়?
আমি- জামিয়াতুল আস’আদ আলইসলামিয়া রামপুরা।
মাদরাসার নাম শুনার সাথে সাথেই চমকে উঠলেন ফয়সাল ভাই। বলে উঠলেন জামিয়াতুল আস’আদ?
আমি- কেন চিনেন নাকি?
ফয়সাল- হু।
আমি- কিভাবে?
ফয়সাল- ফেইসবুকে।
আমি- আমাদের মাদরাসার ওয়েব সাইট দেখেছেন?
ফয়সাল- না।
আমি- জামিয়াতুল আস’আদের ওয়েব সাইট দেখার আমন্ত্রণ রইল।
এবার বিড় বিড় করে ফয়সাল সাহেব বলতে লাগলেন, জামিয়াতুল আস’আদের আপনি। ও…। আচমকা আবার বলতে লাগলেন- ভাই! আমি আসার সময় আমার হুজুরকে আপনার ওখানে নিয়ে আসবো।
আমি মুচকি হেসে বললাম- আপনার হুজুর আমাদের মাদরাসার নাম শুনে আসবে না। আপনাদের শায়েখরা আপনাদের মত সাধারণ মানুষদের সামনেই শুধু চ্যালেঞ্জবাজী আর গলাবাজী করে বেড়ায়। উলামায়ে কেরামের সামনে আসতে ভয় পায়।
ফয়সাল- কেন? কেন? আমি দেখি কালই নিয়ে আসবো।
আমি- আসলেতো ভাল। কিন্তু আসবে না এটি নিশ্চিত। আপনি কাগজ বের করুন আমি লিখে দেই।
ফয়সাল- তাহলে আমি একটি হল ভাড়া করি। সেখানে আপনি আসবেন?
আমি- অবশ্যই আসবো। কিন্তু এক্ষেত্রেও বলে দেই, সেখানেও আপনার শায়েখ আসবে না।
এবার বেটা বেশ ঘাবড়ে গেল।
বলতে লাগল- আপনি কী বলেন? আপনি এ ব্যাপারে পরিস্কার হতে চাই। আর আমি আহলুল হাদীসদের ইতিহাস পড়েছি, তারা এমন নয়। তারা অনেক সাহসী। তারা আসবেই। কিন্তু তাদের সিকিউরিটির দরকার।
আমি- তাই, যারা সাহসী তাদের সিকিউরিটি দিয়ে আনতে হয়?
পাশে ছিলেন এক মাওলানা। তিনি উঠলেন, ভাই! আপনি আপনার শায়েখকে আসতে বলুন। আমরা পুরো সিকিউরিটির ব্যবস্থা করবো। কোন সমস্যা নেই।
ফয়সাল- তাই? তাহলে আনবো।
আমি- কালই নিয়ে আসুন। এখানে মাহফিল হচ্ছে, মাইকে ঘোষণা করে দিতে বলে দেই। কাল এখানে আপনার আহলে হাদীস শায়েখের সাথে আহলে সুন্নাতের অনুসারীদের বাহাস হবে।
ফয়সাল- না, না, সেটার দরকার নেই। আপনি না বলেছেন আমি যেখানে বলি সেখানে যাবেন। তাহলে আমি হল ভাড়া করে আপনাকে জানাবো।
আমি-আপনি একটু আগে বললেন, আপনার শায়েখকে নিয়ে আসবেন। এখন বলছেন আমি যাব। ঠিক আছে। কোন সমস্যা নেই। আমার সিকিউরিটির দরকার নেই। দ্বীনের জন্য আমি রিস্ক নিতে রাজি আছি। তা আপনার শায়েখ আছে কোথায়? কাল একটু নিয়ে আসুন না।
ফয়সাল- ওনিতো সৌদী থাকে।
হাসি পেল। আপনি বললেন, তাকে যেকোন সময় নিয়ে আসবেন। এখন বলছেন সৌদী থাকে। তাহলে সে ইচ্ছে করলেই আসতে পারবে? এই আপনার শায়েখকে নিয়ে আসার কথা? ঠিক আছে আপনি হয়তো মাদরাসায় আসুন এক সময় আপনার শায়েখসহ। নইলে কোন অডিটোরিয়াম ভাড়া করে আমাদের খবর দিন। কিন্তু অডিটোরিয়াম ভাড়া আপনি করবেন না কোনদিন এটা একটি সত্য। আর যদি আমার একথা মিথ্যা প্রমাণিত করে আপনি অডিটোরিয়াম ভাড়া করেনও, তাহলে আপনার ঐ কথিত শায়েখরা উক্ত অনুষ্ঠানে যোগদানের মত ঈমানী বল পাবে না ইনশাআল্লাহ।
এরপর লোকটি বিদায় নিল। বলে গেল সে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জানাবে।
(ধন্যবাদ লুৎফুর রহমান ফরায়েজী ভাই)
বিষয়: বিবিধ
২৬৮০ বার পঠিত, ৪৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
উদ্দেশ্য কি ???
মানুষ কুরআন ও সুন্নাহর প্রতি আহ্বান করা এবং যারা আমাদেরকে বলে যে আপনাদের খোদা হল আবু হানিফা রহ. (নাউযুবিল্লাহ)
এবং
আপনাদের এবং কুকুরের মধ্যে কোন পার্থক্য নাই তাদের সঠিক অবস্থা সাধারন মানুষকে জানানো. . .
আমার লাইফ এ এরকম মিথ্যা আমি আর কখনও দেখিনাই।
ধন্যবাদ লিঙ্কটি দেয়ার জন্য
তবে তোমার লিংকযে উদ্দেশ্য পূর্ণ তা কিন্তু বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না। উদ্দেশ্য ঠেকাতে এসে তুমি নিজেই উদ্দেশ্য হলে কেমনে হবে।
আর ভুল বোঝার পরে তওবা করা মুমিনের চিন্হ।
হাদীস নিয়ে জালিয়াতিহাদীস নিয়ে জালিয়াতি
আমার কথাগুলোর তো জবাব পেলাম না, নাকি . . .
আর নেহায়েৎ ভাই,
আসুন এই রকম আরো কিছু জালিয়াতী দেখি
(যে পোষ্ট দেয়ার পর সোনা ব্লগে সাথে সাথে পোষ্টগুলো চক্রান্তকারীরা ডিলেট করে দিয়েছিল)
হাদীস নিয়ে মিথ্যাচার (১)
হাদীস নিয়ে মিথ্যাচার (২)
আমি কখনও দ্বীন নিয়ে ব্যাবসা কল্পনায়ও আনতে পারিনা।
যারা মিথ্যা বলে ফিতনা করে তারাই ব্যাবসা করনেওয়ালা।
আপনার মতো মানুষরাই আহলে হাদীস ভাইদের কে বিতর্কিত করছে।
উদ্দেশ্য মুলক পোস্ট।
আল্লাহ আমাদের বোঝার তওফিক দিন আমিন।
কিন্তু তাই যারা মাযহাব অনুসরন করে তারা কারো অন্ধ অনুকরন করে না। যতটুকু কুরআন ও সুন্নাহর সাথে মিলে ততটুকুই অনুসরন করা হয়...
আর হ্যা আপনি নিজের পরিচয় দিয়েছেন মুসলিম (প্রফাইল পিক)
কিন্তু আহলে হাদীস নেতাদের মতে কেহ যদি নিজের পরিচয় শুধু মুসলিম দেয়া তবে সে খারেজী . . . এই ব্যাপারে আপনার মতামত জানতে চাই ?
তো তিনি যে বলেছেন: "বর্তমানে সহীহ আকিদাহ,সহীহ মানহাজ,সহীহ আমল,সহীহ দাওয়াতের অনুসারী,আহলে হাদীস নামে পরিচিত"
এটাতে আপনারা দ্বীমত পোষন করেন কেন???
আপনি আমার প্রশ্নের জবাব দেন নি।
দ্বিতীয় কথা হল,
আপনি ভাই আমাদের জানাবেন কি আপনি কোন আহলে হাদীস দলের সদস্য ???
(১) জমিয়তে আহলে হাদীস।
(২) আহলে হাদীস আন্দোলন।
(৩) অল ইন্ডিয়া আহলে হাদীস
(৪) আঞ্জুমানে আহলে হাদীস বাঙ্গালা ও আসাম
(৫) নিখিল বঙ্গ ও বা আসাম জমঈয়তে আহলে হাদীস
(৬) পূর্ব পাকিস্তান জমঈয়তে আহলে হাদীস
(৭) আহলে হাদিস যুবসংঘ
(৮) জামা'আতে আহলে হাদিস
(৯) বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস
(১০) জমঈয়ত শুব্বানে আহলে হাদীস
(আপাতত এগুলো দিলাম, আপনি যদি অন্য কোন আহলে হাদীস দলের সদস্য হন আমাদের জানাতে পারেন)
>>>
আরো একটি প্রশ্ন জমা হল,
আহলে হাদীসের সংজ্ঞা কি ?
হাদীসে আছে,
রাসূল (ছাঃ) বলেন, الْخَوَارِجُ كِلاَبُ النَّارِ 'খারেজীরা জাহান্নামের কুকুর' (ইবনু মাজাহ হা/১৭৩, সনদ ছহীহ)
আমাদের জানান যে, আসলে কে খারেজী
আপনি নাকি আপনাদের আলেমরা ???
আমরা তো জানতে চাই . . .
আর দ্বীতিয় প্রশ্নের উত্তরের জন্য আপনার কাছে তার সেই কথা কতটুকু গ্রহনযোগ্য তা জানা দরকার ছিল তাই জিজ্ঞাসা করেছি। উত্তর পেলে তার পর উত্তর দিতাম।
আপনি নিজেই বললেন "নিজের পরিচয় দিয়েছেন মুসলিম (প্রফাইল পিক)? আবার নিজেই জিজ্ঞাসা করছেন আমি কোন আহলে হাদীস দল??? এটা কেমন হইলো???
সোজা উত্তর দেন তার কথা "বর্তমানে সহীহ আকিদাহ,সহীহ মানহাজ,সহীহ আমল,সহীহ দাওয়াতের অনুসারী,আহলে হাদীস নামে পরিচিত" আপনি মানেন কি না?
হ্যা অথবা না?
"বর্তমানে সহীহ আকিদাহ,সহীহ মানহাজ,সহীহ আমল,সহীহ দাওয়াতের অনুসারী,আহলে হাদীস নামে পরিচিত" আপনি মানেন কি না?
>>>
আগে আমাদের কাছে প্রশ্নটা তো ক্লিয়ার করুন !!!
আমাদের জানান যে, আসলে কে খারেজী
আপনি নাকি আপনাদের আলেমরা ???
এবং আপনার মতে কি সালাফীরা হীহ আকিদাহ,সহীহ মানহাজ,সহীহ আমল,সহীহ দাওয়াতের অনুসারী ?
"নিজের পরিচয় দিয়েছেন মুসলিম (প্রফাইল পিক)? আবার নিজেই জিজ্ঞাসা করছেন আমি কোন আহলে হাদীস দল??? এটা কেমন হইলো???
>>>
কেন প্রশ্ন করেছি তার জবাব তো আপনার কমেন্টেই আছে . . .
এবং
যদি আপনার পরিচয় মুসলিম না হয়, তবে আপনি আমাদের জানান যে আপনি কোন আহলে হাদীস . . .
(১) জমিয়তে আহলে হাদীস।
(২) আহলে হাদীস আন্দোলন।
(৩) অল ইন্ডিয়া আহলে হাদীস
(৪) আঞ্জুমানে আহলে হাদীস বাঙ্গালা ও আসাম
(৫) নিখিল বঙ্গ ও বা আসাম জমঈয়তে আহলে হাদীস
(৬) পূর্ব পাকিস্তান জমঈয়তে আহলে হাদীস
(৭) আহলে হাদিস যুবসংঘ
(৮) জামা'আতে আহলে হাদিস
(৯) বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস
(১০) জমঈয়ত শুব্বানে আহলে হাদীস
(আপাতত এগুলো দিলাম, আপনি যদি অন্য কোন আহলে হাদীস দলের সদস্য হন আমাদের জানাতে পারেন)
(এই কারনে তো তারা মাযহাব অনুসারীদের মুশরিকও বলে থাকে)
“দ্বীতিয় প্রশ্নের উত্তরের জন্য আপনার কাছে তার সেই কথা কতটুকু গ্রহনযোগ্য তা জানা দরকার”
আমি জানি আপনার অভ্যাস,উত্তরতো দিবেন না বরং প্যাঁচাবেন। এর আগেও দেখেছি। তাই আপনার সাথে কথা বলার আর কোন ইচ্ছা নাই। কেননা আপনার সহজ উত্তর হ্যাঁ অথবা না দিতেও সমস্যা।
এই প্রশ্নটার সরাসরি জবাব দিতেও কি ভয় পাচ্ছেন ???
এবং আপনার মতে কি সালাফীরা হীহ আকিদাহ,সহীহ মানহাজ,সহীহ আমল,সহীহ দাওয়াতের অনুসারী ? :
আহলে হাদীস ভাইয়েরা বলছেন হানাফিরা গোমরাহ আর আপনারা বলছেন আহলে হাদীসরা গোমরাহ। এটা কি নতুন বির্তক? এগুলি শতাব্দীকাল ধরে চলে আসছে।
খুলনার আলেম আব্দুর রউফ সাহেব ইমাম আবু হানিফা (রহঃ)কে কত কি প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন অন্যদিকে আপনারাও আহলে হাদীসদেরকে ইংরেজদের সৃষ্ট অমুক তমুক ইত্যাদি প্রমাণ করার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাতে মুসলিম উম্মাহর কোন কল্যাণ আছে কি?
=============
সব চেয়ে মজার ব্যাপার হলো- বিবেক, প্রেসক্রিপশন, জুতা ইত্যাদি নিয়ে আপনি যা আলোচনা করার চেষ্টা করছেন তার প্রত্যেকটির জবাব আছে। আমি একটু বিবেক নিয়ে আলোচনা করতে চাই।
বিবেক দিয়েই কিন্তু একজন মানুষ সত্য মিথ্যার পার্থক্য করে। এটা দিয়েই একজন অমুসলিম মুসলিম হয়। বিকেককে কাজে লাগাতে কুরআনে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে।
========================
কিন্তু একটা ব্যাপার আমার খুবই ভারাপ লাগলো, এখানে কোন এক পক্ষকে কুকুরের সাথে তুলনা করা হয়েছে। আল্লাহ সুবহানাহু তালায়া উত্তম পন্থায় বির্তক করতে আদেশ দিয়েছেন। আপনি নিশ্চিত ভাবেই সীমা লঙ্ঘন করেছেন। আশা করছি কমেন্টের ঐ অংশটি মুছে দিবেন।
আপনি বললেন,
ম্মিলিত মুনাজত বিদআত নাকি মুস্তাহাব এনিয়ে চট্টগ্রামের হানাফি আলেমে এবং ঢাকার হানাফি আলেমে দ্বীনদের মধ্যে মতভেদ বিস্তর। তাহলে কোনটি হানাফি মুলনীতি?
>>>
এখানে কোনটিই হানাফী মূলনীতি নয় !!! আমাদের আগে জানা উচিত মূলনীতি কাকে বলে, এবং মূলনীতির আলোকে যে মাসয়ালা প্রনয়ন করা হয় সেটাকে কি বলে ?!?!?!
এবং এই মাসয়ালাগত বিভক্তি হয়েছেই মুজতাহিদদের ইজতেহাদগত মূলনীতির কারনে . . .
যেমন হাদীস শাস্ত্রের মূলনীতি প্রনয়ন করেছেন মুজতাহিদ মুহাদ্দিসগণ। এখন এই মূলনীতির আলোকেই কারো কাছে একজন রাবী দূবর্ল আবার কারো কাছে একই রাবী সবল !!!
আশা করি বুঝাতে পেরেছি।
আহলে হাদীস ভাইয়েরা বলছেন হানাফিরা গোমরাহ আর আপনারা বলছেন আহলে হাদীসরা গোমরাহ। এটা কি নতুন বির্তক?
>>>
ভুল বললেন ভাই,
ইংরেজ শাসনামলের আগে এই দলের কোন নাম (আহলে হাদীস) কেহ শুনেছে বলে ইতিহাসে পাওয়া যায় না।
আর সত্য এবং মিথ্যা কখনও একত্রিত হয় না।
তাই
হয় আহলে হাদীস গোমরাহ
নাহয়
হানাফীরা গোমড়াহ
দুইজনই সঠিক বা দুইজনই গোমড়াহ তা তো সম্ভব নয় . . .
আপনারাও আহলে হাদীসদেরকে ইংরেজদের সৃষ্ট অমুক তমুক ইত্যাদি প্রমাণ করার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
>>>
আমরা কখনই প্রমানবিহীন কিছু প্রমানের চেষ্টা করি না আলহামদুলিল্লাহ। যেহেতু বললেন প্রমানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, তাই প্রমানস্বরূপও কিছু দিলাম। যাচাই করে দেখার অনুরোধ রইল...
===
গাইরে মুক্বাল্লিদদের তৎকালীন মুখমাত্র মৌলভী মুহাম্মদ হুসাইন বাটালভী লাহোরী বৃটিশ সরকারের প্রধান কার্যালয় এবং পাঞ্জাব, সি-পি, ইউ-পি, বোম্বাই, মাদ্রাজ ও বাঙ্গালসহ বিভিন্ন শাখা অফিসে ইংরেজ প্রশাসনের আনুগত্যতা ও বশ্যতা স্বীকার করত: তাদের জন্য “আহলে হাদীস” নাম বরাদ্দ দেয়ার দরখাস্ত পেশ করেন। এ দরখাস্তগুলোর প্রতি উত্তর সহ তারই সম্পাদনায় প্রকাশিত তৎকালীন “এশায়াতুস সুন্নাহ” পত্রিকায় (পৃ:২৪-২৬, সংখ্যা:২, খ:১১) প্রকাশ করা হয় যা পরে সাময়ীক নিবন্ধ আকারেও বাজারজাত করা হয়। তাদের মানসিকতা ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য কিছুটা আঁচ করার জন্য আপনাদের সমীপে সন্মধ্য হতে একটি দরখাস্তের অনুবাদ নিম্নে পেশ করছি।
“বখেদমতে জনাব গভার্মেন্ট সেক্রেটারী,
আমি আপনার খেদমতে লাইন কয়েক লেখার অনুমতি এবং এর জন্য ক্ষমাও পার্থনা করছি। আমার সম্পাদিত মাসিক “এশায়াতুস সুন্নাহ” পত্রিকায় ১৮৮৬ ইংরেজিতে প্রকাশ করেছিলাম যে, ওহহাবী শব্দটি ইংরেজ সরকারের নিমক হারাম ও রাষ্ট্রদ্রোহীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। সুতরাং এ শব্দটি হিন্দুস্তানের মুসলমানদের ঐ অংশের জন্য ব্যবহার সমীচিন হবে না, যাদেরকে “আহলে হাদীস” বলা হয় এবং সর্বদা ইংরেজ সরকারের নিমক হালালী, আনুগত্যতা ও কল্যাণই প্রত্যাশা করে, যা বার বার প্রমাণও হয়েছে এবং সরকারী চিঠি প্রত্রে এর স্বীকৃতিও রয়েছে।
অতএব, এ দলের প্রতি ওহহাবী শব্দ ব্যবহারের জোর প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে এবং সাথে সাথে গভার্মেন্টের বরাবর অত্যন্ত আদব ও বিনয়ের সাথে আবেদন করা যাচ্ছে যে, সরকারীভাবে এ ওহহাবী শব্দ রহতি করে আমাদের উপর এর ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক এবং এ শব্দের পরিবর্তে “আহলে হাদীস” সম্বোধন করা হোক।
আপনার একান্ত অনুগত খাদেম
আবু সাঈদ মুহাম্মদ হুসাইন
সম্পাদক, এশায়াতুস সুন্নাহ
দরখাস্ত মুতাবেক ইংরেজ সরকার তাদের জন্য “ওহহাব” শব্দের পরিবর্তে “আহলে হাদীস” নাম বরাদ্দ করেছে। এবং সরকারী কাগজ-চিঠিপত্র ও সকল পর্যায়ে তদের “আহলে হাদীস” সম্বোধনের নোটিশ জারি করে নিয়মতান্তিকভাবে দরখাস্তকারীকেও লিখিতভাবে মঞ্জুরী নোটিশে অবহিত করা হয়।
সর্বপ্রথম পাঞ্জাব গভার্মেন্ট সেক্রেটারী মি: ডব্লউ, এম, এন (W.M.N) বাহাদুর চিঠি নং-১৭৫৮ এর মাধ্যমে ৩রা ডিসেম্বর ১৮৮৬ ইংরেজিতে অনুমোদনপত্র প্রেরণ করেন। অতপর ১৪ই জুলাই ১৮৮৮ইং সি.পি গভার্মেন্ট চিঠি নং-৪০৭ এর মাধ্যমে এবং ২০শে জুলাই ১৮৮৮ইং ইউ.পি গভার্মেন্ট চিঠি নং-৩৮৬ এর মাধমে এবং ১৪ই আগষ্ট ১৮৮৮ইং বোম্বাই গভার্মেন্ট চিঠি নং-৭৩২ এর মাধ্যমে এবং ১৫ই আগষ্ট ১৮৮৮মাদ্রাজ গভার্মেন্ট চিঠি নং ১২৭ এর মাধ্যমে এবং ৪ঠা মার্চ ১৮৯০ইং বাঙ্গাল গভার্মেন্ট চিঠি নং-১৫৫ এর মাধ্যমে দরখাস্তকারী মৌলভী আবু সাইদ মুহাম্মদ বাটালভীকে অবহিত করা হয়।
(এশায়াতুস সুন্নাহ, পৃ:৩২-৩৯, সংখ্যা:২, খ:১১)
আলী (রাঃ) বলেছেনঃ
عَنْ عَلِىٍّ - رضى الله عنه - قَالَ لَوْ كَانَ الدِّينُ بِالرَّأْىِ لَكَانَ أَسْفَلُ الْخُفِّ أَوْلَى بِالْمَسْحِ مِنْ أَعْلاَهُ وَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَمْسَحُ عَلَى ظَاهِرِ خُفَّيْهِ.] . سنن أبي داود .تحقيق الألباني -صحيح [
যদি দ্বীনের বিধান বুদ্ধিবৃত্তি কিংবা যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে নির্ণিত হতো, তাহলে মোজার উপরের অংশের চেয়ে নীচের অংশ মাসেহ করাই উত্তম হতো। (সুনান আবু দাউদ – ১৬২, আলবানীর মতে সহীহ, দেখুনঃ সহীহ ও জয়ীফ আবু দাউদ – ১৬২)
ইমাম নববী রহ. বলেন,
ووجهه انه لو جاز اتباع أي مذهب شاء لا فضى إلى ان يلتقط رخص المذاهب متبعا هواه ويتخير بين التحليل والتحريم والوجوب والجواز وذلك يؤدى إلى انحلال ربقة التكليف بخلاف العصر الاول فانه لم تكن المذاهب الوافية بأحكام الحوادث مهذبة وعرفت: فعلى هذا يلزمه ان يجتهد في اختيار مذهب يقلده على التعيين
“ব্যক্তি তাকলীদের অপরিহার্যতার কারণ এই যে, মুক্ত তাকলীদের অনুমতি দেয়া হলে প্রবৃত্তি তাড়িত মানুষ সকল মাজহাবের অনুকূল বিষয়গুলোই শুধু বেছে নিবে। ফলে হালাল-হারাম ও বৈধ-অবৈধ নির্ধারণের এখতিয়ার এসে যাবে তার হাতে। প্রথম যুগে অবশ্য ব্যক্তি তাকলীদ সম্ভব ছিলো না। কেননা ফিকাহ বিষয়ক মাজহাবগুলো যেমন সুবিন্নস্ত ও পূর্ণাংগ ছিলো না তেমনি সর্বত্র সহজলভ্যও ছিলো না। কিন্তু এখন তা সুবিন্যস্ত ও পূর্ণাংগ আকারে সর্বত্র সহজলভ্য। সুতরাং যে কোন একটি মাজহাব বেছে নিয়ে একনিষ্টভাবে তা অনুসরণ করাই এখন অপরিহার্য”। (আল মাজমু শরহুল মুহায্যাব, ১/১৯)
এখানে কোন এক পক্ষকে কুকুরের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
>>>
জনাব !!! এখানে আমাদের কুকুরের সাথে একজন তুলনা করেছে এবং আমি কমেন্টে শুধু সেটা দেখালাম মাত্র। এটা আমার নয়, বিপক্ষদের কমেন্ট।
আমারো ধারনা ছিলো যে সবাই একরকম না।
আমি আহলে হাদিস ভাইদের সাথে পড়ালেখা উঠা বসা করেছি এবং তাদের ভালই জানি।
কিন্তু এই আহলে হাদিস ভাইদের নাম নিয়ে ফিতনা করে।
আল্লাহ তাদের হেদায়াত দান করুন।
আপনারা কি সেটা পালন করেন?
কুরআনে আল্লাহর স্পষ্ট বাণীঃ আমি কুরআনকে সহজ করে দিয়েছি.....
কুরআন হাদীস অনুসরণ করলে সমস্যা কোথায় বুঝিনা। হিন্দু ব্রাম্মণদের মত ধর্মকে সাধারণের নাগালের বাইরে রেখে রহস্য বানিয়ে আপনাদের ফায়দা কি?
ছোটখাট ইস্যুতে ভিন্নমত থাকবে, থাকাটাই স্বাভাবিক। ইমামদের মধ্যেও ভিন্নমত আছে। সবার অনুধাবন/আন্ডারস্ট্যান্ডিং একরকম নয়। এগুলো নিয়ে অযথা বিভেদ সৃষ্টি কাম্য নয়। আবু হানীফা(র) এর বক্তব্যঃ আমার কোনো কথা সহীহ হাদীসের বিপরীত হলে সেটা ছুঁড়ে ফেলে দাও। [রাসূলুল্লাহ(স)ছাড়া কেউ ভুলের উর্ধে্ব নন, ইমাম আবু হানীফা(রহ) ও নন, তিনি নিজেও সেটা বলে গিয়েছেন।]
মুসলমানদের মাঝে ঈমান ও ইসলামী ভ্রাতৃত্বের ঐক্য সৃষ্টির চেষ্টা করুন একই দিনে ঈদের বিষয় দায়িত্বশীলদের উপর ছাড়ুন
ূ
মুসলমানদের মাঝে ঈমান ও ইসলামী ভ্রাতৃত্বের ঐক্য সৃষ্টির চেষ্টা করুন একই দিনে ঈদের বিষয় দায়িত্বশীলদের উপর ছাড়ুন
আবু হানীফা(র) এর বক্তব্যঃ আমার কোনো কথা সহীহ হাদীসের বিপরীত হলে সেটা ছুঁড়ে ফেলে দাও।
>>>
ভাই, শুনে এসে বলে দেবেন না। এটা আহলে হাদীস ভাইদের প্রচলিত মিথ্যাচারের একটি মিথ্যাচার
আহলে হাদীসের মিথ্যাচার
-----------
আকল এবং রায় এর মধ্যে কিছু পার্থক আছে। বিবেক কালে লাগাতে এই ব্যপারে অনেক দলীল পেশ করা যায় কুরআন সুন্নাহ এবং অতীত বুজর্গদ্বীনের থেকে। সম্মাণিত ভাই, বিবেক এবং প্রবৃত্তির পূজা এই দুইটি পার্থক্য আপনাকে করতেই হবে। সম্মাণিত ভাই, আকল কাজে লাগাতে মহান আল্লাহ পাকে নির্দেশ রয়েছে।
বির্তকের ইতি এখানেই টানলাম। মহান আল্লাহ আপনাকে উত্তম জাযা দান করুন এবং আমাদের সবাইকে দ্বীনের উপর অটল রাখুন।
জাযাকাল্লাহ খাইরান
আপনার সর্বশেষ পোস্ট এ ব্লগার নেহায়েৎ ও প্রেসিডেন্ট কিছু প্রশ্ন উথ্থাপন করেছেন। সঠিক, যুক্তিগ্রাহ্য ও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারলে আমিও পরদিন হতে চিল্লায় যোগ দিব। প্রমিজ। আশা করি সৎসাহস দেখাবেন।
আপনি কিসে যোগ দিবেন সেটা আমার দেখার বিষয় নয়, সম্ভব হলে জবাব দিবেন
কিছু কারামত
মন্তব্য করতে লগইন করুন