বিশ্ব নেতাদের প্রতি খোলা চিঠি

লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত কন্ঠ ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১২:৪৫:৪৫ দুপুর



(তুরষ্কের সৈকতে ভেসে আসা একটি শিশুর মৃতদেহ। ছবিটিপের অভিবাসী সংকটকে যে রকম তীব্রভাবে তুলে ধরেছে তা কোন ভাষায় ফুটিয়ে তোলা সম্ভব নয়)

অভিবাসী সঙ্কটের এই প্রেক্ষাপেটে ইউরোপের নেতাদের প্রতি একটি খোলা চিঠি লেখা হয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট-এর সহযোগী মাধ্যম আই হানড্রেড (i100) এর তরফ থেকে। ইউরোপের যেসব নেতা অভিবাসনবিরোধী বিভিন্ন সময় কথাবার্তা বলেছেন, তাদেরকে জবাব দিতেই এই স্টোরি।

চিঠিটি প্রিয় পাঠকদের জন্য সরাসরি অনুবাদ করা হলো।

প্রিয় ডেভিড ক্যামেরন, থেরেসা মে, জার্মানির অভিবাসন বিরোধী বিক্ষোভকারী, কেটি হপকিন্স, ফিলিপ হ্যামন্ড, মেইল অনলাইনের প্রতিবেদনের নিচে অভিবাসীদের নিয়ে অমর্যাদাকর মন্তব্যকারীরা, হা্েগরির পুলিশ, বুলগেরিয়ার সরকার, চেক রিপাবলিক, এস্তোনিয়া, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, বৃটেন, টনি অ্যাবোট এবং টুইটারে সমালোচনাকারীরা:

গত বেশ কয়েকসপ্তাহ ধরে মানুষের মধ্যে অভিবাসী ও শরণার্থী বিরোধী প্রবণতা তৈরীর জন্য আপনারা দায়ী। আপনাদের অনেকেই অভিবাসীদের নিয়ে কথা বলার সময় অমর্যাদাকর, অবমাননাকর ও অমানবিক ভাষা ব্যবহার করেছেন।

আপনাদের অনেকে অভিবাসী প্রত্যাশীদের ইউরোপে প্রবেশের প্রবণতা নিয়ে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। অনেকে অভিবাসীদের ইউরোপমুখী ট্রেন থেকে নামিয়ে দিয়ে তাদের হাতে অভিবাসী চিহ্নস্বরুপ নম্বর এঁকে দিয়েছেন। অনেকে অভিবাসীদের ঠেকাতে দেয়াল তুলে দিয়েছেন।



যেকোনভাবেই হোক, আপনারা মানবিকদৃষ্টিভঙ্গি হারিয়ে ফেলেছেন। আপনাদের মতই কিছু মানুষ যে একটু সাহায্যের তীব্র আশায় দিনাতিপাত করছে, জীবন মরনের কথা ভুলে গিয়ে, চিরপরিচিত ভিটাবাড়ি ছেড়ে শুধু একটু নিশ্চিত জীবনের আশায় অতি বিপজ্জনক ইউরোপ যাত্রা করছে, তা আপনারা দেখেও দেখছেন না।

যেকোন কারণেই হোক আপনারা আর শরণার্থীদের দিকে লক্ষ্য রাখছেন না। যেভাবেই হোক, এরা আজ শারণার্থী। আর আপনারা তাদের নৈতিক এবং আইনগত অধিকারকে পর্যন্ত অস্বীকার করে যাচ্ছেন।

কিন্তু এর অবসান হওয়া দরকার। দেরি না করে এখনই এসবের যবনিকা টানা উচিত। কারণ, এসব অভিবাসীরা হাজারে হাজারে মরছে; কারণ, মানবাধিকার রক্ষায় ইউরোপের অগ্রযাত্রার সুনাম আজ ক্ষুন্ন হতে চলেছে; কারণ, আপনারা যদি এখনই এসব বন্ধে পদক্ষেপ না নেন, তাহলে এসব জীবন বিপন্নের জন্য আজীবন আপনাদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

এটার অবসান হওয়া দরকার, কারণ মৃত অভিবাসী শিশুদের লাশ ইউরোপের সমুদ্র সৈকতেই ভেসে আসছে।

বুধবার ’দ্য ইনডিপেনডেন্ট’ তুরষ্কের সৈকতে ভেসে আসা একটি শিশুর মৃতদেহের ছবি প্রকাশ করেছে। লাল রঙের টি-শার্ট ও হাফপ্যান্ট পরা শিশুটির মৃতদেহের ছবি দেখে চোখ ভিজেছে বিশ্ববাসীর। যদি এ ছবিটিও আপনাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে না পারে, তাহলে আর কি পারবে?



যথেষ্ট হয়েছে। মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতেই হবে। মানুষগুলোার দিকে মানবিক দৃষ্টিতে তাকান। মানুষের জীবনের চেয়ে কোন হুমকিকেই বড় করে দেখবেন না। মানুষের জীবনের উপর অার কিছু নেই।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এখন এ শরণার্থী সমস্যাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। এ সমস্যা আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। অসহায় এ মানুষগুলোকে সাহায্য করার এটাই সময়।

আই হানড্রেড

বিষয়: বিবিধ

১৫১৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

339557
০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:২৭
শিকারিমন লিখেছেন : ইউরোপ আমেরিকার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি কে প্রশ্ন করার আগে এই মানুষ গুলো কাদের জন্য দেশ থেকে পালাচ্ছে তাদের মানবিকতা এবং ধর্মীয় দায়িত্বের দায় কতটুকু ভাবা উচিত।
339597
০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৫
হতভাগা লিখেছেন : বিশ্বনেতাদের তৈরি করা মানবিক বিপর্যয়ের ভিকটিম আইলানরা ।

নিজেদের ধান্ধাবাজি থেমে যেতে পারে এরকম কাজ এরা কখনই করতে যাবে না ।
339613
০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫৭
অপি বাইদান লিখেছেন : এত কিছুর পরও দাঙ্গাবাজ মুমিনরা মানুষ হবে না। পাছে, আবডালে ইহুদী-নাসারার দোষ খুঁজবেই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File