‘ইসলামিক সামরিক জোট’: গাঠনিক অসঙ্গতি এবং উদ্দেশ্যের অসাধুতা
লিখেছেন লিখেছেন শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০১:২৪:৩২ রাত
‘সৌদি আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান মধ্যরাতে আকস্মিক সংবাদ সম্মেলনে নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দেয়ার সময় একে ‘ইসলামিক সামরিক জোট’ বলেছিলেন, যাতে অংশীদার অনেক দেশ বিস্মিত হয়েছিল’- লাইনটি ১৮ডিসেম্বরে প্রকাশিত নয়া দিগন্তের। এই যে দৌঁড়ের উপর ‘জোট’ গঠন- শুরুতেই এর লেজে গোবরে অবস্থার প্রতি ঈঙ্গিত করে। জোট গঠনের পটভূমিক আলোচনায় সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবাইরের ভাষ্য- ‘চরমপন্থা ও দায়েশ (আইএস) নিয়ে সৌদি আরব ইউরোপ এবং বিশেষ করে ফ্রান্সে সমালোচিত হচ্ছে’- থেকে জোটটি গঠনের সংকীর্ণ রাজনীতি ও প্রেসক্রাইবড চরিত্র সহজে ধরা পড়ে।
অন্যদিকে, একটি আন্তঃমহাদেশীয় আন্তর্জাতিক জোট গঠনের পূর্বে সম্ভাব্য সদস্য দেশসমূহের মাঝে কিছুদিনের জন্য হলেও একসাথে সংশ্লিষ্ট সম্মিলিত স্বার্থে কাজ করার, অন্তত আলাপ আলোচনার অভিজ্ঞতা থাকা একান্তই অপরিহার্য। এক্ষেত্রে যে তা হয়নি, মোটেই হয়নি, সেটি সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের মিত্র পাকিস্তান ‘জোটে’ তার নাম দেখে বিষ্ময় প্রকাশ এবং তার-উপর সম্মতি ছাড়াই জোটভূক্তির ব্যাখ্যা চাওয়া থেকেই বোঝা যায়(১৭ডিসেম্বর, নয়া দিগন্ত)।
পরে অবশ্য জানা যায় ‘গোপন প্রতিশ্রুতি’তে পাকিস্তানের জোটভূক্তির কথা! সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষায়- “সন্ত্রাসবাদ ইসলামিক দেশগুলোকে আঘাত করছে। এর বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাঁড়ানো উচিত। এই জোট সদস্য দেশগুলোর সাথে সামরিক প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম সরবরাহ এবং গোয়েন্দা তথ্যও বিনিময় করবে”। এরমধ্যে ‘গোপন প্রতিশ্রুতি’র কি থাকতে পারে? তারমানে জাহেরি বিবৃতির পাশাপাশি জোট-কর্তাদের এমন কোনো গুরুতর বাতেনি মতলব আছে যে, এবংকি ‘সন্ত্রাসের’ প্রতিপক্ষে একটি মুসলিম দেশকে জোটভূক্ত করতে ‘গোপন প্রতিশ্রুতি’ দিতে হলো! অন্যান্য বিশেষ বিশেষ দেশসমূহের জোটভূক্তিও ভিন্নভিন্ন গোপন প্রতিশ্রুতির ফল কিনা তা আমাদের অজ্ঞাত। তবে এটি স্পষ্ট যে, সন্ত্রাসের প্রতিপক্ষে ইসলামি সামরিক জোট গঠনে গোপন প্রতিশ্রুতির প্রয়োজনীয়তা এর উদ্দেশ্যের পরিশুদ্ধতা ও নৈতিক বৈধতাকে গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, গোড়াতেই।
০২.
মজার ব্যাপার হলো, জোট গঠনের ঘোষণায় নতুন করে বলতে হচ্ছে- ‘ইসলাম দুর্নীতি এবং দুনিয়ায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানোকে অনুমোদন করে না। সন্ত্রাস, মানবিক মর্যাদা ও মানবাধিকারকে বিশেষত জীবনমান ও নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করে’। তো, প্রশ্ন উঠা তো স্বাভাবিক- এই মানবিক সংবেদনা সম্পন্ন রাষ্ট্রগুলো এতোদিন কোথায় ছিলেন, এখনই-বা কোথায় আছেন-
যখন মিয়ানমারের মুসলমানদের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না! পৃথিবীজুড়ে মুসলমানরা যখন নির্যাতিত হচ্ছে- নির্যাতিত হচ্ছে রাষ্ট্রিক এবং অরাষ্ট্রিক শক্তি কর্তৃক; অমুসলিম কিংবা নামধারী-মুসলিম গোষ্ঠীগুলোর হাতে, শুধু এজন্য যে, তারা বলছে- আল্লাহ আমাদের রব!- তখন ‘ইসলামি সামরিক জোট’ তো দূরে থাক, তাদের পাশে ইসলামি ভ্রাতৃত্বের ছিঁটেফোটা নিয়েও দাঁড়ানোর কার্যকর কোন প্রয়াস তো দেখা যায়নি! বরং নিতান্তই সংকীর্ণ ও কুৎসিত স্বার্থ কায়েম রাখার নির্মম পরিহাস- কখনও কখনও অত্যন্ত ভয়ংকরভাবে তার উল্টোটাও দেখতে হয়েছে- রক্তে অশ্রুতে! দেখতে হয়েছে ঈজিপ্টে, ফ্যালেস্টাইনে, এখানে ওখানে… অর্থাৎ, জোট-কর্তাদের নিকট অতীত এবং চলমান রাজনীতির অন্তর্গত প্রবণতা হতে বোঝা যাচ্ছে- এই জোট মুসলিম উম্মাহ কিংবা মানবিক উম্মাহর বিরুদ্ধে পরিচালিত সন্ত্রাসের প্রতিপক্ষ হওয়ার কোন সক্ষমতা রাখে না। বরং বলা যেতে পারে অত্যন্ত সচেতন ও পারিকল্পিতভাবে তারা জোটের কাঠামোকে এ হতে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে চাইছে! আমরা হয়তো বুঝতেছিনা, কেউকেউ এবড়ো-থেবড়ো ভাবনায় শিয়া-সুন্নি প্রসঙ্গ এনে ইমোশনাল হচ্ছেন, এটুকুই। কিন্তু সিএনএনে দেওয়া এক বিশ্লেষণে ডেভিড মিলার অলরেডি বলেই ফেলেছেন- ‘…জোটের তালিকায় থাকা দেশের নাম থেকে বুঝতে বাকি থাকে না যে, এটি মার্কিন নেতৃত্বাধীন ৬৫ দেশের জোটের বাইরে যেতে চায় না’(১৯ডিসেম্বর, প্রথম আলো)।
মিলার আরো বলেছেন- ‘ইসলামি সামরিক জোট গঠনের ঘোষণা দেওয়া হলেও সন্ত্রাসের হুমকির চরিত্র সম্পর্কে যেমন কিছু বলা হয়নি, তেমনি উগ্রপন্থী জিহাদি ও ইসলামি জঙ্গিদের প্রসঙ্গে কিছু উল্লেখ করেনি সৌদি আরব’। এদিকে মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই জোটে যোগ দেয়ার জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে। আল আজহার মানে সিসির আদালতে গণফাঁসির রায়ে গণসাক্ষরকারী ‘ইসলামি বিশেষজ্ঞ’দের বিশ্ববিদ্যালয়! সো, এটা অনুমান করা অস্বাভাবিক নয় যে, পাশ্চাত্য শক্তির ওপর আজন্ম নির্ভরশীলতা থেকে উদ্ভূত কাপুরুষতাই নির্ধারণ করবে ওদের ‘সন্ত্রাসে’র সংজ্ঞা। ফলে সন্ত্রাসের সংজ্ঞাটি দাঁড়াবে-
আদিপ্রভূ আমেরিকার সন্তুষ্টি,
‘গোপন প্রিয়া’ ইসরাইলের নিরাপত্তা
এবং আরো যে কোন প্রকারে তাদের আসল কালেমা ‘মুলুকিয়াত রক্ষা করো’র পটভূমিতে।
তাই বোঝা যায় সিসির মিশর কেনো এতো উৎসাহী। আমাদের বাংলাদেশই বা কেনো ৪৮ঘণ্টা না যেতেই ‘লাব্বাইক’ বললো…! (বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অবশ্য আরো একটি বিশেষ সূত্র আছে। -ইন্ডিয়া। আমেরিকা-ইসরাইলসূত্রে সৌদিও নিশ্চিত ইন্ডিয়ার বন্ধু হয়ে উঠেছে! আর ইন্ডিয়ার বন্ধু মানে তো বাংলাদেশেরও বন্ধু! এ নিয়ে ইনিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু দু’দিন আগেও বলেছেন- 'যারা ভারতের শত্রু, তারা বাংলাদেশেরও শত্রু' (১৯ ডিসেম্বর, যুগান্তর)। বন্ধুত্বের নীতিতেও নিশ্চয়ই একই কথা সত্য! তাছাড়া, বাংলাদেশপন্থি রাজনীতিকে কোনঠাসা ক্ষেত্রবিশেষে নির্মূল করতে, হোক তা ইসলামী কিংবা জাতীয়তাবাদী, বিশেষত জামায়াত উৎখাতে সৌদির নীরব ভূমিকাও সরকারের জন্য যুগপৎ শান্তিদায়ক ও শক্তিসঞ্চারক!)
যাই হোক, বলা যেতে পারে, সন্ত্রাসের এই সৌদি-ইহুদী-পাশ্চাত্য-মার্কিন সংজ্ঞায় সম্মত না হয়ে কেউ এই ‘ইসলামি’ জোটে থাকতে পারবে না! জোট ভেঙ্গে গেলেও না! কারণ ‘সন্ত্রাস’ নয়, স্বার্থই এখানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ভেরিয়েবল। সৌদির স্বার্থ, ইসরাইলের স্বার্থ, ইউরো-মার্কিন স্বার্থ…। স্বার্থহানির সম্ভাবনা মাত্রই জোট আপনাআপনি অকার্যকর হয়ে উঠবে! আর হ্যাঁ, এই একই কারণে ইরান ও তার মিত্ররা সবার আগেই বাদ পড়েছে। কোনো কথা-বার্তা ছাড়া। একইভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে, টার্কি যতদিন সন্ত্রাসের সৌদি সংজ্ঞায় একটা মিনিমাম পর্যায়ে একমত হতে পারেনি, ততদিন এমন কোনো জোটের সম্ভাবনা তৈরী হতে পারেনি। এবার রাশিয়ার সাথে বিবাদ-হাঁকডাক, অতোপর ন্যাটোসূত্রে মার্কিন-ঘনিষ্টতা; অন্যদিকে ইরানের সাথে সম্পর্কের টানাটানিতে সৌদি-সংলগ্নতা, অতোপর সৌদি-আমেরিকা সূত্রে সবার ‘বড় হুজুর’ ইসরাইলের সাথে গুরুতর ক্ষোভ-অভিমান জলের-দরে ভাঙ্গিয়ে তার ‘পতন’ ঘটেছে- সন্ত্রাসবাদের ইসরাইল-মার্কিন-সৌদি সংজ্ঞায়! হায় টার্কি! ইতোমধ্যে নাকি হামাসের শীর্ষ নেতারা আংকারাতে অবাঞ্ছিত হয়ে উঠেছে!!
০৩.
ফিলিস্তিনকে যারা মুসলিম উম্মাহর বন্ধুত্ব ও শত্রুতার এসিড টেস্ট মনে করেন তাদের কাছে সৌদি-টার্কির অবস্থান স্পষ্ট। হতে পারে রাশিয়া, সেই সাথে ইরানের উপর বিক্ষুব্ধ হয়ে হামাসের সাথে এমন ব্যবহারে টার্কি সক্ষম হলো, যা তার এতো দিনের ইসলামী লেবাস খানিকটা উম্মোচিত করে দিলো। সে লেবাসের অভ্যন্তরে লকলক করছে জাতীয়তাবাদী সালতানাতের বাগাড়ম্বর খায়েস, আধিপত্যবাদী উদ্যতপনা! এ অবাক ব্যাপার যে রাশিয়ার সাথে চলমান উত্তেজনা কতো সহজে ইসরাইলের কাছে এসে ‘মিইয়ে’ গেলো! ত্রাণ জাহাজ আক্রমণের ‘গরু মেরে জুতো দান’ টাইপের ক্ষতিপূরণ পেয়ে টার্কি সন্তুষ্ট হয়ে গেলো!! আসলে আল্লাহর অনুগ্রহ ‘সুলতানান নাসিরা’ পাওয়ার পর বিশ্বব্যাপী ইসলামী আন্দোলন সমূহের প্রতি নিজেদের জরুরী কর্তব্য পালনের চেয়ে শুধু ন্যাটোর সাথে থাকা, আমেরিকার সাথে থাকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে হন্যে হয়ে ওঠার পাশাপাশি উদ্যতপনার স্বাভাবিক পরিণতিতে টার্কি, এরদোগানের টার্কির এই পরিণতি। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে সচেতন চোখ রাখা ইসলামপন্থিদের অনেকে হয়তো বিগত কয়েক বছর ধরে এমন আশঙ্কা করেছেনও।
নইলে ইসরাইলের সাথে এতো সহজে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন অসম্ভব হতো। এতদিনের এতোসব শুধু ক্ষতিপূরণের ল্যাঠা হয়ে উঠতে পারতো না। ফিলিস্তিনের ভয়াবহ মানবিক বিপর্জয়ের প্রেক্ষিতে টার্কির ত্রাণ জাহাজে হামলা, খুনোখুনি যারা এতো সহজে ভুলে যেতে পারেন, মুসলিম উম্মাহর সাথে তাদের নিঃশর্ত সম্পর্ক কতটুকু এগুবে তাতে সন্দেহ থেকে যায়। সংগত সন্দেহ থেকেই প্রশ্ন ওঠে- ওদের সামর্থ কি একান্তই তাদের সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদী স্বার্থ পর্যন্ত! তাদের ব্যক্তিগত ক্ষোভ-অনুরাগ-বিরাগ কিংবা স্বৈরাচারসুলভ উদ্যতপনা পর্যন্তই!...
সুমতি না হলে, আল্লাহ না করুন, রুগ্নাবস্থা থেকে খানিকটা বলবান হয়ে ওঠা টার্কির কপালে আপদ আছে...
সুতরাং, আপাতত একথা স্পষ্টই বলা যায়- …এবংকি ওআইসি’কে পাশ কাটিয়ে, দূরদর্শী শুভচিন্তা বহির্ভূত হঠকারী একনায়কতান্ত্রিক মনোবৃত্তির প্রকাশ ঘটিয়ে, বিশ্বের একমাত্র কার্যকর ইসলামিক রিপাবলিক ও তার মিত্রদের বাদ দিয়ে, বিশেষ বিশেষ দেশের সম্মুখে ‘গোপন প্রতিশ্রুতি’র মুলো ঝুলিয়ে, আমেরিকা-ইসরাইল ও সৌদির উম্মাহ-বিরোধী একান্তই সংকীর্ণ স্বার্থরক্ষার ল.সা.গু হতে সংজ্ঞায়িত ‘সন্ত্রাসবাদ’ মোকাবিলার জোট-
মোটেই ‘ইসলামি জোট’ হতে পারেনা।
কোনো জোটকে ইসলামি হতে হলে- মুসলমানদের নির্বাচিত রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধির পাশাপাশি অবশ্যই উম্মাহর মূল স্পিরিট ধারণ ও লালনকারী মূলধারার ইসলামী আন্দোলনগুলোর প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে। মুসলিম উম্মাহর সত্যিকার প্রতিনিধি এসব ইসলামি আন্দোলনকে অন্তহীন সন্ত্রাসে নিমজ্জিত রেখে, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদের দাসানুদাস নিপীড়ক রাষ্ট্রের কুলাঙ্গারদের দিয়ে সন্ত্রাসের সংজ্ঞায়ন কিভাবে বৈধ হতে পারে??এবং সন্ত্রাসের 'সেই' সংজ্ঞার উপর গঠিত জোটকে 'ইসলামী সামরিক জোট' বলে চালিয়ে দেওয়া- উম্মাহর সাথে আরো একটি জঘন্য ভন্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়!
একইভাবে, আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষণে ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত 'শিয়া-সুন্নি প্রসঙ্গে'র সেকেলেপনা উপস্থাপন করে নয়া দিগন্তের(১৮ডিসেম্বর) মাসুম খলিলীর মতো যারা অন্ধ অলীক আশাবাদের সুদূরপরাহত ফানুস ওড়ায়, তাদেরকে অধ্যয়নের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অপরিহার্য!...
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৩৫২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভাল ই লিখেছেন।
ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি, এর সাথে নামেই শুধু ইসলাম - আর সব কিছুই তথা প্রস্তাব, পরিকল্পনা, ঘোষনা, ইনফ্লুয়েন্স সহ ওভার অল নিয়ন্ত্রন ইংগ-মার্কিন-ইসরাইলী পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জায়োনিস্টদের আওতাধীন থাকবে - ঠিক যেমনটা ইতোপূর্বেকার ওআইসি ও ওপেক ছিল - যা মুসলিম গণমানুষকে (রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আশা-ভরসার দোলাচলে) প্রতারিত করার জন্য কাজ করছিল।
এই জোট এর উদ্দেশ্য মূলতঃ সিআইএ, মোসাদ ও এমআই সিক্স এর এজেন্ট ও ভাড়াটে সৈনিকরূপী তথাকথিত আলকায়েদা, ইসলামিক স্টেইট, টেরোরিস্ট নান্মী 'মুসলিম সন্ত্রাস তথা ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশান' এর প্রতীভুর বিপরীতে তথাকথিত মুসলমান সামরিক জোট এর সংবাদ প্রচার প্রচারনার মাধ্যমে মুসলিমদেরকে এ মর্মে বিশ্বাস করাতে চাওয়া যে - আসলেই তথাকথিত আইএস একটা মুসলিম সংগঠন।
এর মাধ্যমে মুসলিম ও ননমুসলিম মানুষ যারা অসচেতন, যারা রাত দিন কাজ কর্মে আর টাকা বানাতে ব্যাস্ত - তারা কখনো জানবে না, বুঝবে না আই এস এর সাথে মুসলমানের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই, তারা প্রতারিত হবে, দাড়ি টুপী ওয়ালা মুসলমান দেখলে জংগী, তার আয় রোজগার, বিদেশ ভ্রমন, ব্যবসা সুবিধা ও ফরচুন এর বিরোধী বলে মনে করবে, সিএনএন ও আলজাজিরা যা শেখাবে তোতা পাখির ন্যায় তা বলবে ও তা বিশ্বাস করবে এবং ওভার অল ইসলামী শিক্ষা ও দুনিয়ায় মুসলিম এর হাল হকিকত সম্পর্কে ক্লু লেস থাকবে। প্লাস রাশিয়ার আঘাতে যখন আই এস নামক ভন্ডামী দুনিয়ার সচেতন মানুষের কাছে দিনের আলোর ন্যায় পরিষ্কার হয়ে গেল - তখন তার মধ্যে সন্দেহ আর অবিশ্বাস সহ রাশিয়া বিরোধী মনোভাব প্রকট করতে আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের নতুন প্রক্সি হিসাবে এ জোট কাজ করবে।
এর বাহিরে যায়োনিস্ট মুখোশ উন্মোচন রোধ কল্পে ইসরাইলী, আমেরিকান ও বৃটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ছত্রছায়ায় ও ইশারায় পৃথিবী ব্যাপী - মুসলিম যে দুই চার জন অবশিষ্ট আলেম-ওলামা-এ্যাক্টিভিস্ট আছেন (যাদেরকে ড্রোন দিয়ে মারার মত পলিটিক্যাল সুযোগ নেই) - যারা সচেতন, শাসক এর ইশারায় নয় বরং কোরান ও হাদীস অনুযায়ী কথা বলেন, স্বস্তা ও নিরাপদ বিষয়ে ওয়াজ নসীহত করেন না বরং অন্যায় ও জুলুম এর বিরুদ্ধে ভোকাল ও মানুষকে জাগাতে কাজ করেন সে সাথে আছে তুলনামূলক লার্জ ফলোয়িং ও এ্যাক্টিভিস্ট, যারা আগামীতে মুসলিম বিশ্বের ভূয়া শাসক নামী শোষক শ্রেনীর জন্য সম্ভাব্য থ্রেট সর্বোপরী যায়োনিস্ট ইসরাইলের জন্য থ্রেট - সে সব আলেম ওলামা ও এ্যাক্টিভিস্টকে - হত্যা করার জন্য এ কোয়ালিশান কাজ করবে। কাজ করবে সংগঠিত শক্তি সমূহকে স্যাবোটাজের মাধ্যমে ব্রান্ডিং করার এবং তারপর অবৈধ ঘোষনা করার এবং সবশেষে ডিসমেন্টাল করার জন্য - যা অনেকটা কাটা দিয়ে কাটা তোলার ন্যায়।
পরিকল্পনার সব শেষে আছে সৌদী, তার্কি, কাতারি, ইজিপশিয়ান সহ জোট বদ্ধ দেশগুলোর নেতা ও আর্মী লিডারশীপকে দ্যা হেগ এর আদালত এ হাজির করা।
আল্লাহই শুধু শতভাগ সত্য জানেন।
বাকি রইল কেবল নাক, কান, চক্ষুহীন আপনার মত কিছু ব্লগ/ফেসবুক বাজ বায়বীয় আল্লার বান্দা। অথর্ব আল্লা ভাইরাসের খপ্পরে পরলে যা হয় আর কি। ধন্যবাদ।
বাকি রইল কেবল নাক, কান, চক্ষুহীন আপনার মত কিছু ব্লগ/ফেসবুক বাজ বায়বীয় আল্লার বান্দা। অথর্ব আল্লা ভাইরাসের খপ্পরে পরলে যা হয় আর কি। ধন্যবাদ।
সাদাচোখে ভাই অসাধারণ লিখেছেন। মনে হচ্ছে এই ব্লগটি আপনার এই কমেন্টটিসহ না পড়লে- পড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
যাজাকাল্লাহ...
বাকি রইল কেবল নাক, কান, চক্ষুহীন আপনার মত কিছু ব্লগ/ফেসবুক বাজ বায়বীয় আল্লার বান্দা। অথর্ব আল্লা ভাইরাসের খপ্পরে পরলে যা হয় আর কি। ধন্যবাদ।
আল্লাহ ভাইরাস নন, ভাইরাসের স্রষ্টা...
যে ভাইরাস দেখতে চিনতে মানবজাতির হাজার হাজার বছর কেটে গেছে!! এখনো নিস্পত্তি করতে পারেনি এই শালা ভাইরাস জীব না জড়! আর এত্তো রকমের ভাইরাস দুনিয়ায়!!...
যাই হোক, সমাধান?
সমাধান তো আপনার কমেন্টেই আছে দেখছি-
প্রথমত,
ফেসবুক/ব্লগবাজ 'বায়বীয়' আল্লার বান্দাদের প্রকৃত-অর্থে আল্লাহর 'কংক্রিট' বান্দা হতে হবে। এবং কোনো 'অথর্ব আল্লা ভাইরাসের খপ্পরে' পড়ে আইসিস বোকোহারাম ইত্যাদি হয়ে ওঠা হারাম করে দিতে হবে...
দ্বিতীয়ত,
'অথর্ব আল্লা ভাইরাস'মুক্ত মানুষ এবং সর্বময় সার্বভৌম আল্লাহর অকৃত্রিম বান্দাদের একটি দল...
অতোপর...
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আর দোষ ধরবেন কার? এ দোষ ধরা নয়, জাস্ট ধরিয়ে দেয়া আমরা ঐক্য চাই, মৈত্রী চাই, ভ্রাতৃত্ব চাই, জোট চাই- কিন্তু কারো স্বার্থোদ্ধারের হাতিয়ার হিসেবে নয়,
বরং আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উম্মাহর পায়ের তলার মাটি হিসেবে...
অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন