লালবাগে স্মৃতির পাতা থেকে -৩

লিখেছেন লিখেছেন মোল্লা দো পেঁয়াজো ২৩ জুন, ২০১৩, ১১:৪৯:১৩ সকাল

ইফতা বিভাগে পড়াকালীন ঘটনা

বাংলাদেশ পুলিশ বিভাগে কর্মকর্তারা তারা শুধু পেটের দায়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কার্যক্রমে বাধ্য হন

নতুবা তাদের নৈতিকতার মাঝেও তারা হার মানেন

তবে অনেক নরপিষাচ আছে যারা ইচ্ছা করেই এসব করে

যাকগে আমি এসব বিষয়ে বলবনা

হযরত রহঃ এর সাথে মোটামুটি সবসময়ই পুলিশের আনা গোনা দেখেছি

হুজুর এমপি থাকা অবস্থায় দেখেছি পুলিশের আনন্দের সাথে দায়িত্ব পালন করতে

ঐ সময় পুলিশ শুধু দায়িত্ব পালন করত তা নয় বরং মোটামুটি যারা থাকত তারা অল্প দিনেই হুজুরের কাছে মুরিদ হত

কারন হুজুর তাদের কোন কষ্ট না হয় সেদিকে সব সময় খেয়াল রাখতেন

আর এটা হয়েছে হুজুরের উদারতা ও সরল মনের কারনে

আমি নিজে তাদের কাছে বলতে শুনেছি ভাই আমার চাকরীজীবন ধন্য হুজুরের সংস্পর্শে এসে

যে সদস্য গুলোই আসত তারা এভাবে নিজের আবেগ প্রকাশ করত

যাকগে অন্যকোনদিন এব্যপারে বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে

জালিম শাহীর হাতে প্রায় আড়াই বছর গৃহবন্দি ছিলেন

আর এই অবস্থায় মহান আল্লাহর ডাকে সাড়াদেন

আমরা মনে করি হযরত ইমাম আবু হানীফা রহঃ হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহঃ এর মত কারাগারের প্রকোষ্ঠে নির্যাতনে শহীদ হওয়ার মর্যাদা লাভ করেছেন

ইফতা বিভাগে পড়াকালীন হুজুর গৃহবন্দি ছিলেন

একডজন পুলিশ সবসময় থাকত

এছাড়াও আরো গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা থাকতেন

তো পুলিশ পেশাগত দায়িত্বপালন করলেও তারা আমাদের রুমে আসত

এবং কি আমাদের রুমে এসে খাবারও খেত

সরকরের নির্দেশ তাই মনে না চাইলেও থাকত

শত ব্যাস্ততা স্বত্বেও হুজুর ক্লাস

যথাসময়ে করাতেন

গৃহবন্দি থাকার কারনে আমরা অতিরিক্ত ক্লাসের সুযোগ পাই

কোন একদিনের ঘটনা আমরা দুপরে ক্লাস করতেছিলাম

হঠাত পুলিশের এক সদস্য রুমের দরজার কাছে এসে বসলেন

আমি ইশারায় বললাম কি চাই?

ও বলল আমি হুজুরের সাথে কথা বলব

আমি বললাম সামনে যান

পুলিশ আস্তে আস্তে সামনে গিয়ে কোন কিছু না বলেই হুজুরের পা জড়িয়ে ধরে হাওমাও করে কাঁদা শুরু করল

কান্নার আওয়াজে সবাই স্তব্ধ হল

হুজুর সান্তনার বানীতে তাকে বললেন "আরে আরে ঠিক আছে ঠিক আছে"

পুলিশ কাঁদতে কাঁদতে বলল

"হুজুর আমাকে মাফ করেন

আমি সরকারি নির্দেশে এখানে এসেছি" মুহূর্তেই পুরো ক্লাসে সাড়া পড়ে গেল

সবার চোখেই দেখলাম

নোনা পানির মেঘ জমে আছে

কারো বা অঝোর ধারাই বর্ষিত হচ্ছে

যাহোক পরবর্তীতে আমরা ধরাধরি করে তাকে নিচে নিয়ে শান্তনা দিলাম

এরপর যথারিতী ক্লাস শেষ হল

আমার বলার ইচ্ছা হল মাত্র কয়েকদিনের ক্ষমতার বাহাদুরি করে নিজের জীবন কে বরবাদ করে লাভ কি

মহান আল্লাহ যাদের আত্নাকে পবিত্র করেছেন

তাদের কে কষ্ট দিয়ে আবু জেহেল ওতবা শাইবা রা ধ্বংস হয়েছে

তেমনি ভাবে আল্লাহওয়ালাদের কষ্ট যারা দিবে এদের অবস্থা ফিরআউন নমরুদের চেয়েও ভয়াবহ হবে

হে আল্লাহ তোমার খাটি বান্দাদের উপর নির্যাতন হচ্ছে আমরা দূর্বল ইমানদার তাই যথাযথ প্রতিবাদ করতে পারিনা

তাই আমাদের ক্ষমা করে দিও

আমিন

বিষয়: বিবিধ

১২৮০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File