নির্ভীক সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান - বীরত্বগাঁথা এক ইতিহাসের নাম
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ২১ নভেম্বর, ২০১৬, ০৪:৫৭:৫৪ বিকাল
গভীর তমাসাচ্ছন্ন ও নির্মম বাস্তবতার অগ্নিমূর্তির প্রজ্জ্বলনে জাতি যখন দিশেহারা তখন গর্জে উঠেছিলো আপনার হৃদয় শানিত করা “কলম তলোয়ার”। অসীম অদম্য সাহসী বুকে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন প্রলয়ঙ্করী এক অভিশপ্ত নারকীয় পরিবেশে। প্রমোদতরীতে ডুবে থাকা ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে তুলেছেন, সান্ত্বনা যুগিয়েছেন, দেখিয়েছেন দুর্ভেদ্য ঐক্য গড়নে মুক্তির স্বপ্ন ও সঞ্চারিত করেছেন আশাবাদ নিষ্প্রাণ দেহগুলোতে। অভিশপ্ত জাতীকে মুক্ত করতে এভাবেই সেদিন সৃষ্টি হয়েছিলো বাংলাদেশের বুকে এক বীরত্বগাঁথা নতুন ইতিহাস। মুসলিম উম্মাহকে দান করেছেন এক অনন্য গর্ব ও গৌরবের বীরত্বগাঁথা অমরত্ন।
উত্তাল করা নৃত্যগীতি ও ইসলাম ধর্মের প্রতি ব্যঙ্গ বিদ্রূপাত্মক রসাত্মক মঞ্চ নাটক যখন দিনরাত ভর শাহাবাগে মঞ্চস্থ হচ্ছিল সেই ঝড়ের তাণ্ডবের মধ্যে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে সিনা টান করে বীরসিপাহী মাহমুদুর রহমানের বজ্রকণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছিল মহাজাগরণীর মুক্তির ডাক। সম্পূর্ণ বৈরী পরিবেশে আমাদের প্রিয়তম রাসূল (সাঃ) কে নিয়ে কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্য ও লিখার চিত্র তুলে ধরে আপনার সময়োপযোগী সাহসী উচ্চারণ আপামর মানুষের বোধ বিশ্বাসে, মন মানসে ও চিন্তায় সৃষ্টি করেছিলো প্রবল আলোড়ন। আপনার লিখা ও প্রতিবেদনগুলো শক্তিশালী বুলেটের চেয়েও মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিলো সেদিন মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে। ন্যায় ও সত্য শব্দের শক্তির কম্পন অনুভূত হয়েছিলো ঘুমন্ত বিবেকের গভীর অতলে। অন্যায় ও অনৈতিকতার আগাছায় নিড়ানী দিতে সেদিন প্রথমবারের মত রাস্তায় নেমে আসেন হেফাজতে ইসলামসহ অন্যান্য ইসলামিক দলগুলো। প্রাণে প্রাণে জাগিয়ে তুলেছিলেন প্রতিবাদের হিম্মতি সুর। দৃঢ় প্রত্যয়ী মানসে সকল রক্তচক্ষুকে পদতলে পিষ্ট করে একের পর এক আপনার শানিত লিখনী প্রমাণ করেছিলো মাহমুদুর রহমান দুষ্ট আগ্রাসী শক্তিকে ডরায় না। সে এক বীরযোদ্ধা। কারো বিষাক্ত সাপের ফণার কাছে শির নত করতে তিনি শিখেননি। তিনি একমাত্র মহান রবের অমূল্য প্রতিদান ও সন্তুষ্টির মুখাপেক্ষী। আর কারো নয়। তাঁর চিন্তা-কর্ম, মনন-মগজ, আত্মিক পরিশুদ্ধি, উন্নতি-অগ্রগতি ও ধ্যান আরাধনার বিষয়বস্তুই হল চিরতরে অন্যায় নিধন ও সর্বোতপর্যায়ে মানবকল্যাণ নিশ্চিত করে মুক্তির রুদ্ধপথ অবারিত করা।
মমতাময়ী অসুস্থ জননী ও প্রিয়তমা স্ত্রীসহ আপনজনদের সুখানুভবের নির্যাস ঝেরে ফেলে বেঁছে নেন কারাগারীয় নির্মম নির্যাতনের পথ। দৃঢ় প্রত্যয়ী বাসনা নিয়ে তিনি হিম্মতি পা বাড়িয়ে দিয়েছেন আগ্রাসী শক্তির দুর্গম অনিশ্চিত মোকাবিলায়। নিজের ভালবাসাময় আপন পরিবার জগতকে চিন্তা ও দুঃসহ অনলে ঠেলে দিতে এতোটুকু কুণ্ঠাবোধ করেননি তিনি। তথাকথিত বিক্রিত নির্লজ্জ সাংবাদিকদের
সামনে জীবন্ত উপমার স্বাক্ষর রেখে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন জ্বলন্ত রুদ্ধ কারাগারে। সকল রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে অন্যায়, অসত্য, গুম, হত্যা, ধর্ষণ, হতাশা ও নৈরাজ্যের ভারে ন্যুজ্জ্ব দুঃখভারাক্রান্ত জাতীকে স্বস্তির আলো এনে দিতে বীরদর্পে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তাঁর নিখাদ অভিব্যক্তি ও দুর্দমনীয় প্রাণশক্তি গৌরবের আভায় জ্বলজ্বল করছে বিশ্বময়। আর তাঁর মুখের স্নিগ্ধহাসিতে মিশে আছে ন্যায়ের সুরভীমাখা জান্নাতী পথের অঙ্কিত সোনালী রেখা।
সুদীর্ঘ সাড়ে তিন বছর কারাভোগের পর ৮৪টি মামলায় জামিন পেয়ে তিনি এখন মুক্তির অপেক্ষায়। তাঁর জামিনের মুক্তির আদেশে আপিল বিভাগের মাননীয় বিচারপতিবৃন্দ সই করেছেন। হে বীর সেনানী কলমযোদ্ধা আপনাকে জানাই অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে হাজারো কোটি ছালাম। যুগে যুগে আপনার কলম শাণিত থেকে শাণিততর হোক। ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে তছনছ করুক জুলুমবাজ শাসকদের বিলাসবহুল প্রমোদী মসনদ। জঙ্গম স্রোতের প্রবল প্রত্যয়ী বুকে পিণ্ডসুল ব্যাধিগ্রস্ত জাতির জন্য প্রসারিত হোক আপনার অবদমিত অকুতোভয় সত্যবিজয়ী সিনা। আপনার সাহসী হাত সত্যের ঝংকারে শাণিত হয়ে কলমের আঁচড়ে কাগজের বুকে তুলবে আবার হৃদয়ের কম্পন। কৃষ্ণ আঁধার ঘুচে উদিত হবে আলো ঝলমলে পূর্ণিমার ন্যায় বিজয়ের আলোকিত ভূবন। আবার আপনার শানিত কলমে চিক চিক করে উঠবে তলোয়ারের তৃষ্ণার্ত রুপালী ধার, কালিতে ভেসে উঠবে লাল রক্তের শহীদি উষ্ণ ঘ্রাণ, আর ধমনীতে বইবে ঈমানের তাজা স্পন্দন! এভাবেই মহাবিপ্লবী মানসে কাল থেকে কালান্তরে বিকশিত হয়ে উঠবে কোটি কোটি ইমানীদীপ্ত বীরের প্রাণ। আপনার কলমের শাণিত স্পন্দনে মুখরিত হয়ে উঠবে মৃতঈমানী যত প্রাণ। দিকে দিকে উড়বে পৎ পৎ শব্দে বিজয় কেতন। ইনশাআল্লাহ্!
বিষয়: বিবিধ
১৬৩৬ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
খুবই সুন্দর একটি হৃদয়স্পর্শী মন্তব্য রেখে গেলে মাশাআল্লাহ্ !
কোন অন্যায় অপকর্ম বা ক্ষমতার গদি কোনদিন দীর্ঘস্থায়ী হয়নি আর হবেও না কোনদিন ইনশাআল্লাহ্!
তোমার সাথে সম্পূর্ণ সহমত আপু।
সর্বাবস্থায় ভালো থাকো এই প্রার্থনা।
Muslim.
আশাকরি ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন। সেজন্য শুরুতেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
সত্যিই করেই বলছি আমি এই তুখোড় শ্রদ্ধেয় সাংবাদিকের শৈশব, কৈশোর ও রাজনৈতিক পরিচয় জেনে বুঝেই লিখেছি।
একমাত্র আল্লাহ্ সুবহানুতা’আলাই ভাল জানেন কে ট্রু মুসলিম আর কে ট্রু মুসলিম নয়।
সর্বাবস্থায় ভালো থাকুন এই প্রার্থনা।
জামিন হয়েছে আদালতে। কিন্তু রায় নাকি সাক্ষরিত হয়নি!!! কতরকম মিথ্যার আবরনে এই দেশ এখন ঢাকা।
আপনার মূল্যবান উপস্থিতি ও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
আমি পত্রিকা মারফত জানতে পেলাম উনার মুক্তির কাগজে সাইন হয়েছে কিন্তু আদৌ জেল থেকে মুক্তি মিলবে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
এখন কী আপনার শরীর আগের থেকে ভালো?
আপনি আগের চেয়ে অনেক ভালো জেনে খুশী হলাম।
সর্বাবস্থায় ভালো থাকুন এই প্রার্থনা।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া।
আপনার মূল্যবান উপস্থিতি ও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
আমার মনেও একই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। আদৌ জেল থেকে এই শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিটির মুক্তি মিলবে কিনা এখন সেটাই দেখার বিষয়।
সর্বাবস্থায় ভালো থাকুন এই প্রার্থনা। অ্যান্টির জন্যও বেশী বেশী দোয়ার আবেদন রইলো।
খুবই আনন্দিত হলাম জেনে যে উনার সাথে আপনার ব্যক্তিগত এবং পেশাগত বিষয়ে জানাশোনা আছে। জ্বী উনি বিএনপি সরকারের জ্বালানী উপদেষ্টা ছিলেন।
আপনার মত আমিও এই মহৎ ব্যক্তিটির জন্য প্রাণভরে দোয়া করি।
আপনার মূল্যবান উপস্থিতি ও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
।।সাহসের অন্য নাম-মাহমুদুর রহমান।।
আপনার কলম হোক মাহমুদুর রহমানের ন্যায় তীক্ষ্ম ও অসীম সাহসী। অনেক ধন্যবাদ....
এই মহান ব্যক্তিটির মত হবার যোগ্যতা আমার নেই।
তবে সাধ্যে যা আছে এই নিয়েই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাল্লাহ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন