বাংলাদেশ আ'লীগের সমকাম-বান্ধব রাজনীতির নেপথ্যে
লিখেছেন লিখেছেন শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী ১১ জুন, ২০১৩, ০২:৩৭:৩১ রাত
আমরা বলেছিলাম যে- এ সরকার মূলত পুঁজিবাদী(ইহুদীবাদী, যারা ইসলাম উৎখাত প্রশ্নে খিশ্চিয়ান জগত এবং ব্রাহ্মণ্যবাদের সাথেও একাত্ম) বিশ্বব্যবস্থারই নিকৃষ্ট গোলাম বিশেষ। সমকামীতার প্রশ্নে সেটি নতুন অর্থ নিয়ে খোলসা হয়েছে মাত্র।
ব্যাপার হলো কেনো বললাম! লেলিন বলেছিলেন- পুঁজিবাদের সর্বোচ্চ স্তর হলো সাম্রাজ্যবাদ। সাম্রাজ্যবাদ মানে, সহজ কথায়- আগ্রাসন। কিন্তু পুঁজিবাদের বিকাশের পর্যায়ে এই আগ্রাসন দ্বিমুখী সর্পে পরিণত হয়। তাদের স্বাভাবিক- অর্থনৈতিক রাজনৈতিক আগ্রাসন তো চলেই। সাথে আরোপ করে ওদের লুটেরা প্রকৃতির ফলশ্রুতিতে অর্জিত বিকৃত সংস্কৃতিও! তাদের এই ফিতরাত বিরোধী(anti-natural) বিকৃত যৌনতার সর্ব নিকৃষ্ট স্তর হলো- সমকাম। স্তরগুলো দেখুন-
∑(যে কারণেই হোক) সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বের অবক্ষয়ের পর্যায়ে সমাজে দ্বীন-ই-ফিতরাত কায়েম না থাকা—» ∑সুন্দরের সপক্ষে সংগ্রামহীন বস্তুবাদী মানব মনের ক্রমাগত পর্দাহীনতার সেনসেশন—» ∑সুযোগ যৌনতার ভেতর দিয়ে আবাধ যৌনতার(free-sex) সংক্রমণ—» ∑পায়ু কাম/মুখ কাম(anal/ oral sex- ফ্রয়েড যেগুলোকে অপরিণত শিশু বয়সের কামসুখ বলেছিল)সহ অজাচারের(incest) বিষবাষ্প—» ∑সর্বশেষ সমকামীতা…
তারপর আর কিছু নেই ধ্বংস ছাড়া! কারণ মানুষের স্রষ্ট্রার প্রকৃতি-ব্যবস্থাপনা এতোই আইনানুগ যে-(যা অসংখ্য দার্শনিক বিজ্ঞানী স্বীকার করেছেন) সীমালংগন করলে প্রকৃতি নিজেই প্রতিশোধ নেয়, আমরা বলি পোয়েটিক জাস্টিস, প্রকৃতির ন্যায়বিচার। (কুরয়ান বলে- জলে স্থলে যে বিপর্জয় তা মানুষেরই হাতের কামাই)। আর সমকাম? বিশ্বজগতের অখন্ডত্ব তথা তাওহীদ আস্বীকার করে কুফর/শিরকের মতো প্রকৃতির সর্বোচ্চ বিরুদ্ধচারণের সমগোত্রীয় আপরাধ হলো এই- সমকাম। এই গেলো এক দিককার কথা…
০২
অন্যদিকে সাম্প্রতিক পুঁজিবাদের আবর্তন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে- সেক্স বা যৌনতা। তাদের কোনো কিছুই এখন যৌনতা ছাড়া চলেনা। তাদের শিল্প-সাহিত্য, সিনেমা-নাটক, খেলাধুলা, কমেডি-জোকস্ সর্বত্র সেক্সের জয়জয়কার! তাদের সমস্ত প্রেম-ভালবাসাতেও কোনো না কোনো মাত্রায় সেক্স বিজড়িত। (একবার এক সেমি-সেকিউলার মেয়েকে বলতে বাধ্য হয়েছিলাম- “Don't mind plz! When u people utter LOVE, that means either SENSATION or STRATEGY..” ) তাদের সকাল শুরুর ব্রাশে সেক্স, পোশাক-আশাকে সেক্স, কথা-বার্তা, ভাব-ভঙ্গি, ঈশারা-ঈঙ্গিতে সেক্স! সেক্স তাদের পারফিউম, বেসিন, বেড-রুমে- দিনশেষের বালিশেও! তাদের রিসিপশন, এডভাটাইসম্যান্ট, বিলবোর্ড, মার্কেটিং সর্বত্র যতদূর সম্ভব সেক্সের গোপন ও প্রকাশ্য আধিপত্য। একদল মহাপন্ডিত শিক্ষকও তারা তৈরী করে যারা- নম্বরের ক্ষেত্রে ছাত্রীদের খাতা দেখার চেয়ে শরীর চাখার জঘন্য নীতিতেই আসক্ত! তাদের রাজনীতির ভিত্তিমূলে আজ ভোগেচ্ছা- সেই সেক্স! ইডেনে ইডেনে একদল রুপসী পতিতা না পালতে পারলে তাদের রাজনীতি জমে না। জমির চাচা’রা শক্তি পায় না। আর জমির চাচা’রা না থাকলে শাহবাগগুলোর কি হবে! শাহবাগ না থাকলে দূর্নীতি দুঃশাসন মিথ্যাচার ও ফ্যাসিবাদ কবলিত সরকারের খুঁটির যোগান দেবে কে? সুতরাং শাহবাগকে টিকিয়ে রাখতে হবে, টিকিয়ে রাখতে হবে ‘চাহিবা মাত্র’ শাহবাগ সৃষ্টির সম্ভাবনা সমূহ। সমকামের রাষ্ট্রীয় গ্রহণযোগ্যতা তৈরীর প্রচেষ্টা- সেই সম্ভাবনাসমূহ টিকিয়ে রাখারই খন্ড-প্রয়াস।
০৩
...বলতে পারেন সমকামীতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শাহবাগের সেক্সের দিকে গেলাম কেন? উপরের চার্টটি দেখুন। উত্তর পেয়ে যাবেন নিজেই! অর্থাৎ, শাহবাগের তাবুতে তাবুতে আবাধ যৌনতার (অজাচার) পরবর্তী ধাপই হলো সমকাম। শাপলা চত্বরে নীরিহ মুসলমানদের কাপুরুষের মতো নৃশংসভাবে খুনের ভেতর দিয়ে অবাধ-যৌনতার শাহবাগ সিদ্ধ করে নেয়ার পর সমকামের সামাজিকীকরণ করার প্রচেষ্টা মোটেই অস্বাভাবিক কিছু নয়! তাছাড়া যে যা’ই বলুক, তাদের যুদ্ধ তো ইসলামের বিরুদ্ধে। ইসলামের প্রতিপক্ষেই সাম্রাজ্যবাদের ঈশ্বর’রা তাদেরকেই বিএনপি’র তুলনায় স্পেশালি বাছাই করেছে। ইসলামের সৌন্দর্য্য ও পবিত্রতার যেখানে যেটুকু যত নীরিহ ভাবেই থাকুক না কেনো তাগুতের জন্য তা’ই যে আতংক! তার কতিপয় সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো- রাষ্ট্রীয় সকল সুবিধাবঞ্চিত হতদরিদ্র ছেলে-মেয়েদের ক্বাওমী মাদ্রাসাগুলোকে জঙ্গি প্রজনন কেন্দ্র আখ্যা দেয়া, থাবা বাবা-আবুল বাবা-দরবেশ বাবাদের তল্লাশীর পরিবর্তে তল্লাশীটা মসজিদে মসজিদে শুরু করা, নারীদের অর্থনৈতিক অধিকারকে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কগুলোতে ডিসেন্ট্রালাইজড করা অধিকতর ভারসাম্যপুর্ণ ও নিরাপদ ব্যবস্থা উৎখাত প্রচেষ্টাসহ ইত্যাদি অসংখ্য দৃষ্টান্ত আমদের চারপাশে! এবং কী নৌ-বাহিনীর জাহাজে খালিদ বিন ওয়ালিদ নামটুকু পর্যন্ত সহ্য করতে পারেনি! ঠিক ইরানের শাহ সরকার যেমন কারবালার শহীদদের স্মরণে জণগনের কান্না-কাটির মতো ব্যপারও নিষিদ্ধ করেছিল!
০৪
পুরো ব্যাপারটা এই দাঁড়ালো যে- সমকামীতাকেও যদি সহজ করে দেয়া যায় তাহলে যৌনতা অবাধ হয়ে উঠবে অনায়াসে। ব্যাভিচার হয়ে উঠবে ডাল-ভাত! এই সমকামীরা যতই উৎসাহ পাবে, যতই অবাধ হবে অবাধ যৌনতা- এর সবটুকুই সঞ্চিত হবে আওয়ামী আমানবিক রাজত্ব্যের শক্তি হিসেবে! শুধু তা’ই নয়- ঠিক ততটুকুই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে ইসলামী আন্দোলনগুলোর প্রতিকুলে!
আ’লীগের সমস্যা কি? তাদের দরকার ক্ষমতা! ক্ষমতার জন্য ভারত বন্ধু ছাড়া তার ভরষা কোথায়? আর এ তো জানা কথা যে- 'বন্ধুর শত্রু আমারও শত্রু'! (সাম্রাজ্যবাদী) ভারতের (আগ্রাসনের) শত্রু এদেশের (স্বাধীনচেতা) জনগণ আ’লীগের কে যে- এদের জন্য সে তার বন্ধুত্বের নিমক হারামী করবে? এ যে চির আরাধ্য ক্ষমতা-বান্ধব বন্ধু! তার জন্য, তার আন্তর্জাতিক দেবতাদের জন্য, সেই ঈশ্বরতুল্য 'ক্ষমতার' প্রয়োজনে-
গণমানুষের প্রতিপক্ষে,
দেশ ও জাতির প্রতিপক্ষে,
ইসলামের প্রতিপক্ষে,
এবং কি মানবতার প্রতিপক্ষেও- একটু না হয় সমকাম-বান্ধবই হলাম!
তাতে মহাভারতের কি এমন অশুদ্ধ হবে!
বিষয়: বিবিধ
৩২৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন