মাস্টারবেশনের মনোদৈহিক ক্ষতিকর প্রভাব
লিখেছেন লিখেছেন মুক্ত কন্ঠ ০৪ অক্টোবর, ২০১৪, ০৪:৪৫:৪১ বিকাল
মাস্টারবেশনের মনোদৈহিক ক্ষতিকর প্রভাব
-------------------------------------
মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুন এমন একটি বাজে অভ্যাস যা বিশ্ব ব্যাপি বিপুল সংখ্যক মানুষের মধ্যে চর্চা হয়ে থাকে। বিশেষ করে উটতি বয়সি ছেলে এবং তরুনদের মধ্যে এটা সাংঘাতিক হারে প্রাকটিস্ড। এবং এটা এখন তাদের জীবন প্রবাহটাকেই দূষিত করে তুলছে। তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক নিজ বন্ধুদের কাছ থেকে ভূল তথ্য পেয়ে এই কাজে উৎসাহী হচ্ছে। সেক্স সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং হস্তমৈথুনে অতি মাত্রার নেশা যুবক তরুনদের মধ্যে এই চর্চার কারন হিসেবে অনেকাংশেই দায়ী। তারা মনে করে, সেক্সুয়াল হেল্থ ও পেনিস এনলার্জমেন্টের জন্য হস্তমৈথুন ভাল। কিছু মানুষ এই ভুল তথ্যের শিকার যে, এই অভ্যাস যৌন জিবনের একটি প্রয়োজনীয় বিষয়। আবার কিছু মানুষ এটার প্রতি এডিক্ট হওয়ার কারনে করে থাকে।
সঠিক তথ্যের শেয়ারিং এবং পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমাদের আত্ননিয়ন্ত্রন করতে হবে এই বদ অভ্যাস থেকে পরিত্রান পেতে হলে। এই অভ্যাসের আত্বঘাতি প্রভাব পরিলক্ষিত হওয়ার আগেই বিশেষ করে তরুনদেরকে তাদের এ হ্যাবিট বদলাতে হবে। এটা খুবই জরুরী। ইন্টারনেট জগতে পর্ন্ ভিডিওতো আছেই, পাশাপাশি নিজেদের কমার্শিয়াল স্বার্থে যেভাবে প্রকাশ্যে যৌন সুড়সুড়ি মুলক প্রদর্শনী ও সেক্স টয়স এর বিজ্ঞাপন মিডিয়া ও এ্যাডভারটাইজমেন্টের মাঝে বিস্তার ঘটছে তাতে আমাদেরকেও নিজের ভাল মন্দের বিচার করতে হবে চোঁখ কান খোলা রেখে। এমন সব হ্যাবিটের দিক থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে হবে যা আমাদের নিজ জীবনকেই ধ্বংস করে দেয়।
প্রত্যেকেই একজন ভাল জিবনসঙ্গী বা স্ত্রী'র আশা করতেই পারি, যে একজন বৈধ যৌন সঙ্গিও বটে। যার সাথে নিজ যৌন চাহিদাকেও ইনজয় করতে পারব। সে পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করতেই পারি এই নস্ট হ্যাবিটের জীবন বিধ্বংসি থাবা থেকে নিজেকে বাচাতে।
নিম্নে হস্তমৈথুনের মারাত্বক কিছু বিনাশী প্রভাব তুলে ধরা হল, দয়া করে পড়ুন এবং অভ্যাস থাকলে এই হ্যাবিট থেকে ফিরে আসুন।:-
১: হস্তমৈথুন দেহকে দুর্বল করে দেয়, এতে শক্তির ক্ষয় হয় এবং ক্যালরিকে জালিয়ে দেয়।
২: হস্তমৈথুন নার্ভাসনেস ও নিওরোজিকেল সমস্যা তৈরি করে।
৩: হস্তমৈথুন 'ইরেকটাইল ডিজফাংশন' বা লিঙ্গ উত্থান সমস্যার পেছনে প্রধানতঃ দায়ি। কারন, হস্তমৈথুনের কারনে পেনাইল টিস্যুগুলো ধিরে ধিরে ডেমেজ হতে থাকে। এতে পেনিসের ভেতর 'ব্লাড ফ্লো' বা রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়। পরিনতিতে লিঙ্গোত্থান সমস্যা দেখা দেয়।
৪: কেউ যদি এমনকি একবারও হস্তমৈথুনের স্বাদ গ্রহন করে তবে এই কাজে সে পুরোপুরি আসক্ত হয়ে পড়ে। এই আসক্তি থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে উঠে।
৫: হস্তমৈথুন তন্দ্রাচ্ছন্নতার সৃস্টি করে। বীর্য নির্গত হওয়ার পর বেশির ভাগ সময় ঘুমাতে হয়। তখন খুবই ক্লান্ত মনে হয়।
৬: হস্তমৈথুন দেহ মনে ধকল ও পীড়ন এবং বিপর্যয়ের সৃস্টি করে।
৮: হস্তমৈথুন মনোবৃত্তিতে প্রভাব ফেলে। ইজাকুলেশন বা বীর্য নির্গত হওয়ার পর এটা ডিপ্রেশনে ভোগায়। মানুষ নিজের উপর নিজেই হীনমন্য হয়ে উঠে।
৮: হস্তমৈথুন সহজ কোন বিষয় নয়। এটার জন্য বিপরীত লিঙ্গের দিকে (জিবন্ত অথবা ছবি, ভিডিও) তাকাতে হয়, স্পর্শ করতে হয়। অন্ততঃ সেক্সুয়াল প্রাকটিস/বিপরীত লিঙ্গের যৌনাঙ্গের কল্পনা করতে হয়। এটা আপনাকে মেয়েদের দিকে কামুক দৃষ্টিতে তাকাতেই উৎসাহ যোগায়। একসময় এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি হয় যে, পর্ণ মিডিয়া দেখা বা কল্পনা ছাড়া উত্তেজনার সৃষ্টি হয়না। এমনকি ইন্টারকোর্স করতে গিয়ে স্ত্রীর শরীরের তাপ কিংবা নগ্ন দেহও কোন পরিবর্তন ঘটাতে পারে না।
১০: হস্তমৈথুনের অভ্যাস এমন মানসিকতার সৃস্টি করে যে, স্থান, কাল, পাত্র কিংবা পরিস্থিতি কোনকিছুরই পরোয়া করে না। তাৎক্ষনিকই এটা করে ফেলতে বাধ্য করে।
১১: হস্তমৈথুন সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্সের সময় দ্রুত বীর্য নির্গত হওয়ার প্রধান কারণ। এটা স্বামী স্ত্রী র মধ্যে অতৃপ্তির সৃষ্টি করে।
১২: হস্তমৈথুনের কারণে বীর্যে স্পার্মের সংখ্যা কমে যায়। এটা প্রেগনেন্সির জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাড়ায়। চাইলেও গর্ভধারন সম্ভব হয়না।
১৩: হস্তমৈথুনের সময় যে 'সেমিনাল ফ্লুইড' নির্গত হয় তা প্রোটিন সমৃদ্ধ; যা অনেক মেটাবলিক কাজ ও সেল ফর্মেশনের জন্য প্রয়োজনীয়। প্রোটিন হল দেহের বিল্ডিং ব্লক। এর অভাবে দেহের মাংসপেশি বিলীন হয়ে যায়।
১৪: হস্তমৈথুনের সুখানুভূতি ক্ষনিকের। ইজাকুলেশনের পর মুহুর্তেই এই সুখ বা আনন্দ উবে যায়।
১৫: হস্তমৈথুন স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাশক্তিকে ভোতা করে দেয়। এটা দৃষ্টিশক্তি হ্রাসেরও একটি কারণ।
১৬: হস্তমৈথুন আপনার কাঙ্খিত সুখ দিতে পারে না এবং এটা কামতৃষ্ণার সমাধানও নয়।
১৭: যারা এ কাজে অভ্যস্থ তারা খুব দ্রুত স্ত্রী সংগমের আগ্রহ হারায়। তারা ইন্টারকোর্সের মত সময়বহুল ও কষ্টকর কাজের প্রয়োজন অনুভব করে না।
১৮: হস্তমৈথুন স্কুল কলেজ কিংবা হোস্টেলে সমকামীতায় প্ররোচিত করে। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে যৌনবাহী ডিজিজ যেমন VD, syphilis, HIV AIDS দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার ঝুকি সৃষ্টি করে।
বিষয়: বিবিধ
২০৮৫ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইসলামী স্কলারদের উল্লেখযোগ্য অংশ এটিকে শর্তসাপেক্ষে বৈধ বলেছেন, কেউ কেউ শর্ত ছাড়াই বৈধ বলেছেন!
আর তাই এবিষয়ে আমি পক্ষে/বিপক্ষে কোন মন্তব্যই করছি না!
স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের যেসব তথ্য দেয়া হয়েছে তার সবগুলো বিতর্কমুক্ত নয়!
ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা ছাড়া এসবের বিস্তার ও কুফল রোধ করা অসম্ভব!
অথচ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ঐদুটি বিষয়কে বিতাড়ন বা পঙ্গু করার প্রক্রিয়া সরকারীভাবেই করা হচ্ছে!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
ঈদের শুভেচ্ছা- কুরবানী ও ঈদ মোবারক
ত্যাগের আলোয় ব্যক্তি ও সমাজ জীবন আলোকিত হোক
তথ্যগুলো কতটুকু বিতর্কিত বা বিতর্কমুক্ত সেটা ভিন্ন বিষয়, কিন্তু আমার নিজের ক্ষেত্রে প্রামান্য।
"ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা ছাড়া এসবের বিস্তার ও কুফল রোধ করা অসম্ভব!"
আপনার সাথে একমত। ধন্যবাদ!!
আমিও সহমত জ্ঞাপন করলাম।
'ফিরে আসা সম্ভব নয়।' কথাটার সাথে একমত হলেন। এটাকেওতো গোপন বিষয় বলতে পারি? নয় কি??
আমিও সহমত জ্ঞাপন করলাম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন