সুন্দরবনের বাদশাহ হালুমের নেতৃত্বে রাতভর জরুরী সভা:অচিরেই অত্যাচারী সরকারের পতন!
লিখেছেন লিখেছেন শুভ্র কবুতর ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৭:২৩:৩০ সন্ধ্যা
বনের এক প্রান্ত থেকে অন্য
প্রান্তে মুহূর্তের মধ্যে খবর
পৌছে গেল|শেয়াল পন্ডীত
ঢেড়া পিটিয়ে প্রাণীকূলের
কাছে বাদশা নামদার হালুম তথা রয়েল
বেঙ্গল টাইগারের
একটা জরুরি ঘোষণা পৌছে দিল|আজ
রাতেই বাদশাহ প্রাণীকূলের
জরুরী সভা আহবান করেছেন|বাদশার
আদেশ,কোন একজন যেন এই সভায়
অনুপোস্থিত না থাকে|
খুবই উদ্বেগ জনক সংবাদ!
অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু
নাহলে সাধারণত এমন সভার আয়োজন
করা হয়না|ছোট খাট সমস্যা বাদশাহ
এবং তার মন্ত্রী বর্গ সমাধান করেন|
প্রায় এক দশক পর জরুরী সভার
আহবান|
চারদিকে কানাঘুষা চলছে,কী এমন
ঘটল আমাদের এই রাজ্যে!
সন্ধ্যা গড়াতেই রাজ প্রাসাদের
সামনের ফাঁকা জায়গাটা পরিপূর্ণ
হয়ে গেল|বানরের
সারিতে বানর,হরিণের
সারিতে হরিণ,বাঘের সারিতে বাঘ
এমনি ভাবে প্রত্যেক জাতের
প্রাণী তাদের গোত্রপতিদের
নেতৃত্বে একেক সারিতে বসে পড়েছে|
সকলে সুন্দরবনের বাদশা হালুমের
অপেক্ষায় প্রহর গুনছে!"কি এমন
ঘটনা ঘটলো যার জন্য এই
জরুরী সভা?"সকলের আলোচনার
বিষয়বস্তু এটাই|একেক জন একেক
রকম বলছে|একজন এক রকম
বললে অন্যজন বলছে অন্যরকম|
মোটকথা মূল বিষয়টা তাদের
অজানা রয়ে গেছে|
বিশাল এলাকা জুড়ে হেতাল গাছের
ঝাড়ে নির্মিত প্রাসাদ
থেকে মহামান্য বাদশা বের
হয়ে এলেন|মুহূর্তের
মধ্যে সভাস্থলে নেমে এলো পিনপতন
নিরাবতা|বাদশা তার নির্ধারিত
আসনে বসে অভ্যাস মত একটা হুংকার
ছাড়লেন|সকলের তো ভয়ে প্রাণ যায়
যায় অবস্থা!
শুরু হলো সভার মূল কার্যক্রম|বাদশার
সেক্রেটারী বানরকে জরুরী সভা আহ
কারণ পাঠ করতে বলা হলো|
ঘোষণা শেষ হলে সকলের
মাঝে একাধারে ক্রোধ,ঘৃণা আর
বিমুর্ষতা দেখা দিল|বাদশা হালুম
প্রথমে নিরহ হরিণ
জাতিকে এবিষয়ে তাদের বক্তব্য
জানাতে বললেন|হরিণ সর্দার
বললেন,মহাশয় বাদশা,এই মুনষ্য জাত
আমাদের অনেক ভাই বোন,সন্তান
সন্ততিকে ফাঁস
কিংবা গুলি করে মেরে ফেলছে|আর
এখন কিনা আমাদের এই আমাদের
আবাসকে ও ধ্বংস করতে চাচ্ছে?এর
একটা প্রতিকার করতেই হবে|
বানর জাতি বলল,মানুষের উপর
আমাদের সম্মিলিত
হামলা করতে হবে|
কচ্ছপ,খরগোশ,বনমুরগিসহ সকলেই
তাদের মতামত ব্যাক্ত করল|
প্রত্যেকের বক্তব্যে চরম ক্ষোভের
বহিঃপ্রকাশ ঘটল|বুদ্ধিমান শিয়াল
পন্ডিত এব্যাপারে রেগে অগ্নিশর্মা|
তাদের সকলের ক্ষোভের কারণ,কেন
মানব জাতি তাদের দেশে বিশাল
জায়গা থাকতে সুন্দরবনের
উপকুলে বিদ্যুৎ প্লান্ট
তৈরী করতে যাচ্ছে?যার
প্রভাবে শুকিয়ে যাবে জোয়ার ভাটার
সদা প্রবাহমান এই নদী|বৃক্ষ
রাজি মরে যাবে|ফলে বিশ্বের
সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন ধ্বংস
হয়ে তাদের বসবাস
অনুপযোগী হয়ে পড়বে|
দেখা দেবে চরম খাদ্য সংকট|
অনিচ্ছা সত্তেও খাদ্যের
খোজে তাদেরকে মনুষ্য এলাকায়
যেতে হবে|এই কেনোর উত্তর তাদের
জানা নেই|
বাদশা হালুম এতক্ষণ মনযোগ
দিয়ে সকলের কথা শুনছিলেন|
তিনি আড়মড়া খেয়ে নিজের বক্তব্য
শুরু করলেন,"হে আমার
প্রজাবৃন্দ,বিষয়
টি নিয়ে তোমাদেরকে চরম
উৎকন্ঠিত দেখতে পাচ্ছি|অবশ্য
তোমাদের সেবক
হিসেবে আমি সবচেয়ে বেশি উদ্বি
তোমরা সকলেই
জানো মানুষকে আল্লাহ
তায়ালা বিশেষ ক্ষমতা দান করেছেন
এবং দিয়েছেন সেই
ক্ষমতা প্রয়োগের স্বাধিনতা|মানুষ
তাদের এই ক্ষমতাকে অপব্যবহার
করছে|অথচ এব্যাপারে আমাদের তেমন
কিছু করার নেই|তবে তোমাদের জন্য
একটি আশার খবর হলো,এই বিদ্যুৎ
প্লান্ট নির্মাণে সে দেশের
অধিকাংশ মানুষের সমর্থন নেই|তবুও
বর্তমান অত্যাচারি সরকার তাদের
গৃহিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন
করতে চলেছে|এই জালিম সরকারের
উপর মানুষ আস্থা হারিয়ে সরকারের
বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে দিয়েছে|
আশা করছি অচিরেই এই সরকারের
পতন ঘটবে|
বানর মশাই বাদশার কথার মাঝেই
বলে উঠলো সরকার পরিবর্তনের
মধ্য দিয়ে কি এই সিদ্ধান্ত
পরিবর্তন করবে তারা?
জবাবে হালুম বলল,আমার কাছে তথ্য
রয়েছে আল্লাহর ইচ্ছায় পরিবর্তন
হবে|কারণ এই সরকার তার দেশের
স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে পার্শ্ব
বর্তী একটি দেশের স্বার্থ
সিদ্ধির জন্য এই বিদ্যুৎ প্লান্ট
নির্মানের পরিকল্পনা নিয়েছে|
এটি তাদের জন্য উপকার
থেকে অপকার করবে বেশি|এখন
আমাদের করনীয় হল এই জালিম
শাসকের পতনের জন্য আল্লাহর
নিকট প্রার্থনা করা|বাকি রাতটুকু
আমরা প্রার্থনার আসুন প্রার্থনার
মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করি|
বিষয়: বিবিধ
১২৪২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন