নতুন ধারার সাংবাদিকতায় রিচার্ড অ্যাডডিস

লিখেছেন লিখেছেন প্রেস২৪ ২৬ জুন, ২০১৩, ০৩:২৭:২৪ রাত



সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য দুই বছরের প্রশিক্ষণ নেন ব্রিটিশ রিচার্ড অ্যাডডিস। কিন্তু সন্নাসী না হয়ে বনে গেলেন পুরোদস্তুর সাংবাদিক।

একে একে ব্রিটেনের দ্য সানডে টেলিগ্রাফ, দ্য ডেইলি মেইল, ডেইল এক্সপ্রেসের জ্যেষ্ঠ পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। দেশর গণ্ডি ছাড়িয়ে কানাডীয় দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল পত্রিকাও কাজ করেন তিনি।

গতানুগতিক সাংবাদিকতা করতে করতে তিতিয়ে উঠেন তিনি। জটিল বিষয়গুলোর সংবাদ পরিবেশন নিয়ে সংবাদ মাধ্যমগুলোর ‘বিশাল ফাঁক’ রাখার বিষয়টি কাটিয়ে উঠার জন্য নতুন সংবাদপত্র চালু করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

জটিল বিষয়গুলো পড়তে পড়তে একসময় পাঠক বিরক্ত হয়ে উঠলে সংবাদ মাধ্যমগুলো সাধারণ বিষয় যেমন জর্জ ক্লুনির যৌনজীবন বা কোন ফুটবলার বেশি মদ পান করে-এমন গল্পে পাঠককে ধরে রাখতে চেষ্টা করে।

দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের সাবেক এক সহকর্মীর সঙ্গে ‘দ্য ডে’ নামে নতুন সংবাদ মাধ্যমের যাত্রা ঘটান অ্যাডডিস। ‘এক্সপ্লাইনিং ম্যাটারস’ (বিষয়ের বিশ্লেষণ) স্লোগান নিয়ে পথ চলা এই ওয়েবসাইট এখন স্কুল শিক্ষার্থীদের শিক্ষার বড় আধার।

ব্রিটেনের স্কুল থেকে খরচের ৬০ শতাংশ মেটায় দ্য ডে। নির্দিষ্ট প্যাকেজের আওতায় সংবাদ ছাড়াও স্কুলগুলোকে ছবি, শ্রেণীকক্ষে সাংবাদিকতা বিষয়ক কর্মশালা, ফরাসি, জার্মান, স্প্যানিশ ও ইতালীয় ভাষা শ্রেণী কক্ষে ব্যবহারের জন্য ভাষান্তর শেখায় দ্য ডে কর্তৃপক্ষ।

স্কুলগুলো প্রতি দিনের ঘটে যাওয়া সংবাদের পেছনে ঘটনাসংবলিত তিনটি সংশ্লিষ্ট স্টোরিসহ আগের সংবাদের আর্কাইভে প্রবেশ করতে পারে।

ব্রিটিশ সংবাদভিত্তিক সাময়িকী দ্য উইকের ফ্লোর ভাড়া করে অফিস করছেন অ্যাডডিস। স্বল্প বিনিয়োগের পত্রিকাটির আরেকটি ব্যতিক্রম হলো তাতে কোনো বিজ্ঞাপন নেই।

দ্য ডে’র আর এ বিষয়টি পাঠকদের আকৃষ্ট করছে। দ্য ডে’র প্রথম সেবাক্রেতা হচ্ছে লন্ডনের বারলিংটন ডেনস অ্যাকাডেমি। অ্যাকাডেমির সহকারী অধ্যক্ষ স্টিফেন অ্যাডকক জানান, শিক্ষকরা দ্য মেট্রোর ২৫ কপি সাধারণ সংগ্রহ করেন। কিন্তু বাস স্টেশন আর সাবওয়েতে বিনামূল্য বিতরণ করা পত্রিকাটিকে বাণিজ্যিক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, “ওই পত্রিকাটি (দ্য মেট্রো) খুবই বাণিজ্যিক একটি পত্রিকা, বিজ্ঞাপনে পূর্ণ। এবং আধেয়গুলো টিনেজারদের জন্য প্রয়োজনীয় নয়।”

সপ্তাহে তিনবার দ্য ডে ব্যবহার করে অ্যাডককের স্কুল। অ্যাডকক বলেন, “প্রতি সকালে আমাদের টিউটর গ্রুপ সেশন হয় ও টিউটররা চলমান বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দেন। কিন্তু আমরা নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। উদাহরণস্বরূপ, বিজ্ঞানের একজন শিক্ষক জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (বংশগতি বিষয়ক প্রকৌশল) বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেবেন।”

অ্যাডককের সঙ্গে স্কুলের আরেক কর্মকর্তা মিসেস জেমস জানান, তারা বিবিসির শিশুতোষ শিক্ষামূলক বিষয়গুলোতে চোখ রাখেন। কেননা সেগুলো বিজ্ঞাপনমুক্ত থাকে।

শিক্ষার্থীরা অনেক মিডিয়ার সংস্পর্শে থাকে যদিও সেগুলোর অনেকগুলোর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যদিও সেগুলো পড়তে লাগে তাহলে শিক্ষার্থীরা দ্য ডে বেছে নেয় বলে জানান ‍অ্যাডকক।

কঠিন বিষয়গুলো সহজ করে উপস্থাপন করায় দ্য ডে’র সেবাগ্রহীতার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বতর্মানে দ্য ডের পাঠক সংখ্যা ৬০ লাখ যা ব্রিটেনের সবচেয়ে বিক্রিত টিনএজারদের সাময়িকী পপস ম্যাগাজিনের পাঠক সংখ্যার দ্বিগুণ।

শিক্ষার্থীদের সাংবাদিকতা পেশার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে চান অ্যাডডিস। আগামী সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটনের ‘এ কাইন্ড অব কিডস’ সংস্করণ নিয়ে একটি নতুন ওয়েবসাইটের যাত্রা ঘটাবেন তিনি। সেখানে শুধু লিখবে শিশুরা। তবে সম্পাদনা করবে প্রাপ্ত বয়স্করা। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, “এতে আপনি লিখতে পারবেন না যদি আপনার বয়স ১৯ এর বেশি হয়।”

বিষয়: আন্তর্জাতিক

১০৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File