মুসলিম মিল্লাতের এমন অস্থিতিশীলতায় জাকির নায়েক কি খুব বড় কোন ফ্যাক্ট!
লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত কন্ঠ ১০ জুলাই, ২০১৬, ০৭:৪৪:৪৯ সন্ধ্যা
তরিকত ফেডারেশন বা মাইজভান্ডারী এবং আমাদের ক্বওমী উলামাদের একটি গ্রুপ জাকির নায়েকের পেছনে লেগেছেন। কারণ-
# তার বক্তব্যে তরিকতের মাজার পূজার আক্বিদায় কুঠরাঘাত লাগে যার ফলে তাদের মাজার কেন্দ্রিক শত কোটি টাকার আয়ের পথ বন্ধ হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হয়।
# আর ক্বওমিদের বিশেষ কিছু আক্বিদা এবং মতের বিপরীতে চলে যায়, যা শরিয়তের মুলনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয়। ঈমানের কোন শর্তও নয়। না মানলে কেউ বেইমান হয়ে যাবে না।
# তার চেয়েও কড় কথা হলো জাকির নায়েক যে স্থানে যে পরিবেশে যে লেবেলের অমুসলিম লোকদের সাথে বসে ইসলামের আলোচনা করতে পারে, কম্পারেটিভ ধর্মতত্বের উপস্থাপন করতে পারে, অনেক ক্ষেত্রে তাদের ধর্ম গ্রন্থ দিয়েই তাদের প্রশ্নের জবাব দিতে পারে তা আমরা পারি না। আর এ কারণেই আমাদের হিংসা হয়, বিখাউজ সৃষ্টি হয়; গায়ে চুলকায়।
আমি জাকির নায়েককে ভুলের উর্ধে মনে করি না। তারও অনেক ভুল আছে আমি জানি। কিন্তু ভুল তো আমাদের উলামারাও করেন, বিতর্কিত হন। যেমন কয়েক বছর আগে সিলেটে আল্লামা ওলিপুরীর কিছু ভুল তাফসীরের বিরুদ্ধে আমরা কিভাবে লেগেছিলাম মনে আছে? কাজির বাজার মাদ্রাসার মুফতি সাব সহ আরও অনেকে ওলিপুরির ভুলের বিরুদ্ধে বই পর্যন্ত লিখেছেন। কিন্তু ওলিপুরীকে বাতিল ফতোয়া তো দেইনি আমরা।
তাহলে জাকির নায়েকের কিছু ভুলের কারনে তাকে বাতিল/কাফির/দালাল ইত্যাদি ফতোয়া দিয়ে যাচ্ছি কেন। কারণ কী?
তার দ্বারা অমুসলিমদের কাছে দ্বীনের যে খেদমত পৌছাচ্ছে তা কি তার ভুলগুলোর চেয়ে খুব নগন্য?
নিউজ আপডেটে দেখলাম, বাংলাদেশে পিচ টিভি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তো এখন মানুষ স্টার জলসা, স্টার প্লাস, জি বাংলা ইত্যাদি নিয়ে সময় কাটাবে, এগুলো কি পিচ টিভির চেয়ে বেশি পুণ্যময়! এটা কি আমাদের জন্য খুব কাম্য!
মেনে নিলাম জাকির নায়েক দ্বারা অমুসলিমরা লামাযহাবী ইসলামে দিক্ষিত হচ্ছে। তাতে সমস্যা কি? মানুষ বেঈমান থেকে ঈমানদার তো হচ্ছে!
নাকি লা মাযহাবী হলে ঈমানদার হওয়া যায় না?
মুসলিম বিশ্বের এই অস্থিতিশীল সময়ে মিল্লাতের ঐক্য যখন অবধারিত, তখন আমাদের মাঝে এমন অনৈক্য কি আদৌ যৌক্তিক?
আমাদের এমন অনৈক্যে বৈশ্বিকভাবে লাভবান হচ্ছে কারা? ভাবনার দোয়ারটা কি একটু খুলবেন?
বিষয়: বিবিধ
১৯০৩ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এখন সাধারণ মানুষ কি এসব ভন্ডদের কাছে আবার ফিরে যাবে নাকি সঠিক পথে আসবে - সেটা আল্লাহই ভাল জানেন ।
স্টার জলসার প্রভাবে কেউ আত্মহত্যা করলে সেটা বন্ধ করার জন্য কোন আওয়াজ আসে না ।
কারণ স্টার জলসা বন্ধ হলে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারে ব্যবসা বসে যাবে আর পিস টিভি চালু থাকলেও ভন্ডদের ব্যবসা পড়ে যাবে ।
আল্লাহ তায়ালাই তার দীনকে সমুজ্জল করে রাখবেন
স্টার জলসা দেখে হাজারজন আত্বহত্যা করলেও কিচ্ছু যায় আসে না। দাদাদের চ্যানেল না!
হ্যা, আমরা মুসলিম জাতি কর্মদোষে অপদস্ত হবো তবে আল্লাহ তার দ্বীনকে আরও সমুজ্বল করবেন।
করতে হবে!! http://www.peacetv.tv/
সব বাতেলী এক যোগে লেগেছে।
উৎসাহ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। লেখার সময় পাই না, তবুও চেষ্টা করি ইনশাআল্লাহ।
আপনার অতি সহজ সরল সাদামাঠা বিচার ও বিশ্লেষন ও সে সাথে উত্থাপিত নিষ্পাপ নিষ্কুলুষ প্রশ্ন সমূহ পড়ে - আমার কাছে মনে হলঃ বাংলাদেশের ঐ সব আলেম ও ওলামা ও নেতৃবৃন্দ ও এই ব্লগের ব্লগাররা অচিরেই আপনার আর একটা লিখা একদিন পড়বে ও কমেন্ট করবে যেখানে আপনি জানতে চাইবেনঃ
- তাহলে কিছু মুসলিম নামধারীর জাকাতের অর্থ আপনাদের মতানুযায়ী ব্যয় না হবার দোহাই দিয়ে কেন জাকাত বন্ধের ফতোয়া দিচ্ছেন? কারণ কী?
- মসজিদ-মাদ্রাসায় যে পরিমান বিদ্যুৎ ও পানি ব্যায় হচ্ছে তা কি দ্বীনের কাজের তুলনায় খুব বেশী?
- সিপিডি প্রথম আলো - দেশে যে কর্মঘন্টা ও ব্যবসা বানিজ্যের ব্যাঘাত হচ্ছে বলে সার্ভে করে দেখালো - তা কি সরকারের রোজা কে অবৈধ ঘোষনার কারনে আসলেই উন্নতি হবে?
মূলতঃ আমরা সবাই ইতোমধ্যে হার্ট ও সোল লেস এক ইসলাম এ নিপতিত হয়েছি এবং তা নার্সিং করছি - দ্যা আলটিমেইট ডিসিভার এখন এই হার্ট ও সোল লেস ইসলামটিকে পশ্চিমা খৃষ্টানীটির আদলে সমাহিত করার দ্বারপ্রান্তে পৌছেছে।
প্রশ্ন হল সেটা কি নিশা দেশাইদের হাতে হবে? না শিব সেনার হাতে?
অচিরেই আপনাকে আমাকে শুনতে হবে - বাংলাদেশী কৃষ্টি কালচার এর সাথে ইসলাম সাংঘর্ষিক - তথাকথিত এ দেশে থাকতে হলে জংগী মতবাদের এই কোরান হাদীস বাদ দিয়ে সিলেক্টেড বাইবেল ভার্সের মত সিলেক্টেড কোরানের ভার্স ভিত্তিক আলাপ আলোচনা হতে হবে, চর্চা হতে হবে। ফুল স্টপ।
"অচিরেই আপনাকে আমাকে শুনতে হবে - বাংলাদেশী কৃষ্টি কালচার এর সাথে ইসলাম সাংঘর্ষিক - তথাকথিত এ দেশে থাকতে হলে জংগী মতবাদের এই কোরান হাদীস বাদ দিয়ে সিলেক্টেড বাইবেল ভার্সের মত সিলেক্টেড কোরানের ভার্স ভিত্তিক আলাপ আলোচনা হতে হবে, চর্চা হতে হবে। ফুল স্টপ।"
যথার্থই বলেছেন! ধন্যবাদ।
আপনার এ কথার সাথে পুরোপুরি একমত নই। ইসলাম আসলে হার্ট এবং সোল লেস হয়েছে আমাদের লাইফ প্রাকটিসে, কিন্তু ইসলাম তার অস্থিত্বে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মুলতঃ আমরা মুসলিম জাতিস্বত্তাটাই সমাহিত হওয়ার পথে। আমরা নামে থাকবো মুসলিম, কিন্তু কার্যতঃ ক্রিশ্চিয়ানিটি। প্রকটিসে থাকবে মুশরিক কৃষ্টি কালচার।
আল্লাহ পাক কোরআনে বলেছেন "ওরা ফুৎকার দিয়ে আল্লাহর নুরকে (দ্বীনকে) নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু ফলশ্রুতিতে আল্লাহ তার নূরকে ( দ্বিনকে) আরও প্রজ্বলিত করেন।
আর সে কাজটা আল্লাহ আনযাম দিবেন কিভাবে?
আমাদের মত মুর্দা মুসলিম দিয়ে? না।
আল্লাহ বলেন-
সূরা হাজ্জ্ব:৪০ - "আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তবে (খ্রীষ্টানদের) নির্জন গির্জা, এবাদত খানা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত, যেগুলাতে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা আল্লাহর সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী শক্তিধর।"
আল্লাহ মানব জাতির কোন এক দল দিয়ে তার দ্বীনের খেদমত করিয়ে নেবেন। হতে পারে তারা নওমুসলিম, অথবা হতে পারে কোন অমুসলিম জনগোষ্টি দিয়ে। যারা আল্লাহকে, আল্লাহর দ্বীনকে সাহায্য করবে; আল্লাহ পাক তাদেরকেই সাহায্য করবেন।
আর এভাবেই আল্লাহ পাক তার দ্বীনকে সমুন্নত করবেন, শুধু বিধ্বস্ত হয়ে যাব আমরা। নিক্ষিপ্ত হবো ইতিহাসের আস্তাকুড়ে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন