নর - নারী
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ১৬ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:১৮:৫৬ রাত
মহান স্রস্টার শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি নর ও নারী। সৃষ্টির শুরু থেকে আজ অবধি এই নর ও নারীকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে সুখ ও দুঃখের রহস্যঘেরা অজস্র কাহিনী। যদিও এই নর নারীর অনন্তকালের সুখ-শান্তি ও ভাল-মন্দের শেকড় হল দাম্পত্য জীবন। দাম্পত্য জীবনের সুরভীময় পবিত্র ঘ্রাণ সভ্য সমাজেরও শেকড়। যা মানবতা ও মানব সভ্যতার জন্য স্বাভাবিক ও শাশ্বত এক দাবী। বিবাহ ব্যতীত নর ও নারীর জীবন অপূর্ণ। জীবনের মূল্যবোধ খণ্ডিত, অসম্পূর্ণ। একাকীত্ব মানবজীবন প্রকৃতি ও পরিবেশের পরিপন্থী, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত। যা সৃষ্টিকর্তা ও তাঁর প্রিয়তম হাবীবেরও অপছন্দনীয়। মানুষের জীবনের সর্বতোমুখী সংকট নিরসনে ও শান্তিপূর্ণ সুখময় জীবনযাপনে তাই বিয়ে ইসলামের একটি অপরিহার্য দিক। ইসলামমুখী মানুষের দাম্পত্য জীবনে অভাব অনটন, রোগ শোক, আপদ বিপদ যতই আবর্তিত থাক না কেন তা কোনভাবেই দু’জনের মনে বিরূপ আঁচড় কাটে না বা ভালোবাসার ভিতকে আলগাও করে না। বরং সমস্যা সঙ্কুল অবস্থার মধ্য দিয়ে পরীক্ষিত ভালোবাসার সৌন্দর্য সৌকর্য আরও বিকশিত হতে থাকে। ধৈর্য সহকারে অতিশয় কষ্টপূর্ণ মুহূর্তগুলো পরম অন্তরঙ্গ আবেগ ও অনুরাগে মোকাবিলা করে দু’জন দুজনের আরও কাছাকাছি ঘনিষ্ঠ বিশ্বাসী বন্ধুত্বে পরিণত হয়। আর এজন্য প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা। আর এটাই ইসলামের চিরায়ত শাশ্বত আদর্শিক শিক্ষা।
অপরদিকে ইসলামবিমুখ দাম্পত্য জীবনে প্রায়শঃই পরিলক্ষিত হয়, পারস্পারিক অবিশ্বাস, অশ্রদ্ধা, কটাক্ষপূর্ণ দৃষ্টি, কথায় কথায় তুচ্ছতাচ্ছিল্যমূলক অভিব্যক্তি প্রদর্শন ও আত্মতম্ভরিতার বিষাক্ত বীজ বপন। জীবনকে যা ক্রমেই অতিষ্ঠ করে তোলে। ক্ষতের মাত্রা বেড়ে একসময় অনিরাময়যোগ্য দুরারোগ্য ব্যধিতে রূপ নেয়। জীবন হয়ে উঠে জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নারকীয় লেলিহান শিখা।
এর ব্যতিক্রমী ঘটনাও আছে। ইতিহাস সাক্ষ্য, অনেকের দাম্পত্য জীবনে কাফেরের সঙ্গে ওলী এবং পয়গম্বরের সাথে কাফেরের বসবাস ছিল। যেমন হযরত নূহ এবং লুত (আঃ) এর বিবিরা ছিল কাফের। তাদের আচার আচরণ, চলন বলন ও কথাবার্তাও ছিল স্বামীর চাওয়া পাওয়ার সম্পূর্ণ বিপরীত। এরা ছিল কলহপ্রিয় নারী। আর এই বিবাদ বৈষম্য কোন পারস্পারিক ত্রুটি বিচ্যুতি জনিত কারণে নয় বরং এক পাক্ষিক। কেননা নবী রাসূলগণ সর্বোতভাবেই পবিত্র ও নিষ্পাপ। তাই উনাদেরকে দায়ী করার কোন উপায় বা সুযোগ নেই। নিষ্কলুষ চরিত্রের এসব মহামানব অতি মানসিক নির্যাতন ও পীড়নের স্বীকার হয়েছেন হর হামেশাই। অন্যদিকে বিবি আছিয়া ছিলেন ভুবনমোহিনী রূপ লাবণ্যে ভরপুর একজন ধৈর্যের মহাসম্রাজ্ঞী। আর তাঁর স্বামী ছিল কুখ্যাত ঘৃণিত এক খোদাদ্রোহী ফেরাউন।
মহান রব বলেন, তোমরা স্বামী স্ত্রী পরস্পরের পোশাক স্বরূপ। আর পারস্পারিক কলহের জের হল পোশাক বর্জিত হওয়া। তাতে উভয়ের মানমর্যাদা ও সভ্রমহানি ঘটে। তবে আশার বাণী হল, একজন গুণী খোদাভীরু স্বামী বা স্ত্রী যেমন একজন মুমিন বা মুমিনার জন্য জান্নাত স্বরূপ ঠিক তেমনি ইসলামবিমুখ একজন পুরুষ বা নারী তার পবিত্র স্ত্রী বা পবিত্র স্বামীর জন্য কল্যাণময়। আল্লাহ্ সুবহানুতা’আলা সকল নর নারীকে পারস্পারিক মানহানিকর মন্তব্য ও অভিযোগ করার মানসিকতা থেকে নিষ্কৃতি দান করুন এবং হেজাজত করুণ। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৮৮ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বুঝেছি …..…
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
আমাকেও একটু বুঝিয়ে বলেন আন্টি।
প্রেরনাপুর্ন মন্তব্যসহ মূল্যবান উপস্থিতির জন্য জাযাকাল্লাহু খাইরান।
আমার একটা লেখাতে এক ভাইয়া কমেন্ট করেছিল, আমাদের দ্বীনি বুঝদার তরুণদের অবস্হা হল এমন, আসলে মেয়েতো অবশ্যই দ্বীনি হবে কিন্তু বাবার সন্মান রক্ষার্থে শ্বশুর বাড়ির অবস্হা ভাল না হলে কি হয়? আর মায়ের আবার সুন্দরী মেয়ে না হলে চলেনা!!
আর হিজাবীদের অবস্হা এমন যে, ছেলে তো ধার্মিক লাগবেই কিন্তু তাই বলে যেনতেন ছেলে চলে নাকি? নিজের শখ আহ্লাদ পুরণ করতে তো ইসলাম নিষেধও করেনি। চরিত্র হতে হবে এলাকার মসজিদের ইমাম চাচার মত পুত-পবিত্র কিন্তু হ্যান্ডসাম না হলেও চলবেনা। আমার বান্ধবী ইঞ্জিনিয়ার বিয়ে করেছে তাই আমার ডাক্তার লাগবে নাহলে মুখ দেখাতে পারবোনা। এই হল অবস্হা। জাস্ট ইসলামের নাম দিয়ে নিজেদের মনের কুপ্রবৃত্তিকে জায়েজ করার চেষ্টা, নিজেদের খায়েশ পুরণের চেষ্টা। এসবের সাথে আল্লাহর সম্পর্ক কি?
হাজার জিনিস নিয়ে হতাশার বাণী কিন্তু যেটুকু টিকে আছে সেটুকুকে মজবুত করার ইচ্ছাও যেন মানুষের মরে গেছে কারণ আমি তো দিব্বি আছি!! আল্লাহ আমাদের বুঝ দান করুক।
ওয়ালাইকুম সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতাহু স্নেহাশীলা ছোট বোন।
একটি শিফট করে ২৫- ৩০ হাজার টাকা আয় না করে স্বেচ্ছায় একটি লেকচার তিরীর মানসিকতাই বা কয়জনের থাকে বল?
আর আমার তো মনে হয় তোমার সেই দ্বীনি বোনটির আল্লাহ্র উপর তাওয়াক্কুল কম। তা না হলে এভাবে হতাশ হওয়া কেন?
বলতে ভাল লাগছে না তারপরও বাধ্য হচ্ছি। আমি যখন দেশে থাকতাম তখন থেকেই সেই স্বল্প আয়ের মধ্য থেকেই গ্রামের অসহায় শিক্ষা বঞ্চিত মেয়েদের জন্য একটি মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব হাতে নেই। তারপর বিদেশে এসে পারিবারিক জমি দান করে সেখানে বিল্ডিং নির্মাণ করার পাশাপাশি শিক্ষাদানের কার্যক্রম চলছে। এমনকি এখন বিদেশ থেকে দ্বীনি ভাই বোন এসে সেখানে দ্বীনের দাওয়াত প্রদান করেন।
ছোটবেলা থেকেই অসহায় মানুষের সেবা করার মানসিকতা থাকায় অনেক সুখস্মৃতি আজো আমাকে আন্দোলিত ও আলোড়িত করে।
কারো ব্যাপারে স্বচ্ছ ধারণা না থাকলে মনগড়া মন্তব্য করা ঠিক নয়।
ব্যস্ততার ভীড়েও তোমার বিয়ের ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা করেছি এবং বিস্তারিত পোষ্টে লিখেছি। তা সত্ত্বেও আফ্রার লিখায় তোমার কটাক্ষপূর্ণ মন্তব্যে ব্যথিত হয়েছি। আজ আবারও তার পুনরাবৃত্তি!
যাক তোমাদের জন্য শুধুই প্রাণভরা দোয়া, দয়াময়ের কাছে।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।
ঘুম দ্বীনি ছেলেদের মানুসিকতা সম্পর্কে যেসব অভিযোগ করেছে আলহামদুলিল্লাহ আমি ওইসব ধ্যান ধারণা থেকে একেবারেই মুক্ত। তবে ঘুমের অভিযোগ অস্বীকার করা কঠিন। নষ্ট সময়ের ভ্রষ্ট হওয়া থেকে দ্বীনি ইসলাম বিমুখ, কিছু ব্যাতিক্রম বাদে অধিকাংশ মুক্ত নয়।
কই ঘুম তো আমাকে বলেনি সেই ধার্মিক মেয়ের কথা, আমি তো এখনো শতভাগ আবিয়াইত্তা! অবশ্যই ঘুম আমাকে ভালো ছেলে মনে করে কিনা সেটাও দেখার বিষয়।
ঘুমের প্রতি আমার একটা প্রশ্ন, আপনার এত কষ্ট কিসের? যা প্রায়ই লেখায় মন্তব্যে ওঠে আসে।
আপাকে বলছি, আপনি পুরো লেখাজুড়ে দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে যা লিখেছেন তার বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে মুখিয়ে আছি।
যাক ঘুমের খোচার কারণে আপার কিছু অতীব মহত কাজের কথা শোনার ভাগ্য হল
আর সুপ্রিয় ছোট ভাইয়ের আবেদনটুকু বিবেচনায় রাখতে পারো!
প্রেরনাপুর্ন সুন্দর মন্তব্যসহ মূল্যবান উপস্থিতির জন্য জাযাকাল্লাহু খাইরান।
মন্তব্য করতে লগইন করুন