এমন যদি হত!
লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত কন্ঠ ১৫ জুলাই, ২০১৫, ০১:৫৩:৫২ দুপুর
স্থানঃ জাতীয় মাসজিদ বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেট
দিনঃ জুম'আ।
সময়ঃ জুম'আর সালাতের পর।
.
.
.
প্রায় হাজার দশেক লোকের সামনে পুলিশের গাড়ি থেকে নামানো হলো ৪ তরুণকে। এরা খুনের দায়ে অভিযুক্ত। তুচ্ছ কারণে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে শেখ সামিউল আলম রাজন নামের ১৩ বছরের একটি ছেলেকে। সন্দেহাতীতভাবে খুনী হিসেবে প্রমানিত ৪ তরুণের পক্ষ থেকে রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান এর কাছে শেষবারের মতো ক্ষমা চাওয়া হলো।
.
শেখ আজিজুর রহমান চোয়াল শক্ত করে ক্ষমার কিংবা রক্তপণ আদায়ের দাবী নাকচ করে দিলেন। হাঁটু ভাঁজ করে খুনী ৪ তরুণকে কিছুটা দুরত্বে বসানো হলো। মাথায় পরিয়ে দেয়া হলো কালো টুপি। লম্বা তরবারী হাতে শক্ত শরীরের একজন হেঁটে গিয়ে দাঁড়ালেন খুনীদের পেছনে। দুপুরের রোদে চিকচিক করছে মানুষটির তরবারী।
.
সব মিলিয়ে মিনিট পাঁচেকের কারবার। ৪ খুনীর কাটা মাথা রাস্তার কালো পিচের ওপরে গড়াগড়ি খাচ্ছে। প্রাণহীন ৪ টি শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে অদূরেই।
.
.
কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিষ্কার করে ফেলা হলো জায়গাটিকে। এরপর ক্বিসাস এর হদ হিসেবে শিরচ্ছেদ করা হলো ময়মনসিংহ শহরের অতুল চক্রবর্তী রোডে ব্যবসায়ী শামীম তালুকদার ও তার সহযোগীদের। টাকা না দিয়ে কাপড় দিয়ে যাকাত দেয়ার সময়ে শামীম সাহেবের নূরানী জর্দা কারখানায় হুড়োহুড়িতে মারা যায় ২৭ জন নিরীহ প্রাণ।
.
.
তারও কিছুক্ষণ পরে উপস্থিত সবার সামনে হাজির করা হলো আরো ৫ তরুণকে। এরা সবাই অভিন্ন অভিযোগে সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত অভিযুক্ত। কয়েক দিন আগে রাজধানীতে এক গারো তরুণীকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে দেড় ঘণ্টা ধরে চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণ করেছে এই ৫ যুবক।
.
কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে ফেলা হলো তাদের আগে। তারপর বৃষ্টির মতো পাথর বর্ষিত হলো নরাধম পশুগুলোর উপর। ১০ মিনিট লাগলো পাষন্ডগুলোর মৃত্যু নিশ্চিত হতে।
.
.
হাজার দশেক মানুষ তিনটি ঘটনার শাস্তি দেবার স্মৃতি মননে-মগজে ধারণ করে বাসায় ফিরে গেল। নিজেদের জন্য কিছুটা শিক্ষাও নিয়ে গেলেন তাঁরা নিশ্চিত।
.
.
পাদটীকাঃ
বুঝতেই পারছেন – উপরের ঘটনাগুলো পুরোপুরি কল্পিত। ইসলামী শরীয়াহ কার্যকর নেই আমাদের দেশে। যদি থাকতো – চিত্রায়ণ খুব বেশী পাল্টে যেত না – এইটুকু অন্তত বলতে পারি।
.
"ইসলামিক শরীয়াহ" শুনলেই আমাদের যাঁদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে, যাঁদের কাছে পুরো বিষয়টিকেই "মধ্যযুগীয় বর্বরতা" মনে হয়, তাঁদের প্রতি বিনম্র অনুরোধ – একটু ভেবে দেখবেন দৃষ্টান্তমূলক এই শাস্তিগুলোর দীর্ঘস্থায়ী কার্যকারিতা নিয়ে। এরকম একটি "মধ্যযুগীয় বর্বরতা" পুরো দেশে আরো কয়শত "আদিম যুগীয় বর্বরতা"র চিন্তাকে অচেনা (অ)মানুষদের অন্ধকার মনের কোন থেকে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করবে – সেই দিকটাও একটু লক্ষ্য করবেন আশা করি।
.
.
আর সব শেষে যদি সম্ভব হয় – নিজেকে একবারের জন্য কুকুর-বিড়ালের মতো পিটিয়ে মেরে ফেলা কিশোর রাজনের বাবা, কিংবা পদদলিত হয়ে প্রাণ হারানো শিশুর বাবা/মা অথবা ধর্ষিতা গারো তরুণীর দুর্ভাগা বাবার চরিত্রে নিজেদের কল্পনা করার সবিনয় অনুরোধ থাকলো।
.
আপনার "অতিশয় সুশীল মানবতা বোধ" কোন মনুষত্ব্যের সুতোর গায়ে আটকে গেলে দুর্ভাগা পরিবারগুলোর সাথে ৫ মিনিট কথা বলেও দেখতে পারেন বৈ কি!
:
:
লেখক,
প্রিয় "মুহাম্মাদ জাভেদ কায়সার" ভাই।
:
:
উপরের বিষয়গুলো যদি বাস্তব হতো,
সত্যিকরে বলুনতো, তাহলে কেমন হতো!?
বিষয়: বিবিধ
১০১৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন