রোহিঙ্গাদের একটু আশ্রয় দিলে...কি হবে??...
লিখেছেন লিখেছেন শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী ২২ নভেম্বর, ২০১৬, ০৫:৩৬:৫৮ সকাল
রোহিঙ্গাদের একটু আশ্রয় দিলে কি হবে?
তারা সন্ত্রাস করবে?
জঙ্গী হয়ে যাবে?
হতে পারে।
একজন মানব সন্তান জন্মগ্রহণ করলে জঙ্গী হতে পারে
আটাশে অক্টোবরের সন্ত্রাসীদের মতো খুনি হতে পারে
তাই বলে সমস্ত গর্ভধারণ নিষিদ্ধ করতে হবে?
রোহিঙ্গা শরণার্থী, যাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু,
তারা জঙ্গী হয়ে উঠতে পারে,
সো পুশব্যাক করো-
এ ক্যামোন ফ্যালাসি!
এ ক্যামোন স্যাটানিক পৈশাচিকতা!?
হয়তো দেখা গেছে দশটা পরিবার, কেউ মা হারিয়ে
কেউ বাবা কিংবা ভাইয়ের রক্ত মাড়িয়ে
কেউ স্ত্রী বা সন্তানের লাশ দাফনের সুযোগটাও না পেয়ে
প্রাণের তাগিদে ছুটতে ছুটতে ট্রলার যোগে কোনোভাবে তীরে এলো
ভাবলো-
এ আমার প্রতিবেশী দেশ!
আমাদের মুসলমান ভাইদের দেশ এখানে
তাদের সীমান্ত!
আমরাও তো ভাবি।
আমাদের লাখ লাখ প্রবাসী ভাই আছেন।
তারা এবং তাদের ভাই-বন্ধু হিসেবে আমরাও কি এমন করেই ভাবি না??
দুঃসময়ে সেই ভাবনাটা আরো আবেগাপ্লুত হয়েই হাজির হয়!
০২.
কিন্তু করছি কি আমরা?
লক্ষ লক্ষ নয়। হাজার হাজার নয়।
একটা টীম একশো পঁচিশ জনের(১২৫)!
৩৪ জন শিশু, ৬৪ জন নারী এবং ২৭ জন পুরুষ।
আমরা ফেরত পাঠালাম।
বিশ তারিখের পত্রিকা বলছে-
নদীতে রাত তখন দেড়টা!!
আল্লাহর জমিনের উপর বিচরণকারী 'মানুষ'
কি করে এতোটা নিষ্ঠুর হতে পারে?!
এরাই নাকি একদা লাখে লাখে শরণার্থী হয়েছিলো
সেই সংখ্যা নাকি পৌঁছেছিলো কোটিতে!
মানবতার জন্য এই তাদের আজকের অবস্থান!
পশুর কাছেও কি অসহায় দিশেহারা মানুষের চেয়ে 'পশু'র মূল্য বেশী হয়?!
০৩.
আরেকটা টীম ৭৮ জনের।
৩১ শিশু, ৩০ জন নারী, পুরুষ ১৭ জন।
তাদেরও ফেরত পাঠানো হয়। খবর বলছে, 'মানবিক সাহায্য' দিয়ে।
মৃত্যু ভয়ে পালিয়ে আসা বণি আদমের জন্য
এক টুকরো নিরাপদ আশ্রয়ের চেয়ে 'মানবিক' আর কি হতে পারে?
সেটাই যখন সে পেলো না, তখন আর 'মানবিক সাহায্যে'র মানে কি?
মানে কি এই নয় যে,
'ধর গুড়-মুড়ি নে, যা সরে যা এখান থেকে!
মরলে দূরে গিয়ে মর, সমুদ্রে মর,
দাফন-কাফনের ঝামেলায় পেলিস না আমাদের...'
-এই তো??
রাবিন্দ্রীক মানবতাবাদী সেকুলার প্রগতিশীল সুশীল আমরা
আমরা 'চেতনা'র সরকার!
০৪.
আরেকটা টীম দুইশোর কাছাকাছি।
তাও বেশীর ভাগ নারী ও শিশু।
এভাবে না হয় হাজার খানেক হতো।
নিরাপদ আশ্রয়ের খবর পেয়ে আরো না হয় কয়েক হাজার।
আগে তো এই ক'টা মানুষকে অন্তত আশ্রয় দেবেন।
তারপর না হয় অন্য কথা বলবেন।
কি হতো?
জুনে(খবর ২১জুন'১৬) শুনেছি
দূর্যোগ মোকাবিলায় এক শত কোটি টাকার তাবু কেনা হয়েছে।
তার দুয়েকটা না হয় ইউজ হতো।
বিনিময়ে আল্লাহ হয়তো বড় কোনো দূর্যোগ থেকে বাঁচিয়ে দিতেন!
মজলুমের ফরিয়াদ এবং আল্লাহর মাঝে কোনো তফাৎ থাকে না।
এবং এও তো আমরা জানি,
কেউ যখন তার ভাইয়ের কল্যাণে সচেষ্ট হন,
তার কল্যাণে সচেষ্ট হন স্বয়ং আল্লাহ অলমাইটি!
০৫.
সুতরাং,
নিপীড়ক রাষ্ট্র ও সরকার-সমূহের 'জঙ্গী' ও 'সন্ত্রাসী' বুলি
আমাদেরকে মানবিক হয়ে ওঠার পথে যেনো প্রতিবন্ধক না হয়।
টার্কি এবং অন্যান্যদের কথা বাদই দিলাম।
জার্মানী ফ্রান্স ইতালীর মতো ইসলামোফোবিক
ইউরোপীয়ান দেশগুলো কি
হাজার হাজার আরব এবং মুসলিম শরণার্থী গ্রহণ করেনি?
মানুষ হিসেবে
জাতি হিসেবে
আমরা কি তাদের চেয়েও অধম!
এবং এতোটাই?...
বিষয়: বিবিধ
১৪০৫ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন।
এই অমানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার প্রতিপক্ষে দাঁড়ানোর হিম্মত দিন!
open the Border , they are our brothers and sisters
আমরা আজ পশুর চেয়েও অধম। তাই এই দুর্গতি দুর্দশা।
সর্বাবস্থায় ভালো থাকুন এই প্রার্থনা।
অনেক ধন্যবাদ আপু!
আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন।
অনেক ভালো থাকুন, এই প্রার্থনা…
কি হবে মানে !! বুঝা যেত আমাদের মানবিকতা আছে , নৈতিকতা আছে , আছে ধর্মীয় মূল্যবোধ ।
ধন্যবাদ ।ভাইয়া
এসব কী সত্যিই আমাদের নেই?
না থাকলে, আবার হবে ইনশাআল্লাহ!
অমানবিকতা কিংবা অবৈধ দখলদারিত্বই
এ ভূখন্ডের নিয়তি হতে পারে না!
তুরষ্ক এবং এতদমনষ্ক দেশগুলোর উচিত মায়ানমারের সাথে ঝামেলায় না জড়িয়ে আলাপ আলোচনা করে রোহিঙ্গাদেরকে তাদের দেশে ভাগ করে নিয়ে যাওয়া। মায়ানমার যেহেতু রোহিঙ্গাদেরকে রাখতে চাচ্ছে না আর বাংলাদেশও যেহেতু ভারত ও মায়ানমারের ভয়ে এই নির্যাতিত ভাইদের ব্যাপারে হাত গুটিয়ে রাখছে - তাই অযথা মানুষ না মেরে এদেরকে অন্যদেশে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন