ইসলামে ‘সাহাবী’ ধারণার পুনর্গঠন (ভূমিকা পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী ২৮ অক্টোবর, ২০১৬, ০১:৪৯:৫৮ রাত



‘একবার মোনাজেরে জামান হযরত মাওলানা আমীন সফদর রহ. এর কাছে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেছিলো, জামাতে ইসলাম বা মাওলানা মওদুদী ও দেওবন্দী আলেমদের মাঝে পার্থক্য কী?

তিনি তাকে বললেন, হায়াতুস সাহাবা বইটি নিয়ে যান। এক সপ্তাহ পড়ার পর আসবেন।

লোকটি এলে আমীন সফদর রহ. তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হায়াতুস সাহাবা পড়ে কী শিখেছেন?

লোকটি বলল, বইটি পড়ে সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা ও মহব্বত বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। তাদের প্রতি সীমাহীন ভক্তি ও শ্রদ্ধা জন্ম নিয়েছে।

আমীন সফদর রহ. বললেন, এবার আপনি মাওলানা মওদুদী সাহেবের লেখা খেলাফত ও মুলুকিয়াত বইটা নিয়ে যান। এক সপ্তাহ পড়ে আমাকে প্রতিক্রিয়া জানাবেন।

লোকটি এক সপ্তাহ পরে এসে বলল, এই বই পড়ে তো সাহাবায়ে কেরামের প্রতি অন্তরে ঘৃণাবোধ তৈরি হয়েছে। তাদের সমালোচনা ও দোষত্রুটিই শুধু চোখে ভাসে।

আমীন সফদর রহ. বললেন, ‘এটিই হলো দেওবন্দ ও মাওলানা মওদুদীর মাঝে পার্থক্য’।

০২.

উপরের গল্পটিই উপমহাদেশে ‘সাহাবী’ চিন্তার সারকথা বলা যায়। এর সমান্তরালে অন্য যে চিন্তাটি বিরাজমান তার মূল শক্তিশালী হলেও তা’কে বেড়ে উঠতে দেয়া হয়নি! ভ্রান্তি, অজ্ঞতা আর অন্ধ আবেগের বেড়াজালে আটকে দেয়া হয়েছে! সে কাজটি কারা করেছে তাও দিবালোকের মতো স্পষ্ট!

আর কোথাও যাওয়ার দরকার নেই, এই গল্পটিই সেসব ভাইদের মুখোশ খুলে দেয়। ঠান্ডা মাথায় একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়- উনাদের ‘সাহাবী’ চিন্তা মোটেই জ্ঞানপ্রসূত নয়, বরং মওদূদী বিদ্বেষ-সঞ্জাত!

দ্বিতীয়ত, সাইয়েদ আবুল আ’লার ঐতিহাসিক ও ধর্মতাত্ত্বিক দলীলাদির কোনো জ্ঞান-তাত্ত্বিক প্রতিউত্তরে উনারা এঙ্গেজ হতে চান না, তাই সাধারণ মানুষের অন্ধ আবেগ এবং মোটা মাথাই উনাদের ভরসা!

তাছাড়া গল্পে যেভাবে বলা হলো, এটাই যদি সাইয়েদ আবুল আ’লার সাথে দেওবন্দের তফাৎ হয়, তাহলে উনাদের সাথে একই তফাৎ তো ইমাম বুখারির সাথেও আছে! আছে ইমাম মুসলিম এবং অন্যান্যদের সাথেও!!

ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম এবং অন্যান্য প্রসিদ্ধ হাদীসবেত্তাগণ তাদের সংগৃহীত বা মুখাস্তকৃত লাখ লাখ হাদীস হতে মাত্র কয়েক হাজার হাদীস সংকলন করেছেন! আর বাকীগুলোকে বলেছেন, এটার এই দোষ, এটার ওই দোষ, ওটার মধ্যে জামেলা আছে, এটা হলো দূর্বল, ওটা তো একটা বানানো কথা, ইত্যাদি! কিভাবে এসব কথা বললেন? তাঁর কাছে কুরআন সুন্নাহর সুস্পষ্ট মানদন্ড ছিল। ছিলো সংশ্লিষ্ট ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্ত। সেই সাথে যাচাই-বাচাই বিচার-বিশ্লেষণ সক্ষমতা! সাইয়েদ আবুল আ’লা কি ‘খিলাফাত ও রাজতন্ত্রে’ এর চেয়ে বেশী কিছু করেছেন! প্রথমেই তিনি কুরআন হাদীসের মানদন্ডে খিলাফাতকে উপস্থাপন করেছেন। নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক তথ্য-উপাত্তের প্রেক্ষিতে দেখাতে চেয়েছেন খিলাফাত কিভাবে কখন কতটুকু বিরাজিত ছিল। এরপর কিভাবে কাদের অক্ষমতায় আর কাদের হস্তক্ষেপে তা মুলুকিয়াতে রুপান্তরিত হলো, তাও সবিস্তারে চিত্রিত করেছেন!

যে মানদন্ড, যে প্রেক্ষিত এবং যে স্বাধীন বুদ্ধিবৃত্তিতে ইমাম বুখারী হাদীস পর্যালোচনা করে সাধুবাদ পান, সেই একই পদ্ধতিতে খিলাফাতের ধারা বিশ্লেষণ করে সাইয়েদ আবুল আ’লা কেন হিংসা-বিদ্বেষের পাত্র হয়ে গেলেন!? দয়া করে কেউ ভুল বুঝবেন না, ‘খিলাফাত ও মুলুকিয়াত’ রচনার তুলনায় ইমাম বুখারীর হাদীস সংকলন নিঃসন্দেহে অনেক উঁচু পর্যায়ের কাজ। আমরা এখানে শুধু মোটা দাগে দু’জনের গবেষণা পদ্ধতির কথা বলছি।

শরীয়তের উৎস হিসেবে প্রত্যেকটি হাদীস যেমন যাচাই-বাচাই করে ক্যাটাগরাইজ করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, একই ভাবে সাহাবীদের গভীরভাবে জানা-বোঝাও কম গুরুত্বের নয়। বিশেষত যেখানে দীনের গুরুত্বপূর্ণ প্র্যাকটিস সমূহে কারণে-অকারণে আমরা উনাদের দারস্থ হতে বাধ্য! সো অন্ধ আবেগ, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি গোপন কোনো দূর্বলতা কিংবা ব্যক্তি-বিশেষের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসা এক্ষেত্রে পহেলা অপরিহার্য! সেই সাথে প্রয়োজন বুখারী মুসলিমের সত্যে পৌঁছার নিরন্তর প্রেরণা…

০৩.

কিন্তু আমরা রাসূলুল্লাহর সাহাবীদের কতটুকু চিনি?...

আমাজান বনে হাটতে হাটতে বৃক্ষ-বুজুর্গকে জিজ্ঞেস করলেন এটা কী? উত্তর দিলো- গাছ। একটু পরের প্রশ্ন, ওটা কী? উত্তর এলো- গাছ। এভাবে সব প্রশ্নের উত্তর যদি- গাছ, এই একটাই আসে; তারপর আবার কিছুকিছু প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ধানাই-পানাইয়েরও আশ্রয় নেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ বিবেচনায় উত্তর যদি ভুল না’ও হয়, লোকটি যে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বুজুর্গ নন, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকে না!

একই কথা প্রাণ-প্রাচূর্যে ভরা সমুদ্রের ব্যাপারেও প্রযোজ্য! সবকিছুকে সামুদ্রিক প্রাণী বলে চালিয়ে দিলে তো হলো না। আমাকে চিনতে হবে সুনির্দিষ্টভাবে। জানতে হবে এই প্রাণীর জীবন-বৃত্তান্ত, তার বিচরণ ভূগোল, তার এনাটমি, প্রজনন, অন্যান্য ডিস্টিংগুইশিং ক্যারেক্টার,… সব! তারপর তার ক্লাসিফিকেশন, তার পর্ব শ্রেণী.. গোত্র.. প্রজাতি সব বুঝতে হবে! তারপরই না আসবে মূল্যায়ন প্রসঙ্গ!

তারপর আমি দেখবো কাকে কখন কোথায় কার মোকাবিলায় কতটুকু গ্রহণ করবো বা করবো না। কিন্তু আমাকে যতদূর সম্ভব জানতে হবে। সে জানা হবে নিরন্তর। এবং ক্রমাগত চিন্তাবিচার বিশ্লেষণের ভেতর দিয়ে তাকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণক্ষম পর্যায়ে উন্নীত করতে হবে!

অথচ উপরে যা দেখলেন, ওটার নাম চেনা নয়, অন্ধত্ব! এবংকি মানুষের সহজাত চেনার ক্ষমতা টুকুও ছিনিয়ে নেয়ার নীল-নকশা! সাহাবী কনসেপ্ট নিয়ে গভীর অনুধ্যান তো দূরে থাক, বরং তাকে প্রকারান্তরে হারামই ঘোষণা করা হয়েছে যেনো!

মহব্বত ভক্তি ভালোবাসা এসব এক জিনিস; চিন্তা-বিচার বিশ্লেষণ না করেও এর ভেতর আপনি চলতে পারেন। ভাবাবেগই যথেষ্ট সেখানে! আবেগের সেই অন্ধত্ব নিয়ে লাইলীর বাড়ীর কুকুরকেও অবলীলায় চুমো খেতে পারে মজনু। কিন্তু হাজরে আসওয়াদে চুমো খেতেও মুমিনকে কথা বলে খেতে হয়। বলতে হয়, ‘পাথর! তুমি একটা পাথর মাত্র! কারো কোনো কল্যাণ কিংবা অকল্যাণের বিন্দু পরিমাণ সক্ষমতা তোমার নেই…’

এই হলো ইসলাম!

অনন্ত সত্যপিপাসু ‘উলিল আলবাব’দের একমাত্র দীন!

আর নিরবিচ্ছিন্ন খালেস ‘তাদাব্বুর’ এর দাবী…

০৪.

হতে পারে এটা আন্তরিক ভালোবাসারই নিদর্শন! হতে পারে সাহাবীদের প্রতি একান্ত আবেগে উনারা হয়তো ‘সে ধারণায়’ আঁছড়ও কাটতে দিতে চান না। হতে পারে!

তো, ভালোবাসা তো রাসূলুল্লাহর প্রতিটি হাদীসের প্রতিই আছে, নেই?... তবু কী আমরা সহীহ খুঁজি না? মুতাওয়াতির খুঁজি না? কেনো খুঁজি??... কেনো হজরত মূসার প্রতি অজস্র ভালোবাসা সত্ত্বেও আজ আর তাঁকে অনুসরণ করবো না? এবংকি টগবগে জীবন্ত কালিমুল্লাহ মূসা এলেও না! অবিকৃত তাওরাত নিয়ে আসলেও!! কেনো ‘না’?!? কারণ এখানে হিদায়েতের ব্যাপার আছে!

আমাদের কিছু প্রিয় ভাই নানাবিদ জঝবায় পড়ে যে হাদীসটি বলে বেড়ান- আমার সাহাবীরা আকাশের তারকা সদৃশ, তাদের যে কাউকে অনুসরণ করলেই তোমরা হিদায়েত পাবে;- এটা অত্যন্ত নিম্নমানের একটি জয়ীফ হাদীস! নিম্নমানের এজন্য বলছি, সুনানে আরবাতেও কিন্তু শতশত জয়ীফ হাদীস আছে। অন্যান্য হাদীস সংকলনেও আছে! সেসব জয়ীফেও এর স্থান হয়নি! কেউ কেউ এটিকে জাল এবং ভিত্তিহীনও বলেছেন(দেখুন, ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীরের ‘হাদীসের নামে জালিয়াতি’, ৪র্থ সংস্করণ, পৃ.১৫১)! এবং সেটি জাল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী! কারণ যে সংজ্ঞায় আমরা ‘সাহাবী’ চিনি, সেই সাহাবীদের অধিকাংশের নিজের হিদায়েতের জন্যই যেখানে ‘অন্যকে’ অনুসরণ অনিবার্য, সেখানে এ ধরণের হাদীস জাল না হয়ে পারে না! যদি এই হাদীসকে আমরা মতনের দিক থেকেও ধরি, তবু ‘সাহাবী’র সুবিদিত সংজ্ঞায় সংস্কার ছাড়া গত্যন্তর নেই! এ নিয়ে আমরা পরে আরো বিস্তারিত বলবো ইনশাআল্লাহ!

তো, সহীহতে কিংবা সত্যে পৌঁছার জন্য হাদীস নিয়ে নিরবিচ্ছন্ন যাছাই-বাছাই যদি হাদীসের প্রতি মূলধারার মুসলমানদের আস্থা নষ্ট না হয়, বরং ক্রমাগত দৃঢ় হয়! তাহলে ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহের নির্ভরযোগ্য এবং সংগত আলোচনা কি করে নির্ভেজাল ঈমানদারের মনে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে? বিশেষ করে আগামী দিনের সমাজ বিনির্মাণে অপরিহার্য বর্ণনাটুকু- যেটুকু রাষ্ট্রশক্তি এবং শাসনতন্ত্রের সাথে জড়িত- সেটিকে কিভাবে সামগ্রিকভাবে সাহাবীদের প্রতি খারাপ ধারণা তৈরীর জন্য দায়ী করা যেতে পারে!? দেখা গেছে, একেবারে প্রথম কাতারের সাহাবী বর্ণিত অনেক হাদীস ইমাম বুখারী গ্রহণ করেননি! এটা হাদীস বিশেষের সাথে সংশ্লিষ্ট, সামগ্রিকভাবে হাদীস কিংবা সেই মহান ব্যক্তিত্বের সাথে নয়। এটা বোঝার জন্য হাদীস বিশারদ হতে হয় না, নির্ভেজাল খুলুসিয়াত এবং কান্ডজ্ঞানই যথেষ্ট!

তো উম্মাহর স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ, রাষ্ট্রযন্ত্র তথা খিলাফাত এবং শাসনতন্ত্রের সাথে জড়িত বিষয়গুলো যদি উম্মাহর বর্তমান ও ভবিষ্যতকে চেনার জন্য আলোচনা করা হয়, আর তাতে যদি কোনো ব্যক্তিবিশেষ ইসলামের মানদন্ডে উৎরে যেতে না পারে, তা নিতান্তই সেই ব্যক্তি বিশেষের সাথে সম্পৃক্ত হবে, সমগ্র সাহাবীকুলের সাথে নয়। সমগ্র উম্মাহর তুলনায় প্রশ্নবিদ্ধ কোনো ব্যক্তিত্ব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না, যেখানে আল্লাহ তা’লা তার বান্দাদের হিদায়েতের প্রয়োজনে হাজার হাজার বছর ধরে হাজার হাজার পয়গম্বরের খুন পর্যন্ত সহ্য করেছেন! সেখানে কোনো ব্যক্তি-বিশেষের মর্যাদা সত্য-মিথ্যা আলাক করার চেয়ে মহিমান্বিত কি করে হতে পারে?!

অন্তত ইসলামে কোথাও সে সুযোগ, সেই ‘কৃষ্ণ করলে লীলা খেলা’র তত্ত্ব নেই। কী ইতিহাস!? জীবন্ত উমরকে, নবীর একান্ত কাছের সাহাবীকে নবীর মসজিদের মিম্বারের উপর দাঁড়ানো অবস্থায় বলা হচ্ছে- বক্তিতা দেয়ার আগে জবাব দাও, বায়তুল মাল হতে বন্টিত সেটুকু কাপড়ে ক্যামোন করে এতো লম্বা জামা তৈরী করলে?... বলা হচ্ছে- তুমি যদি পথভ্রষ্ট হও, এই তরবারি তোমাকে সোজা করে দেবে!! এ রকম শত শত উদাহরণ দেয়া যাবে! দূরাবস্থায় পড়ে কিভাবে এক বুড়ি আমিরুল মুমিনীনকে বকে যাচ্ছে- শুধু এজন্য যে, খলিফা কেনো তার সমস্যায় পাশে দাড়াচ্ছে না!! এ বকাবকি এ সতর্কবাণী কিংবা এই জিজ্ঞাসাবাদ ব্যক্তি উমরের প্রতি নয়, খলিফা উমরের প্রতি, এবং এর নামই খিলাফাত! শুধু মানুষ নয়, তাবৎ প্রাণ-প্রকৃতি, জীব-অনুজীব এবংকি ফোরাতের কূলে কোনো এক তুচ্ছ কুকুরের প্রতিও দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত রাখতে হয় এখানে!

আর সেখানে আবু বকরের মুকাবিলায়, উমরের মুকাবিলায়, উসমান কিংবা আলীর মুকাবিলায় আর কাকে তার কতিপয় ব্যক্তিগত গুণাবলী দিয়ে আমরা জাস্টিফাই করতে পারি! এঁদের যেখানে সামাণ্য রেহায় হয়নি, তারা যেখানে এ ধরণের কোনো প্রিভিলিজ দাবি করেননি, বরং অজস্র নিখাদ গুণাবলী ধারণের পরও নিজেদের এমনভাবে পেশ করতেন যেনো উম্মাহর কিংবা জনগণের কোনো অভিযোগই অপ্রকাশিত না থাকে(!) সেখানে আর কার ব্যক্তিগত গুণাবলী এতো বেশী হয়ে গেলো যে, খিলাফাতের আমানত খিয়ানতে উদ্যত হওয়ার পরও তিনি ইতিহাসের আদালত থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে যাবেন?!?

কাউকে জোর করে বিশেষ উদ্দেশ্যে বিশেষ মহলের প্ররোচনায় জাস্টিফাই করা, সিদ্ধ দেখানোর জন্য পুরো প্রক্রিয়ায় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বারংবার অস্ত্রোপচার কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না! এভাবে এলোমেলো করে গোজামিল দিয়ে সাজানো আকীদা ইতিহাস আর যাই হোক, বুদ্ধিবৃত্তিক সততাকে নিরন্তর লাঞ্ছিত করে! করে যায়...

০৫.

তবে এটাও প্রণিধানযোগ্য যে, যেহেতু ‘বণি আদম মাত্রই গুনাহগার’- যেমন সুন্নি ভাইয়েরা নবী ছাড়া কাউকে পাপের উর্ধে মনে করেন না, আর শিয়া ভাইয়েরা নবীর বাইরে মাসুম স্বীকার করলেও, তাও মাত্র তেরো জন, আ’লে মুহাম্মদের বারো ইমাম এবং হযরত ফাতেমা আ.।

তাই ভুল মাত্রই বুজুর্গী-নাশক কিংবা গুনাহ মাত্রই যে কারো আর সমস্ত মর্যাদা নিঃশেষ হয়ে গেলো তাও না। সুতরাং, কাউকে বুজুর্গ মানা মানে, তাঁকে বেগুনাহ বানিয়ে তুলতে হবে, তাঁর অন্যায়কে সিদ্ধ করে তুলতে উঠেপড়ে লাগতে হবে, তা কিন্তু না।

কিংবা তাঁর ভুলকে নির্ভুল করে উপস্থাপনের কসরত করতে গিয়ে নানা প্রতিবন্ধী বিকলাঙ্গ যুক্তিতে নিপতিত হওয়াও নিষ্প্রয়োজন! কাউকে ভালোবাসলে তার ভুল-ত্রুটি সীমাবদ্ধতাসহই ভালোবাসুন, তাহলেই তো হয়!...

বিষয়: বিবিধ

১৩৬৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

379156
২৮ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৫:৫৬
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো । অনেক ধন্যবাদ ।
৩০ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৮:৪২
314082
শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী লিখেছেন : ধন্যবাদ...
379164
২৮ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ১২:২৭
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


খুব সুন্দর বলেছেন, Thumbs Up Rose
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ Praying Praying
৩০ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৮:৪২
314081
শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী লিখেছেন : সালাম!...

যাজাকাল্লাহ!...
379238
২৯ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ০১:৫২
আবু বকর সিদ্দিকী লিখেছেন : সাহাবীদের অন্ধ অনুকরণ কাম্য নয়। সাহাবীরা সত্যের মাপকাঠি নন। কেননা তারা নবী-রসুল নন। রাজতন্ত্রের সমর্থক সালাফীদের কাছে সাহাবীর মর্যাদা বলতে কেবল ‘মুয়াবিয়া’-র মর্যাদা বুঝায়। তাকে কেন্দ্র করেই সাহাবীর মর্যাদা আবর্তিত। অথচ উনি কোন বদরী বা উহুদের সাহাবী নন। মক্কা বিজয়ের পর দলে দলে লোক ইসলাম গ্রহন করে, উনি সে রকম সাহাবী। অনেকে তাকে সাহাবী হিসাবে গন্য করতে চান না সে কারনে, যদিও তিনি শিক্ষিত হওয়ায় অহি লিপিবদ্ধ করেছিলেন। তবে তিনি খিলাফতের আমীরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ইসলামের সৌন্দর্য্য নষ্ট করেছেন।
৩০ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৮:৪১
314080
শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী লিখেছেন : যথার্থই হক বলেছেন…
যাজাকাল্লাহ!...

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File