সংযম ও সত্যের স্বর্গীয় সমীরণে…!
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ০৬ এপ্রিল, ২০১৭, ০৮:৫৫:৫৮ রাত
স্পেনের এক সুদর্শন যুবক এতোটাই আকর্ষণীয় ছিলেন যে, তাকে দেখা মাত্রই মানুষ প্রবল আবেগে তার প্রতি আপ্লুত, মুগ্ধ ও প্রলুব্ধ হয়ে উঠতো। ঈর্ষান্বিত করা অতুলনীয় সৌন্দর্যের পাশাপাশি এই যুবক ছিলেন অত্যন্ত আল্লাহ্ভীরু একজন পরহেজগার মুমিনবান্দা। এই সুন্দর যুবকটির সাথে অন্য এক ব্যক্তির ছিল গভীর বন্ধুত্ব, একনিষ্ঠ ঘনিষ্ঠতা ও নিখাদ মুহাব্বত। ইমাম ইবনে হাযম তাঁর একজন বিস্বস্থ বন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন- একদিন এই পরহেজগার যুবকটি সেই বন্ধুর সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে তার গৃহে উপস্থিত হলেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে, মুমিন বন্ধুকে সে রাতটি সেখানেই কাটানোর জন্য অনুরোধ জানানো হল। তিনিও এতে সায় দিলেন, আপত্তি না করে। বন্ধুর ইচ্ছেতেই সম্মতি জানিয়ে তার গৃহেই রাত্রি যাপনের সিদ্ধান্ত নিলেন সেই যুবক।
দৈবাৎক্রমে সেই রাত্রিতে একটি জরুরী কাজে পার্শ্ববর্তী এক গ্রাম থেকে এক ব্যক্তি এসে তার বন্ধুকে অর্থাৎ গৃহকর্তাকে ডেকে নিয়ে গেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসছি বলে মুমিন বন্ধুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজের স্ত্রীকে ঘরে রেখে তিনি যথারীতি কাজে বেরিয়ে গেলেন। সেই মুহূর্তে বন্ধুটির স্ত্রী ও সুদর্শন যুবকটি ছাড়া গৃহে আর কোন তৃতীয় ব্যক্তি ছিল না। শীতকাল ও সেদিন প্রবল বৃষ্টি হওয়ার কারণে চারিদিক কৃষ্ণ আঁধারে ছেয়ে গেল। অন্ধকার রাত্রি যেন কুয়াশাচ্ছন্ন কনকনে শীতের দাপটে আরও প্রলম্বিত হল। প্রতীক্ষিত মুমিন বন্ধু অবশেষে আশাহত হয়ে শুয়ে পড়লো।
গৃহাভ্যন্তরে এদিকে স্ত্রী লোকটির মনে প্রবল ধারণা বদ্ধমূল হল যে, এই নিকষ বর্ষণমুখর রাত্রিতে তার স্বামীর আজ ঘরে ফিরে আসার কোন সম্ভাবনা নেই। তাই সে নিজেকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় রূপে তুলে ধরার জন্য উত্তম সাজে সজ্জিত করলো। তারপর নিজের কুমতলব হাসিলের জন্য সেই আল্লাহ্ভীরু যুবকের কাছে নিজেকে সমর্পণ করলো। কিন্তু সেই মহিলার আবেদন যুবকটি প্রত্যাখ্যান করলো। পুনঃ পুনঃ আবেদনের এক পর্যায়ে যুবক কিছুটা প্রলোভিত হলে তৎক্ষণাৎ আল্লাহ্র শাস্তির কথা স্মরণ করে নিজেকে সংবরণ করলো। শিয়রের পাশে তখন প্রদীপের আলো জ্বলছিল, যুবকটি তার হস্ত প্রদীপের আগুনের মধ্যে প্রবেশ করে সাথেসাথেই আবার দূরে সরিয়ে নিল। আর তার অন্তরে জেগে উঠলো এক অপূর্ব শিহরণ জাগানিয়া আল্লাহ্ভীতি! অনুভবের অনুভূতিতে ও ভাবনার জগতে যা তুমুল এক আলোড়ন তুললো। চিন্তিত হয়ে ভাবতে লাগলো এই সামান্য আগুনের তাপ অসহ্য অসহনীয় হয়ে উঠছে! তাহলে এই পাপকর্মের শাস্তি সেই কঠিন জাহান্নামের আযাব আমি কীভাবে সহ্য করবো?
এভাবেই স্ত্রী লোকটি যখনই তাকে আবেদন জানালো সুদর্শন যুবকটি তখনই নিজের হস্তকে প্রদীপের আগুনের কাছে সঁপে দিলো। এমনিভাবে সারা রাত নির্ঘুম অবস্থায় সে তাওবা ও ইস্তেগফারের মধ্যে কাটিয়ে দিলো। প্রত্যুষে প্রতিভাত হল প্রদীপের আগুনের তাপে যুবকটির বৃদ্ধাঙ্গুলটি অগ্নিদগ্ধ হয়ে কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। আল্লাহ্ভীতি ও সত্যের স্বর্গীয় সমীরণে সুদর্শন যুবকের হৃদয়াকাশ তখন আপন চরিত্র মাধুর্যতায় ও ভোরের রক্তিম আভায় হয়ে উঠলো পূত পবিত্র আলোকোজ্জ্বল!
বিষয়: বিবিধ
১২৫৪ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নিষ্প্রাণ ব্লগ বাড়ীতে আপনার স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ও প্রেরণাপূর্ণ ভালোলাগা খুবই আনন্দদায়ক।
আপনার সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনার প্রার্থনা সবসময়।
আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
সত্যিই শিক্ষনীয় বিষয়। জাযাকিল্লাহ খাইর
নতুন সংবাদটি জেনেছেন কিনা জানি না।
তবুও বলছি: আলহামদু লিল্লাহ ইউ,এ,ই ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছি, এখন আর ইউ,কে টুরিষ্টদের নিয়ে ঘুরতে সমস্যা হবে না।
দোয়া চাই যেন, সড়কে নিরাপদে রাখেন আল্লাহ তায়ালা।
ওয়াও! আপনার এই শুভ সংবাদে ভীষণভাবে আনন্দিত হলাম। অনেক দিন ভেবেছিলাম হয়তো ড্রাইভিং নিয়ে আপনি অনেক ব্যস্ত! খুশীর সংবাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। সে প্রত্যাশা পূর্ণ হল। আলহামদুলিল্লাহ্।
এখন থেকে নির্জীব ব্লগ বাড়ীতে আপনার নিয়মিত পদচারণা আশা করছি। যদিও ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমার পক্ষেও তা সম্ভব হয় না।
আপনার প্রাণবন্ত উপস্থিতি ও প্রেরণাপূর্ণ মন্তব্য সবসময়ই লিখার অঙ্গনে বাড়তি মাত্রা এনে দেয়।
জান্নাত্মনিসহ সকলের জন্য সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনার প্রার্থনা সবসময়।
আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
আপনিও আপনার আপুর সাথে আসুন। দাওয়াত রইল।
আসলেই তাই। এসব সত্যি ঘটনা মনকে ভীষণভাবে নাড়িয়ে দেয়, আন্দোলিত করে।
তোমার সুন্দর উপস্থিতি ও মন্তব্যটির জন্য অন্নেক শুকরিয়া। অন্নেক দোয়া তোমার জন্য।
তোমার কথা ভেবে অনেক কষ্ট অনুভব করি। আল্লাহ্ মেহেরবান তোমার সব কষ্ট আর বেদনার ক্ষত মুছে দিন। আমীন।
এখন কেমন আছো আপুম্নি?
বেশ শিক্ষণীয় পোস্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন