সমুদ্র সৌন্দর্যের সীমাহীন সীমানায়......
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ২৮ মার্চ, ২০১৬, ০৫:৪৪:৪৯ বিকাল
অগণিত অনুপম সৌন্দর্যের ভীড়ে পুস্প পল্লবে সুসজ্জিত অনন্য কারুকার্যময় সমুদ্র তটের প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে কোন এক অবিশ্বাস্য প্রেমবন্ধন ও অনিন্দ্য রূপের মায়াজালে যেন আঁটকে আছে মাহদিয়ার তনুমন। সৌন্দর্যপিয়াসী মাহদিয়া তা গভীরভাবে অনুভব করলো। সেই দুর্বার চুম্বকীয় শক্তির অপ্রতিরোধ্য টানে আবার ছুটে যায় সে। তার একান্ত ভালোবাসার জগতে। সারা দিনের আহার্য ও পানীয় সাথে বেঁধে নিয়ে। ভোরের সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অপরূপ মায়াময় সৌন্দর্য হৃদয় দিয়ে উপভোগের বাসনায়। প্রেম প্রণয় আর অবারিত প্রাপ্তির প্রত্যাশায়। যার মোহনীশক্তি বিপুলভাবে আকর্ষণ করে তাকে। যেখানে রূপালী গগণ জুড়ে সমুজ্জ্বল সোনালী তারাগুলো ঝিলমিল করছে। তারই বক্ষে মনোমুগ্ধকর চন্দ্রখানি মিষ্টি আলো বিলিয়ে দিচ্ছে ধরণীময়। এই এক ফালি চাঁদের সোহাগভরা মায়াময় পরশ পুরো বিশ্বময় ছড়িয়ে দিচ্ছে সুখ ও শান্তির মোহনীয় আবেশ। যা বিচ্ছুরিত হচ্ছে হৃদয় থেকে হৃদয়ে।
তাইতো রাসূলে কারীম (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ্র অলৌকিক সৌন্দর্যময় সৃষ্টি নৈপুণ্য, অসীম ক্ষমতা এবং মহিমা সম্পর্কিত এক ঘণ্টার ধ্যান ও চিন্তা এক বছরের ইবাদতের সমান। সোবহানাল্লাহ! এসব নিগুঢ় অনুভূতি থেকে সৃষ্টিকুল তার সৃষ্টিকর্তার অবিশ্বাস্য বড়ত্ব, মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারে। যদিও বিশ্ব নিখিলে যত বিস্ময়কর ও অনুপম সৃষ্টি রয়েছে সবই প্রভূর সীমাহীন ক্ষমতা ও অসীম শ্রেষ্ঠত্বের সুনিপুণ আলোকমালা থেকে ছিটকে পড়া একটি ক্ষুদ্র কণাসম! সোবহানআল্লাহ্!! আর এজন্যই মহান রাব্বুল আলামীন বলেছেন, হে নবী! আপনি বলে দিন, যদি সব সমুদ্রের পানি কালি হয় আমার প্রভূর অপূর্ব বৈচিত্রময় শৈল্পিক সৃষ্টি নৈপুণ্য ও অপার সৌন্দর্য মহিমা লিখার জন্য, তাহলে সমুদ্রের সব পানি নিঃশেষ হয়ে যাবে, আমার দয়াময়ের অফুরান মহিমা কীর্তন শেষ হবার আগেই। আবার যদি সব সমুদ্রের পানি কালি করে দিই তবুও কালি ফুরিয়ে যাবে। কিন্তু দয়ালুর বিস্ময়কর মহিমা শেষ করা যাবে না। নিশ্চয়ই অপার বিস্ময়ে ভরা আসমান ও যমীনের সৃষ্টির মাঝে আর দিন রাতের আবর্তনের মধ্যে বুদ্ধিমান ও চিন্তাশীল মানুষের জন্য অনেক শিক্ষণীয় নিদর্শন নিহিত আছে। বিস্ময়াভিভূত হয়ে বিষয়গুলো তন্ময় হয়ে ভাবে মাহদিয়া। আর অপলক নেত্রে তাকিয়ে থাকে মুক্ত আকাশপানে।
যেথায় তারকারাজির মেলায় চাঁদের শুভাগমনে আকাশে বসেছে হাজারো রঙের দ্যুতি। স্বর্ণ রৌপ্যের ন্যায় বাহারি সাজে তারা সকলের মনোরঞ্জনে ব্যস্ত। আকাশের মেঘালয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে ধবল নীলাভ ও নানান বৈচিত্র্যময় রঙ আর রঙধনুর মেলা। এযেন অসীম সুনীল আকাশে দ্যুতিময় রজতবর্তিকা। যার বিমল প্রভায় স্নাত সকল সৃষ্টিকুল। আর ধরাতলে বিরাজিত নিখুঁত কারুকার্যময় সবুজ শ্যামলিমা, ধূসর মাঠ, উঁচু নীচু শৈল্পিক আঁকাবাঁকা পথ, নদ-নদী, বন-বনানী, নানান জাতের ও বর্ণের পাখী, জীবজন্তু, সুগন্ধিময় ফুলে ফলে ঢাকা স্বপ্নিল প্রান্তর এবং দৃশ্যমান বিশাল পাহাড়ের পর পাহাড়। উদ্যম ঝর্ণা রাশি আর সাগরের নয়ন মোহিত করা মুক্তো সদৃশ্য মনমাতানো ঢেউয়ের মনোরম দৃশ্য! অভিভূত হয়ে যা অবলোকন করছে সৌখিন দর্শনপ্রার্থীরা। উচ্ছল উচ্ছ্বাসভরা মানুষের কলকাকলিতে, পাখ পাখালির সুমধুর সুরের নিক্কনে, আনন্দ কোলাহলে ও ছন্দ বৈচিত্রে মেতে উঠে সাগর অঙ্গন। দরিয়ার উপরিভাগে নির্মিত হয়েছে এক সাগরতীর থেকে মধ্য সাগরে যাওয়ার বড় ছোট রোমাঞ্চকর মনোরম সৌখিন সাঁকো। বিলাসী মানুষদের স্বপ্ন সেতু পারাপারের দৃশ্য মুগ্ধ করছে অনেককেই।
অথচ আমি রহিনু চেয়ে পথপানে তার,
যে দিলো উজাড় করে, হীরকতুল্য উপহার।
কোথা হতে এসেছিনু এ বিশ্ব ধরায়?
আবার চলে যাবো অনন্ত সেথায়!
কে আমি? কে আমার? থাকে ভাবনায়,
ধরণী তলে পদচিহ্ন পরবে না হায়!
হুঁশ হুঁশ শব্দে হুশ ফিরে মাহদিয়ার। তাকিয়ে দেখে পাশ ঘেঁষে উল্লসিত মাঝি মাল্লারা বড় ছোট তরণী সাজিয়ে পাল উড়িয়ে পাখীর মত আনন্দাবেগে চলে যাচ্ছে দূরে বহুদূরে! আর মাহদিয়ার উদাসী মন বলে...
হে মাঝি সুরে সুরে পাল তুলে কোথা চলে যাও
কোন অচিন দেশে ভীড়বে, তোমার সুখের নাও
তারই মাঝে মনোমুগ্ধকর সাগরের উপর দিয়ে স্বপ্নের মত বিদ্যুৎ গতিতে চলন্ত ট্রেন ছুটে চলে যায়। যে সুরের ঝঙ্কার হৃদয়তন্ত্রীকে আন্দোলিত করে ভাবের আলপনায়। সুমধুর গুঞ্জরনে সোহাগী ছোঁয়ায়। এযেন আকাঙ্ক্ষিত প্রেমমুগ্ধ মিলনের অপূর্ব সময়। নয়ন সম্মুখে দৃশ্যমান অপরূপ সৌন্দর্য করে তোলে আবেশময়। স্বপ্নঘোরে উল্লসিত মন স্বতঃউৎসারিত হয় আনন্দ ধারায়। ভাবনায় রেখা ফেলে মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায়। কল্পনার কোমল মখমল মিশে থাকে স্বর্গ ছায়ায়। শতধারে উথলে উঠে হৃদয়াবেগ প্রভূর দয়ায়। বিস্ময়কর তাঁর অপার সৃষ্টি, সাগর সৌন্দর্যের সীমাহীন মহিমায়!!
আরেকটি পর্বে শেষ হবে ইনশাআল্লাহ্
বিষয়: বিবিধ
১৯০০ বার পঠিত, ৩৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সত্যিই মহান আল্লাহর সৃষ্টি অনেক অনেক সুন্দর, জানি না মহান প্রভূ কতই না সুন্দর।
জান্নাতে অবশ্যই মহান প্রভূর দর্শন উপভোগ করবো ইন শা আল্লাহ। আপনিও অবশ্যই দর্শকদের কাতারে শামিল হবেন। আল্লাহ তায়ালা তাওফীক দান করুন। আমীন।
তাড়াতাড়ি শেষ পর্ব ঢেলে দিন। তর সইচে না।
অনেক অনেক শুকরিয়া হে শ্রদ্ধেয়া মহীয়সী লন্ডনী।
হৃদয় নিংড়ানো সুন্দর অভিব্যক্তিসহ জান্নাতের সুপ্ত বাসনাময় একটি মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার ড্রাইভিং কেমন চলছে?
বেড়াতে গেলে যেন আংকেলের গাড়ীতে করে আমরা সকলেই ঘুরে বেড়াতে পারি!
অসংখ্য শুকরিয়া।
ঠিকই বলেছেন! মহান আল্লাহ্র সৃষ্টি আমাদেরকে অনেক কিছুই আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় তাঁর অসাধারণত্ব অলৌকিক সৌন্দর্যের মাঝে।
উপস্থিতির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
মহান সৃষ্টিকর্তা দুনিয়া জুড়ে সীমাহীন সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছেন৷ যার তুলনা শুধু তিনিই৷ সুন্দর শব্দগু্ছে অপূর্ব বর্ণনাখানি বড়ই ভাল লাগল৷ ধন্যবাদ৷
আপনার মূল্যবান উপস্থিতি ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
করুণাময়ের কাছে প্রাণভরে দোয়া করি সর্বাবস্থায় তিনি আপনাকে ভালো রাখুন সুস্থ থাকুন। আমীন।
লেখার মূল চরিত্র মাহদিয়া, আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে যে চিন্তামগ্ন, অথচ সৃষ্টি শোইলি নিয়ে এতো এতো বর্ণনার ভীড়ে তাকে যেন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছেনা! লেখাটির মূল কন্সসেপ্ট বুঝাটা বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে.
তাই সৃষ্টি সম্পর্কে বর্ণনার পাশাপাশি মাহদিয়া জীবনে কি পরিবর্তন এসেছে তাও যদি উল্লেখ করতেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি ভাল হত.
বানানের বিষয়ে আপনি অনেক সতর্ক, আলহামদুলিল্লাহ্। এটা আমার খুব ভালো লাগে। শেখা যায়.
আর শব্দের কারুকাজ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। অতুলনীয়।
তাহলে আপা, কথা এটাই থাকল, ব্যস্ততা একটু কমান, শরীরকে আরাম দিন
প্রথমতঃ আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন এটি কোন ধারাবাহিক লিখা ছিল না তাই পর্বে আসেনি। লিখা বড় হওয়ার কারণে লিখাটিকে বিভক্ত করা হয়েছে যার উল্লেখ আছে সন্মানিত পাঠক বৃন্দের জন্য।
দ্বিতীয়ত বলতে চাই লিখাটির উদ্দেশ্য মাহদীয়াকে ঘিরে নয়। লিখার মূল বিষয় শিরোনামই বলে দেয়। তদুপরি মাহদীয়ার ভাবনা, অনুভূতি ও প্রত্যাশা এগুলো বিষয়ও উপস্থাপিত হয়েছে। তাই লিখাটি আরেকবার পড়ার অনুরোধ রইলো।
বানান সংক্রান্ত প্রশংসা এবং প্রেরণাপূর্ণ অনেক মূল্যবান একটি মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
আর হ্যাঁ, এখনো আপনি বাস্তব জীবনে পা রাখেননি তাই জীবনবোধ সম্পর্কে বোধ হয় অনেক জানার বাকী! তাই সহমত প্রকাশ করতে পারলাম না। তবে ভাইটির আন্তরিকতাকে খুশী চিত্তে স্মরণ করি।
"তিনিই স্তরে স্তরে সাজিয়ে সাতটি আসমান তৈরী করেছেন।তুমি রহমানের সৃষ্টকর্মে কোন প্রকার অসঙ্গতি দেখতে পাবে না। আবার চোখ ফিরিয়ে দেখ, কোন ত্রুটি দেখতে পাচ্ছ কি?
তুমি বারবার দৃষ্টি ফিরিয়ে দেখ, তোমার দৃষ্টি ক্লান্ত ও ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসবে।" (সূরা মূলক :৩-৪)
-কোন মন্তব্য করার ভাষা হারিয়ে আল্ কুরআন থেকেই কমেন্ট করলাম।
২। আর লেখনীর কথা কী বলব-অনন্য, অসাধারণ!
জাযাকাল্লাহ।
মহান রাব্বুল আলামিন আপনাকে সর্বাবস্থায় হেফাজত করুণ ও দ্বীনের উপর অবিচল রাখুন। আমীন।
বোনের জন্যও বেশী বেশী করে দোয়া চাই!
জানি না কতো সুন্দর তুমি আল্লাহ - আমার অনেক প্রিয় ইসলামী সংগীত, আপনার লিখাটা পড়ে আবারো গুন গুন.....
আপনার অতি চমৎকার লিখায় মন্তব্য করতে গিয়ে আমার কী বোর্ড এর হার্ট বিট স্লো হয়ে আসে-তবু মন্তব্যের যথাযথ ভাষা, শব্দ খুঁজে পাই না
শুধু বলবো সব সময়ই মন ছুঁয়ে যায় কথা গুলো!
শুভকামনা ও দোআ নিরন্তর আপু
যদিও অপরাধবোধ কাজ করে তোমার লিখায় আমার প্রাণবন্ত সরব উপস্থিতি সম্ভব হয়ে উঠে না। অনেক সময়।
তখন মনে মনে অনেক কষ্ট পাই। কিন্তু নিজের অসহায়ত্বকে মেনে নিয়ে আবার পথ চলা শুরু হয়। জীবনের ডাকে। ভালো থেকো আপু খুব ভালো। শুধুই অন্তর থেকে দোয়া। তোমাদের সকলের জন্য। নিরন্তর।
খুব সুন্দর কাব্যিক গদ্য অন্তর ছুঁয়ে যায়!!
খুশী চিত্তে >> খুশীমনে / আনন্দচিত্তে
শব্দবিন্যাসে এমন গরমিল অনেক বাক্যেই আছে, পড়তে হোঁচট খেতে হয়!
জাযাকিল্লাহ
কিন্তু ব্যস্ততা সত্ত্বেও লিখাটি পড়লাম। আমার লিখাটির কোথাও খুশী চিত্তে >> খুশীমনে / আনন্দচিত্তে এই শব্দ গুলোর অস্তিত্ব খুঁজে পেলাম না। হতে পারে আমার চক্ষুর সমস্যা।
তাই যদি একটু কষ্ট করে এর উৎপত্তিস্থল বলে দিতেন তাহলে খুবিই উপকৃত হতাম।
প্রেরণাপূর্ণ সুন্দর একটি মন্তব্য রেখে যাওয়ার জন্য অনেক অনেক শুকরিয়া।
তাই তো!!
চোখের সমস্যা কি আমারও হলো!!:
হয়তো এটা হতে পারে-
আরেকটা দেখুন-
হুশ হুশ শব্দে হুঁশ ফিরে মাহদিয়ার।
যাকগে, পূরো লেখার সৌন্দর্যে ওগুলো কিছু নয়!!
স্পেলিং মিস্টেকে আমার ব্যক্তিগত বাতিক আছে। তা সত্ত্বেও......!?
আপনার মূল্যবান উপস্থিতি ও প্রেরণাপূর্ণ মন্তব্যের জন্য অন্নেক অন্নেক শুকরিয়া।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপনার গদ্যগুলো সবই কবিতা!!!
যাক আপনার মূল্যায়নে ও উৎসাহে প্রীত হলাম আরেকবার। জাজাকাল্লাহু খাইর।
তোমার মূল্যবান উপস্থিতি ও হৃদয়স্পর্শী মন্তব্য পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
তোমার সুন্দর দোয়ায় আমীন। ছুম্মা আমীন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমরা সকলেই ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ্।
তুমি, সোনামণিসহ তোমরা ভালো আছে তো আপু?
মন্তব্য করতে লগইন করুন