অপকর্মের পরিণাম
লিখেছেন লিখেছেন সন্ধাতারা ১১ এপ্রিল, ২০১৫, ১০:৪৪:৫৯ রাত
চারিদিকে হৈ হৈ ব্যাপার! অফিসে, চায়ের দোকানে, রেস্তোরাঁয়, বাজারে, পথে ঘাটে পুরুষ মহিলা সবার মুখে মুখে একজনের কথা সে ময়না!! তাকে ঘিরে সর্বস্তরের মানুষের যেন কৌতূহলের শেষ নেই। শত প্রশ্ন খুঁজে ফিরছে ময়নার অতীতকে নিয়ে। খবরের পাতায় শিরোনাম হয়েছে বটে! কিন্তু তা যেন পাঠকের তৃষ্ণা নিবারণে ব্যর্থ হচ্ছে! পাঠকের সন্দেহ সত্য বিষয়কে আড়াল করে মূল ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে সুকৌশলে। সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্যভাবে তুলে ধরাই যেন অধিকাংশ সাংবাদিকদের আজ মূল উদ্দেশ্য। যা আজ হলুদ সাংবাদিকদের অনেকটা গাঁ সওয়া রমরমা বাণিজ্যের মত।
তাইতো কেউবা বলছে মানুষের বিচার যেখানে শেষ, মহান বিচারক বা হকের হাকিমের বিচার সেখান থেকেই শুরু। এমনি এক ভয়ার্ত বিপদাপন্ন অবস্থায় নির্ঘুম কাটিয়েছে মাহিমা সারারাত। আজ প্রায় বেশ কিছুদিন ধরে বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারের মত ভাবনায় মাহিমা দিক ভ্রম হয়ে ভাবছিলো এযেন তার আত্মিক এবং নৈতিক বিপর্যয়!
ময়নার সাথে মাহিমার প্রথম পরিচয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে লেখাপড়া করার সুবাদে। মাহিমা ময়নার সাথে পরিচয়ের দিন থেকে ভেবেছিলো যেভাবেই হোক তাকে ধর্মের পথে আকৃষ্ট করাবে। শালীন ভাবে চলাফেরা করতে উদ্বুদ্ধ করবে ময়নাকে। এই উদ্দেশ্যেই সে বেশী বেশী করে মিশতো ময়নার সাথে। মাহিমা মেধাবী ছাত্রী হওয়ায় এবং বিভিন্ন সময়ে তার কাছ থেকে ময়না সাহায্য সহযোগিতা পাওয়ায় ক্রমেই তাদের বন্ধুত্ব গাঢ় হয়। পরে মাহিমা জানতে পারে ময়না এক ধনাঢ্য বাবার একমাত্র মেয়ে। তার পিতা একজন স্বনামধন্য বিচারক।
একে একে মাহিমা আরও জানতে পারে ময়নার রয়েছে একাধিক পুরুষ বন্ধু যাদের সাথে সে নেশা করে। নিয়মিত সে ক্লাবে যায় পুরুষ বন্ধুদের সাথে ফূর্তি করার জন্য। প্রায় ভোর রাতে সে বাসায় ফিরে। তাইতো সারাক্ষণ তার ঢুলু ঢুলু আঁখি! ময়নার মুখ থেকে এসব অবিশ্বাস্য ঘটনা শুনে কিছু কৌতূহলঘেরা অজানা জীবনের সীমাহীন জ্বলন্ত প্রশ্ন মাহিমার ব্যাকুলতাকে বাড়িয়ে তোলে। আহরিত অনুভবযোগ্য ঘটনাবলী তাকে শিহরিত করে অজানা এক আশঙ্কায়।
ধর্মীয় চিন্তা মনুষ্য জীবনের অপরিহার্য অংশ। অথচ ভোগবাদের বেড়াজালে জড়িয়ে মানুষের জীবন এমনভাবে সমাধিস্থ হতে পারে আত্মজিজ্ঞাসায় উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠে মাহিমা। ময়নার সহজ, সরল, সুন্দর মুখের আড়ালে যে ধূর্ততা, ধৃষ্টতা ও লজ্জাহীনতা লুকিয়ে ছিল ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি সে। ময়নার অনিবার্য বিভীষিকাময় পতনের শঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে উঠে মাহিমা। কোরআন ও হাদিসের আলোকে কিছু উপদেশ বাণী সে শোনায় ময়নাকে। কিন্তু আকর্ষণহীন অবজ্ঞা ভরা ময়নার দৃষ্টি বলে দেয় এসব যেন অন্ধের কাছে সৃষ্টির রূপ মাধুর্য বর্ণনা করার মত অর্থহীন। মাহিমা কিছুটা বিবৃত হয়ে ভাবতে লাগলো বধিরের কর্ণ কুহরে সে মিষ্টি শব্দের স্পন্দন সৃষ্টির মত বৃথা প্রচেষ্টা চালাচ্ছে নাতো!!
পরিশেষে ময়না জানায় কোরআন-হাদিসের মর্মবাণী তথা কিয়ামত-পুলসেরাত, জান্নাত-জাহান্নাম,আযাব-ছাওয়াব,সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি,তাকওয়া ও পবিত্রতা এগুলো শুধুই কাল্পনিক অর্থহীন শব্দের কথামালা যা সে একবিন্দু বিশ্বাস করে না। তার কাছে মহান প্রভূর গ্রন্থ আল কোরআনের হিদায়াত ও পথনির্দেশ এবং নবীর দাওয়াত ও উপদেশ যেন বিষসম আঁচ করলো মাহিমা। সে ভাবলো অযাচিতভাবে পিপাসাহীন মানুষকে শীতল পানি পান করানোর সদিচ্ছা নির্বুদ্ধিতা বৈকি! সাথে সাথে মাহিমার হৃদয়ে উত্থিত হল পবিত্র কোরআনের বাণীঃ
আল্লাহ্ তায়ালা কখনো জালিমদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন না (সূরা আল ‘ইমরানঃ ৮৬)।
তারাই সৎপথের বিনিময়ে ভ্রান্তপথ এবং ক্ষমার বদলে শাস্তি বেছে নিয়েছে। জাহান্নামের অগ্নি সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল (সূরা বাকারাঃ ১৭৫)।
নিশ্চয়ই যারা কাফের, তাদেরকে আপনি সাবধান করেন আর নাই করেন উভয়ই সমান; তারা কখনো ঈমান আনবে না। আল্লাহ্ তাদের মন মগজ ও কর্ণ সমূহের উপর মোহর মেরে দিয়েছেন ও তাদের চোখের উপর আবরণ পড়ে আছে এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি (সূরা বাকারাঃ ৬-৭)।
মুমিনরা যেন কখনো মুমিন ছাড়া অবিশ্বাসীদের বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যদি কেউ এরূপ করে তবে তার সাথে আল্লাহ্র কোন সম্পর্কই থাকবে না (সূরা আল ‘ইমরানঃ ২৮)।
মহান আল্লাহ্র এসব বাণীর চিরন্তন ভয়াবহ পরিণতির প্রতি ভীত হয়ে মাহিমা একদিন দ্বীনের প্রতি ময়নার চরম নির্লিপ্ততা ও উদাসীনতার এক পর্যায়ে অনেক মনোকষ্ট নিয়ে তার সঙ্গ পরিত্যাগ করে। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে মাহিমা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারে ময়না তখন অন্তঃসত্তা ছিল। অসময়ে এবং অসফলভাবে গর্ভপাতজনিত কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে ময়না এক ভোরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে আছে আরও দুটি নিথর দেহ ময়নার বাবা মা! কারণ অজ্ঞাত!! তদন্ত চলছে......।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫১ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য নিয়ে প্লিজ...।
আপনার জন্য অনিঃশেষ দোয়া , শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো। সেইসাথে বোনের জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো ।
আপনার জন্য অনিঃশেষ দোয়া , শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো। সেইসাথে বোনের জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো ।
মুমিনের জন্যে দুনিয়াতে সম্পদ,মর্যাদা না থাকলেও তার মানুষিক শান্তি থাকে,আর আখিরাতে রয়েছে প্রশান্তিময় চিরস্থায়ী অবস্থান। কিন্তু যারা জাহান্নামকে ক্রয় করেছে,তারা দুকূলই হারালো,আর যদি পৃথিবীতে তারা মর্যাদাবান হয় তবে অনন্তকালের ভয়াবহ শাস্তির তুলনায় তাদের ওই সাময়িক শান্তি তুচ্ছ...
আপনার জন্য অনিঃশেষ দোয়া , শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো। সেইসাথে বোনের জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো ।
তারাই সৎপথের বিনিময়ে ভ্রান্তপথ এবং ক্ষমার বদলে শাস্তি বেছে নিয়েছে। কি ভয়ংকর ! আল্লাহ আমাদের হিফাজত করুন!
জাযাকিল্লাহু খাইর!
জাযাকিল্লাহু খাইরান ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ।
আপনার সুন্দর দোয়ায় আমীন।
আপনার জন্য অনিঃশেষ দোয়া , শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো। সেইসাথে বোনের জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো।
আপনারা সবাই ভালো আছেন তো ভাইয়া?
ধর্মীয় বিষয়ে উদাসিনতা আর বৈষয়িক স্বার্থে-মোহে অন্ধ ব্যক্তিদের কর্ণকোহরে হেদায়েতের বানী কোনই আছর করে না! ফলশ্রুতিতে ধ্বংশ আর পতনের নিম্ন চুড়ায় পৌছে যায়! ময়নার ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়েছে!
আল্লাহ আমাদের কে হেদায়েত দান করুন!আমিন!
জাযাকিল্লাহু খাইরান হে শ্রদ্ধেয়া আপুজ্বী!!
মন্তব্যের জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর। আপনার জন্য অনিঃশেষ দোয়া , শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো। মঙ্গলময় আপনাকে সর্বাবস্থায় ভালো রাখুন এই কামনা। সেইসাথে বোনের জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো।
আল্লাহ আমাদের সকলকে হেদায়েত দান করুন! আমিন!
জাযাকিল্লাহু খাইরান হে শ্রদ্ধেয়া আপুজ্বী!!
আপনার মর্মস্পর্শী সুন্দর দোয়ায় আমীন।
আপনার জন্য অনিঃশেষ দোয়া , শুভেচ্ছা এবং শুভকামনা রইলো। মঙ্গলময় আপনাকে সর্বাবস্থায় ভালো রাখুন এই কামনা। সেইসাথে বোনের জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো।
হাদিসে আছেঃ আল্লাহ তায়ালা জান্নাতকে ঘেরাও করে রেখেছেন কষ্ট ও মেহনত দ্বারা এবং জাহান্নামকে ঘেরাও করে রেখেছেন ব্যাহ্যিক সুন্দর্য ও আনন্দ-ফুর্তি দ্বারা। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মানুষকে বিবেক বুদ্ধি ও জ্ঞান দিয়েছেন, সতর্ক করার জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী রাসূল পাঠিয়েছেন, বর্তমানেও আলেম ও ধার্মীক ব্যক্তিবর্গ সদা মানুষদের সতর্ক করেই যাচ্ছে। অতএব হেদায়েত আল্লাহ তায়ালার জিম্মায়, যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ দেখাবেন। যাকে ইচ্ছা গোমরাহীতে ডুবে রাখবেন। আল্লাহ তায়ালাই মহা পরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী। সুন্দর পোষ্টটির জন্য জাযাকিল্লাহ খাইরান খালামুনি।
অনেক ব্যস্ততা তাই একটু দেরী হয়ে গেল। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি কামনা করছি।
কিছু মানুষের মন্তব্য আমি বার বার পড়ে হৃদয়ঙ্গম করার চেষ্টা করি আংকেল আপনি তাদেরই একজন।
ক্ষমা করার কথা আসে কেন আংকেল??!! আমি জানি আপনি এবং আমরা সবাই অনেক প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে ব্লগিং করি ব্যস্ততম সময়ের ভীড়ে।
মাঝে মাঝে প্রিয় আংকেলের কাছে একটু বাড়তি আবদার আর কি!! সেজন্য হ্যারির লিখায় আপনার জন্য একটা অনুরোধ রেখেছিলাম। চিন্তা এবং বিবেচনা করে দেখবেন যদি সম্ভব হয়!
ভালো থাকবেন খুব ভালো দোয়া এবং প্রত্যাশা রইলো। খালাম্নির জন্য দোয়ার আবদার রইলো।
বোনের জন্য বেশী বেশী করে দোয়া করার জন্য বিশেষ অনুরোধ থাকলো।
মন্তব্য করতে লগইন করুন