রোহিঙ্গারাও মানুষ, আমাদের মজলুম ভাই এবং উদ্বাস্তু প্রতিবেশী!
লিখেছেন লিখেছেন শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী ২১ নভেম্বর, ২০১৬, ০৩:২৭:৪৫ রাত
মায়ানমারের
মুসলমানদের নিয়ে অনেকেই আবেগ দেখাচ্ছেন!
হ্যাঁ,
মানুষের জন্য মানুষের,
প্রতিবেশীর জন্য প্রতিবেশীর,
ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের আবেগ তো থাকবেই!
যারা এই আবেগটুকু অন্তত দেখাতে পেরেছেন তাদের স্যালূট!
কেউ কেউ আছেন যথেষ্ট বিবেকবান!
অতো আবেগে চলেন না!
অনেক হিসেব নিকেশ করেন!
তারপর বলে ওঠেন বিজ্ঞোচিত কথা-বার্তা!
রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়েও তারা অনেকেই নানা বিজ্ঞোচিত উক্তি আওড়াচ্ছেন!!
তারা ভুলে গেছেন-
মানুষ যখন করুণ কোনো মৃত্যু শয্যায় তড়পায়
পানি পানি করে গগণ বিদারি আর্তচিৎকারে বিধ্বস্ত হয়,
তখন রাজনীতির প্রসঙ্গ তোলা মানে শয়তানের স্তরে নেমে যাওয়া
তখন কোনোভাবে রুঢ় হয়ে ওঠা মানে ইবলিশের কাতারে নাম লিখানো...
মানুষের, নানা জাতি-গোষ্ঠীর শরণার্থী হয়ে ওঠার ইতিহাস, নতুন নয়।
বিরলও নয়।
এবংকি গুটিকয়েকও নয়, বরং অসংখ্য!
মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব সংঘাত নিষ্ঠুরতা দাঙ্গা হয়েছে, হবেও
নানা দূর্যোগেও সময়ে দুঃসময়ে সর্বহারা হয়েছে মানুষ,
মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে, আশ্রয় দিয়েছে;
বাঁচার প্রেরণা দিয়েছে- নতুন করে বেড়ে ওঠার!
০২.
হতে পারে-
রোহিঙ্গারা মানুষ হিসেবে ব্রাহ্মণ প্রজাতির নয়,
তাদের পাশে দাঁড়ালে 'ক্ষমতা' দীর্ঘায়িত হওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই,
হতে পারে তাদের অবয়ব আমাদের চাষা-ভূষাদের মতোই
ফোর্ড ইউলিয়ামের প্রমিত বাংলায় তারা হয়তো কথাও বলতে জানেনা,
কিন্তু তারা তো মানুষ!
মায়ানমার পরিকল্পিত এবং পৈশাচিক কায়দায় কেড়ে নিয়েছে
তার ভূখন্ডের এই সব স্থায়ী বাসিন্দাদের নাগরিক অধিকার!
লাঞ্ছিত করেছে তাদের নূন্যতম মানবাধিকারও!
এবং শেষ পর্যন্ত মেনে নিতে পারছে না-
তাদের বেঁচে থাকার অধিকার পর্যন্ত!
মায়ানমার যা করছে,
সেটা তার ধ্বংশের পথ চূড়ান্ত করা ছাড়া আর কিছুই নয়!
সে তার সর্বনাশের সময়কেই ত্বরান্বিত করছে শুধু!
সে অধঃপতনের সংক্ষিপ্ততম রাস্তায় হাটছে!
ক্রমাগত মানবাধিকার লংঘনকারী দেশ
কিংবা মানবাধিকার লংঘনে অভ্যস্ত সিদ্ধহস্ত রাষ্ট্র
শেষ পর্যন্ত অকার্যকর রাষ্ট্রই হয়ে ওঠে
হোক সেটা সৌদি, ইন্ডিয়া, মায়ানমার কিংবা অন্য কেউ...
এই মায়ানমারকে আমাদের মাথায় রাখতে হবে
প্রত্যাখ্যান করতে হবে
সরবে নিন্দা করতে হবে
এই ব্রুটালিটির প্রতিপক্ষে আরো যা যা করা যায় সব...
একই সাথে দেখতে হবে আমরা
মানে আমাদের দেশ
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে কায়েম হওয়া বাংলাদেশ রাষ্ট্র কি করছে?
কেনো করছে? কিভাবে করছে?...
আমাদের রাষ্ট্র কি আমাদের আবেগের
আমাদের আত্মার আকুতির প্রতিনিধিত্ব করছে?
না করলে, কেনো করছে 'না'?!?...
০৩.
প্রবেশ আর অনুপ্রবেশ যা'ই বলুন-
রোহিঙ্গা তথা মায়ানমারের মজলুম উদ্বাস্তু মুসলমানদের ঠেকাতে
'বিজিবি কড়া নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে'!
'টহল জোরদার করা হয়েছে'!
'বাংলাদেশী সীমান্তবাসীদের জন্য সচেতনতামূলক সভার আয়োজন হচ্ছে'!
এদিকে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার গোষ্ঠী ভূখা-নাঙ্গা সর্বহারা রোহিঙ্গাদের এক টুকরো আশ্রয় ভিক্ষাকে 'infiltration attempt' বলে, তাদেরকে রীতিমতো 'সামরিক মর্যাদায়' শত্রু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া!
কারো কারো ভাষায় 'জঙ্গী মদদদাতা'! 'হুমকি'! আরো কতো কি?
ঠিক ফররুখের পঙতির মতো-
'কোন ইবলীস আজ মানুষেরে ফেলি মৃত্যুপাকে
করে পরিহাস!'
ওপারের কিছু ইবলীস মানুষেরে মৃত্যুপাকে ফেলেছে,
আর এপারে চলছে কিছু ইবলীসের পরিহাস!...
কিন্তু সারা বছর ধরে সীমান্তে
নিয়মিত বাংলাদেশী নিধনে তারা অন্ধ বধির ও উপলব্ধিহীনের প্রতিকৃতি হয়ে ওঠে!
কোনোদিন একটু অভিমান করতেও দেখেছেন কী?!
কী অবলীলায় একের পর এক লাশ নিয়ে ফিরে আসে! হাসি হাসি মুখ করে!
তার ওপর বলে এরা(বাংলাদেশী) সব স্মাগলার!
কেউ কেউ এক ধাপ এগিয়ে বলে- এদের মরাই উচিত!!
দেয়ালে পিঠ ঠেকতে ঠেকতে বেঁকে গেলে,
আধিপত্যকে যারা একটু আধটু রুখে দিতে চায়,
তারাই বরং পড়ে উলটো 'রাষ্ট্রে'র কোপানলে!
সেই রাষ্ট্র
এবং তার 'পোগতিশীল'বৃন্দ আজ সজাগ..
সচেতন..
এবং জোরদার...
বাহ!
কারো গুলি খেয়ে 'ধন্য' হই,
আর কারো আশ্রয় প্রার্থনাকে জ্ঞান করি শত্রুতা!
আসলে-
দানবের ভক্ত সুশীল ও সরকার, মানবের যম!!
বিষয়: বিবিধ
১৩১০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
I just signed the petition "Sheikh Hasina: Open the borders for Rohingya's" and wanted to see if you could help by adding your name.
Our goal is to reach 100 signatures and we need more support. You can read more and sign the petition here:
https://www.change.org/p/sheikh-hasina-open-the-borders-for-rohingya-s-b1586c78-81f5-4d3f-8980-1fb2392fb984?recruiter=638197193&utm_source=share_petition&utm_medium=email&utm_campaign=share_email_responsive
সাইন করলাম।
অনেক ধন্যবাদ!
মন্তব্য করতে লগইন করুন