যুক্তির ও বিবেকের রায় স্রষ্টার পূর্ণ দাসত্ব করা ছাড়া জীবন সুন্দর হওয়া সম্ভব নয় ।
লিখেছেন লিখেছেন জাকির হোসাইন আজামী ২৮ আগস্ট, ২০১৩, ০৮:৪২:২৯ রাত
== আল্লাহ্ তার সকল সৃষ্টিরাজীর জন্য দুই ধরনের আইন তৈরী করেছেন । একটি আইন মানুষ ও জিনের জন্য । আর অন্যটি বাকী সব সৃষ্টির জন্য । মানুষ ও জিনের জন্য তৈরী আইনটি কয়েকটি মাধ্যমে তাদেরকে জানিয়েছেন ।
এক ঃ সৃষ্টিগতভাবে ভাল - মন্দের যে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তার মাধ্যমে ।
দুই ঃ নবী ও রাসূলদের মাধ্যমে ।
তিন ঃ আসমানী গ্রন্থরাজির মাধ্যমে ।
মানুষ ও জিনকে এসব আইন মানতে তিনি বাধ্য করেননি । মানা- না মানার পূর্ণ সুযোগ ও স্বাধীনতা তাকে দেয়া হয়েছে । চাইলে মানতেও পারে , আবার চাইলে অবাধ্যও হতে পারে । কিন্তু বলা হয়েছে -মানলে এপার ওপার দু- পারেই সে কল্যাণময় জীবন লাভ করবে । অন্যথায় দু কুলেই সে দূর্ভাগ্যবানদের কাতারে শামিল হবে । আর অপর আইনটি সৃষ্টিজগতের উপর আল্লাহ নিজেই জারী করে দেন । এ আইন তামাম সৃষ্টিকুল (মানুষ ও জিন ছাড়া ) মানতে বাধ্য । কিন্তু তারা স্বেচ্ছায়ই পূর্ণ রুপে তা মেনে চলছে ।
== মানুষ আবহমান কাল থেকেই সুখ- শান্তির কাঙাল । কিন্তু শান্তি যে পথে আসতে পারে সে পথটি সে সব সময় গ্রহণ করেনি । যার ফলে বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে বার বার মানব সমাজকে ভেঙ্গে চুরে খান খান করে দিয়েছে । অশান্তি অক্টোপাসের মত জড়িয়ে ধরেছে মনুষ্য সমাজকে ।
শান্তির একটিই মাত্র পথ - তাহল জীবনের সব ক্ষেত্রে আপন স্রষ্টার আইন মেনে চলা । এর কোন বিকল্প নেই - হতেই পারেনা । যে বা যারাই এ পথটি বাদ দিয়ে ভিন্ন পথে শান্তি তালাশ করবে , তাদের জন্য অবশ্যম্ভাবীরুপে সেই পরিণতিই অপেক্ষা করবে যা আগুনকে খেলনা মনে করে হাত দিয়ে ধরলে হয় ।
= চাঁদ সুন্দর কেন ? সে আল্লাহ্র আইন মানছে বলেই । সূর্য উপকারী কেন ? সে আল্লাহ্র আইন মানছে বলেই । নদী সুন্দর কেন ? সে আল্লাহ্র আইন মানছে তাই । এভাবে তামাম সৃষ্টিজগত আমাদের জন্য উপকারি ও সুন্দর কেন ? একটিই মাত্র সঠিক জবাব - তাহল , তারা সবাই আপন স্রষ্টার আইন মানছে তাই তারা সুন্দর ও উপকারী । এখন চাঁদ যদি রাতের বেলায় উদয় না হয়ে কেবল দিনেই উদয় হয় । সূর্য যদি উদয় হয়ে তার প্রখরতা ছেড়ে দিয়ে আর অস্ত না যায় , নদী যদি তার বুকের নির্দিষ্ট জায়গায় পানি ধরে না রেখে আশপাশ সব প্লাবিত করে দেয় - তাহলে এর একটিও কি আমাদের জন্য উপকারী ও সুন্দর হবে না কেবল বিপদই হবে ? সন্দেহাতীত ভাবে বিপদ হবে । সুতরাং মানব জীবনও এর থেকে ভিন্ন কিছু নয় ।
এটি বিবেক ও যুক্তির রায় ।
আরেকটি রায় পেশ করছি ঃ
আল্লাহ্ মানুষকে সৃষ্টিগতভাবেই ভাল - মন্দের জ্ঞান বা বোধ দান করেছেন । যেমন - কোন সর্বোচ্চ সিক্ষিত মানুষকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় যে চুরি করা , মিথ্যে বলা , ওজনে কম দেয়া , মানুষকে ধোকা দেয়া কেমন কাজ ? সে বলবে এগুলো খারাপ কাজ । অথবা যদি বলা হয় - নামাজ পড়া , সত্য কথা বলা , মানুষকে উপকার করা কেমন কাজ ? সে বলবে অবশ্যই ভাল কাজ । এই একি প্রশ্ন যদি অক্ষরজ্ঞানহীন একজন মূর্খ মানুষকেও করা হয় , তাহলে সেও ঠিক অনুরূপ জবাব দিবে । এখন কথা হল , এইযে ভালকে ভাল এবং মন্দকে মন্দ বলে স্বীকার করা হল - এর দাবী কী ? আল্লাহ্ তায়ালা কেন মানুষকে এই শক্তি দিলেন ? এর দাবী হচ্ছে সত্য ও সুন্দরের পথে চলা - তথা আল্লাহ্র দাসত্ব করা -যা জীবনকে সুন্দর ও স্বার্থক করে দেয় ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৪৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন