সুপাঠ্য বই
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ২৪ অক্টোবর, ২০১৬, ০৫:৪৭:২৮ বিকাল
বই ও জ্যোতি শব্দ দু’টি যেন একই বৃন্তে ফুটন্ত দু’টি ফুল। চন্দ্র যেমন শুধুই কিরণ ছড়ায়, আলো দান করে ইসলামী দিকনির্দেশনামূলক সুপাঠ্য বইগুলোও তেমনি শুধুই সুবাস ছড়ায়, জ্ঞান দান করে। অন্তর ও বাহিরকে কুসুমিত করে। তাইতো ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে, আল্লাহ্র মুহাব্বতে ও সৃষ্টিকর্তার ভীতিতে লিখা পরকালের উপর বিশ্বাস সৃষ্টিকারী বই পাঠের মূল্য অপিরিসীম। একইভাবে বইয়ের বিষয়বস্তু নির্বাচন, শব্দচয়ন ও উপস্থাপনের ক্ষেত্রেও প্রতিটি লেখকের সচেতন হওয়া জরুরী। আমরা জানি “মুখের কথা বাতাসে মিশে যায়, কিন্তু কাগজের লেখা বই শতাব্দিকাল থেকে যায়”। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। এজন্য পরিশুদ্ধ মনন গঠনে সুখপাঠ্য বই হিসাবে সুস্থ, পরিশীলিত, রুচিসম্মত সৎ সাহিত্য চয়ন করার গুরুত্ব অত্যধিক। পাশাপাশি অশ্লীলতায় ভরা কুরুচিপূর্ণ বইপাঠ থেকে বিরত থাকাও আমাদের কর্তব্য। কেননা এর দুর্গন্ধময় নির্যাস অধঃপতনের পথকে প্রশস্ত ও তরান্বিত করে। যার ভয়াবহ পরিণতি ব্যক্তি তথা পুরো সমাজকে গ্রাস করে, করে কলুষিত। যা দুনিয়া ও আখিরাতের মূল্যবান সত্য পথ থেকে বিচ্যুত করে জাহান্নামের দিকে ধাবিত করে।
ঘটনাটি অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, আমি এমন একজনকে জানি যার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল একটি বই- “তাযকেরাতুল আউলিয়া” নামক গ্রন্থখানি। যদিও এই চিন্তাধারায় লিখিত বইগুলোর ব্যাপারে পক্ষে বা বিপক্ষে অনেকেরই অনেক অভিমত বা দ্বিমত আছে। তবে একথা সত্যি আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন যখন কারো উপর রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ করেন তখন এমনিভাবেই তা ঘটে থাকে। আলহামদুলিল্লাহ্।
আজো খুব স্পষ্ট মনে পড়ে শৈশবের গুচ্ছ গুচ্ছ স্মৃতিগুলো। নতুন যেকোন বই পেলেই সবার অলক্ষ্যে লুকিয়ে গোগ্রাসে শেষ করার রোমাঞ্চকর অনুভূতি। বই পড়া শেষ হলে মনে হতো যেন বিশ্ব জয় করে ফেললাম। চুম্বক অংশগুলো উল্টে পাল্টে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রোমন্থন করা। নোট বুকে লিখে রাখা। বক্তব্যের ভাবনাগুলো মনের ভেতর তোলপাড় করতো যা স্বপ্নের মত তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াতো পৃথিবীর প্রান্ত থেকে প্রান্তে। এ এক মধুময় ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা। বহতা নদীর মত বহমান জীবনের বাঁকে বাঁকে তার প্রভাব আজো কিন্তু কম নয়। কৌতুহল নিবারণে কিংবা নতুন কিছু জানার অদম্য স্পৃহায় অন্ধকারে মোমবাতি জ্বালিয়ে অতি সন্তর্পণে বই পড়ার অভিজ্ঞতা আজো স্মৃতিতে অম্লান।
আনন্দ বেদনায়, নিঃসঙ্গতায় নির্জনে, পাওয়ার আনন্দে কিংবা না পাওয়ার অসহ্য যন্ত্রণায়, পেয়ে হারানোর পাহাড়সম শোকের কাতরতায়, তৃপ্তি কিংবা অতৃপ্তির হিসাবের গরমিলে, সুস্থ কিংবা অসুস্থতায় এমনকি জীবনের অত্যন্ত কঠিন সন্ধিক্ষণেও একটি সুপাঠ্য বই হতে পারে সেসময়ের একান্ত সঙ্গী বা বিশ্বস্থ বন্ধু। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সকলকেই উত্তম ও মহৎ বন্ধু “বই” নির্বাচনে সহায় হউন। আমীন।
সুপ্রিয় পাঠক আপনাদের মূল্যবান অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করার বিনীত অনুরোধ রইলো।
বিষয়: বিবিধ
১২৫২ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার অনবদ্য ও প্রশংসনীয় দুটি লিখাই পড়েছি। আমার বিশ্বাস আমার মত চমৎকার লিখা দুটি অনেককেই উদ্বেলিত ও উপকৃত করেছে এবং বইপাঠে উৎসাহী করে তুলেছে।
নতুন কিছু বইয়ের সন্ধান জানা থাকলে বলতে ভুলবেন না যেন। আন্তরিক অনুরোধ থাকলো।
বরাবরের ন্যায় আপনার মূল্যবান উপস্থিতি, অতি গুরুত্বপূর্ণ সুন্দর উপলব্ধি ও প্রেরণাপূর্ণ অনুভূতির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
বরাবরের ন্যায় আপনার মূল্যবান উপস্থিতি, অতি গুরুত্বপূর্ণ সুন্দর উপলব্ধি ও প্রেরণাপূর্ণ অনুভূতির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
সত্যি করে বলি লিখাটি লিখার সময় আমার সোনার ছেলেটি আওনের কথা বার বার মনে পড়েছিল। বিশেষ করে বই বিষয়ক তোমার অনবদ্য ও অনন্য সৃষ্টিশীল লিখাগুলো হৃদয় ঝঙ্কৃত করে তোলে অভূতপূর্ব আনন্দময় এক অনুভূতিতে।
অবশ্যই খাম্মুনির মানসপটে চিরঅম্লান হয়ে অনন্তকাল বেঁচে রবে আমার দু’ছেলে আওন ও হ্যারি। আমার লিখার জগতে তোমরা দু’জনই আল্লাহ্ সুবহানুতা’আয়ালার এক বিশেষ উপহার।
লিখাটি কলমের আঁচড়ে নয় হৃদয় থেকেই তোমাকে উৎসর্গ করলাম।
বইয়ের নাম: হাদীসের আলো জীবনের পাথেয়।
অনুবাদক: উম্মে আব্দুল্লাহ
সম্পাদনা: আবু তাহের মিসবাহ
প্রকাশনা: দারুল কলম
-
সেই মানুষটি বইটির ভূমিকা পড়ে আমাকে ফোন দিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। প্রায় ১০-১২ মিনিট ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে কেঁদেছেন। আমি নিজে যখন পড়েছি তখন আমি নিজেও কেঁদেছি। আজীব এক ভূমিকা।বর্তমান পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস শাইখ আব্দুল মালেক এর মায়ের জীবনের সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ আছে বইটির ভূমিকায়। ইনশাআল্লাহ আমি ভূমিকাটি টাইপ করে শেয়ার করবো।
আপনার রসালো প্রাণ ছুঁয়ে যাওয়া মন্তব্যগুলো এই ব্লগ বাড়ীর বাড়তি আকর্ষণ।
আল্লাহ্ সুবহানুতা’আয়ালা আপনাকে পুটীর মাকে নিয়ে দীর্ঘায়ুসহ অশেষ সুখময় জীবন দান করুণ। আমীন।
বই
-মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম
ইচ্ছে করে বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকি
সারাক্ষণ বই-ডায়েরী সঙ্গে রাখি।
ইচ্ছে করে লেখালেখিতে যুক্ত থাকি,
নিঠুর সময় খালি আমায় দেয় যে ফাঁকি।
বই বড় বন্ধু আমার কেবল মনে হয়
বিদ্যাহীন মানুষ তাই পশুর তুলনীয়।
লেখার মাঝে চাই যে কেবল হারিয়ে যেতে
নিবিড় সান্নিধ্য হোক, কেবল বইয়ের সাথে।
বই-ই গড়ে এই ভুবনে প্রেমের বাগান,
শুধু বইয়ের সাথে হোক ভাবের আদান।
প্রজন্মের সাধনা হোক, কেবল বই পড়ায়
এসো বন্ধু! জ্ঞানের দ্বারে স্বাগত জানাই।
====
চমৎকার একটি হাদিয়া রেখে যাওয়ার জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন