প্রাণের পুস্পিত পরাগে ...
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ১৭ মে, ২০১৬, ০৩:৫১:২৫ দুপুর
ফুল ফুটে ঝরে যায় দুনিয়ার রীতি, প্রাণপুস্প আজীবন রেখে দেয় স্মৃতি। তাই সতত প্রাণের পুস্পিত পরাগ থেকে উৎসারিত হোক ন্যায় ও সত্যের অনিঃশেষ বারিধারা। প্রবাহিত হোক স্রোতস্বিনী ঝর্ণাধারার ন্যায় হৃদয় থেকে হৃদয়ে। অবিরত। সিক্ত হোক উত্তপ্ত মরুভূমিসম তৃষিত আত্মা। পুণ্যতার জ্যোতিতে উদ্ভাসিত হোক অন্ধ ঘুণে ধরা হৃদয়গুলো। উন্মুক্ত হোক চিরচেনা বদ্ধ দুয়ার। মুক্তি পাক দুর্গন্ধময় ঘরে আঁটকে থাকা মৃত প্রাণগুলো। নিষ্প্রাণ দেহে জেগে উঠুক মহাসমুদ্র পাড়ি দেয়ার হিম্মত। জ্যোতিময় হোক বিরান ভূমি। প্রস্ফুটিত হোক সকল কানন। সুবাসিত পুস্পে। আলোকময় হয়ে উঠুক কল্যাণকামী কলম সৈনিকের অনন্তপ্রসারিত প্রাণ। দ্বীনের জ্যোতিময় আলোতে জ্বলে উঠুক দুর্বার জয়ের অন্তহীন শিহরণ।
এই প্রত্যাশা নিয়েই অনন্ত ভাবনার জগতে বাস করে মাহিয়া। বুক ঠেলে বেরিয়ে আসে উষ্ণ এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস। তার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস উত্তপ্ত আকাশচুম্বী বালুকাময় পর্বতচূড়ায় আরোহণের পথে বলিষ্ঠ শক্তির ইন্ধনসম। মাহিয়ার নিরন্তর প্রার্থনা ও দুর্বার গতিতে ছুটে চলা জীবন জিন্দেগীর ভীড়ে বাস করে মনের গভীর আকুতি। প্রাণের কালির আঁচড়ে মহতী চিহ্নের আলপনা এঁকে দিক সকল কলমবন্ধু তাঁদের লিখনীর ভাঁজে ভাঁজে। যা অবিরাম স্পন্দন ও তুফান জাগাবে তারুণ্যের চেতনায়। ছড়িয়ে যাবে মানুষের তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও দূরদর্শী জ্ঞানের সমুদ্র ভাণ্ডার জগতময়। কুসুমিত পরাগ থেকে বিকশিত হবে ন্যায়, সত্য ও সততার মর্মবাণী।
প্রাণের প্রতিটি শব্দগুচ্ছ হবে একেকটি পুস্প। যেমন অনেকগুলো পাঁপড়ি দিয়ে হয় একটি আকর্ষণীয় ফুল। আর অনেকগুলো মনোহরী তাজা পুস্প দিয়ে গাঁথা হয় একটি সুবাসিত মালিকা। এরই সুগন্ধিতে উল্লসিত, উদ্বেলিত ও উজ্জ্বীবিত হয় মানুষের প্রাণ। মানবতার কল্যাণে ত্যাগের মহিমায়। ঢেউ তোলে মনে ভালোবাসার দরিয়ায়। যা শুধু চারিদিকে গোলাপের সুবাস ছড়ায়। রুখে দেয় অন্যায় ও অবক্ষয়। আর এভাবেই একদিন কালো কৃষ্ণ মেঘ ফুঁড়ে আসে ঝলমলে চাঁদ। ভরে তোলে চারিদিক আভায় আভায়।
আমাদের সকল প্রাণের পুস্পিত পরাগ গর্জে উঠুক অন্যায় আর অসত্যের বিরুদ্ধে। খুনে রঞ্জিত আজ বিশ্বজাহান। নেই তার কোন অবসান। দিনে দিনে বাড়ছেই পেরেশান। ধর্মহীনতার কারণে মূল্যবোধের অবক্ষয়ে নিষ্পেষিত অসহায় জীবন। প্রাণের নিঃসৃত লিখায় ফিরে পাক নিপীড়িত মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস। বন্দীদশার সকল শেকল ছিঁড়ে যা এনে দিবে মুক্তির স্বাদ। আর শব্দ হোক নিঃশব্দের বন্ধু। যেদিন এই প্রাণের স্পন্দন স্তব্ধ হয়ে যাবে, দেহ হবে নিথর। সেদিন যেনো আমাদের এই কথামালা হয় হাশর, কবর, পুলসিরাত আর মীযানের সাথী। জান্নাতের চাবি।
আল্লাহ্ প্রদত্ত গুণের পুস্পমাল্য হোক ইহকালীন ইজ্জত ও পরোকালীন প্রত্যাশিত মঞ্জিলে পৌঁছার স্বর্ণকোমল পথ। যারা একমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির নিমিত্তে আত্মার প্রশান্তির জন্য বেছে নিয়েছেন কলমকে। উৎসর্গ করেছেন জীবনকে অমূল্য সাধনায়। মহা সমুদ্রের তীরে বসে করেছেন ছটফট ছাতি ফাটা পিপাসায়। এমনি জগত সেরা সাইয়েদ কুতুব শহীদ, সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী, হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী চিশতী (রাঃ) সহ যুগে যুগে অসংখ্য জ্ঞান সাধকগণের মধ্যে অনেকেই আজ ধরাধামে নেই কিন্তু তাঁদের রেখে যাওয়া অমূল্য হীরক দ্যুতির মাঝে মানুষ যুগে যুগে আলোর নিশানা খুঁজে পায়।
যাদের শাণিত লিখনী মানুষের হৃদয়ে তোলে ঈমানী ঝঙ্কার। আপোষহীন বক্ষে জ্বলে উঠে প্রতিবাদের বজ্রহুঙ্কার। আশেপাশের শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে গুরুত্বের সাথে আলোচনায় শামিল হয় মাহিয়া। এসব বিষয়বস্তু নিয়ে। স্মরণ করিয়ে দেয় অনন্তকালের জিন্দেগীর মূল্য ও অমরত্নের কথা। প্রাণের পরশে শব্দপুঞ্জের হীরকদ্যুতি হোক হকপন্থী কলম সহযোদ্ধাদের নাজাতের উসিলা। অনন্তকালের অচিন দেশে কঠিন মুসিবতের সময় ভাবনাপিয়াসী মানুষগুলোর হৃদয়স্পর্শী লিখাগুলো যেন তাঁদের অনুপস্থিতিতে বিমর্ষ দুঃখভারাক্রান্ত দুঃখী মানুষের জন্য হয় স্বস্তির নিঃশ্বাস। বিজয় গৌরব পতাকা।
তাই হৃদয়নিঃসৃত শব্দমালার শক্তিমূল্য মূল্যায়ন ও নিরূপণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ। সকল কলম বীরদের জন্য। যা মণি মুক্তোর চেয়েও মহামূল্যবান। উত্তম জ্ঞানের মহা সমাহারে পরিবেশিত সুখপাঠ্য মোতির মালার স্পন্দনে পাঠকের অন্তরে অনুভূত হবে কাঙ্ক্ষিত কম্পন। শব্দের স্পন্দনে ও আলোর ঝলকে মনসমুদ্রের তরঙ্গ তরঙ্গায়িত হবে। হবে বিমুগ্ধ, পিপাসিত ও ক্ষুধিত। প্রাণের ক্ষুধা আরও বেড়ে যাবে। যা মিটবে না কিছুতেই। স্বপ্নবিলাসী মন নিবিড় প্রশান্তিতে খুঁজে নিবে কাব্যময় মনোমুগ্ধকর আপন আলয়। যেখানে হবে মহান প্রভুর সাথে মনের একান্ত গোপন ভাব ও ভাষা বিনিময়। আর তাঁদের অন্তর থেকে প্রার্থনা উৎসারিত হবে রাশি রাশি করুণাধারায়। এমনি আশায় মাহিয়ার হৃদয়াগারে কল্পনার সোনালী তারে বেজে উঠে অন্তিম সাধ। মোতিময় হোক সকল প্রাণের পুস্পিত পরাগ।
বিষয়: বিবিধ
১৬৮৬ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ্।
আপনি কেমন আছেন আংকেল?
বেশী সময় যে ব্যয় করতে হয়নি সেটা তো পোস্টটির সময় কালই বলে দেয়!
কিন্তু ভাবনার জগতে কী প্রভাব ফেলেছে সেটাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও মুখ্য বিষয়!
তাই নয় কি ছোট ভাই?
তারপরও ক্ষতিপূরণ যখন দাবী করেছেন, সেটা জেনে নিয়ে মিটিয়ে ফেলাই ভাল। ঝটপট বলে ফেলুন।
মনের ভেতর প্রভাব ফেলার জন্যই যখন লিখেছেন, তখন না পড়ে উপায় আছে।
থাক, ক্ষতিপূরণ চাইলেও দিতে পারবেন না। আপার জন্য না হয় একটু সময় ব্যয় করলাম।
বোনকে ক্ষতিপূরণের হাত থেকে রেহাই দেয়ার জন্য অন্নেক শুকরিয়া।
মূল্যবান উপস্থিতিসহ লিখনীতে উৎসাহিত করার জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মাশা আল্লাহ্, আলহামদুলিল্লাহ্। যেমন কাব্যরস তেমন মুগ্ধকরণ ছন্ধ সব মিলিয়ে বলতে হয় আল্লাহ্ তায়'লার দান।
জাযাকাল্লাহ খাইর।
লিখা ও ছবিগুলো ভালো লেগেছে জেনে আমিও আনন্দিত হলাম।
সুন্দর অনুভূতি রেখে যাওয়ার জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন