মায়াবী জোসনা এবং মানুষ....!!
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৫:০৮:০৭ বিকাল
মায়াবী জোসনার আবিষ্ট আলোয় বসে নিবিষ্ট চিত্তে ভাবছিলো মোনেম। জোছনার বুকে এত মায়াভরা মিষ্টি! এত মুগ্ধতা, এত প্রাণময় স্ণিগ্ধতা! বিস্ময়ে বিমুঢ় হয়ে অপলক নেত্রে তাকিয়ে থাকে মোনেম। হৃদয় জুড়ানো চাঁদের বিভোর করা সৌন্দর্য ক্রমশই তাকে গভীরে নিয়ে যায়। চাঁদের নির্মল সৌন্দর্যে এতটুকু কমতি নেই! হৃদয়ের গভীর থেকে উৎসারিত করা প্রাণপণ আকুলতা আর নিবিড় ভালোবাসা দিয়ে সবাইকে সর্বাত্মকভাবে মোহিত করার উদার প্রচেষ্টা। কিন্তু পৃথিবীর মানুষের বিবেকহীন হৃদয়গুলো এত অন্ধকার এত কুৎসিত কেন???!!!
চারিদিক শুনশান নির্জনতা, নিস্তব্ধতায় আচ্ছন্ন। বনের পাখীরাও মনে হল গভীর তন্দ্রায় ডুবে আছে। কিন্তু মোনেমের চোখে নিদ এলো না কিছুতেই! বীভৎস গাদা গাদা লাশের স্তূপ তার সম্মুখে! সারা শরীর থর থর করে কেঁপে উঠলো। দু’চোখ বেয়ে দর দর করে অশ্রু ঝরলো মোনেমের। অসহায়ত্বের এক নিদারুণ আর্তি! ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে রক্তে রঞ্জিত নিথর দেহগুলোর দিকে। সোহাগেভরা কচিমুখের জান্নাতী পাখীগুলো বিক্ষুব্ধ অভিমানে হাজারো প্রশ্ন ছুঁড়লো তার সামনে! তারা সমস্বরে বলে উঠলো, বল আমাদের কী অপরাধ? কেন পৃথিবীর স্নেহ, মায়ামমতা, ভালোবাসা ও অবারিত নিয়ামতরাজির সৌন্দর্য উপভোগ করার আগেই আমাদেরকে নৃশংসভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হল?? আমাদের এ করুণ পরিণতির জন্য দায়ী কারা? এজন্য কী তোমরা এবং তোমাদের কৃতকর্ম দায়ী নয়? একবারও কী ভাববে না আমাদের দুর্গতির কথা ????!!!!
চকিত, শঙ্কিত মানব দৃষ্টির আড়ালে মোনেম দ্বিধাহীন মনে মেনে নিতে বাধ্য হল মুসলমানদের আজ অন্তঃসারশূন্য ঈমানের দাবীর কথা। বিরাজিত যিল্লতি ও বর্ণনাতীত দুর্দশার মূল কারণ যে, মুসলিম উম্মাহর ঈমান ও বিশ্বাসের শৈথিল্যতা, অনভিজ্ঞতা, অদূরদর্শিতা, নেতৃত্বের অযোগ্যতা ও অনৈক্য এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ রইলো না তার। বর্তমানে অধিক সংখ্যক মুসলিমদের মাঝে ইসলাম আছে তাতে হাকীকত নেই, ঈমান আছে কিন্তু তাতে শানিত ধার নেই, দ্বীনের বুলি আছে কিন্ত সেখানে নিজেদেরকে কোরবানী করার শক্তি বা প্রাণ নেই। যাঁদের উপর বৃহৎ জনগোষ্ঠীর দায়িত্বভার সেই আলেম-উলামা ও শিক্ষিত বিশাল জনগোষ্ঠী আজ সীমাহীন আত্মম্ভরিতা ও মিথ্যা আত্মিক পরিতৃপ্তিতে বিভোর। নাজুক ও দায়সারা শক্তি দিয়ে তাই তাঁরা কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হচ্ছে বার বার। ঈমান আক্বিদাকে পদদলিত করে তাঁরা জ্বলন্ত অগ্নিতে ঠেলে দিচ্ছে বিশ্ব মানবতাকে। আমাদেরকে অভিশপ্ত করে চিরতরে বিদায় নিচ্ছে সোনালী আলোয় ঝলমল করে উঠা মায়ামমতায় জড়ানো হৃদয় আলোড়িত করা চাঁদ মুখগুলো।
ভাবতেই ভাবতেই আচমকা মুয়াজ্জিনের সুললিত কণ্ঠের মধুর ধ্বনি তরঙ্গায়িত হতে থাকলো মোনেমের কর্ণে। সম্বিত ফিরে আসে তার চিন্তার জগত থেকে। তারপর অতিকষ্টে বিমর্ষ বিষণ্ণভরা দেহ ও অবশ অবসন্ন পদযুগল সে বাড়িয়ে দিল মসজিদের পানে…।!
বিষয়: বিবিধ
১৫৮৮ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার স্বতঃস্ফূর্ত আন্তরিক প্রথম উপস্থিতি ও প্রেরণামূলক সুন্দর মন্তব্যের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
Respected APA.
জাজাকাল্লাহু খাইর।
I agree with 100%
মুসলমানদের আজ অন্তঃসারশূন্য ঈমানের দাবীর কথা। বিরাজিত যিল্লতি ও বর্ণনাতীত দুর্দশার মূল কারণ যে, মুসলিম উম্মাহর ঈমান ও বিশ্বাসের শৈথিল্যতা, অনভিজ্ঞতা, অদূরদর্শিতা, নেতৃত্বের অযোগ্যতা ও অনৈক্য এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ রইলো না তার। বর্তমানে অধিক সংখ্যক মুসলিমদের মাঝে ইসলাম আছে তাতে হাকীকত নেই, ঈমান আছে কিন্তু তাতে শানিত ধার নেই, দ্বীনের বুলি আছে কিন্ত সেখানে নিজেদেরকে কোরবানী করার শক্তি বা প্রাণ নেইমুসলমানদের আজ অন্তঃসারশূন্য ঈমানের দাবীর কথা। বিরাজিত যিল্লতি ও বর্ণনাতীত দুর্দশার মূল কারণ যে, মুসলিম উম্মাহর ঈমান ও বিশ্বাসের শৈথিল্যতা, অনভিজ্ঞতা, অদূরদর্শিতা, নেতৃত্বের অযোগ্যতা ও অনৈক্য এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ রইলো না তার। বর্তমানে অধিক সংখ্যক মুসলিমদের মাঝে ইসলাম আছে তাতে হাকীকত নেই, ঈমান আছে কিন্তু তাতে শানিত ধার নেই, দ্বীনের বুলি আছে কিন্ত সেখানে নিজেদেরকে কোরবানী করার শক্তি বা প্রাণ নেই
আপনার স্বতঃস্ফূর্ত আন্তরিক উপস্থিতি ও সহমত প্রকাশের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
বস্তুবাদি চোখে মায়ানমার, কাশ্মির, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরাক সবগুলো ঘটনাকে আলাদা মনে হলেও প্রতিটি ঘটনাই মূলত একই সূত্রে গাঁথা। প্রতিটির সাথেই ইজরাঈল নামক রাষ্ঠ্রের জায়োনিস্টরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। আর ইসলামিক ব্যাখ্যা দিতে হলে বলব, সব কিছুই দাজ্জাল ও ইয়াজুজ মাজুজ সম্পর্কিত আর সব কিছুই আবার ইজরাঈল এর সাথে সম্পর্কিত। মূল উদ্দেশ্য একটাই ইজরাঈলকে যে কোন মূল্যে টিকেয়ে রাখা দাজ্জালের মানবরূপে চুড়ান্তরূপে আগমণের জন্য এবং ইজরাঈল শাসিত গডলেস একক ওয়াল্ড অর্ডার সৃষ্টি করা।
তোমার মন্তব্যের সাথে সহমত।
অনেক হৃদয়গ্রাহী ও মূল্যবান মন্তব্যটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
ইনশাআল্লাহ।
আপনার স্বতঃস্ফূর্ত আন্তরিক উপস্থিতি ও প্রেরণামূলক সুন্দর মন্তব্যের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
সত্যিই এগুলো আমাদেরই হাতের কামাই। যতক্ষণ না মানুষ দাসের দাসত্ব্য ছেড়ে দাসের প্রভূর দাসত্ব্য না করবে ততদিন এভাবেই আমরা পদদলিত হতেই থাকবো।
সত্যের সন্ধানী মানুষগুলো আজ হাজারো দলে বিভক্ত, দিন দিন যেন দলে সংখ্যা বেড়েই চলছে। যতই বলছি এক হও, ততই যেন ভিন্নতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আল্লাহ মাফ করুক। করুণ স্বপ্নগুলো আল্লাহ তায়ালা করুনাময় স্বপ্ন দ্বারা পূর্ণ করে দিক।
অনেক অনেক ধন্যবাদ
আপনার অসাধারণ চিন্তাসমন্বিত জ্ঞানগর্ভ মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সেইসাথে আল্লাহ্ সুবহানুতা’আলা আপনার অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী প্রার্থনা কবুল করুণ এবং আপনার আমার সকলের অন্তরের নেক ইচ্ছে ও মুসলিম উম্মাহর জন্য কল্যাণকর সব সুন্দর মনোবাসনাগুলো পূর্ণ করুণ। আমীন।
সর্বাবস্থায় নিরাপদে থাকুন, ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন এই প্রার্থনা রইলো আপনার জন্য।
গল্পের ভাব-আবেগ সবই যাই ভুলি;
যখনি দেখি ঐ লিখনশৈলী !
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
এটোম বোম! খুবই মারাত্মক অভিযোগ!
আপনার অত্যন্ত মূল্যবান উপস্থিতি ও হৃদয়গ্রাহী মন্তব্যের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন