চারিত্রিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের নেপথ্যে..... (পর্ব ২)
লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত কন্ঠ ৩০ মে, ২০১৫, ০৯:০৫:২২ রাত
(সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষন যেন এক মহামারির রুপ ধারণ করেছে। বাসে ধর্ষন, ট্রেনে ধর্ষন, ট্রাকে ধর্ষন, মাইক্রোবাসে গনধর্ষন, শহরে ধর্ষন, গ্রামে ধর্ষন, আত্বীয় স্বজনকে বেধে তাদের সামনেই ধর্ষন। শিশু থেকে শুরু করে বিবাহিত যুবতী মেয়েরাও রেহাই পাচ্ছে না এসব থেকে। পাবলিক ইভেন্ট বা প্রোগ্রামেও চলছে এ বন্যতার জোয়ার। কলংকময় সেই থার্টি ফার্স্ট নাইটের কথা বাদ দিলেও হালের একুশে বই মেলা এবং সর্বশেষ গত পহেলা বৈশাখে TSC সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় মেয়েদের বস্ত্রহরণ, শ্লিলতাহানি ও উত্যক্তের মত চরম ঘৃনিত ও লজ্জাজনক ঘটনা ম্যাসিভ আকার ধারণ করেছে। এমন চারিত্রিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের নেপথ্যে কোন কোন বিষয় ইন্ধন যোগাচ্ছে? আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে তার একটি এনালাইসিস-)
২) মুক্ত অনলাইন বা অবাধ ইন্টারনেট: ICT বা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে একদম সহজ করে দিয়েছে, এর কল্যানে দেশ মহাদেশ এমনকি পুরো পৃথিবীটাই এখন আমাদের হাতের মুঠোয়। পুরো পৃথিবীটাই একটি গ্লোবাল ভিলেজ। কিন্তু এই যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রধান মাধ্যম 'ইন্টারনেট' আমাদের সমাজের নৈতিক এবং চারিত্রিক বিপর্যয়ের পিছনে একটি অন্যতম মুখ্য ভুমিকা রাখছে। কমার্শিয়াল পারপাস ছাড়া সমাজের একটি অংশ যদিও এ মাধ্যমটিকে জ্ঞান আহরন এবং দাওয়াত ইলাল্লাহ'র কাজে ব্যবহার করছে কিন্তু তারচেয়েও বিরাট অংশ এ মাধ্যমটির কারনে নেতিবাচক পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে যুবসমাজ।
মানুষের ভিতরের সুপ্রবৃত্তি এবং কুপ্রবৃত্তি পাশাপাশি বিরাজমান। সাধারনতঃ মানুষকে তার সুপ্রবৃত্তিই পরিচালনা করে। কেবল অনুকুল পরিস্থিতি এবং পরিবেশই কুপ্রবৃত্তিকে উসকে দেয় এবং সে দিকে ধাবিত করে। আর কু প্রবৃত্তিকে উসকে দেয়ার জন্য যত ম্যাটেরিয়েল প্রয়োজন তার সবই এখন হাতের মুঠোয়। কম্পিউটার, স্মার্টফোন তো আছেই, বারো পনেরো শত টাকার প্রায় সব মুঠোফোনেও এখন ভিডিও প্লে ব্যাক এবং ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি থাকে। যার কল্যানে মানুষ যখন যেখানে ইচ্ছা মোবাইলের মাধ্যমে নির্বিঘ্নে চলে যাচ্ছে ভার্চুয়াল জগতের অন্ধকার গলিগুলোতে। যেখানে সম্পুর্ণ ফ্রি তে ঘুরে আসা যাচ্ছে পর্ণ জগত। ইংরেজি ৩ অক্ষরের ঐ ভিডিও সার্চ দিলে ইয়াহু এর সার্চ ইঞ্জিনের রিজাল্টে প্রায় ৮৭ কোটি লিংক চলে আসে। যেগুলোর কোন একটির পথ ধরে হাটলেই চলে যাওয়া যায় সেই চরিত্র বিদ্বংসী স্বর্গে।
আমাদের এশিয়া মহাদেশেরই কিছু দেশ যখন অবাধ ইন্টারনেট 'সার্ফ' বা 'ব্রাউজিং' এর লাগাম টেনে ধরছে। পর্নোগ্রাফি সাইটগুলোকে রিস্ট্রিকটেড করছে, আমরা তখন ইন্টারনেটকে দিন দিন অবাধ করে দিচ্ছি। 3G প্রযুক্তির কারণে এখন কাজটি আরও সহজতর হয়েছে। ইন্টারনেট প্রযুক্তি আরও উন্নত হোক, আরও গতিশিল হোক তা আমরা সকলেই চাই। কিন্তু সরকারের উচিত হবে টেলিকম রেগুলেটরির মাধ্যমে পর্ন সাইটগুলোকে ব্লক করে দেয়া। এটা করলে যদিও অবধারিতভাবেই ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের বিরাট সংখ্যার প্রফিট কমে যাবে, যার কারণে সরকার বড় একটি রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে। কিন্তু সরকারকে এটাও ভাবতে হবে, এই প্রযুক্তিকে অবাধ করে রাখার ফলে দেশে যে ক্রাইম হচ্ছে, সামাজিকভাবে আইন শৃঙ্খলার যে অবনতি হচ্ছে সে তুলনায় ঐ রাজস্ব আয় মোঠেও বেশি নয়। রাষ্ট্র ব্যবস্থাতো তৈরি হয়েছে জনগনের কল্যানের জন্যই।
চলবে.....
বিষয়: বিবিধ
১১৭৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন