ডিবেটস অন মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (৩য় এবং শেষপর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী ২২ অক্টোবর, ২০১৬, ০৯:২৮:৩৩ রাত



[কথা বলছিলাম সাইয়েদ আবুল আ’লাকে নিয়ে… তো, হাটহাজারী এরাবিক ইউনিভার্সিটির এক ভাই নিয়ে আসলেন ত্বকী উসমানী সাহেবের ‘ইতিহাসের কাঠগড়ায় হযরত মোয়াবিয়া রা,’ প্রসঙ্গ! সে সূত্রে জন্ম নিলো- আরো কিছু সংলাপ। আসুন, সরাসরি কমেন্ট-রিপ্লাইতে যাওয়া যাক-]

Abir Khan Hridoy: মাওলানা মওদূদীর সাথে দেওবন্দের যে মতপার্থক্য আছে,সেটা যে কোন বিষয়ই না এ ব্যাপারে কি আপনি শিওর?

রিপ্লাই:

অনেকে বলেন- এটা নাকি নবী-রাসূল, সাহাবা আজমাঈন প্রসঙ্গ! কিন্তু মাওলানা যে তাঁদেরকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে, অনুসরণ করার ক্ষেত্রে সমালোচকদের চেয়ে কোনো দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে, তা তো দেখিনা। তাহলে এ নিয়ে তিলকে তাল করার কোনো মানে আছে কি?... যেটা দেখা যায় রীতিমতো সাপে-নেউলে ব্যাপার!...

Abir Khan Hridoy: ভাই "অনেকে বলেন "এর উপর না থেকে আপনে মওদূদী সাহেবকে নিয়ে একটু নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে পড়ালেখা চালায়া যান৷ মাওলানা মওদূদীর সাথে রাজনৈতিক আন্দোলনে দেওবন্দী ধারার বড় বড় ব্যাক্তিত্ব পাশে ছিলেন, কিন্তু তারা পরবর্তীতে মওদূদীর দল ত্যাগ করেন৷

কেন ত্যাগ করেছিলেন এবং ত্যাগ করার কারনটা ইসলামের মৌলিক আক্বিদার ভিত্তিতে কতটুকু ন্যায় সঙ্গত হয়েছিলো, তা আপনার খুঁজতে হবে৷

"ইতিহাসের কাঠগড়ায় হযরত মোয়াবিয়া রা," পারলে এই বই থেকে শুরু করতে পারেন!

রিপ্লাই:

বইটা পড়েছেন আপনি???

Abir Khan Hridoy: হুম

রিপ্লাই:

তিনি যে বইয়ের সমালোচনা করে লিখেছেন সেই ‘খেলাফত ও রাজতন্ত্র’ পড়েছেন?...

Abir Khan Hridoy: মূল নোসখা নেড়েচেড়ে দেখেছিলাম একজনের সংগ্রহশালা থেকে, তবে ইতিহাসের কাঠগড়ায় পড়ার পর এটা আমার হাতে আসেনি

Ismail Azhari: @shahadat... আপনি কি মানযুর নোমানীর নাম শুনেছেন?? তিনি জামাতের কি ছিলেন??

কেন জামাত ত্যাগ করেছিলেন???

রিপ্লাই টু Abir Khan Hridoy:

ধন্যবাদ। পড়ে দেখবেন। কোথায় কী!... সাইয়েদ আবুল আ'লা যতগুলো পয়েন্টে হযরত মুয়াবিয়াকে এনেছেন, ত্বকী উসমানী সাহেব খুব কম পয়েন্টেই এঙ্গেজ হয়েছেন। যা হয়েছেন, তাও অনেক ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে। তার কোনো কোনো যুক্তি মারওয়ান ইবনে হাকামের মতো!! তিনি কুরআন হাদীস ও ইতিহাসে না থেকে সাহাবীরা আদালত গুণ সম্পন্ন, তারা মুজতাহিদ ইত্যাদি দিয়ে কাজ সারার প্রাণান্তকর চেষ্টা করেছেন।

মুয়াবিয়া-প্রেমে এতোটাই মশগুল ছিলেন যে, হুজর ইবনে আদীর মতো প্রসিদ্ধ সাহাবী, যার ব্যাপারে আম্মাজান আয়েশা মুয়াবিয়াকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন, তাঁকে পর্যন্ত সাহাবীর তালিকা থেকে অপসারণে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। আরো অনেক ব্যাপার আছে, সময় পেলে লিখবো ইনশাআল্লাহ!... হযরত মুয়াবিয়ার প্রশংসা-সম্বলিত আর কোনো কিতাব থাকলে জানাবেন। ধন্যবাদ।

রিপ্লাই টু Ismail Azhari:

দেখুন অপ্রাসঙ্গিক বিতর্কে জড়ানো আমার অভ্যাস না। পোস্ট জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে না, সাইয়েদ আবুল আ'লাকে নিয়ে। তার সাহাবীপ্রেম রাসূলপ্রেম নিয়ে। এ ব্যাপারে কথা থাকলে বলতে পারেন। কে কখন কোথায় কেন জামায়াতে এসেছে চলে গেছে সেটা জামায়াত জানে। আমি জামায়াতের কেউ না। মাওলানা মওদূদীকেও পড়ি, থানভী সাহেবকেও পড়ি, ত্বকীকেও পড়ি। যা পাই ভালো লাগলে তা'ই পড়ি। রাসূলের কাফেলা থেকেও কেউ কেউ ছিটকে পড়েছে, কি হয়েছে তাতে?...

Ismail Azhari: আপনার মাঝেও যে নিরপেক্ষতা নাই,

তা আপনার লিখা দ্বারা বুঝা যায়,

তিন জনের নাম উল্যেখ করেছেন,

দুই জনের নাম সম্মান সহকারে

অতচ শাইখুল ইসলাম তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ এর নাম টা কিভাবে লিখলেন???? যাই হোক,

ভালো থাকবেন, শাইখুল ইসলাম সমপর্ক আরো বেশি বেশি পড়ুন,

রিপ্লাই টু Ismail Azhari:

স্যরি ভাই! এতো (সামাণ্যতে) অভিমান করলে হয় না। জনাব ত্বকীর একাধিক বই আমার সংগ্রহে আছে। ইসলামী অর্থনীতিতে তাঁর গভীর জ্ঞান আমাকে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করে। তাছাড়া তিনি তো একজন মহান মানুষের সন্তান। আল্লাহ তাঁকে সুস্বাস্থ্য এবং হায়াতে তাইয়্যেবা দান করুন। কিন্তু ভাই যা দেখি যা বুঝি আমাকে তো বলতে হবে...

Abir Khan Hridoy: স্বয়ং রাসূলের কাছ থেকে দ্বীন শেখা সাহাবীগণের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সা.বলেছেন, আমার প্রত্যেক সাহাবী নক্ষত্রের মত...আল্লাহ সাহাবীদের উপর রাজি এবং খুশি,সেমতে আয়াত নাজিল করেছেন৷

কয়েকশ শতাব্দী পরে এসে মওলানা মওদূদী বলবেন, "হুম রিজাল নাহনু রিজাল " আর আপনিও সে ভ্রান্ত মতবাদের হালে পানি যুগিয়ে মওদূদী কে উপমহাদেশের রহমত বলবেন, তা মেনে নেওয়া অজ্ঞতা বৈ আর কি বলা যেতে পারে! কিছু ভুলের কারনে সমগ্র বিষয়কে মূল্যায়ন না করাটা আমার অভ্যাস না৷ মওদূদী সাহেবের নির্ভেজাল চিন্তাকে আমি সমিহ করি৷

খেলাফত ও মুলুকিয়তের কিছু রেফারেন্স মূল কিতাবে নাই,এমন অভিযোগ করেছেন তক্বী উসমানী সাহেব৷ তাহলে আপনে কিভাবে শিওর হলেন,আপনাকে যা গেলানো হয়েছে তাই সত্য এবং অবস্থার প্রকৃত বর্ননা?

নবী রাসূলকে নিষ্পাপ ও সাহাবাগণকে সত্যের মানদণ্ড মানতে আপত্তি ছিল তার,অথছ এসব মুসলমানিত্বের মৌলিক স্তরের বিষয়!

দেখেন আমি জানি, তর্কে কেউ কারো মত পাল্টায় না,সেমতে এসব বাকোয়াজি ছাড়া কিছুই না৷ আমার কথা বুঝতে পারলে ভালো,না পারলে চালায়া যান।

রিপ্লাই:

রাগারাগি করলে তো আর বিতর্ক হলো না। আপনার রাগারাগি নিয়ে আপনি থাকেন! তাহলেই তো হলো! আপনি একটা জয়ীফ হাদীস নিয়ে অভিযোগ তুলছেন- 'সাহাবাগণকে সত্যের মানদণ্ড মানতে আপত্তি ছিল তার'! কিন্তু বূখারি এবং মুসলিম বলছে-

‘কিয়ামতের দিন আমার সাহাবিদের মধ্যে হতে একটি দল (অথবা বলেছেন আমার উম্মতের মধ্য হতে) আমার সামনে উপস্থিত হবে। অতঃপর তাদেরকে হাউজে কাওসার হতে দূরে সরিয়ে দেয়া হবে (হাউজে কাওসারে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না)।

তখন আমি বলব: হে আমার প্রভু! এরা তো আমার সাহাবি।

মহান আল্লাহ উত্তরে বলবেন: আপনার পরে এরা যা কিছু করেছে সে সম্পর্কে আপনি অবগত নন। তারা তাদের পূর্বাবস্থায় (অজ্ঞতা তথা জাহেলিয়াতের যুগে) প্রত্যাবর্তন করেছিল'।

এটাও তো বুঝতে হবে আপনাকে!

খালি বলে দিলেন- 'এসব মুসলমানিত্বের মৌলিক স্তরের বিষয়!'

মৌলিক স্তরের বিষয় কী কোনো বুজুর্গ বলে দিলে হয়, নাকি দলীল লাগে?...

বকোয়াজবাজি কোনটা?...

"হুম রিজাল নাহনু রিজাল" কে বলেছে?...

বলেছে আবু হানীফা, তাবেয়ীদের প্রসঙ্গে বলেছেন। তিনি সেটা বলতেই পারেন। কারণ তিনি নিজেও একজন তাবেয়ী।

Abir Khan Hridoy: বোখারি মুসলিমের কত নাম্বার হাদীস বলেন৷ বোখারি মুসলিমের মূল আরবী নোসখা আমার দুতিন হাতের দূরত্বে ৷আর এটা যয়ীফ বা দূর্বল হাদীস সে রেফারেন্সটাও লাগবে৷

হ্যাঁ,মওদূদীই বলেছে "হুম রিজাল নাহনু রিজাল "

রিপ্লাই:

'খেলাফত ও মুলুকিয়তের কিছু রেফারেন্স মূল কিতাবে নাই,এমন অভিযোগ করেছেন তক্বী উসমানী সাহেব'৷ এগুলো হচ্ছে শব্দগত হেরফের! মাওলানার অধিকাংশ রেফারেন্স ছিলো একাধিক ঐতিহাসিক দলীল সমর্থিত! আপনি একটা মাত্র কিতাব দেখে, এবং পুরো ব্যাপারটিকে অনুধাবণ না করেই, হুট করে তো বলে দিতে পারেন না যে, এটা ভুল।

মাওলানার এতোদিনকার পুরোনো গ্রন্থের রেফারেন্সে আপনার অনাস্থা, আর ত্বকী সাহেবের হাল-আমলের সমালোচনায় আপনার সীমাহীন আস্থা, রহস্য কী ভাই?? আর আগেই বলেছি মাত্র কয়েকটি বিষয়ে ত্বকী সাহেব এঙ্গেজ হয়েছেন, খিলাফাত ও মুলুকিয়াতে আরো অনেক বিষয় আছে, সেগুলোর ফয়সালা কী হবে???...

Abir Khan Hridoy: ফোনে চার্জ নাই এবং ঘুমাতে যাবো৷ বেঁচে থাকলে বাকি আলাপ আগামীকাল।

[পরের দিন]

Abir Khan Hridoy: আপনে যেটাকে শব্দগত হেরফের বলছেন,তা আসলে পুরো একটা বাক্যের অর্থকে বিকৃত করে,ইতিহাসের কাঠগড়ায় 'যখন পড়ছেনই তাহলে মাওলানা মওদূদীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভুল আপনার গোচরে এসেছে৷ আর রেফারেন্স নাই অর্থ ভুয়া,অসত্য রেফারেন্স!

মওদূদীর রেফারেন্স যেমন ঐতিহাসিক দলিল সমর্থিত, তক্বী উসমানী সাহেবের রেফারেন্সও একই ক্যাটাগরির৷

আর আপনে তো জানেন,ঘটনার পুরোটা উল্লেখ না করে ঘটনাংশ দিয়ে কারো চরিত্র লেপন করা মূলত আবেগপ্রসূত জুলুম৷ মওলানা তক্বী যতটুকুই এঙ্গেজ হয়েছেন,ততটুকুতেই "মওদূদী উপমহাদেশের রহমত " কথাটা যৌক্তিকতার মানদন্ড অতিক্রম করতে পারছে না৷

রিপ্লাই:

'ঘটনার পুরোটা উল্লেখ না করে ঘটনাংশ দিয়ে কারো চরিত্র লেপন করা মূলত আবেগপ্রসূত জুলুম'- এই জুলুমটাই পুরো মাত্রায় করেছেন জনাব ত্বকী। আমি চাইলে প্রত্যেকটি পয়েন্টে কথা বলতে পারি। কিন্তু আমার হাতে অতো সময় নেই। তাই তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই যে, ত্বকী সাহেব যা বলেছেন ঠিক বলেছেন, তবুও মুয়াবিয়ার অবস্থান জাস্টিফাই হয়না।

তাকে সাহাবী বলে, সাহাবী প্রসঙ্গে একটা জয়ীফ হাদীস এনে- যেটা বুখারিতে নেই, মুসলিমে নেই, সুনান চারটিতে নেই, এর বাইরের প্রসিদ্ধ কোনো হাদীসগ্রন্থে নেই- যে পরিবেশের অবতারণা করেন, সেটা পুরোই একটা ফেইক ইমেজ! জনাব ত্বকীর লিখা থেকে উম্মাহর নির্বাচিত একজন খলিফায়ে রাশেদের বিরুদ্ধে মুয়াবিয়ার বিদ্রোহ জাস্টিফাই হয় না। (হয় কি???)

আল্লাহর রাসূল এবং চার খলিফা যা করেননি সে বিষয়ে মুয়াবিয়ার 'নতুন বিধান' আনা জাস্টিফাই হয় না। সিফফিনের শেষদিকে বর্শার অগ্রভাগে কুরআন বেঁধে ঘটনার আগে ও পরের প্রতারণার সুস্পষ্ট মনোবৃত্তি 'ইজতিহাদ' বলে দিলেই জাস্টিফাই হয় না। খিলাফাত জবর দখল করে উম্মাহর রাজা/বাদশা হয়ে ওঠা জাস্টিফাই হয় না।

সুস্পষ্ট হাদীস থাকা সত্ত্বেও ঘুরিয়ে পেঁছিয়ে 'এক ধরণের প্রচলিত বিয়ের অজুহাতে' পিতার অবৈধ সন্তানকে মুয়াবিয়ার ভাই হিসেবে গ্রহণ জাস্টিফাই হয় না। খিলাফাতে রাশেদায় যেখানে ইরাকের রাজপথে একটি কুকুরেরও নিরাপত্তা ছিলো, সেখানে হুজর ইবনে আদীকে 'সাহাবী না' প্রমাণ করতে চাওয়ার প্রবণতা সহকারে তাঁকে ও তাঁর সাথীদেরকে নির্বিচারে হত্যার সীমালংঘন জনাব ত্বকীর 'রাজতান্ত্রিক যুক্তিতে' কোনোদিন জাস্টিফাই হতে পারে না।

এতে সাহাবীপ্রেমের নামে যত কথাই চালানো হোক, বার বার জনাব ত্বকীর (মওদূদী-বিদ্বেষ এবং) মুয়াবিয়াপ্রেমের করুণ আকুতিই ফুটে উঠে! (তারও অবশ্য নানা কারণ আছে, সেটা অন্যসময় আলোচনা করা যাবে)

তাছাড়া খলিফা নির্বাচন পদ্ধতি কুক্ষিগতকরণ, রাজকীয় জীবনধারা গ্রহণ, বায়তুল মাল বৃদ্ধির জন্য নানারুপ জুলুমের আশ্রয় গ্রহণ, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা হরণ, শূরার অবসান, জাহেলীয় গোত্রবাদের প্রসার ইত্যাদি তো আছেই!

আর ইয়াজীদকে পরবর্তী বাদশাহ বানানোর জন্য আবু বকরের সন্তান আব্দুর রহমান, ইবনে উমর, ইবনে জোবায়ের এবং ইমাম হোসাইনের মতো সাহাবীদের সাথে তার জঘন্য, পৈশাচিক আচরণের বর্ণনা মুফতী শফির 'শাহাদাতে কারবালাতে'ও আছে! এগুলো জাস্টিফাই করতে হলে জনাব ত্বকীকে অপেক্ষা করতে হবে আরেকজন মুয়াবিয়ার আবির্ভাবের!

কিন্তু দুঃখ, উম্মাহর ভবিষ্যত আর কোনো মুয়াবিয়ার নয়, ভবিষ্যত ইমাম মাহদীর! খিলাফাত আ’লা মিন হাজিন নবুয়াহ'র!...

সো বি রেডী ফর দ্য ফিউচার ব্যাটেল, থ্যাংস আ লট...

Abir Khan Hridoy: যয়ীফ হাদীস কারে কয় আপনে জানেন? প্রসিদ্ধ হাদীসগ্রন্থের বাইরের হাদীস গ্রহন করা যাবে না এমন চিন্তা আত্মঘাতী অজ্ঞতা! উপরে এক হাদীছের বয়ান দিলেন বোখারি মুসলিমের হাদীস বলে,রেফারেন্স চেয়ে পেলাম না তো!

এই বিদ্রোহ লাগার কারন মুনাফিক সাবাঈ চক্রের কুটনৈতিক সফলতা, সিফফীনের যুদ্ধের ব্যাপারে নবী ভবিষৎ বানী করেছিলেন যে, দুই দলই হক্ব থাকবে৷ মওদূদীর একচেটিয়া ভ্রান্ত রেফারেন্সে বুদ্ধিজীবী হওয়া আপনার মত পাবলিকরাই জাস্ট আমিরে মুয়াবিয়া র খেলাফতকে রাজতন্ত্র বলার কোশেশ করে যাচ্ছেন৷

হুজর ইবনে আদী সাহাবী ছিলেন না,এমতে প্রসিদ্ধ বর্ননা আছে৷ আর মওদূদী সাহেব হয়তো চেপে গেছেন,হুজর ইবনে আদী বিদ্রোহী ছিলেন! সুস্পষ্ট প্রমান থাকার পরও নিজের ভাইকে ভাই হিসেবে গ্রহন না করা উদারনৈতিক মানবতার পরিপন্থী, যা নবীর সাহাবীদের দ্বারা পসিবল না৷কোরান এবং এক হাদীসের সাথে অন্য হাদীসের সমন্বয় করে যতটুকু সাম্যের জাস্টিফাই হতে পারে— কতটুকু চেষ্টার কম করেননি জনাব তক্বী উসমানী সাহেব৷

ক্ষতিকর চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে আসতে ইতিহাসের কাঠগড়ায় ভালোভাবে পড়া এবং বোঝার পর পড়তে পারেন মুফতি ফয়জুল্লাহ রাহ.এর আদালতে সাহাবী "

আপনি যদি এতোবড় পন্ডিত হয়ে থাকেন তো আমাকে একটু তরজমা করে দেবেন হাদীস এবং কোরানের আয়াতদ্বয়ঃ

"মা এনত্বিকু আনিল হাওয়া, ইন হুআ ইল্লা ওহয়্যূই য়্যূহা "( আল কোরান)

"মান সাব্বা আসহাবি ফাক্বদ কাফারা "(আল হাদীস)

আর হ্যাঁ দয়া করে বলবেন যয়ীফ হাদীস মানেই অগ্রহনযোগ্য,এটা কোন সহিহ হাদীসে আছে?

রিপ্লাই:

অত্যন্ত কষ্টের সাথে ইতোমধ্যে দু’জনকে আখেরি সালাম জানিয়েছি। অত্যন্ত সংগত কারণে। আপনার ক্ষেত্রেও তা অপ্রযোজ্য নয়। কারণ,

প্রথমত,

প্রত্যেকটি বিতর্কেরই একটা গুরুত্বপূর্ণ আদব হলো, ঘুরেফিরে শেষ পর্যন্ত বিতর্কের মূল বিষয়বস্তুতে থাকা।

দ্বিতীয়ত,

যুক্তি প্রদর্শনে সুনির্দিষ্ট মানদন্ড ইউজ করা।

তৃতীয়ত,

ব্যক্তিগত আক্রমণে না যাওয়া।

আপনিও দেখা যাচ্ছে শেষপর্যন্ত এইসব সৌন্দর্য্যের সীমা লংঘন করেছেন।

যাই হোক,

এক.

আপনি/আমি কে কি জানি, কি জানি না- সেটা আমাদের কমেন্ট-রিপ্লাই বলবে।

এক কমেন্টে বললেন- হাদীসটি জয়ীফ কিনা আপনি দেখবেন। এখন বলছেন- ‘যয়ীফ হাদীস কারে কয় আপনে জানেন? প্রসিদ্ধ হাদীসগ্রন্থের বাইরের হাদীস গ্রহন করা যাবে না এমন চিন্তা আত্মঘাতী অজ্ঞতা!’ ওয়াট ইজ দিস?...

আপনি কোত্থেকে হাদীস বলেন গ্রন্থের নাম পর্যন্ত বলতে পারেন না। আর আমার কাছে নম্বর পর্যন্ত চান, কি ব্যাপার! আমি ভেবেছিলাম, আপনি ইতোমধ্য হাদীসটি সম্পর্কে জেনেছেন, তাই নম্বর বলিনি। লিখে রাখুন, বুখারি, হাউজ অধ্যায়, হাদীস নং- ৬১২৭, ৬১৩৩, ৬১৩৪, ৬১৩৫, ৬১৩৬, ৬১৪১। আর মুসলিমের হাদীস নং হলো- ৫৭৯৯।

দুই.

কথা বলছি হযরত মুয়াবিয়াকে নিয়ে, সেখানে সাবাঈ চক্রের কথা কেনো আসছে?... ইতিহাসের প্রত্যেকটি কিতাব বলছে- এটা স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে সুস্পষ্ট এবং সুপরিকল্পিতভাবে মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানই শুরু করেছেন। আমরা জঙ্গে জামালের কথা বলছি না। এ হলো সিফফিন। মুসলিম উম্মাহর নির্বাচিত খলিফায়ে রাশেদ কর্তৃক বহিষ্কিত অবৈধ গভর্ণরের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ! এবং সেটা মুতাওয়াতির হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

হাদীসটি হলো-

একদল বিদ্রোহী তোমাকে(আম্মার ইবনে ইয়াসির) হত্যা করবে।

(বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ, নাসাঈ, বায়হাকী, তাবারানি প্রভৃতিতে হযরত উসমান, আবু সাঈদ খুদরি, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, আবু আইয়ুব আনসারী, আমর ইবনুল আস, আবু হুরায়রা, হুজাইফা, আম্মার ইবনে ইয়াসির সহ আরো অনেক সাহাবী)।

ইতিহাস কি বলে- আম্মার ইবনে ইয়াসিরকে কারা হত্যা করেছে??? আর আপনি বলছেন কিনা- ‘সিফফীনের যুদ্ধের ব্যাপারে নবী ভবিষৎ বানী করেছিলেন যে, দুই দলই হক্ব থাকবে’!!

হায় আল্লাহ?!...

ভাই, হাদীসের নামে ভূয়া কিছু চালিয়ে দেয়ার 'ফজীলত' জানেন তো??

আর কিছু বললাম না!...

তিন.

এরপর বললেন,

‘মওদূদীর একচেটিয়া ভ্রান্ত রেফারেন্সে বুদ্ধিজীবী হওয়া আপনার মত পাবলিকরাই জাস্ট আমিরে মুয়াবিয়া র খেলাফতকে রাজতন্ত্র বলার কোশেশ করে যাচ্ছেন’৷

বটে! আর আপনি?!?

রাসূলুল্লাহর সেই উক্তি, আমার পরে খিলাফাত ত্রিশ বছর থাকবে। আরেকটি হাদীস খিলাফাতের পর আসবে রাজতন্ত্র, তারপর স্বৈরতন্ত্র, তারপর আবার খিলাফাত আ’লা মিন হাজিন নবুয়াহ- এসব বাদ দিয়ে,

মুয়াবিয়াকে একজন আশারায়ে মুবাশ্বিরা(সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস)’র ‘রাজা’ সম্বোধন বাদ দিয়ে,

স্ব্য়ং মুয়াবিয়ার- ‘মুসলমানদের মধ্যে আমিই প্রথম রাজা’(আল ইস্তিয়াব, আল বেদায়া) বলা পরিচয় বাদ দিয়ে তাকে মহান খলিফা, আমিরুল মোমিনিন বানাতে চাচ্ছেন, ঠিক না???

বানান। শুধু খেয়াল রাইখেন, কার কথা অগ্রাহ্য করে, কার কথায় নাচতেছেন। সাইয়েদ আবুল আ’লা কিংবা মাওলানা ত্বকী কাউকে নিয়েই অন্ধভাবে নাচার কিছু নাই আসলে। তাদের কাছ থেকে আমরা চিন্তার খোরাক পেতে পারি, তথ্য পেতে পারি, কিন্তু বিশ্বাস নয়।

সো নিজের ব্যাপারে সাবধান থাকাতেই কল্যাণ!...

চার.

তারপর বললেন কীনা-

‘হুজর ইবনে আদী সাহাবী ছিলেন না, এমতে প্রসিদ্ধ বর্ননা আছে। আর মওদূদী সাহেব হয়তো চেপে গেছেন, হুজর ইবনে আদী বিদ্রোহী ছিলেন! সুস্পষ্ট প্রমান থাকার পরও নিজের ভাইকে ভাই হিসেবে গ্রহন না করা উদারনৈতিক মানবতার পরিপন্থী, যা নবীর সাহাবীদের দ্বারা পসিবল না’৷

কথা তো সেখানে! ‘সুস্পষ্ট প্রমান থাকার পরও নিজের ভাইকে ভাই হিসেবে গ্রহন না করা উদারনৈতিক মানবতার পরিপন্থী, যা নবীর সাহাবীদের দ্বারা পসিবল না’, কিন্তু পসিবল কিভাবে হলো। হুজর ইবনে আদী সাহাবী না, আপনার কাছে প্রসিদ্ধ বর্ণনা আছে, কোথায় সেই প্রসিদ্ধ বর্ণনা ব্রাদার! উইকিপিডিয়াকে জানান, তারা আন্দায়ের উপর লিখেছে- Hujr ibn 'Adi al-Kindi (died 660 CE) was a companion of the Islamic Prophet Muhammad. He was sentenced to death by the Umayyad Caliph Muawiyah I. প্রসিদ্ধই বটে!

কে এই হুজর ইবনে আদী, যার মুক্তির জন্য উম্মুল মুমিমীন হজরত আয়িশা সুপারিশের উদ্দেশ্যে দূত পাঠান?

কেনো মু‘য়াবিয়া মদীনায় হযরত ‘আয়িশার (রা) সাথে সাক্ষাত করলে তিনি সর্বপ্রথম হযরত হুজরের বিষয়টি উঠান? কি করে তিনি এভাবে ভর্ৎসনা করেন- ‘মু’য়াবিয়া! হুজরের ব্যাপারে তোমার ধৈর্য্য ও বিচক্ষণতা কোথায় ছিল। তাঁকে হত্যার ব্যাপারে তুমি আল্লাহকে ভয় করনি।’

কেন হযরত আয়িশা বলতেন- ‘আল্লহর কসম! মু‘য়াবিয়া যদি বুঝতো কূফায় সাহস ও আত্নমর্যাদাবোধের কিছু অবশিষ্ট আছে তাহলে কখনও তাদের সামনে থেকে হুজরকে ধরে নিয়ে গিয়ে এভাবে হত্যা করতো না। কিন্তু কালিজা চিবানো হিন্দার এই ছেলে ভালো করেই বুঝে গেছে, তখন সেই সব লোক চলে গেছেন। আল্লাহর কসম! কূফা ছিল সাহসী ও আত্নমর্যাদাবোধ সম্পন্ন আরব নেতাদের আবাসভূমি। [আসহাবে রাসূলের জীবন কথা(হুজর ইবনে আদী রা.)- মুহাম্মদ আব্দুল মা’বুদ]

খোরাসানে নিযুক্ত স্বয়ং হযরত মুয়াবিয়ার গভর্ণর রবী ইবনে যিয়াদ আল-হারেসী হুজর ইবনে আদীর শাহাদাতের সংবাদ শুনে চিৎকার করে ওঠেনঃ “হে আল্লাহ! তোমার জ্ঞান অনুযায়ী আমার মধ্যে যদি সামান্য পরিমাণ সৎকর্মশীলতাও অবশিষ্ট থাকে, তা হলে আমাকে দুনিয়া থেকে তুলে নাও। [আল-ইস্তীআব, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা-১৩৫। তাবরী, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ২০৮।]

এগুলো সব ঠাট্টা-মস্করা মনে হয়?!? মুয়াবিয়ার নিযুক্ত গভর্ণরের অবস্থা যখন এই, তখন আপনারা মুয়াবিয়া প্রেমে এতোটাই নিপতিত যে, একজন সাধক ও ইবাদতগুযার এবং উম্মাতের সৎ ব্যক্তিদের মধ্যে বিশিষ্ট মর্যাদার অধিকারী সাহাবীর হত্যাকান্ডকে বিদ্রোহের শাস্তি হিসেবে চালিয়ে দিতে চাচ্ছেন!!! আহ! সাহাবীপ্রেম!!!

প্রসিদ্ধ ও একান্ত নির্ভরযোগ্য বর্ণনায় মারওয়ান ইবনুল হাকাম হযরত তালহা (রাঃ)-কে হত্যা করে। [তাবাকাতে ইবনে সা’আদ, ৩য় খন্ড; ৫ম খন্ড। ইবনে হাযার, তাহযীবুত তাহযীব, ৫ম খন্ড। ইবনুল আসীর, ৩য় খন্ড; ইবনে আবদুল বার, আল-ইস্তীআব। ইবনে আবদুল বার বলেনঃ মারওয়ান হযরত তালহা (রাঃ)-এর সেনাবাহিনীতে শামিল ছিলেন, আর তিনিই হযরত তালহা (রাঃ)-কে হত্যা করেছেন- নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে এ ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই। আল্লামা ইবনে কাসীর আল-বেদায়া এ বর্ণনাকেই প্রসিদ্ধ বর্ণনা বলে স্বীকার করেছেন- ৭ম খন্ড] কই মারওয়ান ইবনে হাকামদের প্রতিপক্ষে তো কেউ কিছু বলে না। তার পৃষ্ঠপোষক মুয়াবিয়া শুধু তার ক্ষমতাই দিন-দিন বৃদ্ধি করেছেন! বাদশাহ ইয়াজীদের পরবর্তী একজনের পরেই এই মারওয়ান বাদশাহও হয়ে গিয়েছিলেন! বাহ!...

শুধু কি তাই, মুহাম্মদ ইবনে আবু বকর, আমর ইবনে হিমাক’কে আপনাদের কাছে কি সাহাবী মনে হয় না? কারা এদের মস্তক দ্বি-খন্ডিত করেছে? কারা পুড়িয়েছে এদের লাশ! এগুলো শুধু মুয়াবিয়ার সময় কালের কথা বললাম! এরপর ইয়াজীদ ও তার উত্তরসূরীরা যা করেছে সেগুলো তো মুয়াবিয়ার কর্মকান্ডেরই আফটারম্যাথ। ইমাম হোসাইন, নুমান ইবনে বশীর, আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের, এসব সাহাবীকে কতো জঘন্যভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেসব লিখতে আমার ভাষা অক্ষমতা প্রকাশ করছে!

আবার একটু মিলিয়ে নিন, আপনার কথাটুকু- ‘সুস্পষ্ট প্রমান থাকার পরও নিজের ভাইকে ভাই হিসেবে গ্রহন না করা উদারনৈতিক মানবতার পরিপন্থী, যা নবীর সাহাবীদের দ্বারা পসিবল না’।

পাঁচ.

আর আপনি হযরত হুজরকে বিদ্রোহী বানিয়েছেন!! নাউযুবিল্লাহ!!!

আপনার দৃষ্টিতে কী ইমাম হোসাইনও বিদ্রোহী। আমার পড়া প্রত্যেকটি স্থানে তাঁর পরিচয় দেয়া হয়েছে- ‘সাধক’ ‘ইবাদতগুযার’ ‘উম্মাতের সৎ ব্যক্তিদের মধ্যে বিশিষ্ট মর্যাদার অধিকারী’ ইত্যাদি শব্দ ও শব্দগুচ্ছে! এবংকি জনাব ত্বকীও তা অস্বীকার করতে পারেনি। এমন একজন মানুষের বিদ্রোহ কী হতে পারে?? কথা, প্রতিবাদ, বক্তিতা, বিবৃতি, অসতের সমালোচনা এই তো?

এর নাম বিদ্রোহ নয়, মি. আবীর এর নাম তা’মুরুনা বিল মা’রুফ এবং নেহী আ’নিল মুনকার! এর নাম ‘আফজালুজ জিহাদ’! এ জিহাদে জান বাঁচানো ফরজ নয়, ওয়াজীবও নয়! হায়! মি. ত্বকী উসমানি, আপনি হুজর ইবনে আদীকে ফিকহ শাস্ত্রের ফতোয়া শেখাচ্ছেন, জান বাঁচানো ওয়াজীব!!!

কিন্তু এই হুজর এই ইমাম হোসাইন’রা জানেন মহাকালের ইতিহাসে এমন কিছু সন্ধিক্ষণের আবির্ভাব ঘটে, শাস্ত্রের ইলমে সেসবের মোকাবিলা করা যায় না। তার জন্য আলী ইবনে আবি তালিব হতে হয়, হুজর ইবনে আদী হতে হয়, হতে হয় ইমাম হোসাইন! পন্ডিতেরা বুঝুক আর না বুঝুক তারা তাদের রক্তের প্রবাহ দিয়ে হলেও হক ও বাতিলকে আলাক করে রাখে, মিশতে দেয় না!

ফিকহ শাস্ত্র দিয়ে নয়, এঁদের বিশুদ্ধ খুনে নির্মিত দূর্গই রাজধর্মের করাল গ্রাস থেকে হিফাজত করেছে ইসলামকে! এজন্যই বলা হয়, ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায়, হার কারবালা কী বাদ! পৃথিবীর সব ধর্মে শাস্ত্র আছে, কিন্তু আর কোনো ধর্মে কারবালা নেই, তাই তাদের ধর্ম শেষ পর্যন্ত সেই রাজধর্মই! শাসকের ধর্ম! শোষকের ধর্ম! আমি জানি না, আপনার এসব বোঝার ধৈর্য আছে কি না!?

তবে একটা কথা- কাউকে বিদ্রোহী বলার আগে চিন্তা করবেন- কে কার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে?... সর্বাধিক অবাধ ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত একজন খলিফায়ে রাশেদের বিরুদ্ধে মুয়াবিয়ার সশস্ত্র বিদ্রোহকে ‘সঙ্গত’ ও ‘ইজতিহাদ’ বলে বেড়াবেন। আর একজন প্রসিদ্ধ ইবাদাতগুযার সাধক সত্যনিষ্ঠকে ‘বিদ্রোহী’ বানাতে উদ্যত হবেন! আবার একইসাথে সাহাবীপ্রেমের পতাকাও উড়াবেন, এ ক্যামোন কথা ভাই!

এ ক্যামোন ইতিহাস পাঠ!

এ ক্যামোন আকীদা!

গাছেরটাও খাবেন, তলারটা কুড়াবেন; বরের বাপও হবেন, কনের বাপও হবেন; যুদ্ধক্ষেত্রে এ পক্ষেও থাকবেন, ও পক্ষেও থাকবেন; ক্যামোন উভলৈঙ্গিক ব্যাপার হয়ে গেলো না??...

ছয়.

‘আপনি যদি এতোবড় পন্ডিত হয়ে থাকেন তো আমাকে একটু তরজমা করে দেবেন হাদীস এবং কোরানের আয়াতদ্বয়ঃ

"মা এনত্বিকু আনিল হাওয়া, ইন হুআ ইল্লা ওহয়্যূই য়্যূহা "( আল কোরান)

"মান সাব্বা আসহাবি ফাক্বদ কাফারা "(আল হাদীস)

আর হ্যাঁ দয়া করে বলবেন যয়ীফ হাদীস মানেই অগ্রহনযোগ্য,এটা কোন সহিহ হাদীসে আছে?’

আমি ভাই এতোবড় তো দূরে থাক, ছোট-খাটো কোনো পন্ডিতও নই! আপনাদের মতো ইলমের দরিয়াদের কথা না’ই বললাম, গোষ্পদে আবদ্ধ বারির নাগাল পেয়েছি বলেও মনে হয়না! আপনার কিছু বলার থাকলে ক্লিয়ারলিই বলবেন! আলোচনার সীমাতেই কথা বলবেন। আপনাদের মুয়াবিয়াপ্রেমকে আমাদের সাহাবীপ্রেম থেকে আলাদা করেই বলবেন।

আর যয়ীফ হাদীস থেকে দূরে থাকাই সমসাময়িক বিখ্যাত হাদীসবিশারদ নাসিরুদ্দীন আলবানীর অন্যতম নীতি। আহলে সুন্নাতও গুরুত্বপূর্ণ আমল সাবস্ত হওয়ার জন্য কমপক্ষে খবরে ওয়াহিদের কথা বলেছে! কিন্তু আপনারা যেভাবে জয়ীফ হাদীস দিয়ে ‘ইসলামের মৌলিক আকীদা’ সাবস্ত করে লোকজনকে ‘নিশ্চিত কাফের’ বানাতে চাচ্ছেন, আপনার আবার সহীহ হাদীসের কী দরকার!

ইমাম বুখারি, ইমাম মুসলিম, আবু দাউদ ও অন্যান্য মহান ব্যক্তিবর্গ হাদীস নিয়ে শুধু শুধুই মাথার ঘাম পায়ে ফেলেছেন, একেকটা মূল্যবান জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন, কি বলেন!!!

ভালো থাকুন।

Mohayminul Islam: শাহাদাত ভাইয়ের সব কথার সাথে একমত। কিন্তু শেষের কথার সাথে একমত হতে পারলাম না। কোনো স্কলারের অজুহাত দিয়ে বললে যুক্তি-তর্ক আর আগায় না। যদি বলা একান্ত প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে উক্ত স্কলারের অভিমত আপনাকে আগে প্রমাণ করে দেখাতে হবে।

রিপ্লাইঃ

যথার্থই বলেছেন। আসলে এমন কিছু স্কলার আছেন যারা বুদ্ধিবৃত্তিক পরিমন্ডলে সাধারণভাবে এক্সেপ্টেড। যেমন, আমাদের যুগে হাদীসশাস্ত্রে নাসিরুদ্দীন আলবানি। হাদীসে তাঁর বিপুল কাজ আছে। এজন্য তাঁর কথা বলেছি। তাছাড়া আহলে সুন্নাহ'র আকীদাও বললাম।

আসল কথা হচ্ছে জয়ীফ হাদীস হলো সেটা, যেটার সনদে দূর্বলতা আছে। জয়ীফ হাদীসের উপর আমলের কথা কেউ কেউ বলেন, কিন্তু আকীদা নির্মাণের জন্য জয়ীফ হাদীস যথেষ্ট না। অর্থাৎ, the narratives that discuss issues of prime importance in the religion which require absolute certainty. (যে হাদীস দীনের যত গুরুত্বপুর্ণ ইস্যুতে কথা বলবে তা'কে তত বেশী বিশুদ্ধ হতে হবে)।

ধন্যবাদ।

['মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে থেকে যারা সবার আগে ঈমানের দাওয়াত গ্রহণ করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে এবং যারা পরে নিষ্ঠা সহকারে তাদের অনুসরণ করছে আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে'…০৯:১০০]

বিষয়: বিবিধ

১৯৯২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378965
২৩ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ০৮:০৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সবগুলি পোষ্ট হালকাভাবে পড়লাম। এই বিষয়ে আমার মতামত হচ্ছে হযরত আমির মুয়াবিয়া (রাঃ) কে অতি ভক্তির একটি প্রবনতা শুরু হয়েছে। যেটা শিয়ারা হযরত আলি (রাঃ) সমপর্কে করে থাকে। এখন উভয় দলে পার্থক্য তো আর কিছু দেখছিনা।
378977
২৩ অক্টোবর ২০১৬ বিকাল ০৪:২০
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো / অনেক ধন্যবাদ /

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File