যালিম আর পাপিষ্ঠদের রোষানলে আল্লামা সাঈদী

লিখেছেন লিখেছেন জাকির হোসাইন আজামী ০২ জুলাই, ২০১৩, ০১:৫০:৪৫ রাত



[img]http://www.bdtomorrow.net/blog/bloggeruploadedimage/zaberbinzakir/13727080

আল্লামা সাঈদী ।একটি নাম । একটি চলমান ইতিহাস । সত্য প্রতিষ্ঠার একটি আন্দোলন । সত্যের পথে চলবার প্রেরণার একটি জীবন্ত উৎস । মিত্যার বিরুদ্ধে একটি বজ্রকন্ঠ । অধিকারহারা মানুষদের অধিকার ফিরিয়ে দেবার আন্দোলনের এক অগ্রনায়ক ।

= আমার বয়স তখন আট বা নয় । আমার পাশের থানায় এক প্রতিষ্ঠিত দরবারে বাৎসরিক মাহফিল হয় । হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয় এতে । শুনলাম মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী নামে একজন ভাল বক্তা আসবেন । বড় ভাইদের সাথে যাওয়ার বায়না ধরলাম । তারা আমাকে নিতে কিছুতেই রাজিনা , কারণ - এতো মানুষের মাঝে আমি হারিয়ে যেতে পারি । আমি তো নাছোড় বান্দা । শেষ পর্যন্তু যাবার সুযোগ হল ।

সেদিনের আলোচনা আমার ছোট্ট হৃদয়ে যে প্রভাব বিস্তার করে ছিল তা আজও আমাকে দোলা দেয় ।

= আল্লামা সাঈদী কি ভাগ্যবান !

কুরানের জ্ঞান দ্বারা আল্লাহ্‌ তাকে সজ্জিত করেছেন । দিয়েছেন অসাধারন এক কণ্ঠ । মানুষকে কুরান দিয়ে সহজভাবে বুঝাবার এক চমৎকার যোগ্যতা আল্লাহ্‌ তাকে দিয়েছেন । মাতৃভাষার প্রশংসনীয় দখল দিয়েছেন আল্লাহ্‌ তাকে । সমকালীন জ্ঞান - বিজ্ঞানের পাতায় পাতায় অনুসন্ধানী মন নিয়ে বিচরণ করবার তাওফীক্ব লাভ করেছেন । আর এই সম্পদ দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদকে আলোকিত করে চলে গেছেন পৃথিবীর আনাচেকানাচে । মিত্যার অন্ধকার থেকে সত্যের নির্মল আলোতে নিয়ে আসার এই নিঃস্বার্থ চেষ্টা চলেছে বিরামহীনভাবে অর্ধশতাব্দী কাল ধরে । পেয়েছে অগণিত বনী আদম সত্যের দিশা । হাজার হাজার যুবক জীবনের সঠিক অর্থ বুঝতে পেরে শামিল হয়েছে সত্য প্রতিষ্ঠার মিছিলে । অসংখ্য যুবক সন্ত্রাসের মতো ভয়ঙ্কর পথ পরিহার করে শুধুমাত্র আল্লাহ্‌র জন্য জীবন দেয়ার সৌভাগ্যের পথ গ্রহণ করেছে । সুদের মতো বিষাক্ত সাপের ব্যবসা করে যারা অসহায় মানুষদেরকে দিনরাত যন্ত্রনা দিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিল , তাদের বিরাট সংখ্যক এই পথ থেকে তাওবা করে ফিরে এসে ইসলামী অর্থনীতির সার্বজনীন কল্যাণময় কাজে আত্ননিয়োগ করেছেন । ঘুসকে যারা নিজেদের পাওনা মনে করে দুই হাতে গ্রহণ করে পেট পূজার জীবনযাপন করে গর্ব অনুভব করেছে, তারা এই জঘন্য পথ ঘৃনা ভরে প্রত্যাখান করে অল্পে তুষ্টির জীবনকে বেছে নিয়েছে । এভাবে অসংখ্য মানুষ মিত্যার অভিশপ্ত জীবন থেকে সত্যের চির কল্যাণময় পথে ফিরে এসেছে এই আল্লামা সাঈদীর আহবানে ।

=আল্লামা সাঈদীর দোষঃ

তার দোষ হচ্ছে - তিনি কেন ইসলামকে পুর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করবার জন্য মানুষকে আহবান করেন এবং কেন মিত্যার পতাকাবাহীদের অপকর্ম গুলো মানুষের কাছে বলে দেন !

== হে আমাদের প্রিয় সাঈদী ,

আপনি আমাদের প্রিয় দ্বীনি ভাই এবং প্রিয় পথ প্রদর্শক । আপনার সাথে আমাদের সমপর্ক ঈমানের । আমরা আপনাকে ভালবাসি হৃদয়ের গভীরে থাকা ভালবাসার নির্জাসটুকু দিয়ে । আপনি আজ কারাভ্যন্তরে ফাঁসির হুকুম মাথায় নিয়ে নিঃসঙ্গ দিন কাটাচ্ছেন । আপনার থাকার জায়গাটি দুটি কবরের সমান । যে মেঝেতে থাকেন তা অ্যাঁব্র থ্যাব্র । ঠিকমতো শুতে পারেন্না । আপনাকে বালিশও দেয়া হয়নি । আপনার মা চলে গেলেন , আপনার ছেলে চলে গেলেন মাবুদের দরবারে -আর আপনি সে সংবাদ কারা ঘরে বসে শুনতে পান । ফাঁসির আসামিদের পোশাক পরিয়ে রাখা হয়েছে আজ তিন মাসেরও অধিক কাল ধরে । আপনি জেলের খাবারগুলো খেতে পারছেন্না । আপনাকে মানসিক কষ্ট দেবার জন্য ফাঁসির মঞ্চের সামনের রুমেই রাখা হয়েছে ।

এসব শুনে আমাদের যে কি পরিমাণ কষ্ট লাগে তা আপনাকে বুঝাতে পারবনা । পৃথিবীর আনাচেকানাচে আপনার জন্য চোখের পানি ফেলে দিনরাত দোয়া করা হচ্ছে । গভীর রাতে অসংখ্য মানুষ সেজদায় পড়ে কাঁদছে । কুরানের হৃদয় স্পর্শী আপনার আলোচনার ক্যাসেটগুলো যখন রাস্তায়, দোকানে , অফিসে , বা বাসাবাড়িতে বাজে তখন শিশুরা থেকে শুরু করে বৃদ্ধরা পর্যন্তু ঠুকরে কেঁদে ওঠে।আকুতি ছুটে যায় মাবুদের দরবারে - হে আল্লাহ্‌ আমাদের প্রিয় সাঈদীকে উভয় লোকে তোমার ভালবাসার চাদর দ্বারা ঢেকে রাখ ।

এতসবের পরেও আমাদের কোন পরোয়া নেই । আপনি আমাদেরকে সারাজীবন বলেছেন , কুরান বুঝে তিলাওয়াত করতে । আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি ,তাতে পেয়েছি -" যারা দ্বীন কায়েমের চেষ্টা করে তাদের ভেতরকার কিছু মানুষকে আল্লাহ্‌ শহীদ হিসেবে কবুল করতে চান " আর আপনি তো সারা জীবন তাই চেয়েছেন লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষকে নিয়ে আল্লাহ্‌র কাছে । তাই আল্লাহ্‌ যেন আপনাকে এ মর্জাদা দয়া করে দান করেন । তবে পাপিষ্ঠদের অপবাদের ভিত্তিতে আমরা চাইনা ।

আমরা শুনেছি আপনি পেরেশান হয়ে আছেন - দেশ, ইসলামী আন্দোলন, এবং ক র্মী ভাইদেরকে নিয়ে । আমরা আপনাকে কথা দিচ্ছি , আমাদের একজন ভাই জীবিত থাকা পর্যন্তুও ইসলামী আন্দোলন চলবে । সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের আন্দোলন চলবে আমাদের দেহের সর্বশেষ রক্ত ফোটা আল্লাহ্‌র রাস্তায় নাজরানা দেয়া পর্যন্তু , ইনশা আল্লাহ্‌ ।

হয়তো দ্বীন বিজয়ী হবে , নয়তো আমরা সবাই আমাদের প্রিয় মাবুদের কাছে গিয়ে হাজির হব -ইনশাআল্লাহ্‌ । পৃথিবীর কোন শক্তি আমাদেরকে নিবৃত করতে পারবেনা এ কাজ থেকে ইনশাআল্লাহ্‌ । কারণ , আমরা মৃত্যুকে জীবনের শেষ অধ্যায় মনে করিনা , মৃত্যুকে মনে করি চিরস্থায়ী জীবনে প্রবেশের দরজা মাত্র ।

= হে যালিমরা !

তোরা আসলে পশু । না, বরং তার থেকেও অধম । তোরা মৃত্যুর ভয় দেখাচ্ছিস এমন ব্যক্তিকে যে নাকি শাহাদাতের তামান্নায় বেকারার । তোদের জ্ঞান বুদ্ধি তোদেরকে পশুর থেকে উপরে তুলতে পারলনা । হায় আফসোস ! একটা পশুও তার স্রষ্টার আইন মেনে চলে ।আর তোরা ! নিজেরা তো মানই না - বরং যারা মানে এবং মানাতে চায় তদেরকে তোদের সহ্য হয়না । একটু বিবেক খাটিয়ে দেখ , তোদের জন্য কতজন মানুষ জীবন দিবে ? কিন্তু আল্লামা সাঈদীর জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত অসংখ্য মানুষ । ইতিমধ্যেই তার প্রমান দুনিয়াবাসী দেখেছে । আর তোদের মৃত্যুতে জানাজার মানুষ তালাশ করেও পাওয়া জায়না ! সে ইতিহাস কি ভুলে গেছ ?

শুনে রাখ হে যালিম সম্প্রদায় ,

তোদের যত জ্বালা, জামাত আর শিবিরকে নিয়ে ! জামাত-শিবিরকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য সকল শক্তি নিয়োগ করেছ !

= জামাত- শিবির কচুপাতার পানি নয় যে, একটু নাড়া দিলেই পড়ে যাবে ।

= ভাসমান শেওলা নয় যে, স্রোতে ভেসে যাবে ।

- খড় কুটো নয় যে , বাতাসে উড়ে যাবে ।

- জামাত-শিবিরকে কামড়াতে চাইলে তোদের দাঁত ভেঙ্গে যাবে , হজম করতে চাইলে তোদের পেট ফেটে যাবে ইনশাআল্লাহ্‌ ।

বিঃ দ্রঃ - লেখাটি প্রথমবার পোষ্ট করার পর দেখি পুরো লেখাটি আসেনি, এজন্য পুনরায় পোষ্ট করলাম ।

বিষয়: বিবিধ

৩৩৮৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File