ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক: একজন তরুণ চিন্তকের সাথে কথোপকথন
লিখেছেন লিখেছেন শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী ০১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:১০:৪৬ রাত
ফেব্রুয়ারিতে ইসলামপন্থি এক বোনের বিতর্কিত একটি পোস্টের প্রেক্ষিতে অনেকটা অলক্ষ্যেই জড়িয়ে পড়েছিলাম বিতর্কে। কি করা, নিজের অল্পস্বল্প ইসলাম জানাকে কিছুটা ঝালাই করে কিছুটা জোড়াতালি দিয়ে লিখতে হয়েছিলো কয়েকটা নোটও। তার শেষ পর্ব ছিলো- ইসলামী শরীয়ার কালোত্তীর্ণ প্রায়োগিক নমনীয়তা: ‘শ্বশুরবাড়ীতে বউদের দায়িত্ব’ এবং ‘যৌথপরিবার’প্রসঙ্গ । তো একজন প্রিয় ভাই Nure Alam Masud গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন তুলেছিলেন। যতদূর জানি তিনি একজন তরুণ ইসলাম চিন্তক। এবং ভালো লেখক। অনেকেই হয়তো তাকে চেনেনও।
উনার কমেন্ট ছিলো-
সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াত থেকে কী আশ্চর্যজনকভাবে আপনারা "স্বামীর আনুগত্য" এক্সট্র্যাক্ট করে নিয়েছেন!
মনে রাখবেন, কুরআনের ভাষাতাত্ত্বিক আলোচনাসহ ফিকাহ, ফরজ ওয়াজিব বের করার নিয়ম, ইত্যাদি আলোচনা যদি আপনাদের এই extrapolate করা "স্বামীর আনুগত্যকে" নাকচ করে দেয়, তাহলে গোটা আলোচনাটাই ভেঙে পড়বে।
আমার প্রশ্ন হলো:
১. যেখানে বলা হয়নি "কার অনুগত", সেখানে আপনারা "স্বামীর অনুগত" কিভাবে বলছেন।
২." ভালো মহিলারা স্বামীর অনুগত" যদি এটা ধরেও নেই, তাহলেই কি এটা ওয়াজিব বুঝায়?
কুরআনে "ভালো / উত্তম মানুষদের" সম্পর্কে এমনও বলা হয়েছে যে তারা গভীর রাতে উঠে তাহাজ্জুদ পড়ে, তার মানে কি এটা সকল মানুষের জন্য ওয়াজিব?
রিপ্লাই-০১.
আমরা কিছুই এক্সট্র্যাক্ট করিনি ভাই, এটা নরমাল এবং অটোমেটিক ওয়ে'তেই বেরিয়ে এসেছে... তো করুন, 'কুরআনের ভাষাতাত্ত্বিক আলোচনাসহ ফিকাহ, ফরজ ওয়াজিব বের করার নিয়ম, ইত্যাদি আলোচনা' যদি আমাদের এই extrapolate করা "স্বামীর আনুগত্যকে" নাকচ করে দেয়', আমরা নির্দ্বিধায় তা মেনে নেবো...
রিপ্লাই-০২.
আপনার মতো বুদ্ধিমান মানুষের জন্য প্রথম প্রশ্নের জবাব দেয়ার কোনো প্রয়োজন মনে করছি না।
সূরা নিসার সংশ্লিষ্ট আয়াত(৩৪)টির একাধিক প্রসিদ্ধ অনুবাদ দিয়ে রাখলাম-
Men shall take full care of women with the bounties with which God has favoured
some of them more abundantly than others, and with what they may spend of their
own wealth. The righteous women are devout, guarding the intimacy which God has
ordained to be guarded.
(Sayed Qutub)
Men are the protectors and maintainers of women, because Allah has given the one more (strength) than the other, and because they support them from their means. Therefore the righteous women are devoutly obedient, and guard in (the husband's) absence what Allah would have them guard.
(Abdullah Yousuf Ali)
MEN SHALL take full care of women with the bounties which God has bestowed more
abundantly on the former than on the latter, and with what they may spend out of their
possessions. And the righteous women are the truly devout ones, who guard the intimacy
which God has [ordained to be] guarded.
(Muhammad Asad)
Men are in charge of women, because Allah hath men the one of them to excel the other, and because they spend
of their property (for the support of women). So good women are the obedient, guarding in secret that which Allah hath guarded.
(Marmaduke Pickthall)
এখানে MEN বলতে যদি সুনির্দিষ্টভাবে স্বামী/বর না বুঝিয়ে ‘পুরুষ প্রজাতি’ বোঝাতো, তাহলে সেটা নারীদের জন্য কতোটা ভয়ংকর হয়ে উঠতো ভেবে দেখুন…
অবশ্য আয়াতের পরের অংশ এবং পরের আয়াতে এ বিষয়টি ক্লিয়ার, শুধু টেক্সট’টুকু পড়ুন…
রিপ্লাই-০৩.
দ্বিতীয় প্রশ্নটি অবশ্য গুরুত্বের দাবিদার।
দেখুন প্রথমত আমাদের বোঝা উচিত ইসলামে মর্যাদার মাপকাঠি হচ্ছে তাকওয়া বা আল্লাহভীতি, আমরা সবাই জানি। এখানে নারী-পুরুষ বলে কিছু নেই, মানুষ সবাই। কিন্তু ইসলাম যখন মাকে ইউনিক পজিশনে নিয়ে যায়! হ্যাঁ, এটা মা হিসেবে মানুষ কিংবা মহিলা হিসেবে নয়। অর্থাৎ, একজন মহিলা আমলের দিক থেকে বজ্জাত হতে পারে, ঈমানের দিক থেকে কাফির মুশরিক হতে পারে, কিন্তু সে ‘মা’। আর কারও জন্য না, সন্তানের জন্য ইউনিক মর্যাদায় অভিষিক্ত! ঠিক একইভাবে পরিবারেও হাজবেন্ড ইন-চার্জ; পুরুষ হিসেবে নয়, হাজবেন্ড হিসেবে…
দ্বিতীয় বিষয় হলো- কেনো পুরুষ ইন-চার্জ হলো?... আবারো সেই একই প্রশ্ন করুন- মা কেনো এতোটা মর্যাদাবান হলো বাবার চেয়ে?... কুরআন কিন্তু কথাগুলো খোলাখুলিই বলেছে- তোমার মা কষ্টের পর কষ্ট স্বীকার করে তোমাকে গর্ভ-ধারণ করেছে, দুধপান করিয়েছে দু’বছর ধরে…(৩১:১৪)। তো এখানে, এ আয়াতেও কিন্তু বলেছে- and because they support them from their means/ spend of their own wealth/ spend out of their possessions/ spend of their property (for the support of women)… অর্থাৎ, দায়িত্ব যার উপর অর্পিত হয়েছে, তার সমানুপাতে কিছু কর্তৃত্বও তাকে দেয়া হয়েছে…
এখন বলুন, এই যে হাজবেন্ডের দায়িত্ব গ্রহণ, স্ত্রী-পরিবারের; এটা কী ওয়াজিব না নফল?... এই দায়িত্ব গ্রহণের বিপরীতে যেটুকু কর্তৃত্ব তাকে দেয়া হলো- সেটুকু মান্য করা তাহলে কী হবে?...
কমনসেন্স থেকেই এটা বোঝা যাচ্ছে- আপনি যদি ওয়াজিবের বিপরীতে নফল/মুস্তাহাবকে দাঁড় করান, এবং যা যতই ডিভাইনলি মিন করুন, তা দায়িত্ব ও কর্তৃত্বের ভারসাম্য বিনষ্ট করতে বাধ্য… এবং শেষ পর্যন্ত একটা নিষ্ফল বিষয় হয়ে দাঁড়াবে, সহজ কথায়- পুরুষ/হাজবেন্ড দায়িত্ব নিতে চাইবে না…
কারণ একজন ঘাম-ঝরানো অর্থ-ব্যয় এবং অন্যান্য দায়িত্ব গ্রহণের শর্তে কাউকে গ্রহণ করবে, আর অন্যজনের নিঃশর্ত স্বাধীনতা চর্চিত হবে, এরচেয়ে ফাউল তর্ক আর কি হতে পারে…
Nure Alam Masud:
প্রথম প্রশ্ন এড়িয়ে দ্বিতীয় প্রশ্নে গেলেন কেন?
যেখানে বলা হয়নি কার অনুগত, সেখানে স্বামীর অনুগত বানাচ্ছেন কিভাবে?
রিপ্লাই-০৪.
স্যরি, ব্রাদার!... কথা এখনও শেষ করতে পারিনি। পরে লিখবো বলে ভুলে গেছি। যা’ই হোক, তৃতীয় যে বিষয়,
আল্লাহ কেন বললেন- ‘righteous women’রা হাজবেন্ডের অনুগত হয়?... এই যে ‘righteous’ বলা, এটা কিন্তু একই সাথে আল্লাহ তা’লার প্র্যাকটিক্যাল প্রজ্ঞা এবং ভালোবাসাময় অনুগ্রহের অভূতপূর্ব সমন্বয়। কিভাবে?...
এটা তো সত্য যে, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এভাবে আইন-কানুন দিয়ে আসলে বাঁধা যায় না। বাঁধা যে যায় না, সেটা সেই সম্পর্কের স্রষ্টার চেয়ে বেশী কে জানে?... আমরা যে দায়িত্ব-আনুগত্যের কথা বললাম, তা অবশ্যই শরীয়ার সীমা এবং স্ত্রীর সামর্থের মধ্যে থাকবে। শরীয়ার সীমা বললে অবশ্য স্ত্রীর সামর্থ আর বলতে হয় না, কারণ ইসলাম কারো উপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোজা চাপায় না। ভুল বোঝা-বোঝি নিরসনের স্বার্থে বলা। আচ্ছা।
লক্ষ করুন- দায়িত্ব/আনুগত্যের বিষয়টাও এমন নয় যে, হাজবেন্ড বসে বসে একটা একটা নির্দেশ দেবেন, আর স্ত্রী তা একটা একটা করে পালন করবেন। কিংবা বরও যে তার উপর অর্পিত সব দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খ পালন করে ফেলবে, এমনটা চিন্তা করাও বোকামি। কিন্তু আপনাকে দায়িত্ব/আনুগত্যের স্বীকৃতি তো দিতে হবে। একটা একটা করে না পারেন, মোটের উপর তো চেষ্টা করতে হবে… নইলে তো পরিবার টিকবে না, যদি না-ই টিকলো এসব আইন-কানুনের কি হবে… কী হবে এসব বিতর্কের?...
এখানে আল্লাহ তা’লা ‘righteous women’ না বলে, যদি বলতেন ‘স্ত্রী মাত্রই স্বামীর অনুগত’, তাহলে কি দাঁড়াতো?... এতোদিনে বহু বড় বড় ফকীহ এ আয়াতের উপর ভিত্তি করে ফতোয়া দিয়ে দিতেন- স্বামীর আনুগত্য থেকে বেরিয়ে যাওয়া মাত্রই সে আর তার স্ত্রী থাকবে না। কিন্তু পুরো আয়াতটা পড়ুন- স্বামীর অজস্র-অবাধ্য হওয়ার পরও ইসলাম পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তুলতে অনেকগুলো গ্রহণযোগ্য অপশন রেখেছে… যেমন- সদুপদেশ দিয়ে তাদের বোঝানো, তাদের শয্যা-ত্যাগ করা, এবং মৃদু প্রহার করা(এই প্রহার নিয়ে নানা কথা-বার্তা আছে, সেটা অন্য আলোচনা)। তার পরের আয়াতে(০৪:৩৫) বলা হচ্ছে- এরপর, অর্থাৎ, উপরের অপশনগুলো কাজ না করলে, সর্বশেষ দুই পরিবার থেকে সালিশের ব্যবস্থা করে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলা হয়েছে। (এখান থেকেও ক্লিয়ার যে, চৌত্রিশ নম্বর আয়াতে পুরুষ বা Man বলতে হাজবেন্ডকে বুঝিয়েছে, যেটা সেকেন্ড রিপ্লাইতে অলরেডি বলেছি)।
রিপ্লাই-০৫.
তো, এতো কথার মানে হলো- পরিবার টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা ইসলামে প্রাণান্তকর! এজন্য ইসলাম পুরুষের স্কন্ধে দেয়া গুরু দায়িত্ব এবং তার সম্পদ খরচের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নারীকে অত্যন্ত সায়েন্টিফিক ওয়ে’তে বুঝিয়ে নিচ্ছে যে- …সুতরাং, পূণ্যবতী নারীরা স্বামীর অনুগত হয়। অনুগত না হলে যে সে সাথে সাথে স্ত্রী থেকে খারিজ হয়ে যাবে, তা না। আইনগতভাবে তালাক/ছাড়াছাড়ি না হওয়া পর্যন্ত তিনি পুরোদমে স্ত্রী থাকবেন, সন্দেহ নেই। কিন্তু অনুগত না হলে, তিনি পূণ্যবতী হতে পারেন না। ইসলামে পুরুষ গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীর মতামতকে প্রাধান্য দেয়ার এটাও একটা কারণ। অর্থাৎ, আপনিই সিদ্ধান্ত নিন, কোন পুরুষের অনুগত হয়ে থাকতে আপনি স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন, ভালো ফিল করবেন। বলতে পারেন জনগণের পক্ষ থেকে নেতা নির্বাচনের মতো অনেকটা।
এখানে পূণ্যবানের ধারণার সাথে ‘তাহাজ্জুদ পড়া পূণ্যবানের’ মেলানো বিভ্রান্তিকর! কারণ, ইসলামে পূণ্যবান হওয়ার জন্য তাহাজ্জুদ জরুরী নয়, বরং ফরজ ওয়াজিব যথাযথ ভাবে মেনে চলাই যথেষ্ট! মুয়াজ ইবনে জাবাল থেকে সম্ভবত, বুখারি-মুসলিমের একটা হাদীস আছে না- একলোক এসে রাসূলের কাছে কিছু আমলের কথা জানতে চাইলো, রাসূল তাকে মৌলিক অল্প কয়েকটি আমলের কথা বলে দিলে, লোকটি এ বলে বিদায় নিলো যে, আল্লাহর শপথ আমি এর চেয়ে একবিন্দু বেশীও করবো না, কমও করবো না। লোকটির গমন পথে নির্দেশ করে রাসূলুল্লাহ স. বললেন- কেউ যদি কোন জান্নাতিকে দেখতে চায়, সে যেনো এ লোকটিকে দেখে…
সো, বুঝতেই পারছেন, ইসলাম চায় না, কেউ অপূণ্যবতী থেকে যাক। সে জন্য ইসলাম জোর করে, তড়িগড়ি করে কিছু করাও পছন্দ করে না। ইসলাম নারীকে পূণ্যবতী হতে সময় দেয়, উৎসাহিত করে… হাজবেন্ডকে যাতে সে বোজা হিসেবে, নিতান্তই আইন হিসেবে গ্রহণ না করে- প্রাণবন্ত চিত্তে বরণ করতে পারে… সে জন্যও পুরুষের দায়িত্বের বিপরীতে তার রুটিন আনুগত্যকেও পূণ্যের কাজ বলে ইসলাম এপ্রিশিয়েট করেছে। আল-হামদুলিল্লাহ!
আর কি চান…
Nure Alam Masud:
১. যেখানে বলা হয়নি "কার অনুগত", সেখানে আপনারা "স্বামীর অনুগত" কিভাবে বলছেন।"
১ নং প্রশ্নের যেহেতু সোজা অকাট্য প্রমাণ নেই, তাই সাহিত্যিক কথাবার্তা বলছেন। পরিবার টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা ইসলামে প্রাণান্তকর, ইত্যাদি আবেগের কথাবার্তা তো আমিও বলি। কিন্তু সেটা আর্গুমেন্টের মধ্যে আনার প্রয়োজন নেই। আল্লাহ বললেননি "রাইচাস নারীরা হয় স্বামীর অনুগত"। অতএব স্বামীর আনুগত্য এই আয়াত থেকে infer করা যায় না। ব্যস, সিম্পল!
আপনি ফোকাস পিনপয়েন্ট করুন।
রিপ্লাই-০৬:
নো ব্রাদার, নো ইনফার ইজ রিকয়ারড হিয়ার...
আয়াত দুটো(০৪:৩৪-৩৫) আবার পড়ুন-
‘পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।
‘যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে। তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছু অবহিত’।
কি বুঝলেন!
এখানে কোনো আবেগ বা সাহিত্য নেই। থাকলে সেটা হতে পারে প্রকাশের কোনো ভঙ্গী! কোনো যুক্তি বা তথ্যকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার প্রয়াস নিশ্চয় নয়…
Nure Alam Masud:
জ্বী। স্বামীর আনুগত্য কোথায় পেলেন?
রিপ্লাই-০৭.
এই যে শয্যা ত্যাগের কথা বলা হলো, কার শয্যা ত্যাগ??... সম্পর্কচ্ছেদের কথা বলা হলো- কার সাথে কি সম্পর্ক??... আরো আছে দেখুন না!!...
Nure Alam Masud:
এসবই তো আমার চোখের সামনে। কিন্তু স্বামীর আনুগত্য করতে বাধ্য -- একথা কোথায়?
স্পষ্ট কোথাও নেই। অতএব, এটা debatable. নানান আয়াত থেকে নানারকম ব্যাখ্যা দিয়ে আপনি আপনার বক্তব্যকে এস্টাবলিশ করার চেষ্টা করবেন। আমি ঠিক সেটাই দেখতে চাই। স্ত্রীরা স্বামীর আনুগত্য করতে বাধ্য, আল্লাহর আদেশক্রমে -- এমনটি দেখান!
রিপ্লাই-০৮.
থার্ড রিপ্লাইয়ের শেষের দিকে এ নিয়ে বলেছি... তাছাড়া এই যে পড়লেন- ‘পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল'... আর কুরআনের নির্দেশ হলো- আনুগত্য করো আল্লাহর তাঁর রাসূলের এবং তোমাদের কতৃত্বশীলের...
Nure Alam Masud:
হায়রে ভাই। উলিল আমর এর সাথে ক্বওয়ামুনা গুলিয়ে ফেললেন!
বাংলা অনুবাদ দেখে দেখে কি আপনি ফতোয়া বের করবেন?
রিপ্লাই-০৯.
ফতোয়া দিচ্ছি না, বোঝার চেষ্টা করছি। ফতোয়া দেবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আচ্ছা, ক্বওয়াম মানে কী? who takes full care of/ protectors and maintainers/ in charge of ইত্যাদি, এই তো... 'উলিল আমর' সামাজিক/রাজনৈতিক পরিসরে ইউজ হয়, ঠিকাছে। ক্বওয়াম পারিবারিক কর্তৃত্বের পরিমন্ডলে ইউজ হতে পারে। দু'টোর মধ্যে কর্তৃত্বের মাত্রাগত তফাৎ আছে, আনুগত্যের মাত্রাগত পার্থক্য থাকবে স্বাভাবিক... একটা ফরমাল অন্যটি ইনফরমাল, হোক সেটা; কিন্তু কর্তৃত্ব মানে তো প্রকৃতিগতভাবেই আনুগত্যের দাবি করে, এবং সে দাবি উঠবেই। তা ক্বওয়াম হোক আর উলিল আমর হোক...
Nure Alam Masud: থাক ভাই।
রিপ্লাই-১০:
আচ্ছা, আপনার মতটাই শুনি... ইসলামে পারিবারিক পরিমন্ডলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের কাঠামো বা রুপকল্পটা ক্যামোন হবে?...
[বুঝলাম- উনি আমার উপস্থাপিত যুক্তি তথ্যে মোটেই সন্তুষ্ট নন। আমি উনাকে ঠিক ধরতে পারছি না বলেই হয়তো ‘থাক ভাই’ বলে রেখে দিয়েছেন। কিন্তু আসলে ব্যাপারটা কী?... ইসলামে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের প্রকৃত রুপকল্প ক্যামোন?...
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট চিন্তকদের ব্যাখ্যাই বা কী?... আরো আলোচনার জন্যে কথোপকথনটি তোলা থাকলো…]
বিষয়: বিবিধ
১১৯৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Excellent
নারীরা ও নারীবাদী পুরুষেরা ইসলামে তাদের ফেভারে যেটা বলা আছে সেটা গ্রহণ করে আর যেটাতে তাদের অনীহা সেটা বর্জন করে ইসলামের বিপরীতে মনুষ্য আইন আনায় ।
থার্ড স্টেপে গিয়ে যে প্রহার করার কথা বলা আছে সেটার বিপরীতে নারী নির্যাতন আইন আনা হয়েছে - যেখানে একটা নারীর ১ টা মিথ্যা হাজারটা পুরুষের হাজারটা সত্যের চেয়েও বেশী প্রাধান্য পায় । এখানে বাদী অভিযোগ আনলেই হল , বিবাদীর ফ্যামিলিকে যেতে হয় জেল খানায় ।
প্রহার কার বিষয়টি নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলতে চায় অনেকেই । প্রহার নাকি এমন হতে হবে যে সেটা হবে চিকন শলাকার যাতে গায়ে দাগ না পড়ে !।
যেরকম ঘটনার (ঘটনাগুলো সিরিয়াসই বটে , যেটার জন্য তালাক হয়ে যায়) জন্য এরকম মৃদু প্রহার করার কথা বলা আছে , সেই ধরনের প্রহারে কি প্রহারকৃত ব্যক্তি কি আদৈ শোধরাবে ?
বরং এরকম প্রহারে অন্যায়কৃত ব্যক্তিটি আরও আস্কারা পেয়ে যাবে ।
আমাদের সমাজে হচ্ছেও তাই । অন্যায়ের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়াতে বা গুরু পাপে লঘু দন্ড হবার কারণেই সমাজ থেকে অন্যায় অনাচার দূর তো হচ্ছেই না বরং দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন