কেন ব্যাবহার হচ্ছে “বিজয় চিহ্ন রাবা 4
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্দাল ৩১ আগস্ট, ২০১৩, ১০:৪৭:৫৭ রাত
যেহেতু মিশরের রাবেয়া স্কয়ার থেকে এই ইসলামী আন্দোলনের নতুন যাত্রা শুরু হলো, তাই আরবী "রাবেয়া" শব্দের অর্থ "চতুর্থ " থেকে এই চিহ্ন ব্যাবহার করে তা স্বরনীয় করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামী বিপ্লব প্রত্যাশীরা।
কেন ব্যাবহার হচ্ছে “বিজয় চিহ্ন রাবা 4
১. মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুডের গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইসলাম পুনরুদ্ধার আন্দোলন নতুন ভাবে শুরু করে মুলত “রাবেয়া স্কয়ারে”। রাবেয়া শব্দটি আরবী, যার অর্থ হলো – ৪ বা চতুর্থ। সারা বিশ্বের মুসলমান এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের বিশ্বাস, এই রাবেয়া স্কয়ার থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের মাধ্যমেই মিশরে ইসলাম পুনরুদ্ধার হবে। তাই বিক্ষোভের সময়ই এই “বিজয় চিহ্ন রাবা 4 ” ব্যাবহার শুরু করে।
২. মুহাম্মদ মুরসী হলেন মিশরের ইতিহাসে চতুর্থতম প্রেসিডেন্ট। তাই মিশরের ইতিহাসে কুফুরি মতবাদ গনতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ১ম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁকে স্বরণ রাখতেই এই চিহ্নের ব্যাবহার।
৩. তাহরীর স্কয়ারের মুরসী বিরোধী আন্দোলনে ২ আঙ্গুল দিয়ে সেক্যুলারদের ব্যাবহৃত বিজয় চিহ্ন “V” থেকে নিজেদেরকে পৃথক রাখতে মুসলিম ব্রাদারহুড রাবেয়া স্কয়ারের আন্দোলনে ৪ আঙ্গুল দিয়ে বিজয় চিহ্ন “রাবা 4” ব্যাবহার করে। যা একটি বিদআত।
৪. মিশরের রাবেয়া স্কয়ারে সেনাবাহীনী পরিচালিত পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা “অপারেশন রাবা” তে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদেরকে স্বরণ রাখতে এই “রাবা 4” চিহ্ন ব্যাবহার করা হচ্ছে।
*****
মিশরের ইতিহাসে গনতান্ত্রিকভাবে নিরবাচিত ১ম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁকে স্বরণ রাখতে, গণহত্যায় জীবন উৎসর্গকারী শহীদদেরকে স্বরণ রাখতেই এই চিহ্নের ব্যাবহার করা যদি জায়েজ হয় তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মানুষদের স্মরণ রাখতে স্মৃতিসৌধ ব্যাবহার করা এবং ভাষা আন্দোলনের সময় নিহতদের স্মরণে শহীদ মিনার ব্যাবহার করা কেন জায়েজ হবে না?
এভাবে ছবি সবাই-ই প্রোফাইল পিকচারে সেট করতে পারে কিন্তু ময়দানে যুদ্ধের জন্য ডাক দিলে অধিকাংশই পালাবে।
তাই বিপ্লবের জন্য এই ছবি সেট করা একেবারেই অর্থহীন।
এখন এটা ছবি হিসেবে আছে কিছুদিন পর বিপ্লবকে স্মরণ রাখতে চার আঙ্গুল বিশিষ্ট হাতের ভাস্কর্য নির্মিত হতে পারে, পরবর্তীতে এই প্রজন্ম সহ আরো দুই তিন প্রজন্ম বৃদ্ধ হয়ে মরে গেলে এর পরের প্রজন্ম ঐ ভাস্কর্যের সামনে মোমবাতি নিয়ে নীরবতা পালন করবে, ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে তখন এর জন্য কারা দায়ী থাকবে???
যেমনটা নুহ (আঃ) এর সম্প্রদায়ের মধ্যে হয়েছিল। তাঁরা প্রথমে এমনেতেই শুধু স্মরণ রাখার জন্য ভাস্কর্য নির্মান করেছিল, ফুল দেয়া বা পূজা করার জন্য নয়, কিন্তু দুই/তিন প্রজন্ম অতবাহিত হওয়ার পর ঐ ভাস্কর্য গুলোর পূজা শুরু হয়ে যায়, শির্ক শুরু হয়ে যায়।
রাসুল (সাঃ) কেন সর্ব প্রকার মূর্তি,ছবি, ভাস্কর্য নির্মাণ করতে নিষেধ করলেন? কেন কবরকে পাকা করতে নিষেধ করলেন? কবরকে পাকা করলেই কি শির্ক হয়ে যায়? না, কখোনই না, বরং পরবর্তী প্রজন্মে শির্ক হওয়ার সম্ভবনা আছে বিধায় তিনি একেবারে হারাম করেছেন।
রাসুল (সাঃ) কেন আলী (রাঃ) কে সকল প্রকার মূর্তি, ছবি, প্রতিমা,ভাস্কর্য ভেঙ্গে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন????
আঙ্গুলের প্রতীক নিয়ে যদি কথা বলতেই হয় তাহলে বলবো,
তাওহীদের তথা আল্লাহ সুবানাহুতায়ালার একত্বের কোন বিকল্প নেই ! আজকে যারা ৪ আঙ্গুল কে ঐক্যর প্রতীক বা আরবা বা রাবেয়ার প্রতীকী চিহ্ন বলছে, কিন্তু কিছুদিন পর যখন আরেকটি এমন ঘটনা ঘটবে অন্য কোন দেশে তখন বের হবে আবার ৫/৬/৭ আঙ্গুল ! এভাবে বের হতেই থাকবে ! কিন্তু তাওহীদ এর কোন বিকল্প নেই ! সারা বিশ্বই এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর একে বিভক্ত করা একেবারেই অনুচিত। এবং সারা বিশ্বের মুসলিমদের আল্লাহ্র সুবানাহুতায়ালার তাওহীদের ভিত্তিতে তথা একত্বের ভিত্তিতে একত্রিত করা সম্ভব, যেমন টা মুহাম্মাদ (সাঃ) করেছিলেন।
আমি এগুলো সবই সমর্থন করি, আমি মিশরের ইসলামী শাসনের বিরোধী নই, মিশরের ইসলামী শাসন সু-প্রতিষ্ঠিত হোক এটা আমিও চাই, শুধু মিশরেরই না বরং সারা বিশ্বে ইসলামী শাসন সু-প্রতিষ্ঠিত হোক।
কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক সবই আমি সমর্থন করি কিন্তু চার আঙ্গুলকে প্রতীক হিসেবে ব্যাবহার করা সমর্থন করি না। আমরা বিদআত বর্জন করে কুরআন-সুন্নাহর দিকে ফিরে আসি। আল্লাহ্ তৌফিক দিন। ওয়ামা তৌফিক ইল্লা বিল্লাহ।
(collected)
বিষয়: বিবিধ
২৪৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন