পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নাই
লিখেছেন লিখেছেন নাসিমা খান ২৫ জুন, ২০১৩, ০৯:৪২:৪৯ সকাল
প্রেম ভালোবাসা অর্থহীন একটা বিষয় । মিথ্যা আর অভিনয় ছাড়া আর কিছুই নই । যার স্থায়ীত্ব নেয় , তাকে ভালোবাসা কিভাবে বলি আমরা , আজকে একজনকে ভালোবেসে উজাড় করে দিলাম হৃদয়টা । কাল বললাম সরি ।
সৌখিন শব্দ বিলাস প্রেম, কিচ্ছু নেই ওটাতে ,যা আছে তা হলো কিছু মিথ্যা আশ্বাস ,মিথ্যা স্বপ্ন আর মিথ্যা আচারণ ।এ বিশাল বিশ্বটা হলো বড় একটা সেক্রিফাইস মনোভাব । দ্বায়িতে ,ধৈর্য্যে কাজে কর্মে যে যত বেশী ছাড় দিতে পারবে সেই ততবড় প্রেমিক । আমার তো মনে হয় নিজেকে পেষণ ও শোষণ ছাড়া আর কিছুই নয় । অভিজ্ঞ সমাজ আমাকে অসামাজিক মন্তব্যের জন্য গালি দিতে পারে ।
আপনারা তো বলবেন মায়ের ভালোবাসার কথা ? আপনি কি মনে করেন সেখানে কোন চাওয়া পাওয়া নেই ? মায়ের সন্তানের কাছ থেকে কোন দাবী দাওয়া নেই ? কিছুই চান না মা ?
আমি একটু ভিন্ন ধারায় কিছু বেফাস কথা লিখছি । ধর্মে আমার মতি নেই, আমি নাস্তিক এ কথা যদি বলেন ,যুক্তি দিয়ে আমিও বলবো , আপনি কি প্রকৃত মুসলমান ? না গালি দিলেও বাস্তবতাকে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে ।আমাদের সমাজে পুত্র বধুদের মনে প্রাণে গ্রহণ করতে পারেন না মায়েরা , না এটা তাদের সংকীর্ণতা নয় , এটা তাদের স্বার্থপরতা । মা যখন বধু হয়ে এসেছিলেল তিনিও একান্তে তার স্বামীকে পেতে ছেয়েছিলেন ,চান নি ?
শাশুরী মা তখন নির্জনে একাকী ঘুমায়ি থাকেন, যে সন্তান সারা রাত মার ঘরে উকি দিয়ে দেখতো মায়ের শ্বাস প্রশ্বাস ঠিকমত উঠছে নামছে কিনা, সে কিন্তু সারা রাতে একটীবারও মার খোঁজ নেইনি , বলুন এটা কি মায়ের কাম্য হতে পারে না, সন্তানের শীতল হাতটি মায়ের কপালে ভালোবাসার পরশ বুলাক ?
কটা সন্তান বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন আমি সেই যে স্ত্রী সন্তান থেকে মা কে বেশী ভালোবাসি ? আপনি সর্বাগ্রে যাকে কাছে পেতে চান , হয় সে আপনার স্থ্রী সন্তান , না হয় প্রেমিক/প্রেমিকা ।
মা তখন হুতাশনে কাঁদছেন নিরবে , আমার ছেলেটা নষ্ট হয়ে গেলো ! মা কে ভুলে গেলো চিরতরে । তখন মা তো বলেন না , আমার ছেলে উপযুক্ত কাজ করছে , তাহলে মা কি পুরোপুরি স্বার্থহীনভাবে সন্তান ক্কে মানুষ করেছিলেন ? মায়ের অভিষাপে সন্তানের চলার পথ পিচ্ছিল হলো কিনা মা তখন ভাবেন কি ? বলবেন তো মায়ায় কাঁদে । কিসের মায়া ? মোহ তো ধার্মিকদের শুধুই ধর্মে কর্মে থাকবে । পার্থিব মায়া সে তো ধার্মিকদের কাজ নয়, অভিষাপ দেওয়া তো ধার্মিকদের কাজ নয় ! যা করেছেন আল্লাহই ভালো করেছেন , ভালোর জন্য হয়েছে , এই সত্যটাই তো আমাদের ভাবার বিষয় হওয়া উচিত, এবং তাই আমাদের ভবিতব্য ,আমরা একাত্ববাদে বিশ্বাসী ।
তাহলে স্বার্থহীন ভালোবাসা আসলেই নেই এখানে আমার একটা অমার্জির কবিতা দিতে বাধ্য হলাম , ক্ষমা করবেন নিশ্চয় !!!!!!!!!!!
স্বার্থ যদি কিছু না হয় , এমন কেন হয় ?
প্রেম করে কেউ সুখ পায় না , চাহে মিলন তাই।
মা মিটায় তার বুকের জ্বালা ,শিশু মেটায় ক্ষুধা
দম্পত্তি তার যৌন জ্বালা , মিটায় পেয়ে সুধা ।
তাই আজ ভালোবাসা আছে বলে যারা চিৎকার করে আমি কিছুটা অবাক হই, সেদিন যে হাত ধরে বলল, তোমার জন্য আমার চাওয়া অন্তহীন , তুমি রাগ করলে ঠিক তোমার সামনে হাজির হয়ে যাব, দুদিন পরে অবাক করে সেই তোমাকে বলছে চিনি না তো , কে আপনি ?
যে তোমার সবটুকু জানলো না, তোমাকে বোঝার অবসর পর্যন্ত তোমাকে দিলো না, পুরোপুরি উবে গেলো তার ভালোবাসা ? ধিক এইসব ভালোবাসা নামের মিথ্যা আচরণ কে । কতজন কে তুমি পারবে বুকে জড়িয়ে ওই একটা বাক্য শুনাতে ?
আমার কাছে ভালবাসার অর্থ এখন প্রভুত্ব আর গোপন যৌণ বিলাস ছাড়া কিছুই মনে হয় না , ভালোবাসা এখন স্বার্থে মোড়া একবিভিষীকাময় অন্ধকার ।
আমার সন্তানকে আমি কত টা নিঃস্বার্থে ভালোবাসি, ওর ক্ষমতার বাইরে ওর ঘাড়ে তুলে দিচ্ছি বিদ্যার বস্তা । হিমষীম খেয়ে যাচ্ছে সন্তানরা, বিনিময়ে ওদের কাছ থেকে চাচ্ছি গ্লোরিয়াস কিছু । সমাজে আমরা মুখ উঁচু করে বলতে চাই আমার ছেলে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, মেজর ,কর্নেল, মন্ত্রী ।আমরা কি গর্ব করে বলতে চাই আমার ছেলে ভালো একজন কৃষক হয়েছে ? বলুন আর কার জন্য আজ আপনার ছেলেকে মাটির কাছের মানুষ বলতে লজ্জা পান ? কোন স্বার্থ নেই আপনার ?সব কি আপনার সন্তানের জন্য ?প্রত্যক্ষ না হোক পরোক্ষ স্বার্থের কথা কিভাবে অস্বীকার করি আমরা ?
অনেকেই বলেন অনেক ভালোবাসা ,অন্ধের মত ।সে নিরবে পোড়ে , পিড়ন আর পোড়ন এক নয়, যে নিরবে পোড়ে , পোড়ন তার পেয়াপ্য, এ স্বার্থের দুনিয়াতে নিরব বলতে কোন শব্দ নেই, অভিমান বলে কোন শব্দ নেই, ওটা দুর্বলের ভাষা ।ওটা দিতে না পারার কার্পণ্যতা ।
যে ভালোবাসে , সে বলতেও ভয় পায় না ।সে বলাতেও ভয় পায় না, যে শুধু ভোগ চায় সে প্রকাশে লজ্জাবোধ করে, সত্যিকারে ভালোবাসা নেয় , এটা তাই আজ অনাস্বীকার্য ।
তবু অবশেষে স্বীকার করতেই হবে ব্যতিক্রম শব্দ বলতে একটা শব্দ এখনও বিকৃত হয়ে যায়নি ।বাংলা অভিধানে যথেষ্ট গর্বের সাথে তার দৌরাত্ব প্রকাশ করে যাচ্ছে ।
জানি না , সেই শব্দটা কার জন্য প্রজোয্য । সেই ব্যতিক্রম ধর্মী মানুষগুলো আমাকে ক্ষমা করবেন আমার এই অসংযত প্রলাপের জন্য
।
বিষয়: বিবিধ
২৮৭২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন