মুসাফির নারীদের কাযা নামাযের দায়ভার কে নেবে?

লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত কন্ঠ ০৫ জুলাই, ২০১৬, ০৪:১০:০৪ বিকাল



মুসাফির নারীদের নামাযের দায়ভার কে নেবে?

সারা বছরের কথা না হয় বাদই দিলাম। ঈদের শপিংয়ে অনেক দুর দুরান্ত থেকে লোকজন শহরে আসেন। তাদের মধ্যে প্রচুর নারীও আসেন অভিভাবকের সাথে কিংবা স্বামীর সাথে। এদের মধ্যে ধর্ম কর্ম যারা করে না তাদের ব্যাপারে কোন কথা নেই। কিন্তু যারা দ্বীনদার, পরহেযগার, যারা পর্দার বিধান মেনে অভিভাবকদের সাথে কেনাকাটা করতে আসেন, তাদের শংপিংকালীন নামাযের যে ওয়াক্তগুলো আসে, চাইলেও সেই নামাজগুলো তারা পড়তে পারেন না। পুরুষরা কাছের কোন মসজিদ বা মার্কেটের মসজিদে পড়ে নিতে পারে কিন্তু নারীরা বসে বসে আফসুস করতে হয়। কারন আমরা পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীদের জন্য মসজিদের দোয়ার বন্ধ করে রেখেছি। কারন হিসেবে আমরা ফিৎনার দোহাই দেই।

সিলেট সিটি সেন্টারের একটি অফিসে আমি ৫ বছর চাকুরী করেছি। মার্কেটের ৮ম তলায় বিশাল মসজিদে নারীদের জন্য আলাদা ব্যাবস্থাপনা আছে। পেশাজিবী প্রচুর নারি সেখানে এসে নামাজ পড়েন। কিন্তু কই! কোনদিন তো সেখানে ফিতনা হতে দেখিনি?

এখন প্রশ্ন হল, এলাকায়-পাড়ায় নারীদের জন্য মসজিদের দোয়ার রুদ্ধ করে দিয়েছেন সেটা মেনে নিলাম, তারা না হয় ঘরে পড়ে নিচ্ছে। কিন্তু শপিংয়ে আসা, চিকিৎসায় আসা, এবং আরও বিভিন্ন জরুরী প্রয়োজনে আসা এসব নারীদের কাযা নামাযের দায়ভার কে নেবে? যারা ধর্মীয় জীবনের এই সিস্টেমটাকে তৈরী করেছেন তারা নেবেন? এখানে হয়ত তারা বলবেন নারীরা মার্কেটে, শহরে আসেন কেন? আমি পাল্টা প্রশ্ন করব, নারীরা যদি পর্দার বিধান মেনে এবং ইজ্জত আব্রুর নিরাপত্তা এনসিইউর করে মুহাররিমাতদের সাথে শহরে বন্দরে আসে তাদেরকে আপনি বাধা দিবেন কোন ফতোয়া দিয়ে? কোরআন হাদিস থেকে এমন কোন নির্দেশনা দেখানো যাবে??

বিতর্কিত লেখিকা নাস্তিক তাসলিমা নাসরিন বলেছে- "আমাদের সমাজটা পুরুষতান্ত্রিক, পুরুষরা তাদের প্রয়োজন মতই সমাজটাকে সাজিয়েছে। নারীদের প্রয়োজন বা চাহিদার দিকে নজর দেয়নি।"

আমি বরং আরেকটু আগে বেড়ে বলব, শুধু সমাজ জীবন নয় আমাদের ধর্মীয় জীবনটাকে ও আমরা পুরুষতান্ত্রিক ভাবেই সাজিয়েছি। ধর্ম পালনের আনুষ্ঠানিকতা এবং রীতিনীতি কে আমরা পুরুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে ফেলেছি। ধর্মীয় গবেষনা, রীতি নীতি কিংবা ধর্মের সিস্টেমগুলোকে সমাজে পরিপালনের রুপরেখা তৈরিতে নারীদের কথা আমাদের মনে থাকে না; নারীদের অস্তিত্বটাই আমরা ভুলে যাই। অথচ নামাজ সহ ধর্মীয় বিভিন্ন আরকান জীবনে প্রতিষ্ঠা ও পরিপালন নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই কোরআন কর্তৃক আদিষ্ট।

পরিষেশে একটাই প্রশ্ন, পরিবর্তিত বিশ্বায়ন এবং আধুনিক সমাজ ব্যাবস্থার এ যুগে ধার্মিক মুসলিম নারীরা ঘরের বাইরে গেলে তাদের নামায কায়েমের উপায় কি? এখনও কি ভাবার সময় হয়নি??

এ ব্যাপারে যাদের ভাবা উচিত তারা কি একটু ভাববেন!

বিষয়: বিবিধ

১৫৩০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

374007
০৫ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৪:৩৬
হতভাগা লিখেছেন : নিয়ত যদি থাকে তাহলে সে সেরকম ব্যবস্থা করে নেবে । নামাজ পড়তে চাইলে তাকে দোকানীরাই আইসোলেটেড জায়গা দেখিয়ে দেবে বা জোগাড় করে দেবে ।

কথা হলা মার্কেটে আসা নারীরা নামাজের চেয়েও মার্কেটিং করাকে ফরজ মনে করে ।

আর আমাদের একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে নারীদের কোন ডিসকমফোর্টে পুরুষদের দায়ী করা ইনিয়ে বিনিয়ে ।
০৬ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৫:৪২
310396
মুক্ত কন্ঠ লিখেছেন : আপনি তাৎক্ষনিক ব্যবস্থার পথ দেখালেন। কিন্তু স্থায়ী ব্যবস্থা থাকবে না কেন? আপনার আমার জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা আর নারীদেরর জন্য তাক্ষনিক ব্যবস্থা, এটা কেন? নামাজ কায়েম করার বিষয়টা কি উভয়ের উপর নির্দেশিত হয়নি?
০৮ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৫:৫৬
310461
হতভাগা লিখেছেন : এটা সরকার করবে । সরকার যেমন মহিলাদের জন্য আলাদা কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয় , বাস - এসবের ব্যবস্থা করেছে , কোটা করেছে ; সেরকমভাবে মহিলাদের জন্যও আলাদা মাসজিদের ব্যবস্থা করতে পারে । খুব কি অসম্ভব সেটা যেখানে গত সিকি শতাব্দী ধরে মহিলারাই রাজ করতেছে ।

কি , কোন কনফিডেন্স কি লাগে না যে মহিলারা মহিলাদের কষ্ট দূর করার জন্য এগিয়ে আসবে ? নাকি এখানেও পুরুষদের দোষারোপ করে নিজেরা ধুমসে মার্কেটিং করবে , ইউনিতে বিএফদের নিয়ে ঘোরাফেরা করবে ?
374061
০৬ জুলাই ২০১৬ রাত ০৩:৫০
শেখের পোলা লিখেছেন : কর্তৃ পক্ষের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিৎ। সব মসজিদেই ব্যবস্থা থাকা দরকার। আর এ বিষয়টিতে মুসলীম নারীদেরও সোচ্চার হওয়া উচিৎ।
০৬ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৫:৪৬
310398
মুক্ত কন্ঠ লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ বিষয়টি অনুধাবন করার জন্য। হ্যা, ঠিক বলেছেন। আর এ জন্য সামাজিক সচেতনতাও জরুরী।

ধন্যবাদ!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File